সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

ধর্মের নামে সংঘটিত মন্দ বিষয়গুলো কি শেষ হবে?

ধর্মের নামে সংঘটিত মন্দ বিষয়গুলো কি শেষ হবে?

Kingdom News No. ৩৭

সমগ্র বিশ্বের জন্য এক বার্তা

ধর্মের নামে সংঘটিত মন্দ বিষয়গুলো কি শেষ হবে?

▪ কেন ধর্মের নামে মন্দ বিষয়গুলো সংঘটিত হচ্ছে?

▪ এটা কীভাবে শেষ হবে?

▪ এটা আপনার ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে?

কেন ধর্মের নামে মন্দ বিষয়গুলো সংঘটিত হচ্ছে?

ধর্মের নামে সংঘটিত অপরাধগুলোর কারণে আপনি কি বিরক্ত? ঈশ্বরকে সেবা করে বলে দাবি করে এমন লোকেদের দ্বারা সংঘটিত যুদ্ধ, সন্ত্রাস এবং দুর্নীতি কি আপনার ন্যায্যতার অনুভূতিতে আঘাত করে? কেন ধর্মই অনেক সমস্যার মূল কারণ বলে মনে হয়?

সমস্ত ধর্ম নয় বরং যে-ধর্মগুলো ভুল বিষয়গুলোকে ছড়িয়ে দিচ্ছে সেগুলোই এই সমস্যাগুলোর জন্য দায়ী। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত একজন ধর্মীয় ব্যক্তি যিশু খ্রিস্ট বলেছিলেন যে, ঠিক যেমন একটা “মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে,” তেমনই এই ধর্মগুলো বিভিন্ন মন্দ কাজ করে থাকে। (মথি ৭:​১৫-১৭) মিথ্যা ধর্ম কোন ফল উৎপন্ন করে?

ধর্মের নামে যে-বিষয়গুলো সংঘটিত হচ্ছে

যুদ্ধ ও রাজনীতিতে অবাঞ্ছিতভাবে হস্তক্ষেপ করছে: এশিয়াউইক পত্রিকা বলে, ‘এশিয়া ও অন্যান্য জায়গায় ক্ষমতালোভী নেতারা নিজেদের স্বার্থে লোকেদের ধর্মীয় অনুভূতিকে অত্যন্ত ঘৃণ্য উপায়ে কাজে লাগাচ্ছে।’ এর ফলস্বরূপ, সেই পত্রিকা সতর্ক করে: “বিশ্ব উন্মত্ততায় ডুবে যাওয়ার হুমকির সম্মুখীন।” যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিখ্যাত ধর্মীয় নেতা ঘোষণা করেছিলেন: “আরও হত্যা বন্ধ করার আগে সন্ত্রাসীদের হত্যা করতে হবে।” তিনি কোন সমাধান দিয়েছিলেন? “প্রভুর নামে তাদের সকলকে শেষ করে দাও।” এর বৈসাদৃশ্যে বাইবেল বলে: “যদি কেহ বলে, আমি ঈশ্বরকে প্রেম করি, আর আপন ভ্রাতাকে ঘৃণা করে, সে মিথ্যাবাদী।” (১ যোহন ৪:২০) যিশু এমনকি বলেছিলেন: “তোমরা আপন আপন শত্রুদিগকে প্রেম করিও।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (মথি ৫:৪৪) আপনি কতগুলো ধর্ম সম্বন্ধে চিন্তা করতে পারেন, যেগুলোর সদস্যরা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে?

মিথ্যা মতবাদ ছড়াচ্ছে: অধিকাংশ ধর্মই শিক্ষা দেয় যে, মানুষের দেহের মৃত্যুর পর অদৃশ্য কিছু বেঁচে থাকে। এই শিক্ষাকে ব্যবহার করে, এইরকম অনেক ধর্ম তাদের সদস্যদের কাছ থেকে সুযোগ নিয়ে থাকে, বিদেহী আত্মার জন্য প্রার্থনা করতে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে থাকে। কিন্তু, বাইবেল এক ভিন্ন মতবাদ শিক্ষা দেয়। “জীবিত লোকেরা জানে যে, তাহারা মরিবে; কিন্তু মৃতেরা কিছুই জানে না।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (উপদেশক ৯:⁠৫) যিশু শিক্ষা দিয়েছিলেন যে, মৃতেরা পুনরুত্থিত হবে​—⁠মানুষের মধ্যে যদি অমর কিছু থেকেই থাকে, তা হলে পুনরুত্থানের কোনো প্রয়োজনই হতো না। (যোহন ১১:​১১-২৫) আপনার ধর্ম কি শিক্ষা দেয় যে, মৃত্যুর পর কিছু বেঁচে থাকে?

যৌন অনৈতিকতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে: পশ্চিমা দেশগুলোতে গির্জাগুলো সমকামী নারী ও পুরুষ সদস্যদের পাদরি হিসেবে নিযুক্ত করে এবং সমলিঙ্গের ব্যক্তিদের মধ্যে বিয়েকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোরালোভাবে আবেদন জানায়। এমনকি যে-গির্জাগুলো অনৈতিকতাকে নিন্দা করে সেগুলোও, শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নকারী ধর্মীয় নেতাদের প্রশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু, বাইবেল কী শিক্ষা দেয়? এটি স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে: “ভ্রান্ত হইও না; যাহারা ব্যভিচারী কি প্রতিমাপূজক কি পারদারিক কি স্ত্রীবৎ আচারী কি পুঙ্গামী . . . তাহারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (১ করিন্থীয় ৬:​৯, ১০) আপনি কি এমন ধর্মগুলো সম্বন্ধে জানেন, যেগুলো যৌন অনৈতিকতাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে?

মন্দ ফল উৎপন্নকারী ধর্মগুলোর ভবিষ্যৎ কী? যিশু সাবধান করে দিয়েছিলেন: “যে কোন গাছে ভাল ফল ধরে না, তাহা কাটিয়া আগুনে ফেলিয়া দেওয়া যায়।” (মথি ৭:১৯) হ্যাঁ, মিথ্যা ধর্মকে কেটে ফেলা হবে এবং ধ্বংস করা হবে! কিন্তু, তা কখন এবং কীভাবে হবে? বাইবেলের প্রকাশিত বাক্য বইয়ের ১৭ ও ১৮ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ একটা ভবিষ্যদ্বাণীমূলক দর্শন এর উত্তর দেয়।

যে-ধর্মগুলো মন্দ বিষয় ছড়ায় সেগুলো কীভাবে শেষ হবে?

দৃশ্যটা একটু কল্পনা করুন। একটা ভয়ংকর পশুর ওপর একজন বেশ্যা বসে আছে। সেই পশুর সাতটা মাথা এবং দশটা শিং। (প্রকাশিত বাক্য ১৭:​১-৪) এই বেশ্যা কাকে চিত্রিত করে? সে “পৃথিবীর রাজগণের উপরে” প্রভাব বিস্তার করে। সে বেগুনি বস্ত্র পরিহিত, ধূপ ব্যবহার করে এবং অত্যন্ত ধনী। অধিকন্তু, তার মায়া বা প্রেতচর্চার দ্বারা ‘সমস্ত জাতি ভ্রান্ত হয়।’ (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৮; ১৮:​১২, ১৩, ২৩) বাইবেল আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, এই বেশ্যা হল বিশ্বব্যাপী এক ধর্মীয় সংগঠন। এই বেশ্যা কোনো একটা ধর্মকে নয় বরং মন্দ ফল উৎপন্নকারী সমস্ত ধর্মকে চিত্রিত করে।

সেই বেশ্যা যে-পশুর ওপর বসে আছে, সেটা বিশ্বের রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে চিত্রিত করে। a (প্রকাশিত বাক্য ১৭:​১০-১৩) মিথ্যা ধর্ম এই রাজনৈতিক পশুর ওপর বসে আছে, এর সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করার এবং এর নির্দেশনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে।

কিন্তু, শীঘ্রই এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটবে। “তুমি যে ঐ দশ শৃঙ্গ এবং পশুটা দেখিলে তাহারা সেই বেশ্যাকে ঘৃণা করিবে, এবং তাহাকে অনাথা ও নগ্না করিবে, তাহার মাংস ভক্ষণ করিবে, এবং তাহাকে আগুনে পোড়াইয়া দিবে।” (প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৬) হঠাৎ, আকস্মিকভাবে বিশ্বের রাজনৈতিক শক্তিগুলো মিথ্যা ধর্মের ওপর আক্রমণ করবে এবং তাকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেবে! কোন বিষয়টা এই কাজ করতে পরিচালিত করবে? বাইবেলের প্রকাশিত বাক্য বইটি উত্তর দেয়: “ঈশ্বর তাহাদের হৃদয়ে এই প্রবৃত্তি দিয়াছিলেন, যেন তাহারা তাঁহারই মানস পূর্ণ করে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (প্রকাশিত বাক্য ১৭:১৭) হ্যাঁ, ঈশ্বর তাঁর নামে করা সমস্ত জঘন্য কাজের জন্য মিথ্যা ধর্মের কাছ থেকে নিকাশ নেবেন। তিনি তাঁর নিখুঁত ন্যায়বিচার অনুযায়ী, সেই বেশ্যাকে ধ্বংস করার জন্য তার রাজনৈতিক অবৈধ প্রেমিকদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন।

মিথ্যা ধর্মের যে-পরিণতি ঘটবে তাতে যদি আপনি অংশী হতে না চান, তা হলে আপনাকে অবশ্যই কী করতে হবে? ঈশ্বরের বার্তাবাহক জোরালোভাবে পরামর্শ দেন, “হে আমার প্রজাগণ, উহা হইতে বাহিরে আইস।” (প্রকাশিত বাক্য ১৮:⁠৪) সত্যিই, মিথ্যা ধর্ম থেকে পালিয়ে আসার সময় এখনই! কিন্তু, আপনি পালিয়ে কোথায় যাবেন? নিশ্চয়ই নাস্তিক হয়ে যাবেন না কারণ এর ভবিষ্যৎও অন্ধকার। (২ থিষলনীকীয় ১:​৬-৯) একমাত্র আশ্রয় হল সত্য ধর্ম। কীভাবে আপনি সত্য ধর্মকে শনাক্ত করতে পারেন?

যেভাবে সত্য ধর্ম শনাক্ত করা যায়

সত্য ধর্মের কোন ভাল ফল উৎপন্ন করা উচিত?​—⁠মথি ৭:⁠১৭.

সত্য ধর্ম . . .

ভালবাসা দেখিয়ে থাকে: সত্য উপাসকরা “জগতের নয়,” বর্ণবৈষম্য ও সংস্কৃতির দ্বারা বিভক্ত নয় এবং ‘নিজেদের মধ্যে প্রেম’ দেখিয়ে থাকে। (যোহন ১৩:৩৫; ১৭:১৬; প্রেরিত ১০:​৩৪, ৩৫) একে অন্যকে হত্যা করার পরিবর্তে তারা বরং প্রয়োজনে একে অন্যের জন্য মরতেও প্রস্তুত থাকে।​—⁠১ যোহন ৩:⁠১৬.

ঈশ্বরের বাক্যের ওপর নির্ভর করে: ‘পরম্পরাগত বিধি’ এবং “মনুষ্যদের আদেশ ধর্ম্মসূত্র বলিয়া” শিক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে সত্য ধর্মের মতবাদের ভিত্তি হল, ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল। (মথি ১৫:​৬-৯) কেন? কারণ “ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি আবার শিক্ষার, অনুযোগের, সংশোধনের, . . . নিমিত্ত উপকারী।”​—⁠২ তীমথিয় ৩:⁠১৬.

পরিবারগুলোকে শক্তিশালী করে এবং উচ্চ নৈতিক মান বজায় রাখে:

সত্য ধর্ম স্বামীদের “আপন আপন স্ত্রীকে আপন আপন দেহ বলিয়া প্রেম করিতে” প্রশিক্ষণ দেয়, স্ত্রীদের ‘তাহাদের স্বামীদের প্রতি ভয় [“গভীর সম্মান,” NW]’ গড়ে তুলতে সাহায্য করে এবং সন্তানদের ‘পিতামাতার আজ্ঞাবহ হইতে’ শিক্ষা দেয়। (ইফিষীয় ৫:​২৮, ৩৩; ৬:⁠১) অধিকন্তু, যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের অবশ্যই উদাহরণযোগ্য নৈতিক মান বজায় রাখতে হবে।​—⁠১ তীমথিয় ৩:​১-১০.

কোনো ধর্ম কি এই মানগুলো মেনে চলে? ২০০১ সালে প্রকাশিত ধ্বংসযজ্ঞের রাজনীতি (ইংরেজি) বইটি বলে: “যিহোবার সাক্ষিরা যা প্রচার করে ও পালন করে তা যদি আরও অধিক সংখ্যক লোক পালন করত, তা হলে ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিরোধ করা যেত এবং সাম্প্রদায়িক বিলোপসাধন এই জগৎকে আর জর্জরিত করত না।”

বস্তুত, দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় যিহোবার সাক্ষিরা বাইবেলের নৈতিক মানগুলো সম্বন্ধে কেবল প্রচারই করে না​—⁠তারা সেই অনুযায়ী জীবনযাপনও করে। ঈশ্বর আপনার কাছ থেকে কী চান, তা জানতে সাহায্য করার জন্য আমরা আপনাকে যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে কথা বলতে উৎসাহিত করছি, যাতে আপনিও তাঁকে গ্রহণযোগ্য উপায়ে উপাসনা করতে পারেন। এখনই কাজ করার সময়। দেরি করবেন না। মিথ্যা ধর্মের শেষ সন্নিকট!​—⁠সফনিয় ২:​২, ৩.

যিহোবার সাক্ষিরা যে-বাইবেলভিত্তিক বার্তা প্রচার করে, সেই সম্বন্ধে আপনি যদি আরও তথ্য জানতে চান, তা হলে নির্দ্বিধায় নীচে দেওয়া ঠিকানায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

□ কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়াই, আমি জেগে থাকুন! ব্রোশারটি সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য অনুরোধ করছি।

□ বিনামূল্যে গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করানোর জন্য দয়া করে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

[পাদটীকা]

a এই বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত জেগে থাকুন! ব্রোশারের ১২, ১৩ পৃষ্ঠা দেখুন।

[৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“হে আমার প্রজাগণ, উহা হইতে বাহিরে আইস”

[৩ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

মিথ্যা ধর্ম “পৃথিবীর রাজগণের উপরে” প্রভাব বিস্তার করে