সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রশ্ন ৪

ভুল শোধরানোর জন্য আমার কী করা উচিত?

ভুল শোধরানোর জন্য আমার কী করা উচিত?

যে-কারণে এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ

তুমি যদি ভুল স্বীকার করো, তা হলে তুমি আরও দায়িত্ববান ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি হয়ে উঠবে।

তুমি হলে কী করতে?

এই দৃশ্যটা কল্পনা করো: বন্ধুদের সঙ্গে খেলার সময় টিম একটা বল ছোড়ে। বলটা গিয়ে প্রতিবেশীর গাড়ির কাচে লাগে এবং সেটা ভেঙে যায়।

তুমি যদি টিমের জায়গায় থাকতে, তা হলে তুমি কী করতে?

একটু থেমে চিন্তা করো!

তোমার সামনে তিনটে বাছাই রয়েছে:

১. পালিয়ে যাওয়া।

২. অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া।

৩. প্রতিবেশীকে বিষয়টা জানানো এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

তোমার কাছে প্রথম বাছাইটা সহজ বলে মনে হতে পারে। কিন্তু, ভুল স্বীকার করা সবসময়ই উত্তম, তা সেটা গাড়ির কাচ ভাঙাই হোক অথবা অন্য কোনো ভুল হোক।

ভুল স্বীকার করার তিনটে কারণ

১. এটাই সঠিক কাজ।

বাইবেল বলে: ‘আমরা সর্ব্ববিষয়ে সদাচরণ করিতে বাঞ্ছা করিতেছি।’—ইব্রীয় ১৩:১৮.

২. যারা ভুল স্বীকার করে, তাদেরকে লোকেরা সাধারণত ক্ষমা করে দেয়।

বাইবেল বলে: “যে আপন অধর্ম্ম সকল ঢাকে, সে কৃতকার্য্য হইবে না; কিন্তু যে তাহা স্বীকার করিয়া ত্যাগ করে, সে করুণা পাইবে।”—হিতোপদেশ ২৮:১৩.

৩. সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, ঈশ্বর এতে খুশি হন।

বাইবেল বলে: “তুমি আন্তরিক সত্যে প্রীত।”—গীতসংহিতা ৫১:৬.

কুড়ি বছর বয়সি কারিনাকে গতিসীমার ঊর্ধ্বে গাড়ি চালানোর কারণে জরিমানা করা হয়। আর সে বিষয়টা তার বাবার কাছে লুকোয়। কিন্তু, সে এটা বেশি দিন গোপন রাখতে পারে না। কারিনা বলে, “কিছু দিন পর বাবা সেই রসিদটা দেখে ফেলেন। আর স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টা নিয়ে বিরাট অশান্তি হয়!”

এখান থেকে কী শিক্ষা লাভ করা যায়? কারিনা বলে: “ভুল গোপন করলে পরিস্থিতি কেবল খারাপই হয়। পরে হলেও তোমাকে এর মাশুল দিতে হবে!”

তোমার ভুলগুলো থেকে যেভাবে শিক্ষা লাভ করতে পার

বাইবেল বলে: “আমরা সবাই নানা ভাবে অন্যায় করে থাকি।” (যাকোব ৩:২, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) আর ভুল স্বীকার করা—এবং সঙ্গেসঙ্গে তা করা—নম্রতা ও পরিপক্বতার এক চিহ্ন।

পরের ধাপটা হল, ভুলগুলো থেকে শিক্ষা লাভ করা। বীরা নামে একজন মেয়ে বলে: “ভুলগুলোকে আমি এমন অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখার চেষ্টা করি, যেখান থেকে শিক্ষা লাভ করা যায়। প্রতিটা ভুল থেকে আমি একটা করে শিক্ষা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি আর এটা আমাকে আরও উত্তম ব্যক্তি হতে এবং পরবর্তী সময়ে সেই পরিস্থিতির সঙ্গে ভিন্নভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।” এসো দেখি, কীভাবে তা করা যায়।

তুমি তোমার বাবার মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে কিছু-একটা নষ্ট করে ফেলেছ। এখন তুমি কী করবে?

  • বাবা বিষয়টা বুঝতে পারবেন না মনে করে তাকে কিছু জানাবে না।

  • বাবাকে পুরো ঘটনা খুলে বলবে।

  • বাবাকে ঘটনাটা বলবে কিন্তু অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাবে।

ঠিকমতো পড়াশোনা করোনি বলে তুমি পরীক্ষায় ফেল করেছ। এখন তুমি কী করবে?

  • বলবে যে, পরীক্ষাটা খুবই কঠিন ছিল।

  • স্বীকার করবে যে, তুমি ঠিকমতো পড়াশোনা করোনি।

  • বলবে যে, শিক্ষক তোমাকে পছন্দ করেন না।

অতীতের ভুলগুলো নিয়ে ক্রমাগত চিন্তা করা, একটা গাড়ি চালানোর সময় আয়না দিয়ে পিছনে তাকিয়ে থাকার মতো

এখন আগের দৃশ্যগুলো নিয়ে একটু চিন্তা করো এবং মনে করো তুমি (১) তোমার বাবা ও (২) তোমার শিক্ষক। তুমি যদি সহজেই তোমার ভুলগুলো স্বীকার করে নাও, তা হলে তোমার বাবা ও শিক্ষক তোমার সম্বন্ধে কী ভাববেন? আর তুমি যদি তোমার ভুলগুলো গোপন করো, তা হলে তারা তোমার সম্বন্ধে কী ভাববেন?

গত বছরে করা কোনো ভুল কাজ সম্বন্ধে চিন্তা করো এবং নীচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

ভুলটা কী ছিল? ভুল করার পর তুমি কী করেছিলে?

  • ভুলটা গোপন করেছিলাম।

  • অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়েছিলাম।

  • দ্রুত ভুল স্বীকার করেছিলাম।

ভুলটা যদি স্বীকার করে না থাকো, তা হলে পরে তুমি কেমন বোধ করেছিলে?

  • শান্তি—বেঁচে গেলাম!

  • অপরাধবোধ—আমার সত্য বলা উচিত ছিল।

সেই পরিস্থিতির সঙ্গে তুমি কীভাবে আরও ভালো করে মোকাবিলা করতে পারতে?

তোমার ভুল থেকে তুমি কী শিখেছ?

তুমি কী মনে করো?

কেন কেউ কেউ তাদের ভুল স্বীকার করতে চায় না?

তুমি যদি সবসময়ই নিজের ভুল গোপন করার চেষ্টা করো, তা হলে লোকেরা তোমার সম্বন্ধে কী ভাববে? আর যদি ভুল স্বীকার করো, তা হলে তারা তোমার সম্বন্ধে কী ভাববে?—লূক ১৬:১০