সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পৃথিবীকে একমাত্র ঈশ্বরই রক্ষা করতে পারেন

পৃথিবীকে একমাত্র ঈশ্বরই রক্ষা করতে পারেন

পৃথিবীকে একমাত্র ঈশ্বরই রক্ষা করতে পারেন

 “চকচকে নীল ও সাদা এক রত্ন।” মহাকাশচারী এডগার মিচেল আমাদের পৃথিবী সম্বন্ধে এভাবেই বর্ণনা করেছিলেন, যখন তিনি মহাশূন্যের গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে পৃথিবীকে দেখেছিলেন।

ঈশ্বর পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য এক গৃহ হিসেবে প্রস্তুত করার জন্য অনেক কিছু করেছিলেন। পৃথিবীর সৃষ্টি, স্বর্গদূতদের “জয়ধ্বনি” করতে পরিচালিত করেছিল। (ইয়োব ৩৮:৭) এই গ্রহের বিস্ময়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন করার পর, আমাদেরও উচ্চকণ্ঠে প্রশংসা করার কারণ রয়েছে। আমাদের পরিবেশের মধ্যে অনেক ধরনের জটিল বাস্তুসংস্থান রয়েছে, যেগুলো পৃথিবীতে জীবনকে বাঁচিয়ে রাখতে সমর্থ করে। এই বাস্তুসংস্থানে ব্যাপক পরিচিত একটা প্রক্রিয়া অবদান রাখে আর সেটা হচ্ছে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় সবুজ গাছপালা এদের খাদ্য তৈরির জন্য সূর্যের আলো, বায়ু থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং জল ব্যবহার করে থাকে। এই প্রক্রিয়ার উপজাত দ্রব্য হিসেবে পরিবেশে অক্সিজেন—আমাদের অস্তিত্বের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান—নির্গত হয়।

বাইবেল দেখায় যে, ঈশ্বর আস্থা সহকারে মানুষকে পৃথিবীর রক্ষণাবেক্ষণ করার ভার দিয়েছেন। (আদিপুস্তক ১:২৮; ২:১৫) কিন্তু, পৃথিবীর বাস্তুসংস্থানে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য মানুষের সঠিক মনোভাব থাকতে হতো। বস্তুতপক্ষে, মানুষকে তার পার্থিব গৃহকে ভালোবাসতে হতো। তার এমন ইচ্ছা থাকতে হতো, যাতে সে এটাকে এক সুন্দর অবস্থায় রাখতে পারে। কিন্তু মানুষকে স্বাধীন ইচ্ছা দেওয়া হয়েছিল, তাই এই সম্ভাবনা ছিল যে, মানুষ হয়তো পৃথিবীকে স্বীয়স্বার্থে কাজে লাগানো এবং এটাকে অপব্যবহার করা বেছে নিতে পারে। আর মানুষ ঠিক তা-ই করেছে। মানুষের অবহেলা এবং লোভের ফলাফল হয়েছে ধ্বংসাত্মক।

এখানে কিছু সমস্যা উল্লেখ করা হল: (১) বনভূমি নিধন, পৃথিবীর কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেওয়ার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যার ফলে আবহাওয়ার ধরন ক্রমান্বয়ে আরও চরম হয়ে পড়তে পারে। (২) কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার এমন পোকামাকড় ধ্বংস করে ফেলছে, যেগুলো শস্যের পরাগায়ণসহ বাস্তুসংস্থানে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (৩) অতিরিক্ত মাছ ধরা এবং সমুদ্র ও নদীর জলে দূষণ ব্যাপকভাবে মাছের সংখ্যাকে কমিয়ে দিচ্ছে। (৪) পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদগুলো নির্বিচারে ব্যবহার করার ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মগুলোর জন্য সামান্যই অবশিষ্ট থাকছে আর তা বিশ্ব উষ্ণায়ণকে ত্বরান্বিত করছে বলে মনে করা হয়। কিছু পরিবেশবিজ্ঞানী সুমেরু এবং কুমেরু অঞ্চলের হিমবাহগুলো গলে পড়ার এবং হিমশৈলগুলো বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়ে উল্লেখ করেছে, যা বিশ্ব উষ্ণায়ণের প্রমাণ।

যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই কেউ কেউ হয়তো বলতে পারে যে, পৃথিবী প্রতিশোধ নিচ্ছে আর এর ফলে তা মানুষের দুর্দশার কারণ হচ্ছে। ঈশ্বর কোনো বিনিময় মূল্য ছাড়াই এই পৃথিবী আমাদেরকে দিয়েছেন। আরেক অর্থে, মানুষকে পৃথিবীতে বিনা ভাড়াতেই বাস করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। (আদিপুস্তক ১:২৬-২৯) কিন্তু জগতের চলতি ঘটনাগুলো দেখায় যে, অনেক লোকেরই তাদের এই মনোরম পার্থিব গৃহকে রক্ষণাবেক্ষণ করার কোনো আকাঙ্ক্ষাই নেই। এর বদলে, মানুষ তার স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষা এবং কাজগুলো নিয়ে ব্যস্ত। বস্তুতপক্ষে, মানুষ এক মন্দ ভাড়াটিয়া—‘পৃথিবীনাশক’—প্রমাণিত হয়েছে, যেমনটা প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮ পদে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছে।

বাইবেলের ভবিষ্যদ্‌বাণী দেখায়, পৃথিবীর জীবনরক্ষাকারী বাস্তুসংস্থানের সৃষ্টিকর্তা, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিহোবা এই আইন জারি করেছেন যে, এই মন্দ ভাড়াটিয়াদের “উচ্ছেদ” করার সময় হয়ে এসেছে। (সফনিয় ১:১৪; প্রকাশিত বাক্য ১৯:১১-১৫) মানুষ পৃথিবীর ক্ষতি করার আগেই, ঈশ্বর পদক্ষেপ নেবেন—আমাদের প্রত্যাশিত সময়ের আরও আগেই। * (মথি ২৪:৪৪) সত্যিই, পৃথিবীকে একমাত্র ঈশ্বরই রক্ষা করতে পারেন। (w০৯ ১/১)

[পাদটীকা]

^ সময়ের গুরুত্বের ওপর আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত জেগে থাকুন! ব্রোশারটি দেখুন।