সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

 শিকার করা ও মাছ ধরাকে একজন খ্রিস্টানের কোন দৃষ্টিতে দেখা উচিত?

বাইবেল শিকার করা ও মাছ ধরাকে নিন্দা করে না। (দ্বিতীয় বিবরণ ১৪:৪, ৫, ৯, ২০; মথি ১৭:২৭; যোহন ২১:৬) তা সত্ত্বেও, যে-খ্রিস্টানরা শিকার করে অথবা মাছ ধরে, তাদেরকে বেশ কিছু শাস্ত্রীয় নীতি বিবেচনা করতে হবে।

ঈশ্বর নোহ এবং তার বংশধরদের এই শর্তে বিভিন্ন জীবজন্তু হত্যা করতে এবং তা খেতে অনুমতি দিয়েছিলেন যে, খাওয়ার আগে তাদেরকে সেই জীবজন্তু থেকে রক্ত ঝরিয়ে নিতে হবে। (আদিপুস্তক ৯:৩, ৪) উক্ত আদেশ এই বিষয়টার ওপর জোর দিয়েছিল যে, জীবজন্তুর জীবনের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত কারণ এর উৎস হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই, খ্রিস্টানরা শুধুমাত্র খেলাধুলা বা মজা করার জন্য এবং জীবনের প্রতি যথেচ্ছ অশ্রদ্ধার কারণে জীবজন্তু হত্যা করে না।—হিতোপদেশ ১২:১০.

এ ছাড়া, আমাদের মনোভাবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত আরেকটা দিকও আমাদের বিবেচনা করা উচিত। যে-প্রেরিতরা জেলে ছিল, তারা সম্ভবত পর্যাপ্ত মাছ ধরে পরিতৃপ্ত হতো। কিন্তু, এমন কোনো ইঙ্গিত নেই যে, তারা মাছ ধরা অথবা শিকার করার ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতার বিষয়ে বড়াই করেছিল অথবা তারা অন্যদের সঙ্গে “প্রতিযোগিতা” করার, তাদের পুরুষত্ব প্রমাণ করার কিংবা কোনোকিছু খুঁজে পাওয়ার, লড়াই করার বা হত্যা করার রোমাঞ্চকর অনুভূতি লাভ করার জন্য মাছ ধরতে অথবা শিকার করতে গিয়েছিল।—গীতসংহিতা ১১:৫; গালাতীয় ৫:২৬, NW.

তাই, আমরা হয়তো নিজেদেরকে জিজ্ঞেস করতে পারি: ‘জীবন সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সম্মান দেখানোর ক্ষেত্রে আমি কি উদাহরণযোগ্য? শিকার করা অথবা মাছ ধরা কি আমার চিন্তাভাবনা এবং কথাবার্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে? আমার জীবনধারা কি দেখায় যে, শিকার করে আমি অনেক আনন্দ পাই, নাকি এটা দেখায় যে, আমি ঈশ্বরের একজন পরিচারক? শিকার করা অথবা মাছ ধরা কি আমাকে অবিশ্বাসী ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে নিয়ে আসে বা আমার পরিবারকে অবহেলা করার কারণ হয়?’—লূক ৬:৪৫.

খাবারের জন্য শিকার করে অথবা মাছ ধরে থাকে এমন কেউ কেউ শিকার করার ও মাছ ধরার মরসুমগুলোতে আধ্যাত্মিক কাজকর্ম অবহেলা করাকে যুক্তিযুক্ত বলে মনে করতে পারে। কিন্তু, আমরা যখন অন্য কোনোকিছুকে ঈশ্বরের আগ্রহগুলোর ওপর অগ্রাধিকার নেওয়ার সুযোগ না দিই, তখন আমরা তাঁর ওপর বিশ্বাস ও নির্ভরতা দেখাই। (মথি ৬:৩৩) অধিকন্তু, কর্তৃপক্ষরা আরোপ করুক বা না-ই করুক, খ্রিস্টানরা শিকার করা ও মাছ ধরার বিষয়ে “কৈসরের” সমস্ত আইনকানুন মেনে চলে।—মথি ২২:২১; রোমীয় ১৩:১.

শিকার করা ও মাছ ধরার বিষয়ে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংগতি রাখার জন্য কাউকে কাউকে হয়তো তাঁর মানগুলো সম্বন্ধে তাদের চিন্তাভাবনাকে রদবদল করতে হবে। (ইফিষীয় ৪:২২-২৪) অন্যদিকে, আমাদেরকে অন্যদের বিবেকবুদ্ধিসম্পন্ন সিদ্ধান্তগুলোর প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। এই বিষয়ে প্রেরিত পৌল উপযুক্ত পরামর্শ দিয়েছেন: “আইস, আমরা পরস্পর কেহ কাহারও বিচার আর না করি, বরং তোমরা এই বিচার কর যে, ভ্রাতার ব্যাঘাতজনক . . . কিছু রাখা অকর্ত্তব্য।” (রোমীয় ১৪:১৩) এই ধরনের নিঃস্বার্থ ভালবাসা ও সম্মান দেখানো মণ্ডলীতে শান্তি বৃদ্ধি করে এবং সমস্ত জীবনের উৎস, আমাদের নির্মাতাকে খুশি করে।—১ করিন্থীয় ৮:১৩. *

[পাদটীকা]

^ এ ছাড়া, ১৯৯০ সালের ১৫ই মে প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) পত্রিকার “পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল” প্রবন্ধটি দেখুন।