সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

 কোনো খ্রিস্টান যদি গাড়ি চালানোর সময়ে এমন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, যার ফলে কেউ মারা যায়, তা হলে মণ্ডলীর কী দায়িত্ব রয়েছে?

রক্তপাতের দোষ রয়েছে কি না, সেই সম্ভাবনাকে বিবেচনা করে দেখতে হবে কারণ মণ্ডলীকে সেই রক্তপাতের দোষের জন্য সাম্প্রদায়িক দায়িত্ব এড়াতে হবে। (দ্বিতীয় বিবরণ ২১:১-৯; ২২:৮) কোনো মারাত্মক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী একজন চালক হয়তো রক্তপাতের দোষে দোষী হতে পারেন, যদি তিনি অসতর্ক হয়ে থাকেন অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে কৈসরের কোনো নিরাপত্তা বা ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে থাকেন। (মার্ক ১২:১৪) কিন্তু, বিবেচনা করার মতো অন্যান্য বিষয় রয়েছে।

একজন নরঘাতক, যিনি ইস্রায়েলের কোনো একটা আশ্রয় নগরে পালিয়ে যেতেন, তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হতো। যদি বোঝা যেত যে, সেই হত্যা অনিচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে, তা হলে তাকে সেই নগরে থাকার অনুমতি দেওয়া হতো আর তিনি রক্তের প্রতিশোধদাতার কাছ থেকে সুরক্ষিত থাকতেন। (গণনাপুস্তক ৩৫:৬-২৫) তাই, কোনো দুর্ঘটনার কারণে একজন খ্রিস্টান যদি কারো মৃত্যুর জন্য দায়ী হন, তা হলে এতে কোনোরকম রক্তপাতের দোষ আছে কি না, তা নির্ধারণ করার জন্য বিষয়গুলো প্রাচীনদের পরীক্ষা করা উচিত। সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অথবা আদালতের রায়ই পুরোপুরি নির্ধারণ করতে পারে না যে, মণ্ডলী কোন পদক্ষেপ নেবে।

উদাহরণস্বরূপ, কিছু ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করার কারণে আদালত হয়তো সেই ব্যক্তিকে দোষী বলে ঘোষণা করতে পারে কিন্তু যে-প্রাচীনরা বিষয়টা পরীক্ষা করছেন তারা হয়তো সিদ্ধান্তে আসতে পারে যে, এতে রক্তপাতের দোষ ছিল না কারণ চালকের সেই পরিস্থিতিগুলোর ওপর খুব কমই বা একেবারেই নিয়ন্ত্রণ ছিল না, যেগুলোর কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনাটা ঘটেছে। আবার এমনকি আদালত কোনো মামলা খারিজ করে দিলেও প্রাচীনরা হয়তো সিদ্ধান্তে আসতে পারে যে, তিনি আসলে রক্তপাতের দোষে দোষী।

যে-প্রাচীনরা বিষয়টা পরীক্ষা করে থাকে, তাদের সিদ্ধান্ত শাস্ত্র এবং সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত সত্যগুলোর—চালকের স্বীকারোক্তি ও/অথবা দুতিনজন নির্ভরযোগ্য চাক্ষুষ সাক্ষির সাক্ষ্যপ্রমাণের—ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৭:৬; মথি ১৮:১৫, ১৬) যদি রক্তপাতের দোষ প্রমাণিত হয়, তা হলে একটা বিচার সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা উচিত। কমিটি যদি সিদ্ধান্তে আসে যে, সেই ব্যক্তি অনুতপ্ত হয়েছেন, তা হলে তাকে উপযুক্ত শাস্ত্রীয় তিরস্কার করা হবে এবং মণ্ডলীতে বিশেষ সুযোগগুলোর ক্ষেত্রে তার ওপর বাধানিষেধ আরোপ করা হবে। তিনি একজন প্রাচীন অথবা পরিচারক দাস হিসেবে আর সেবা করতে পারবেন না। এ ছাড়া, অন্যান্য বাধানিষেধও আরোপ করা হবে। আর তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের সামনে তার অসতর্কতা ও অবহেলার জন্য নিকাশ দিতে হবে, যার ফলে সেই দুর্ঘটনা ও মৃত্যু ঘটেছে।—গালাতীয় ৬:৫, ৭.

উদাহরণস্বরূপ: দুর্ঘটনাটা ঘটার সময়ে যদি আবহাওয়া খারাপ হয়ে থাকে, তা হলে চালকের আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। যদি তার ঘুম পেয়ে থাকে, তা হলে তার গাড়ি চালানো থামিয়ে সেই তন্দ্রাভাব কেটে না যাওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নেওয়া অথবা অন্য কাউকে গাড়ি চালাতে দেওয়া উচিত ছিল।

ধরুন, চালক নির্দিষ্ট গতিসীমার চেয়েও আরও দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন। কোনো খ্রিস্টান যদি তার গতিসীমার মাত্রা ছাড়িয়ে যান, তা হলে সেটা হল, “কৈসরের যাহা যাহা, কৈসরকে” দিতে ব্যর্থ হওয়া। এ ছাড়া, এটা জীবনের পবিত্রতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে কারণ এতে মারাত্মক পরিণতির সম্ভাবনা রয়েছে। (মথি ২২:২১) এই ক্ষেত্রে, আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করুন। একজন প্রাচীন যদি কৈসরের ট্রাফিক আইনগুলো সম্বন্ধে অসতর্ক থাকেন অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে সেগুলো মেনে চলতে ব্যর্থ হন, তা হলে তিনি পালের জন্য কোন ধরনের আদর্শ স্থাপন করবেন?—১ পিতর ৫:৩.

খ্রিস্টানদের এইরকমটা চাওয়া উচিত নয় যে, অন্যেরা এমন একটা সময়ে কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত থাকবে, যেখানে নির্দিষ্ট গতিসীমার মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়া ছাড়া উপস্থিত হওয়া অসম্ভব। কিন্তু, অধিকাংশ ক্ষেত্রে যা করা দরকার তা হল, যাত্রার জন্য যথেষ্ট সময় যেন হাতে থাকে সেইজন্য অনেক আগে থেকে শুরু করা অথবা নিজের তালিকা পরিবর্তন করা। তা করা হলে, একজন খ্রিস্টান যে-গতিতে তার গাড়ি চালানো উচিত তার চেয়ে বেশি গতিতে চালাতে প্রলোভিত হবেন না বরং সরকারি “প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্ত্তৃপক্ষদের” ট্রাফিক আইনগুলো মেনে চলতে সক্ষম হবেন। (রোমীয় ১৩:১, ৫) এটা চালককে রক্তপাতের দোষের সম্ভাবনাসহ মারাত্মক দুর্ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া, এটা তাকে উপযুক্ত উদাহরণ স্থাপন করতে এবং এক উত্তম বিবেক বজায় রাখতেও সমর্থ করবে।—১ পিতর ৩:১৬.