সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠ ১৫

যিশু কে?

যিশু কে?

যিশু হলেন ইতিহাসের সবচেয়ে সুপরিচিত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। তা সত্ত্বেও, বেশিরভাগ ব্যক্তি তাঁর নাম ছাড়া আর বেশি কিছু জানে না। আর যারা তাঁর সম্বন্ধে অল্প-বিস্তর জানে, তাদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে আবার আলাদা আলাদা ধারণা রয়েছে। কিন্তু, যিশু আসলে কে? আসুন, বাইবেল থেকে জানি।

১. যিশু কে?

যিশু হলেন একজন শক্তিশালী স্বর্গদূত, যিনি স্বর্গে থাকেন। যিহোবা ঈশ্বর সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার আগে যিশুকে সৃষ্টি করেছিলেন। তাই, বাইবেলে তাঁকে “সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত” বলা হয়। (কলসীয় ১:১৫) এ ছাড়া, যিশুকে ঈশ্বরের ‘একজাত পুত্র’ বলা হয়, কারণ একমাত্র যিশুকে যিহোবা সরাসরি সৃষ্টি করেছিলেন। (যোহন ৩:১৬) বাকি সমস্ত সৃষ্টির কাজে যিশু তাঁর পিতা যিহোবাকে সাহায্য করেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছিলেন। (পড়ুন, হিতোপদেশ ৮:৩০.) এভাবে, যিশু যিহোবার সঙ্গে সবসময় এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উপভোগ করে আসছেন। যিশুকে “বাক্য” বলা হয়ে থাকে কারণ তিনি বিশ্বস্তভাবে যিহোবার কাছ থেকে আসা বার্তা ও নির্দেশনাগুলো অন্যদের কাছে পৌঁছে দেন।—যোহন ১:১৪.

২. যিশু কেন পৃথিবীতে এসেছিলেন?

আজ থেকে প্রায় দু-হাজার বছর আগে যিশু স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে এসেছিলেন। কীভাবে তিনি এসেছিলেন? যিহোবা তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে এক অলৌকিক কাজ করেছিলেন। তিনি যিশুর জীবন মরিয়ম নামে একজন কুমারী নারীর গর্ভে স্থানান্তরিত করেছিলেন। এভাবে, যিশু একজন মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। (পড়ুন, লূক ১:৩৪, ৩৫.) যিশু পৃথিবীতে এইজন্য এসেছিলেন, যাতে তিনি মশীহ বা খ্রিস্ট হতে পারেন এবং মানবজাতিকে উদ্ধার করতে পারেন। a মশীহ সম্বন্ধে বাইবেলে অনেক ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল এবং সেই সমস্তই যিশুর প্রতি পরিপূর্ণ হয়েছিল। আর এগুলো লোকদের বুঝতে সাহায্য করেছিল যে, যিশুই হলেন “সেই খ্রিস্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।”মথি ১৬:১৬.

৩. যিশু এখন কোথায় আছেন?

যিশু পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে মারা যাওয়ার পর, ঈশ্বর তাঁকে একজন স্বর্গদূত হিসেবে পুনরুত্থিত করেছিলেন এবং এর কিছু সময় পর তিনি স্বর্গে ফিরে গিয়েছিলেন। সেখানে ‘ঈশ্বর তাঁকে আগের চেয়ে আরও উচ্চ এক পদ দিয়েছিলেন।’ (ফিলিপীয় ২:৯) বর্তমানে, যিশু স্বর্গে রয়েছেন এবং যিহোবার পরে যিশুরই সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা ও শক্তি রয়েছে।

গভীরভাবে গবেষণা করুন

যিশু আসলে কে এবং কেন তাঁর সম্বন্ধে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আসুন সেই বিষয়ে আরও জানি।

৪. যিশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নন

বাইবেল বলে যে, স্বর্গে যিশুর অনেক ক্ষমতা ও শক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর পিতা যিহোবার সমান নন বরং তাঁর বশীভূত রয়েছেন। কেন আমরা তা বলতে পারি? ভিডিওটা দেখুন এবং যিশু যে যিহোবার চেয়ে আলাদা ব্যক্তি, সেই বিষয়ে বাইবেল কী বলে, তা লক্ষ করুন।

যিহোবা ও যিশুর মধ্যে কোন সম্পর্ক রয়েছে, তা নীচে দেওয়া শাস্ত্রপদগুলো আমাদের বুঝতে সাহায্য করে। প্রথমে শাস্ত্রপদ পড়ুন এবং এরপর নীচে দেওয়া প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।

লূক ১:৩০-৩২ পদ পড়ুন।

  • স্বর্গদূত কী বলেছিলেন, যেটা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ‘পরমেশ্বর’ যিহোবা এবং যিশু সমান নন?

মথি ৩:১৬, ১৭ পদ পড়ুন।

  • যিশুর বাপ্তিস্মের সময় স্বর্গ থেকে একটা কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে কী শোনা গিয়েছিল?

  • এই কণ্ঠস্বর কার ছিল বলে আপনার মনে হয়?

যোহন ১৪:২৮ পদ পড়ুন।

  • একটা পরিবারে বড়ো কে, বাবা না ছেলে? আর কার কাছে বেশি ক্ষমতা রয়েছে?

  • যিশু যিহোবাকে পিতা বলে ডাকতেন। এখান থেকে আমরা কী বুঝতে পারি?

যোহন ১২:৪৯ পদ পড়ুন।

  • যিশু কি এটা মনে করতেন যে, তিনি এবং তাঁর পিতা একই ব্যক্তি? আপনি কী মনে করেন?

৫. কোন বিষয়টা দেখায় যে, যিশুই হলেন মশীহ?

ঈশ্বর মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য যাঁকে বেছে নিয়েছিলেন, তাঁকে মশীহ বলা হয়। বাইবেলে মশীহ সম্বন্ধে অনেক ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, যেগুলোর মাধ্যমে লোকেরা বুঝতে পারত যে, সেই মশীহ কে হবেন। ভিডিওটা দেখুন এবং কিছু ভবিষ্যদ্‌বাণী সম্বন্ধে জানুন, যেগুলো যিশুর প্রতি পরিপূর্ণ হয়েছিল।

বাইবেলের এই ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:

মীখা ৫:২ পদ পড়ুন আর মশীহ কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন বলে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, তা জানুন। b

  • যিশু কি সেখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যেখানে মশীহ জন্মগ্রহণ করবেন বলে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল?—মথি ২:১.

গীতসংহিতা ৩৪:২০ এবং সখরিয় ১২:১০ পদ পড়ুন আর বাইবেলে মশীহের মৃত্যুর বিষয়ে কোন কোন ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, তা জানুন।

  • এই ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো কি পরিপূর্ণ হয়েছিল?—যোহন ১৯:৩৩-৩৭.

  • এগুলোর মধ্যে একটা ভবিষ্যদ্‌বাণীও পরিপূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে যিশু কি কিছু করতে পারতেন?

  • এখান থেকে আমরা যিশু সম্বন্ধে কী বুঝতে পারি?

৬. যিশু সম্বন্ধে জেনে আমরা উপকৃত হব

বাইবেল বলে, এটা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যিশু কে ছিলেন এবং ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর কোন ভূমিকা রয়েছে। যোহন ১৪:৬ এবং ১৭:৩ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:

  • কেন যিশু সম্বন্ধে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ?

যিশুই পথ, সত্য ও জীবন। তিনি যিহোবার বন্ধু হওয়ার জন্য পথ খুলে দিয়েছেন এবং যিহোবা সম্বন্ধে সত্য শিখিয়েছেন আর তাঁর মাধ্যমে আমরা অনন্তকালের জন্য জীবন লাভ করতে পারব

কেউ কেউ বলে থাকে: “যিহোবার সাক্ষিরা যিশুকে মানে না।”

  • উত্তরে আপনি তাদের কী বলবেন?

সারাংশ

যিশু হলেন একজন শক্তিশালী স্বর্গদূত। তিনি হলেন ঈশ্বরের পুত্র এবং বাইবেলে বলা মশীহ।

পুনরালোচনা

  • কেন যিশুকে “সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত” বলা হয়?

  • যিশু পৃথিবীতে আসার আগে কোন কাজগুলো করেছিলেন?

  • কীভাবে আমরা জানতে পারি, যিশুই হলেন মশীহ?

লক্ষ্য

আরও জানুন

কীভাবে আমরা জানতে পারি, যিশুই হলেন সেই মশীহ, যাঁর সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল?

“মশীহ সম্বন্ধে করা ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো কি প্রমাণ দেয় যে, যিশুই হলেন সেই মশীহ?” (অনলাইন প্রবন্ধ)

বাইবেল কি আমাদের এটা জানায় যে, মানুষ যেভাবে সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকে, ঠিক সেভাবে ঈশ্বর তাঁর পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন? আসুন দেখি।

“কেন যিশুকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হয়?” (অনলাইন প্রবন্ধ)

কেন ত্রিত্ব বাইবেলের শিক্ষা নয়, তা বিবেচনা করুন।

“যিশু কি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর?” (প্রহরীদুর্গ, এপ্রিল ১, ২০০৯, ইংরেজি)

একজন মহিলা যখন বাইবেল পরীক্ষা করে যিশুর বিষয়ে জানতে পেরেছিলেন, তখন কীভাবে তার জীবন বদলে গিয়েছিল, তা পড়ুন।

“একজন যিহুদি মহিলা বলেন, কেন তিনি তার ধর্ম পুনরায় পরীক্ষা করে দেখেছিলেন” (সচেতন থাক!, মে ২০১৩, ইংরেজি)

a পাঠ ২৬ এবং ২৭-এ আলোচনা করা হবে যে, কেন মানবজাতিকে উদ্ধার করার প্রয়োজন ছিল এবং কীভাবে যিশু তাদের উদ্ধার করেছেন।

b মশীহের আবির্ভাব ঠিক কখন হবে বলে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, তা জানার জন্য টীকা ২ দেখুন।