সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যায় ১৬

দিয়াবল ও তার বিভিন্ন চাতুরীর প্রতিরোধ করুন

দিয়াবল ও তার বিভিন্ন চাতুরীর প্রতিরোধ করুন

“দিয়াবলের প্রতিরোধ কর, তাহাতে সে . . . পলায়ন করিবে।”—যাকোব ৪:৭.

১, ২. কাদের জন্য বাপ্তিস্মের উপলক্ষ্যগুলো আনন্দের?

আপনি যদি কয়েক দশক ধরে যিহোবার সেবা করে থাকেন, তাহলে আপনি সম্ভবত আমাদের সম্মেলনগুলোতে বাপ্তিস্মের অনেক বক্তৃতা শুনেছেন। কিন্তু, এইরকম উপলক্ষ্যগুলোতে আপনি যত বারই উপস্থিত থাকুন না কেন, আপনি সম্ভবত এখনও প্রতি বার সেই মুহূর্তটা দেখে অনুপ্রাণিত হন, যখন মিলনায়তনের সামনের সারিতে বসে থাকা ব্যক্তিরা বাপ্তিস্মের জন্য দাঁড়িয়ে নিজেদেরকে উপস্থাপন করে। সেই মুহূর্তে শ্রোতাদের মধ্যে এক উত্তেজনাময় অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে আর এর পর পরই আন্তরিক হাততালি শোনা যায়। যিহোবার পক্ষ নিয়েছে এমন মূল্যবান ব্যক্তি-বিশেষদের আরেকটা দলকে দেখে আপনার চোখ দিয়ে হয়তো জল গড়িয়ে পড়ে। এই সময়গুলোতে আমরা কত আনন্দই না অনুভব করি!

যদিও আমরা হয়তো আমাদের এলাকায় বছরে মাত্র কয়েক বার বাপ্তিস্ম নিতে দেখি কিন্তু স্বর্গদূতেরা আরও বেশি বার তা দেখার বিশেষ সুযোগ পেয়ে থাকে। তারা যখন বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার ব্যক্তিকে প্রতি সপ্তাহে যিহোবার সংগঠনের দৃশ্যত অংশের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখে, তখন “স্বর্গে” কতটা “আনন্দ” হয়, তা কি আপনি কল্পনা করতে পারেন? (লূক ১৫:৭, ১০) কোনো সন্দেহ নেই যে, এই বৃদ্ধি দেখে স্বর্গদূতেরা রোমাঞ্চিত হয়!—হগয় ২:৭.

দিয়াবল ‘গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায় বেড়াইতেছে’

৩. কেন শয়তান “গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়” ঘুরে বেড়াচ্ছে আর সে কী করতে চায়?

কিন্তু, এর সম্পূর্ণ বিপরীতে এমন আত্মিক প্রাণিরা রয়েছে, যারা সেই বাপ্তিস্ম দেখে ক্রুদ্ধ হয়। শয়তান ও মন্দদূতদের জন্য এটা দেখা বিরক্তিকর যে, হাজার হাজার ব্যক্তি এই কলুষিত জগৎকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ, শয়তান দম্ভ করে বলেছিল যে, কোনো মানুষই অকৃত্রিম প্রেমের বশবর্তী হয়ে যিহোবাকে সেবা করে না আর কেউই চরম পরীক্ষার মধ্যে বিশ্বস্ত থাকতে পারবে না। (পড়ুন, ইয়োব ২:৪, ৫.) প্রতি বার, যখনই কোনো ব্যক্তি নিজেকে যিহোবার কাছে উৎসর্গ করতে অনুপ্রাণিত হন, তখন শয়তান ভুল প্রমাণিত হয়। এটা ঠিক এমন যেন বছরের প্রতি সপ্তাহে শয়তান হাজার হাজার চপেটাঘাত খাচ্ছে। তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, সে “গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে”! (১ পিতর ৫:৮) এই ‘সিংহ’ আমাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে গ্রাস করার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে, আমাদের ক্ষতি করতে অথবা এমনকী ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়।—গীতসংহিতা ৭:১, ২; ২ তীমথিয় ৩:১২.

প্রতি বার, কোনো ব্যক্তি যখন নিজেকে যিহোবার কাছে উৎসর্গ করেন এবং বাপ্তাইজিত হন, তখন শয়তান ভুল প্রমাণিত হয়

৪, ৫. (ক) যিহোবা কোন দুটো গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে শয়তানের প্রভাবকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন? (খ) কোন বিষয়ে একজন সত্য খ্রিস্টান আশ্বাস পেতে পারেন?

যদিও আমরা এক হিংস্র শত্রুর মুখোমুখি হয়ে থাকি, তবুও আমাদের ভয়ে জর্জরিত হয়ে পড়ার কোনো কারণ নেই। কেন? কারণ যিহোবা দুটো গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে সেই “গর্জ্জনকারী সিংহের” প্রভাবকে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছেন। সেগুলো কী? প্রথমটা হল, যিহোবা ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছেন যে, সত্য খ্রিস্টানদের এক “বিস্তর লোক” আসন্ন “মহাক্লেশের” মধ্যে থেকে রক্ষা পাবে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১৪) ঈশ্বরের ভবিষ্যদ্‌বাণী কখনো নিষ্ফল হয় না। তাই, এমনকী শয়তানও জানে যে, একটা দল হিসেবে ঈশ্বরের লোকেরা তার নাগালের বাইরে।

দ্বিতীয় সীমাবদ্ধতাটা ঈশ্বরের একজন প্রাচীনকালের বিশ্বস্ত দাসের বলা এক মৌলিক সত্যের মধ্যে থেকে স্পষ্ট হয়। ভাববাদী অসরিয় রাজা আসাকে বলেছিলেন: “তোমরা যতদিন সদাপ্রভুর সঙ্গে থাক, ততদিন তিনিও তোমাদের সঙ্গে আছেন।” (২ বংশাবলি ১৫:২; পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১০:১৩.) অসংখ্য লিপিবদ্ধ উদাহরণ দেখায় যে, অতীতে শয়তান সবসময়ই ঈশ্বরের সেই দাসদের গ্রাস করতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা তাঁর নিকটবর্তী থেকেছে। (ইব্রীয় ১১:৪-৪০) বর্তমানে, যে-খ্রিস্টান ঈশ্বরের নিকটবর্তী থাকেন, তিনি দিয়াবলকে প্রতিরোধ ও এমনকী তাকে পরাজিত করতে সমর্থ হবেন। বস্তুতপক্ষে, ঈশ্বরের বাক্য আমাদেরকে আশ্বাস দেয়: “দিয়াবলের প্রতিরোধ কর, তাহাতে সে তোমাদের হইতে পলায়ন করিবে।”—যাকোব ৪:৭.

“দুষ্টতার আত্মাগণের সহিত আমাদের মল্লযুদ্ধ হইতেছে”

৬. কীভাবে শয়তান আলাদা আলাদা খ্রিস্টানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে?

রূপকভাবে বললে, শয়তান যুদ্ধে জয়ী হতে পারে না কিন্তু আমরা যদি অসতর্ক হয়ে পড়ি, তাহলে সে আলাদা আলাদা ব্যক্তি হিসেবে আমাদের উপর মারাত্মক দুর্ঘটনা নিয়ে আসতে পারে। শয়তান জানে যে, সে যদি যিহোবার সঙ্গে আমাদের বন্ধনকে দুর্বল করে দিতে পারে, তাহলে সে আমাদেরকে গ্রাস করতে পারবে। কীভাবে শয়তান তা করার চেষ্টা করে? আমাদেরকে প্রচণ্ডভাবে, ব্যক্তিগতভাবে এবং ধূর্ততার সঙ্গে আক্রমণ করার দ্বারা। আসুন আমরা শয়তানের এই প্রধান কৌশলগুলো বিবেচনা করি।

৭. কেন শয়তান যিহোবার লোকেদের প্রচণ্ডভাবে আক্রমণ করছে?

প্রচণ্ড আক্রমণ। প্রেরিত যোহন বলেছেন: “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” (১ যোহন ৫:১৯) এই বাক্যগুলোর মধ্যে সমস্ত সত্য খ্রিস্টানের জন্য এক সাবধানবাণী রয়েছে। শয়তান যেহেতু ইতিমধ্যেই মানবজাতির সম্পূর্ণ দুষ্ট জগৎকে গ্রাস করে ফেলেছে, তাই সে এখন সেই ব্যক্তিদের উপর তার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত ও তার আক্রমণের প্রচণ্ডতা বাড়াতে পারে, যারা তাকে কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছে আর তারা হল ঈশ্বরের লোকেরা। (মীখা ৪:১; যোহন ১৫:১৯; প্রকাশিত বাক্য ১২:১২, ১৭) সে খুবই রাগাপন্ন কারণ সে জানে যে, তার কাল সংক্ষিপ্ত। তাই, সে চাপকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমানে আমরা, ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য তার চূড়ান্ত নিষ্ঠুর প্রচেষ্টাগুলোর মুখোমুখি হচ্ছি।

৮. প্রেরিত পৌল যখন বলেছিলেন যে, দুষ্টতার আত্মাগণের সঙ্গে আমাদের “মল্লযুদ্ধ” হচ্ছে, তখন তিনি কী বুঝিয়েছিলেন?

ব্যক্তিগত মল্লযুদ্ধ। প্রেরিত পৌল সহখ্রিস্টানদের সাবধান করে দিয়েছিলেন: “স্বর্গীয় স্থানে দুষ্টতার আত্মাগণের সহিত আমাদের মল্লযুদ্ধ হইতেছে।” (ইফিষীয় ৬:১২) কেন পৌল “মল্লযুদ্ধ” শব্দটা ব্যবহার করেছেন? কারণ এটা হাতাহাতি যুদ্ধ এবং সামনাসামনি লড়াইয়ের ধারণা বহন করে। এভাবে, এই শব্দটা ব্যবহার করার দ্বারা পৌল জোর দিয়েছিলেন যে, আমাদের প্রত্যেকের দুষ্ট আত্মাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত লড়াই রয়েছে। আমরা যে-দেশে বাস করি, সেখানে দুষ্ট আত্মা সম্বন্ধীয় বিশ্বাস থাকুক বা না থাকুক, আমাদের কখনো এই কথা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, আমরা যখন যিহোবার কাছে নিজেদের উৎসর্গ করেছি, তখন থেকেই আমরা রূপকভাবে মল্লযুদ্ধের গালিচায় পা দিয়েছি। অন্ততপক্ষে, উৎসর্গীকরণের পর থেকে প্রত্যেক খ্রিস্টান একটা লড়াইয়ে আবদ্ধ হয়েছে। তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, পৌল ইফিষের খ্রিস্টানদের তিন বার ‘দাঁড়াইয়া থাকিবার’ জন্য জোরালো পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেছিলেন!—ইফিষীয় ৬:১১, ১৩-১৫.

৯. (ক) কেন শয়তান ও মন্দদূতেরা “নানাবিধ চাতুরী” কাজে লাগায়? (খ) কেন শয়তান আমাদের চিন্তাভাবনাকে কলুষিত করার চেষ্টা করে আর কীভাবে আমরা তার প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে পারি? ( “ শয়তানের ধূর্ততা থেকে সাবধান থাকুন!” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।) (গ) আমরা এখন কোন চাতুরী সম্বন্ধে বিবেচনা করব?

ধূর্ত ফন্দি। পৌল খ্রিস্টানদেরকে শয়তানের “নানাবিধ চাতুরীর” বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। (ইফিষীয় ৬:১১) লক্ষ করুন যে, পৌল বহুবচন শব্দ ব্যবহার করেছেন। দুষ্ট আত্মারা একটা নয় বরং বিভিন্ন ধরনের ধূর্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে—আর তা উপযুক্ত কারণেই। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিশ্বাসী, যারা এক ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তারা অন্য ধরনের পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে নতিস্বীকার করেছেন। তাই, দিয়াবল ও মন্দদূতেরা ভালো করে আমাদের প্রত্যেকের আচরণ পর্যবেক্ষণ করে, যাতে আমাদের দুর্বল স্থান খুঁজে বের করতে পারে। এরপর তারা আমাদের যেকোনো আধ্যাত্মিক দুর্বলতাকে স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগায়। তবে, আনন্দের বিষয় হল, আমরা দিয়াবলের অনেক পদ্ধতি শনাক্ত করতে পারি কারণ সেগুলো বাইবেলে প্রকাশ করা হয়েছে। (২ করিন্থীয় ২:১১) এর আগে এই প্রকাশনায় আমরা বস্তুবাদিতার টোপ, ক্ষতিকর মেলামেশা এবং যৌন অনৈতিকতার মতো বিভিন্ন ফন্দি নিয়ে আলোচনা করেছি। আসুন, এখন আমরা শয়তানের আরও একটা চাতুরী—প্রেতচর্চা—সম্বন্ধে বিবেচনা করি।

প্রেতচর্চা—বিশ্বাসঘাতকতার এক কাজ

১০. (ক) প্রেতচর্চা কী? (খ) প্রেতচর্চাকে যিহোবা কোন দৃষ্টিতে দেখেন আর আপনি সেটাকে কীভাবে দেখে থাকেন?

১০ প্রেতচর্চা বা ভৌতিক ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সরাসরি দুষ্ট আত্মাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন। মন্ত্র ব্যবহার বা ভবিষ্যৎকথন, মায়াবী, ঐন্দ্রজালিক বা জাদুমন্ত্র ব্যবহার করা এবং প্রেতসাধক বা মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হল প্রেতচর্চার কিছু দিক। আমরা খুব ভালো করে জানি যে, প্রেতচর্চাকে যিহোবা “ঘৃণার্হ কার্য্য” হিসেবে দেখেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১০-১২; প্রকাশিত বাক্য ২১:৮) যেহেতু আমাদেরকেও ‘যাহা মন্দ তাহা নিতান্তই ঘৃণা করিতে’ হবে, তাই এটা কল্পনাও করা যায় না যে, আমরা কখনো দুষ্ট আত্মিকবাহিনীর সঙ্গ লাভ করার চেষ্টা করব। (রোমীয় ১২:৯) তা করা আমাদের স্বর্গীয় পিতা যিহোবার বিরুদ্ধে কী এক ঘৃণ্য বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ কাজই না হবে!

১১. শয়তান যদি আমাদেরকে প্রেতচর্চার দিকে প্ররোচিত করতে পারে, তাহলে কেন তা তার জন্য এক মহান বিজয় হবে? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১১ কিন্তু, প্রেতচর্চায় জড়িত হওয়া হল, যিহোবার বিরুদ্ধে চরম প্রতারণা আর সেই কারণেই শয়তান আমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে এর মধ্যে যুক্ত করতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। প্রত্যেক বার শয়তান যখনই একজন খ্রিস্টানকে প্রেতচর্চার দিকে প্ররোচিত করতে পারে, তখনই সে এক মহান বিজয় লাভ করে থাকে। কেন? এই তুলনাটা চিন্তা করুন: একজন সৈনিককে যদি তার সেনাদল পরিত্যাগ করে বিশ্বাসঘাতকতা করার এবং শত্রুদলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য প্ররোচিত করা যায়, তাহলে শত্রুপক্ষের সেনাপতি অত্যন্ত আনন্দিত হবেন। তিনি হয়তো এমনকী সেই বিশ্বাসঘাতককে এক পুরস্কার হিসেবে জাহির করতে পারেন, যাতে সেই সৈনিকের প্রাক্তন সেনাপতিকে অপমান করা যায়। একইভাবে, একজন খ্রিস্টান যদি প্রেতচর্চার দিকে ধাবিত হন, তাহলে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ও জেনে-শুনে যিহোবাকে পরিত্যাগ করবেন এবং নিজেকে সরাসরি শয়তানের আদেশাধীনে নিয়ে যাবেন। কল্পনা করে দেখুন যে, সেই পলাতক ব্যক্তিকে যুদ্ধের একটা পুরস্কার হিসেবে জাহির করতে পারা শয়তানকে কত আনন্দিতই না করবে! আমাদের মধ্যে কেউ কি দিয়াবলের পক্ষে এইরকম এক বিজয় এনে দিতে চায়? কখনোই না! আমরা বিশ্বাসঘাতক নই।

সন্দেহ জাগিয়ে তোলার জন্য প্রশ্ন উত্থাপন করা

১২. প্রেতচর্চা সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করার জন্য শয়তান কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে?

১২ যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা প্রেতচর্চাকে ঘৃণা সহকারে এড়িয়ে চলব, ততক্ষণ পর্যন্ত শয়তান আমাদের বিরুদ্ধে সেটা ব্যবহার করে সফল হবে না। তাই, সে বুঝতে পারে যে, এর জন্য তাকে আমাদের চিন্তাভাবনাকে পরিবর্তন করতে হবে। কীভাবে? সে খ্রিস্টানদেরকে এতটাই বিভ্রান্ত করার উপায় খোঁজে যে, কেউ কেউ যেন “মন্দকে ভাল, আর ভালকে মন্দ” বলে মনে করে। (যিশাইয় ৫:২০) তা করার জন্য শয়তান প্রায়ই তার এমন একটা পদ্ধতির উপর নির্ভর করে, যা দীর্ঘসময় ধরে কার্যকারী হয়ে এসেছে—সে সন্দেহ জাগিয়ে তোলার জন্য প্রশ্ন উত্থাপন করে।

১৩. কীভাবে শয়তান সন্দেহ জাগিয়ে তোলার জন্য প্রশ্ন উত্থাপন করার পদ্ধতি ব্যবহার করেছে?

১৩ অতীতে শয়তান কীভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করেছিল, তা লক্ষ করুন। এদনে সে হবাকে জিজ্ঞেস করেছিল: “ঈশ্বর কি বাস্তবিক বলিয়াছেন, তোমরা এই উদ্যানের কোন বৃক্ষের ফল খাইও না?” ইয়োবের সময়ে, স্বর্গে স্বর্গদূতদের এক সমাবেশে শয়তান এই প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল: “ইয়োব কি বিনা লাভে ঈশ্বরকে ভয় করে?” আর যিশুর পার্থিব পরিচর্যার শুরুতে শয়তান এই কথা বলার দ্বারা খ্রিস্টকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহ্বান করেছিল: “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্ত্র হও, তবে বল, যেন এই পাথরগুলা রুটী হইয়া যায়।” কল্পনা করুন—যিশুর ক্ষেত্রে শয়তান সেই কথাগুলো নিয়ে বিদ্রূপ করার দুঃসাহস দেখিয়েছিল, যা স্বয়ং যিহোবা প্রায় ছয় সপ্তাহ আগে বলেছিলেন: “ইনিই আমার প্রিয় পুত্ত্র, ইঁহাতেই আমি প্রীত”!—আদিপুস্তক ৩:১; ইয়োব ১:৯; মথি ৩:১৭; ৪:৩.

১৪. (ক) প্রেতচর্চা সম্বন্ধে অনিশ্চয়তা জাগিয়ে তোলার জন্য কীভাবে শয়তান তার ফন্দি ব্যবহার করে থাকে? (খ) আমরা এখন কী বিবেচনা করব?

১৪ বর্তমানে, দিয়াবল প্রেতচর্চার মন্দতা সম্বন্ধে সন্দেহ জাগিয়ে তোলার প্রচেষ্টায় একই ফন্দি ব্যবহার করে থাকে। দুঃখের বিষয় হল, কিছু বিশ্বাসীর মনে সন্দেহ জাগিয়ে তোলার ক্ষেত্রে সে সফল হয়েছে। তারা এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে যে, কিছু ধরনের প্রেতচর্চা আসলেই তেমন মন্দ কি না। (২ করিন্থীয় ১১:৩) কীভাবে আমরা এই ধরনের ব্যক্তিদের তাদের চিন্তাভাবনা রদবদল করার জন্য সাহায্য করতে পারি? কীভাবে আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, শয়তানের ফন্দি আমাদেরকে প্রভাবিত করতে ব্যর্থ হবে? এর উত্তর পাওয়ার জন্য আসুন আমরা জীবনের দুটো ক্ষেত্র বিবেচনা করি, যেগুলো শয়তান প্রেতচর্চার বিভিন্ন বিষয় দ্বারা অলক্ষিতে কলুষিত করেছে। সেগুলো হচ্ছে আমোদপ্রমোদ ও স্বাস্থ্যসেবা।

আমাদের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদাগুলোকে স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগানো

১৫. (ক) পাশ্চাত্যের অনেকে প্রেতচর্চাকে কীভাবে দেখে থাকে? (খ) কীভাবে কিছু খ্রিস্টান প্রেতচর্চা সম্বন্ধে জগতের দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন?

১৫ বিশেষভাবে পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে জাদুবিদ্যা, ডাকিনীবিদ্যা এবং অন্যান্য ধরনের প্রেতচর্চাকে অনেক হালকাভাবে নেওয়া হয়ে থাকে। চলচ্চিত্র, বইপুস্তিকা, টেলিভিশনের অনুষ্ঠান এবং কম্পিউটারের গেমস্‌গুলোতে দিন দিন আরও বেশি করে ভৌতিক ক্রিয়াকলাপের অভ্যাসগুলোকে নিছক মজা, চতুরতাপূর্ণ ও অক্ষতিকর হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। জাদুবিদ্যার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে এমন কিছু চলচ্চিত্র ও বইপুস্তিকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্পষ্টতই, মন্দদূতেরা জাদুবিদ্যার বিপদকে হালকাভাবে তুলে ধরায় সফল হয়েছে। প্রেতচর্চাকে হালকাভাবে নেওয়ার এই প্রবণতা কি খ্রিস্টানদের উপর প্রভাব ফেলেছে? কারো কারো চিন্তাভাবনার উপর ফেলেছে। কীভাবে? এর একটা আদর্শ উদাহরণ হল, একজন খ্রিস্টান জাদুবিদ্যার উপর কেন্দ্রীভূত একটা চলচ্চিত্র দেখার পর বলেছিলেন: “আমি চলচ্চিত্রটা দেখেছি কিন্তু আমি প্রেতচর্চায় রত হইনি।” কেন এই ধরনের যুক্তি বিপদজনক?

১৬. জাদুবিদ্যার অভ্যাসকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আমোদপ্রমোদ বাছাই করা কেন বিপদজনক?

১৬ যদিও প্রেতচর্চায় রত হওয়া ও তা দেখার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে কিন্তু নিশ্চিতভাবেই এর অর্থ এই নয় যে, জাদুবিদ্যাকে তুলে ধরে এমন বিষয়গুলো দেখা কোনো বিপদ নিয়ে আসবে না। কেন? এটা বিবেচনা করুন: ঈশ্বরের বাক্য ইঙ্গিত দেয় যে, শয়তান বা তার মন্দদূত, কারোরই আমাদের চিন্তাভাবনা পড়ার কোনো ক্ষমতা নেই। * তাই, আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা কী চিন্তা করছি তা খুঁজে বের করার এবং আমাদের মধ্যে কোনো আধ্যাত্মিক দুর্বলতা নির্ণয় করার জন্য দুষ্ট আত্মারা আমাদের কাজগুলোকে—ও সেইসঙ্গে আমাদের আমোদপ্রমোদ বাছাইকে—নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে। তাই, একজন খ্রিস্টানের আচরণ যখন দেখায় যে, তিনি ভূতুড়িয়া, জাদুমন্ত্র, ভৌতিক কার্যকলাপ অথবা একই ধরনের ভৌতিক বিষয়বস্তুর উপর কেন্দ্রীভূত চলচ্চিত্র ও বইপুস্তিকা উপভোগ করেন, তখন তিনি মন্দদূতদের কাছে এক বার্তা পাঠান। বস্তুতপক্ষে, তিনি তাদেরকে তার দুর্বল স্থান সম্বন্ধে জানিয়ে দিচ্ছেন! ফল স্বরূপ, মন্দদূতেরা সেই খ্রিস্টানের সঙ্গে তাদের মল্লযুদ্ধকে জোরদার করতে পারে, যাতে তারা তাকে রূপকভাবে ধরাশায়ী না করা পর্যন্ত সেই দুর্বলতাকে স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগাতে পারে, যেটা তিনি প্রকাশ করেছেন। বস্তুতপক্ষে, যে-ব্যক্তিদের প্রেতচর্চার প্রতি আগ্রহ, জাদুবিদ্যাকে ফলাও করে তুলে ধরে এমন আমোদপ্রমোদের মাধ্যমে প্রথমে জেগে উঠেছিল, তারা অবশেষে প্রেতচর্চায় আসলেই রত হয়ে পড়েছে।—পড়ুন, গালাতীয় ৬:৭.

অসুস্থতার সময় যিহোবার সমর্থন থেকে উপকার লাভ করুন

১৭. কোন চাতুরীর মাধ্যমে শয়তান হয়তো অসুস্থ ব্যক্তিদের স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগাতে পারে?

১৭ শয়তান কেবল আমোদপ্রমোদের প্রতি আমাদের আকাঙ্ক্ষাকেই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে আমাদের প্রয়োজনীয়তাকেও স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে। কীভাবে? একজন খ্রিস্টান, যার স্বাস্থ্য আরোগ্য লাভ করার শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দিন দিন খারাপ হতে থাকে, তিনি হয়তো হতাশ হয়ে পড়তে পারেন। (মার্ক ৫:২৫, ২৬) এটা শয়তান ও মন্দদূতদের সেই ব্যক্তিকে স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগানোর অনুকূল সুযোগ করে দিতে পারে। মন্দদূতেরা একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে মরিয়া হয়ে এমন চিকিৎসা বা পদ্ধতির দিকে ধাবিত হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করতে পারে, যেটার সঙ্গে ‘অধর্ম্মের [‘ভূতুড়ে শক্তির’ NW]’ অথবা প্রেতচর্চার—অতি দুষ্কর্ম কোনো কিছুর—ব্যবহার যুক্ত। (যিশাইয় ১:১৩) মন্দদূতদের সেই চাতুরী যদি সফল হয়, তাহলে সেটা ঈশ্বরের সঙ্গে অসুস্থ ব্যক্তির সম্পর্ককে দুর্বল করে দিতে পারে। কীভাবে?

১৮. একজন খ্রিস্টান কোন ধরনের পদ্ধতিগুলো প্রত্যাখ্যান করবেন এবং কেন?

১৮ যে-ইস্রায়েলীয়রা ‘ভূতুড়ে শক্তির’ আশ্রয় নিয়েছিল, তাদেরকে যিহোবা এই বলে সাবধান করেছিলেন: “তোমরা অঞ্জলি প্রসারণ করিলে আমি তোমাদের হইতে আমার চক্ষু আচ্ছাদন করিব; যদ্যপি অনেক প্রার্থনা কর, তথাপি শুনিব না।” (যিশাইয় ১:১৫) অবশ্য, আমরা সবসময়ই এমন যেকোনো কিছু এড়িয়ে চলতে চাই, যা হয়তো আমাদের প্রার্থনাকে ব্যাহত করতে ও যিহোবার কাছ থেকে আমরা যে-সমর্থন লাভ করি, তা হ্রাস করে দিতে পারে—আর অসুস্থতার সময় তা আমরা আরও বেশি করে করতে চাই। (গীতসংহিতা ৪১:৩) তাই, যদি এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, কোনো একটা রোগনির্ণয় পদ্ধতি বা চিকিৎসাবিদ্যার মধ্যে প্রেতচর্চা সংক্রান্ত বিষয় থাকতে পারে, তাহলে একজন সত্য খ্রিস্টানের সেটা প্রত্যাখ্যান করা উচিত। * (মথি ৬:১৩) এভাবে, তিনি যিহোবার সমর্থন লাভ করে চলার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারবেন।— “ এটা কি আসলেই প্রেতচর্চা?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

যখন মন্দদূতদের সম্বন্ধে অনেক গল্প শোনা যায়

১৯. (ক) দিয়াবল তার ক্ষমতা সম্বন্ধে অনেক লোককে কী বিশ্বাস করানোর দ্বারা বোকা বানিয়েছে? (খ) সত্য খ্রিস্টানদের কোন গল্পগুলো এড়িয়ে চলা উচিত?

১৯ পাশ্চাত্যের দেশগুলোর অনেক লোক যেখানে শয়তানের ক্ষমতাকে হালকাভাবে দেখে থাকে, সেখানে বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। সেখানে দিয়াবল অনেককে এটা বিশ্বাস করানোর দ্বারা বোকা বানিয়েছে যে, তার যতটা না ক্ষমতা রয়েছে, সেটার চেয়ে সে আরও বেশি ক্ষমতাবান। কিছু লোক তাদের দৈনন্দিন সমস্ত কাজকর্ম দুষ্ট আত্মাদের ভয়ে করে থাকে। মন্দদূতদের শক্তিশালী কাজগুলো সম্বন্ধে অনেক গল্প শোনা যায়। এই ধরনের গল্প প্রায়ই উপভোগ্য করে বলা হয়ে থাকে; লোকেরা এগুলো শুনে মুগ্ধ হয়। আমাদের কি এই ধরনের গল্প ছড়ানোর ক্ষেত্রে অংশ নেওয়া উচিত? না, সত্য ঈশ্বরের দাসেরা দুটো গুরুত্বপূর্ণ কারণে তা করা এড়িয়ে চলে।

২০. কীভাবে একজন ব্যক্তি হয়তো অনিচ্ছাকৃতভাবে শয়তানের অপপ্রচার ছড়িয়ে দিতে পারেন?

২০ প্রথমত, মন্দদূতদের সাফল্য সম্বন্ধে গল্প ছড়ানোর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি আসলে শয়তানকে তার প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করে থাকে। কীভাবে? ঈশ্বরের বাক্য নিশ্চিত করে যে, শয়তান পরাক্রমী কাজ করতে সমর্থ কিন্তু বাইবেল আমাদের এই বিষয়েও সাবধান করে দেয় যে, সে “মিথ্যার . . . নানা চিহ্ন” এবং “প্রতারণা” ব্যবহার করে। (২ থিষলনীকীয় ২:৯, ১০) যেহেতু শয়তান হল প্রধান প্রতারক, তাই সে জানে যে, কীভাবে সেই ব্যক্তিদের মনকে কলুষিত করা যায়, যাদের প্রেতচর্চার প্রতি আগ্রহ রয়েছে এবং কীভাবে তাদেরকে সেই বিষয়গুলো বিশ্বাস করানো যায়, যেগুলো সত্য নয়। এই ধরনের ব্যক্তিরা হয়তো আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে যে, তারা কিছু দেখেছে ও শুনেছে এবং তারা হয়তো তাদের অভিজ্ঞতাগুলো সত্য হিসেবে বর্ণনা করতে পারে। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, তাদের গল্পগুলো বার বার বলার দ্বারা অতিরঞ্জিত হয়ে ওঠে। একজন খ্রিস্টান যদি এই ধরনের গল্প ছড়ান, তাহলে বস্তুতপক্ষে তিনি দিয়াবলের—‘মিথ্যাবাদীর পিতার’—ইচ্ছা পালন করছেন। তিনি শয়তানের অপপ্রচার ছড়িয়ে দিচ্ছেন।—যোহন ৮:৪৪; ২ তীমথিয় ২:১৬.

২১. কীসের উপর আমরা আমাদের কথাবার্তাকে কেন্দ্রীভূত রাখতে চাই?

২১ দ্বিতীয়ত, একজন খ্রিস্টানের যদি অতীতে দুষ্ট আত্মাদের সঙ্গে সত্যিই কোনোভাবে যোগাযোগ থেকেও থাকে, তিনি সহবিশ্বাসীদের কাছে সেই সম্বন্ধে বার বার গল্প বলা থেকে বিরত থাকবেন। কেন? আমাদের উপদেশ দেওয়া হয়েছে: ‘বিশ্বাসের আদিকর্ত্তা ও সিদ্ধিকর্ত্তা যীশুর প্রতি দৃষ্টি রাখ।’ (ইব্রীয় ১২:২) হ্যাঁ, আমাদের খ্রিস্টের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে হবে, শয়তানের প্রতি নয়। এটা উল্লেখযোগ্য যে, পৃথিবীতে থাকাকালীন যিশু তাঁর শিষ্যদেরকে দুষ্ট আত্মাদের সম্বন্ধে গল্প বলেননি, যদিও তিনি শয়তান কী করতে পারে বা কী করতে পারে না, সেই সম্বন্ধে অনেক কিছু বলতে পারতেন। এর পরিবর্তে, যিশু রাজ্যের বার্তার প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিলেন। তাই, যিশু ও তাঁর প্রেরিতদের অনুকরণ করে আমরা আমাদের কথাবার্তাকে “ঈশ্বরের মহৎ মহৎ কর্ম্মের” উপর কেন্দ্রীভূত রাখতে চাই।—প্রেরিত ২:১১; লূক ৮:১; রোমীয় ১:১১, ১২.

২২. কীভাবে আমরা “স্বর্গে আনন্দ” হওয়ার ক্ষেত্রে ক্রমাগত অবদান রাখতে পারি?

২২ এটা ঠিক যে, যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নষ্ট করার প্রচেষ্টায় শয়তান প্রেতচর্চা-সহ বিভিন্ন চাতুরী ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু, যা মন্দ সেটাকে পরিহার করে এবং যা ভালো সেটাতে আসক্ত থেকে, আমরা সমস্ত ধরনের প্রেতচর্চাকে প্রত্যাখ্যান করার বিষয়ে আমাদের দৃঢ়সংকল্পকে দুর্বল করে দেওয়ার কোনো সুযোগ দিয়াবলকে দিই না। (পড়ুন, ইফিষীয় ৪:২৭.) একটু কল্পনা করুন, দিয়াবল বিলুপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা যদি ক্রমাগত “দিয়াবলের নানাবিধ চাতুরীর সম্মুখে দাঁড়াইতে” পারি, তাহলে “স্বর্গে” কত মহা ‘আনন্দই’ না হবে!—লূক ১৫:৭; ইফিষীয় ৬:১১.

^ অনু. 16 শয়তানকে (বিপক্ষ, অপবাদক, প্রতারক, প্রলোভনকারী, মিথ্যাবাদী) যে-বর্ণনামূলক নাম দেওয়া হয়েছে, তা এই ইঙ্গিত দেয় না যে, আমাদের হৃদয় ও মনের অনুসন্ধান করার ক্ষমতা তার রয়েছে। কিন্তু এর বৈসাদৃশ্যে, যিহোবাকে এমনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি “চিত্তের পরীক্ষা করেন” এবং যিশুকে এমনভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি “মর্ম্মের ও হৃদয়ের অনুসন্ধানকারী।”—হিতোপদেশ ১৭:৩; প্রকাশিত বাক্য ২:২৩.

^ অনু. 18 আরও তথ্যের জন্য ১৯৯৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার ১৯-২২ পৃষ্ঠায় “এই স্বাস্থ্যপরীক্ষা কি আপনার জন্য?” নামক প্রবন্ধটা এবং ২০০১ সালের ৮ জানুয়ারি সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার “বাইবেলের দৃষ্টিভঙ্গি: আপনি যে-চিকিৎসাপদ্ধতি বাছাই করেন—তা কি গুরুত্বপূর্ণ?” নামক প্রবন্ধটা দেখুন।