সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠ ১১

বাইবেলের নীতিগুলো কীভাবে আমাদের উপকৃত করে?

বাইবেলের নীতিগুলো কীভাবে আমাদের উপকৃত করে?

১. কেন আমাদের নির্দেশনা প্রয়োজন?

কীভাবে বাইবেলের নীতিগুলো আমাদেরকে নিরাপত্তামূলক সতর্ক ব্যবস্থা নিতে পরিচালিত করে?—গীতসংহিতা ৩৬:৯.

আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের চেয়েও আরও অনেক বেশি বিজ্ঞ। একজন প্রেমময় পিতা হিসেবে তিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন। তিনি এমনটাও চান না যে, আমরা একেবারে স্বাধীনভাবে চলি। (যিরমিয় ১০:২৩) ঠিক যেমন একটা ছোটো বাচ্চার তার বাবা-মায়ের নির্দেশনা প্রয়োজন, তেমনই আমাদের সকলের ঈশ্বরের নির্দেশনা প্রয়োজন। (যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮) বাইবেলের নীতিগুলো সেই নির্দেশনা জোগায়, যা আসলে ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার।—পড়ুন, ২ তীমথিয় ৩:১৬.

যিহোবার আইন এবং নীতিগুলো আমাদেরকে এখনই সর্বোত্তম জীবনধারা সম্বন্ধে শিক্ষা দেয় এবং দেখায় যে, ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে অনন্তকালীন পুরস্কার লাভ করতে পারি। যেহেতু ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন, তাই তাঁর নির্দেশনার প্রতি উপলব্ধি সহকারে সাড়া দেওয়া আমাদের জন্য উপযুক্ত।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১৯:৭, ১১; প্রকাশিত বাক্য ৪:১১.

২. বাইবেলের নীতিগুলো আসলে কী?

বাইবেলের নীতিগুলো হচ্ছে মৌলিক শিক্ষা। অন্যদিকে, আইন হয়তো নির্দিষ্ট পরিস্থিতিগুলোতে ব্যবহার করা যায়। (দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৮) কোনো একটা পরিস্থিতিতে কীভাবে বাইবেলের একটা নীতি প্রযোজ্য, তা বোঝার জন্য আমাদের পরিণামদর্শিতা বা চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। (হিতোপদেশ ২:১০-১২) উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, জীবন হল ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার। এই মৌলিক নীতি আমাদের কর্মক্ষেত্রে, বাড়িতে এবং ভ্রমণের সময় নির্দেশনা দিতে পারে। এটা আমাদেরকে নিরাপত্তামূলক সতর্ক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পরিচালিত করে।—পড়ুন, প্রেরিত ১৭:২৮.

৩. কোন দুটো মৌলিক নীতি প্রধান?

যিশু বলেছিলেন যে, দুটো নীতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমটা মানুষের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য সম্বন্ধে প্রকাশ করে আর তা হল, ঈশ্বরকে জানা, তাঁকে প্রেম করা এবং বিশ্বস্ততার সঙ্গে তাঁর সেবা করা। প্রথম নীতিটার দ্বারা আমাদের সমস্ত সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে দেখা উচিত। (হিতোপদেশ ৩:৬) যারা এই নীতি অনুযায়ী জীবনযাপন করে, তারা ঈশ্বরের সঙ্গে বন্ধুত্ব, প্রকৃত সুখ এবং অনন্তজীবন লাভ করে।—পড়ুন, মথি ২২:৩৬-৩৮.

দ্বিতীয় নীতিটা আমাদেরকে অন্যদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়। (১ করিন্থীয় ১৩:৪-৭) এই দ্বিতীয় নীতিটা প্রয়োগ করার সঙ্গে লোকেদের সঙ্গে ঈশ্বর যেভাবে আচরণ করেন, সেইমতো আচরণ করা জড়িত।—পড়ুন, মথি ৭:১২; ২২:৩৯, ৪০.

৪. বাইবেলের নীতিগুলো কীভাবে আমাদের উপকৃত করে?

বাইবেলের নীতিগুলো পরিবারগুলোকে শেখায় যে, কীভাবে প্রেমের দ্বারা একতাবদ্ধ হওয়া যায়। (কলসীয় ৩:১২-১৪) এ ছাড়া, ঈশ্বরের বাক্য আরেকটা নির্দেশনামূলক নীতি সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়ার দ্বারা পরিবারগুলোকে সুরক্ষা করে আর সেটা হল, বিয়ে স্থায়ী হওয়া উচিত।—পড়ুন, আদিপুস্তক ২:২৪.

বাইবেলের শিক্ষাগুলো অনুসরণ করা আমাদের বস্তুগত এবং আবেগগত মঙ্গলকে সুরক্ষিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কর্মকর্তারা প্রায়ই এমন কর্মীদের পছন্দ করে, যারা সততা এবং পরিশ্রমের বা অধ্যবসায়ের ব্যাপারে বাইবেলের নীতিগুলো অনুসরণ করে। (হিতোপদেশ ১০:৪, ২৬; ইব্রীয় ১৩:১৮) এ ছাড়া, ঈশ্বরের বাক্য আমাদেরকে আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে এবং সমস্ত বস্তুগত বিষয়ের ঊর্ধ্বে ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্যবান বলে গণ্য করতে শিক্ষা দেয়।—পড়ুন, মথি ৬:২৪, ২৫, ৩৩; ১ তীমথিয় ৬:৮-১০.

বাইবেলের নীতিগুলো কাজে লাগানো আমাদের স্বাস্থ্যেক সুরক্ষা করতে পারে। (হিতোপদেশ ১৪:৩০; ২২:২৪, ২৫) উদাহরণস্বরূপ, মত্ততার বিরুদ্ধে ঈশ্বরের আইন সম্পূর্ণরূপে মেনে চলা আমাদেরকে মারাত্মক রোগব্যাধি এবং দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষা করে। (হিতোপদেশ ২৩:২০) যিহোবা আমাদেরকে মদ্য-জাতীয় পানীয় পান করার অনুমতি দিয়েছেন তবে কেবল পরিমিত মাত্রায়। (গীতসংহিতা ১০৪:১৫; ১ করিন্থীয় ৬:১০) ঈশ্বরীয় নীতিগুলো কেবল আমাদের কাজগুলোকেই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে আমাদের চিন্তাভাবনাকেও সুরক্ষিত করার বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত করে। (গীতসংহিতা ১১৯:৯৭-১০০) তবে, সত্য খ্রিস্টানরা কেবল নিজেদের উপকারের জন্যই ঈশ্বরের মানগুলোকে সম্মান করে না। তারা তা যিহোবার সম্মানের জন্য করে থাকে।—পড়ুন, মথি ৫:১৪-১৬.