সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গল্প ৬০

অবীগল ও দায়ূদ

অবীগল ও দায়ূদ

তুমি কি জান, দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে আসা এই সুন্দরী মহিলাটি কে? তার নাম অবীগল। তিনি অনেক বুদ্ধিমতী আর তিনি দায়ূদকে একটা মন্দ কাজ করা থেকে বিরত করেছেন। কিন্তু, সেই সম্বন্ধে জানার আগে, চলো আমরা দেখি যে, দায়ূদের কী হয়েছে।

শৌলের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর, দায়ূদ একটা গুহায় লুকিয়ে থাকেন। তার ভাইয়েরা ও তার পরিবারের বাকি সদস্যও তার সঙ্গে যোগ দেয়। সব মিলিয়ে তার কাছে প্রায় চার-শো জন লোক আসে আর তিনি তাদের নেতা হয়ে ওঠেন। এরপর দায়ূদ মোয়াবের রাজার কাছে গিয়ে বলেন: ‘যতদিন পর্যন্ত আমার অবস্থা কী হয়, তা বুঝতে না পারছি, ততদিন পর্যন্ত দয়া করে আমার বাবা ও মাকে আপনার কাছে থাকতে দিন।’ পরে, দায়ূদ ও তার লোকেরা পাহাড়ে লুকিয়ে থাকে।

এর পর পরই দায়ূদের সঙ্গে অবীগলের দেখা হয়। তার স্বামী নাবল একজন ধনী জমিদার। তার তিন হাজার মেষ ও এক হাজার ছাগল রয়েছে। নাবল খুব নীচমনা ব্যক্তি। কিন্তু, তার স্ত্রী অবীগল খুবই সুন্দরী। আর তিনি জানতেন, কীভাবে সঠিক কাজ করতে হয়। একবার, তিনি এমনকী তার পরিবারকে রক্ষা করেছিলেন। এসো দেখি, কীভাবে।

দায়ূদ ও তার লোকেরা নাবলের প্রতি দয়ার কাজ করেছে। তারা নাবলের মেষপালের সুরক্ষা করতে সাহায্য করেছে। তাই, একদিন দায়ূদ তার কয়েক জন লোককে নাবলের কাছে কিছু সাহায্য চাইতে পাঠান। দায়ূদের লোকেরা সেই সময়ে নাবলের কাছে আসে, যখন তিনি ও তার সহকারীরা মেষের লোম কাটছিলেন। এটা ছিল উৎসবের দিন আর তাই নাবলের খাওয়ার জন্য অনেক সুস্বাদু খাবারদাবার ছিল। তাই দায়ূদের লোকেরা এই কথা বলে: ‘আমরা আপনার প্রতি দয়ার কাজ করেছি। আমরা আপনার কোনো মেষ চুরি করিনি, বরং সেগুলোর দেখাশোনা করতে সাহায্য করেছি। এখন দয়া করে আমাদের কিছু খাবার দিন।’

‘আমি তোমাদের মতো লোকেদের আমার খাবার দেব না,’ নাবল বলেন। তিনি খুব খারাপভাবে কথা বলেন আর দায়ূদ সম্বন্ধেও খারাপ খারাপ কথা বলেন। লোকেরা যখন ফিরে গিয়ে দায়ূদকে তা বলে, তখন দায়ূদ প্রচণ্ড রেগে যান। ‘তোমাদের খড়্গ বেঁধে নাও!’ তিনি তার লোকেদের বলেন। আর এরপর তারা নাবল ও তার লোকেদের মেরে ফেলার জন্য যাত্রা শুরু করে।

নাবলের লোকেদের মধ্যে একজন, যে নাবলকে খারাপ কথাগুলো বলতে শুনেছিল, সে অবীগলকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলে। অবীগল তক্ষুনি কিছু খাদ্যদ্রব্য তৈরি করেন। তিনি সেগুলো নিয়ে কয়েকটা গাধার ওপর চাপিয়ে যাত্রা করতে শুরু করেন। তার যখন দায়ূদের সঙ্গে দেখা হয়, তখন তিনি গাধার ওপর থেকে নেমে এসে প্রণিপাত করেন এবং বলেন: ‘মহাশয়, দয়া করে আমার স্বামী নাবলের কথায় কিছু মনে করবেন না। সে একটা বোকা আর তাই বোকার মতোই কাজ করে। এখানে কিছু উপহার রয়েছে। দয়া করে এগুলো গ্রহণ করুন আর যা ঘটেছে, তার জন্য আমাদের ক্ষমা করে দিন।’

‘তুমি একজন বুদ্ধিমতী মেয়ে,’ দায়ূদ উত্তর দেন। ‘তুমি নাবলের নীচমনা আচরণের কারণে তাকে মেরে ফেলা থেকে আমাকে বিরত করেছ। এখন শান্তিতে ঘরে ফিরে যাও।’ পরে, যখন নাবল মারা যায়, তখন অবীগল দায়ূদের একজন স্ত্রী হন।