সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

 আদিপুস্তক ২৭:১৮, ১৯ পদে যেমন লিপিবদ্ধ রয়েছে, নিজেকে এষৌ বলে পরিচয় দেওয়া কি যাকোবের জন্য অন্যায় ছিল না?

আপনি হয়তো এই বিবরণের সঙ্গে পরিচিত আছেন। ইস্‌হাক তার বৃদ্ধাবস্থায় এষৌকে মৃগ শিকার করে আনতে বলার পর এই কথাগুলো বলেছিলেন: “আমি ভোজন করিব; যেন মৃত্যুর পূর্ব্বে আমার প্রাণ তোমাকে আশীর্ব্বাদ করে।” তার স্বামী যা বলেছিলেন তা শুনতে পেয়ে, রিবিকা সুস্বাদু খাবার রান্না করে যাকোবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন: “তুমি আপন পিতার নিকটে [সেই খাদ্য] লইয়া যাও, তিনি তাহা ভোজন করুন; যেন তিনি মৃত্যুর পূর্ব্বে তোমাকে আশীর্ব্বাদ করেন।” তারপর যাকোব, এষৌর পোশাক পরিহিত হয়ে ও ছাগবৎসের চামড়া নিজের গলায় আর হাতে জড়ানো অবস্থায়, সেই সুস্বাদু খাবার নিয়ে তার বাবার কাছে গিয়েছিলেন। ইস্‌হাক যখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “বৎস, তুমি কে?” তখন যাকোব উত্তর দিয়েছিলেন: “আমি আপনার জ্যেষ্ঠ পুত্ত্র এষৌ।” ইস্‌হাক যাকোবের কথা বিশ্বাস করে তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন।—আদিপুস্তক ২৭:১-২৯.

রিবিকা এবং যাকোব কেন এইরকম আচরণ করেছিল, সেই সম্বন্ধে বাইবেল আমাদেরকে কিছু বলে না কিন্তু এটা ইঙ্গিত করে যে, সেই পরিস্থিতি হঠাৎ করে উপস্থিত হয়েছিল। আমাদের লক্ষ করা উচিত যে, রিবিকা ও যাকোব যা করেছিল, ঈশ্বরের বাক্য সেটাকে সমর্থনও করে না কিংবা সেটার নিন্দাও করে না আর তাই এই বিবরণ মিথ্যা ও প্রতারণার কোনো উদাহরণও স্থাপন করে না। কিন্তু, বাইবেল সেই পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে।

প্রথমত, এই বিবরণ এটা স্পষ্ট করে যে, এষৌর নয় কিন্তু যাকোবেরই তার পিতার আশীর্বাদ পাওয়ার অধিকার ছিল। এই ঘটনার আগে, যাকোব আইনগতভাবে তার উপলব্ধিহীন যমজ ভাইয়ের কাছ থেকে জ্যেষ্ঠাধিকার ক্রয় করেছিলেন, যিনি তার খিদে মেটানোর জন্য খাদ্যের বিনিময়ে সেটা বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এষৌ “জ্যেষ্ঠাধিকার তুচ্ছ করিলেন।” (আদিপুস্তক ২৫:২৯-৩৪) তাই, তার বাবার কাছে গিয়ে যাকোব আসলে সেই আশীর্বাদই চেয়েছিলেন, যেটা ন্যায়সংগতভাবে তারই অধিকারভুক্ত ছিল।

দ্বিতীয়ত, ইস্‌হাক যখন বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি যাকোবকে আশীর্বাদ করেছেন, তখন তিনি যা করেছিলেন, তা পরিবর্তন করার চেষ্টা করেননি। সম্ভবত তার যমজ সন্তানদের জন্মের আগে যিহোবা রিবিকাকে যা বলেছিলেন, সেটা তার মনে পড়ে গিয়েছিল: “জ্যেষ্ঠ কনিষ্ঠের দাস হইবে।” (আদিপুস্তক ২৫:২৩) এটাও লক্ষ করার মতো বিষয় যে, যাকোব যখন হারোণের উদ্দেশে যাত্রা করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তখন ইস্‌হাক তার দেওয়া আগের আশীর্বাদকে আরও সম্প্রসারিত করেছিলেন।—আদিপুস্তক ২৮:১-৪.

পরিশেষে এটাও মনে রাখা উচিত যে, যা কিছু ঘটছিল সেই সমস্ত বিষয়ে যিহোবা অবগত এবং আগ্রহী, উভয়ই ছিলেন। ইস্‌হাক যে-আশীর্বাদ প্রদান করেছিলেন, তা আব্রাহামকে করা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল। (আদিপুস্তক ১২:২, ৩) ঈশ্বর যদি চাইতেন যে যাকোব আশীর্বাদপ্রাপ্ত না হন, তা হলে তিনি কোনো না কোনোভাবে তাতে হস্তক্ষেপ করতেন। পরিবর্তে, যিহোবা যাকোবকে এই কথা বলার দ্বারা বিষয়টাকে নিশ্চিত করেছিলেন: “তোমার বংশে পৃথিবীস্থ যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হইবে।”—আদিপুস্তক ২৮:১০-১৫.