সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গল্প ৬৯

একটি মেয়ে একজন ক্ষমতাবান লোককে সাহায্য করে

একটি মেয়ে একজন ক্ষমতাবান লোককে সাহায্য করে

তুমি কি জান, এই ছোটো মেয়েটি কী বলছে? সে মহিলাটিকে যিহোবার ভাববাদী ইলীশায় সম্বন্ধে এবং যিহোবা ইলীশায়কে যে-চমৎকার কাজগুলো করতে সাহায্য করেছেন, সেই সম্বন্ধে বলছে। এই মহিলা যিহোবা সম্বন্ধে জানেন না, কারণ তিনি একজন ইস্রায়েলীয় নন। তাহলে চলো দেখি, এই মেয়েটি কীভাবে ওই মহিলার বাড়িতে এসেছে।

এই মহিলা একজন অরামীয়। তার স্বামী হলেন নামান, তিনি অরামীয় সেনাবাহিনীর একজন প্রধান ব্যক্তি। অরামীয়রা এই ছোটো মেয়েকে বন্দি করে নিয়ে আসে আর তাকে নামানের স্ত্রীর দাসী হিসেবে রাখা হয়।

নামানের কুষ্ঠ নামে এক খারাপ রোগ হয়েছে। এই রোগের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের মাংস খসে পড়ে। তাই, এই মেয়েটি নামানের স্ত্রীকে বলছে: ‘ইস্‌, আমার প্রভু যদি একবার ইস্রায়েলে যিহোবার ভাববাদীর কাছে যেতেন, তাহলে তিনি তার কুষ্ঠ রোগ ভালো করে দিতে পারতেন।’ পরে সেই মহিলার স্বামীকে তা জানানো হয়।

আসলে নামানও সুস্থ হওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন; তাই তিনি ইস্রায়েলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে পৌঁছে তিনি ইলীশায়ের বাড়িতে যান। ইলীশায় তার পরিচারককে দিয়ে বলে পাঠান, নামান যেন যর্দন নদীতে গিয়ে সাত বার স্নান করেন। এই কথা শুনে নামান ভীষণ রেগে যান আর তিনি বলেন: ‘আমার দেশের নদীগুলো ইস্রায়েলের যেকোনো নদীর চেয়ে অনেক ভালো!’ এই কথা বলে নামান চলে যান।

কিন্তু, নামানের একজন দাস তাকে বলেন: ‘প্রভু, ইলীশায় যদি আপনাকে এর চেয়ে কঠিন কোনো কিছু করতে বলতেন, তাহলে আপনি তো তা করতেন। তাহলে তার কথামতো কেন আপনি শুধু স্নানটা করে নিচ্ছেন না?’ নামান তার দাসদের কথা শোনেন এবং যর্দন নদীতে গিয়ে সাত বার ডুব দেন। তা করার পর, তার মাংস বলিষ্ঠ এবং সুন্দর হয়ে ওঠে!

নামান খুবই খুশি হন। তিনি ইলীশায়ের কাছে ফিরে গিয়ে বলেন: ‘এখন আমি নিশ্চিত হলাম যে, ইস্রায়েলের ঈশ্বরই এই পৃথিবীতে একমাত্র সত্য ঈশ্বর। তাই, দয়া করে আমার কাছ থেকে এই উপহার গ্রহণ করুন।’ কিন্তু, ইলীশায় উত্তর দেন: ‘না, আমি এগুলো নেব না।’ ইলীশায় জানেন, তার নিজের জন্য এই উপহার নেওয়া ভুল হবে, কারণ যিহোবাই আসলে নামানকে সুস্থ করেছেন। কিন্তু, ইলীশায়ের পরিচারক গেহসি সেই উপহারগুলো নিজে পেতে চায়।

তাই, গেহসি এই কাজটা করে। নামান চলে যাওয়ার পর, গেহসি তার পিছন পিছন দৌড়ে যায়। গেহসি বলেন, ‘ইলীশায় আমাকে আপনার কাছে এই কথা বলার জন্য পাঠিয়েছেন যে, এইমাত্র তার সঙ্গে দেখা করতে আসা কিছু বন্ধুর জন্য তিনি আপনার কাছ থেকে কিছু উপহার নিতে চান।’ এটা অবশ্যই একটা মিথ্যা কথা। কিন্তু নামান জানেন না, সেটা মিথ্যা কথা; তাই তিনি গেহসিকে কিছু জিনিস দিয়ে দেন।

গেহসি যখন বাড়ি ফিরে আসেন, তখন ইলীশায় ইতিমধ্যেই জেনে গিয়েছেন যে, গেহসি কী করেছে। যিহোবা তাকে বলে দিয়েছেন। তাই, তিনি বলেন: ‘তোমার এই মন্দ কাজের জন্য নামানের কুষ্ঠ তোমার ওপর আসবে।’ আর সঙ্গেসঙ্গেই তা হয়!

আমরা এইসমস্ত ঘটনা থেকে কী শিখতে পারি? প্রথমত, আমরা সেই ছোটো মেয়েটির মতো হতে চাই এবং যিহোবা সম্বন্ধে জানাতে চাই। এটা অনেক ভালো ফল নিয়ে আসতে পারে। দ্বিতীয়ত, আমাদের নামানের মতো গর্বিত হওয়া উচিত নয় যেমনটা তিনি প্রথমে হয়েছিলেন, বরং আমাদের ঈশ্বরের দাসদের বাধ্য হওয়া উচিত। আর তৃতীয়ত, আমাদের গেহসির মতো মিথ্যা কথা বলা উচিত নয়। বাইবেল পাঠ করে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি, তাই না?