সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

তিনি তার ভুলগুলো থেকে শিখেছিলেন

তিনি তার ভুলগুলো থেকে শিখেছিলেন

তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন

তিনি তার ভুলগুলো থেকে শিখেছিলেন

 যোনা চেয়েছিলেন তিনি যদি এই ভয়ংকর শব্দটা বন্ধ করতে পারতেন। কেবলমাত্র দমকা বাতাসই যে জাহাজের মাস্তুলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শব্দ করছিল কিংবা বিশাল ঢেউগুলো জাহাজের গায়ে আছড়ে পড়ার ফলে কাঠের জাহাজে ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ হচ্ছিল, তা নয়। যোনার কাছে এর চেয়েও যেটা আরও বেশি বিরক্তিকর ছিল তা হল, সমুদ্রগামী নাবিকদের, জাহাজের অধ্যক্ষ ও তার সহকারী নাবিকদের চিৎকার, যারা জাহাজটাকে জলের ওপর ভাসিয়ে রাখতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিল। সেই লোকগুলো যে প্রায় মারা যেতে বসেছিল সেই ব্যাপারে যোনা একেবারে নিশ্চিত ছিলেন—আর এর কারণ মূলত তিনি!

কী যোনাকে এইকরম একটা ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে ফেলেছিল? তিনি তার ঈশ্বর যিহোবার সঙ্গে আচরণ করার ক্ষেত্রে এক গুরুতর ভুল করেছিলেন। তিনি কী করেছিলেন? যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ক কি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাদেরকে অনেক কিছু শেখাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যোনার গল্পটা আমাদেরকে এই বিষয়টা দেখতে সাহায্য করে যে, এমনকী যাদের অকৃত্রিম বিশ্বাস আছে, তারাও কীভাবে বিপথে যেতে পারে—আর কীভাবে তারা তাদের ভুলগুলোকে সংশোধন করতে পারে।

গালীলের একজন ভাববাদী

লোকেরা যখন যোনার সম্বন্ধে চিন্তা করে, তখন তারা প্রায়ই তার নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো, যেমন তার অবাধ্যতা বা এমনকী তার একগুঁয়ে মনোভাবের ওপরই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে বলে মনে হয়। কিন্তু, সেই ব্যক্তি সম্বন্ধে এর চেয়েও আরও বেশি কিছু আমাদের জানা উচিত। মনে রাখবেন যে, যোনাকে যিহোবা ঈশ্বরের একজন ভাববাদী হিসেবে সেবা করার জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। তিনি যদি অবিশ্বস্ত বা অধার্মিকই হতেন, তাহলে যিহোবা তাকে এইরকম এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের জন্য বাছাই করতেন না।

দ্বিতীয় রাজাবলি ১৪:২৫ পদ থেকে যোনার পটভূমি সম্পর্কে আমরা অল্পই জানতে পারি। তিনি গাৎ-হেফরে বাস করতেন, যে-শহরটা নাসরৎ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছিল, যেখানে তার সময়ের প্রায় আট-শো বছর পরে যিশু বড় হয়ে উঠবেন। * ইস্রায়েলের দশ বংশের রাজা যারবিয়াম ২য়-র রাজত্বের সময়, যোনা ভাববাদী হিসেবে সেবা করেছিলেন। এলিয়ের সময়ের পর বহু বছর কেটে গিয়েছে; তার উত্তরসূরি ইলিশায়, যারবিয়ামের পিতার রাজত্বের সময়ে মারা গিয়েছেন। যদিও বাল উপাসনাকে নির্মূল করার জন্য যিহোবা এই ব্যক্তিদেরকে ব্যবহার করেছিলেন, তবুও ইস্রায়েল আবারও স্বেচ্ছায় বিপথে গিয়েছিল। দেশটা তখন এমন একজন রাজার প্রভাবাধীন ছিল, যিনি “সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা মন্দ . . . তাহাই করিতেন।” (২ রাজাবলি ১৪:২৪) তাই যোনার কাজটা মোটেও সহজ বা নির্ঝঞ্ঝাট ছিল না। তা সত্ত্বেও, তিনি বিশ্বস্তভাবে সেটা পালন করেছিলেন।

কিন্তু, একদিন যোনাকে এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। তিনি যিহোবার কাছ থেকে এমন এক কার্যভার পেয়েছিলেন, যেটাকে তার কাছে অত্যন্ত কঠিন বলে মনে হয়েছিল। যিহোবা তাকে কী করতে বলেছিলেন?

‘তুমি উঠ, নীনবীতে যাও’

যিহোবা যোনাকে বলেছিলেন: “তুমি উঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর নগরের বিরুদ্ধে ঘোষণা কর, কেননা তাহাদের দুষ্টতা আমার সম্মুখে উঠিয়াছে।” (যোনা ১:২) এটা বেশ সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, কেন এই কার্যভারটা কঠিন বলে মনে হয়েছে। নীনবী প্রায় ৮০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত ছিল আর স্থলপথে সেখানে পায়ে হেঁটে যাওয়ার জন্য সম্ভবত এক মাস সময় লাগত। কিন্তু, এইরকম কষ্টকর যাত্রাকে সেই কার্যভারের সহজ অংশ বলেই মনে হয়েছে। কারণ নীনবীতে গিয়ে যোনার অশূরীয়দের কাছে যিহোবার বিচারবার্তা ঘোষণা করার কথা ছিল, যারা প্রচণ্ড হিংস্র এমনকী নিষ্ঠুর ছিল। ঈশ্বরের নিজের লোকেদের কাছ থেকেই যোনা যদি সামান্য সাড়া পেয়ে থাকেন, তাহলে এই পৌত্তলিক লোকদের কাছ থেকে তিনি আর কী-বা আশা করতে পারতেন? সেই বিশাল নীনবীতে যিহোবার এই একমাত্র দাস কীভাবে সফল হবেন, যে-নগরকে ‘রক্তপাতী নগর’ বলে ডাকা হতো?—নহূম ৩:১,.

যোনার মনে হয়তো এই ধরনের চিন্তা এসেছিল। আমরা তা জানি না। আমরা যা জানি তা হল, তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। যিহোবা তাকে পূর্বদিকে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন; যোনা যতটা পারেন, পশ্চিমদিকে গিয়েছিলেন। তিনি উপকূলের দিকে যাফো নামক একটা বন্দরনগরীতে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি তর্শীশগামী একটা জাহাজ দেখতে পেয়েছিলেন। কিছু পণ্ডিত ব্যক্তি বলে যে, তর্শীশ স্পেনে অবস্থিত ছিল। যদি তা-ই হয়, তাহলে যোনা নীনবী থেকে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার দূরে যাচ্ছিলেন। মহাসমুদ্রের—সেই সময় ভূমধ্যসাগরকে যে-নামে ডাকা হতো—অপর প্রান্তে এইরকম এক সমুদ্রযাত্রা করার জন্য হয়তো এক বছর সময় লেগেছিল! যোনা যিহোবার দেওয়া কার্যভার থেকে পালানোর জন্য এতটাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন যে, তিনি এক বছর যাত্রা করতে রাজি ছিলেন!

এর মানে কি এই যে, আমরা যোনাকে একজন কাপুরুষ বলে বাতিল করে দিতে পারি? তার সম্বন্ধে আমাদের এত দ্রুত বিচার করা উচিত নয়। আমরা যেমন দেখব যে, তিনি তার উল্লেখযোগ্য সাহসের জন্য যোগ্য ছিলেন। কিন্তু, আমাদের সবার মতোই যোনাও একজন অসিদ্ধ মানুষ ছিলেন, যিনি তার বিভিন্ন দোষত্রুটির সঙ্গে লড়াই করছিলেন। (গীতসংহিতা ৫১:৫) আমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে কখনো ভয়ের সঙ্গে লড়াই করেনি?

কখনো কখনো হয়তো মনে হতে পারে যে, আমাদের কাছে যা কঠিন, এমনকী অসম্ভব ঈশ্বর আমাদেরকে তা-ই করতে বলছেন। এমনকী আমরা হয়তো ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করতে ভয় পেতে পারি, যা খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের করা আবশ্যক। (মথি ২৪:১৪) আমরা খুব সহজেই যিশুর বলা এই গভীর সত্যকে ভুলে যেতে পারি যে: “ঈশ্বরের সকলই সাধ্য।” (মার্ক ১০:২৭) আমরা যদি মাঝে মাঝে সেই সত্যকে ভুলে গিয়ে থাকি, তাহলে আমরা যোনার সমস্যাটাকে বুঝতে পারব। কিন্তু, যোনার পালিয়ে যাওয়ার পরিণতি কী হয়েছিল?

যিহোবা তাঁর বিপথগামী ভাববাদীকে শাসন করেন

আমরা একটু কল্পনা করতে পারি যে, যোনা সেই জাহাজে উঠে পড়েছিলেন, যেটা সম্ভবত একটা ফৈনিকীয় মালবাহী জাহাজ ছিল। তিনি দেখেছিলেন যে, জাহাজের অধ্যক্ষ ও নাবিক দল ব্যস্ত ছিল, যাতে জাহাজকে নিয়ন্ত্রণে এনে বন্দর ছেড়ে যেতে পারে। উপকূলরেখা যখন ধীরে ধীরে অস্পষ্ট হচ্ছিল ও অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, তখন যোনা হয়তো আশা করেছিলেন যে, তিনি যে-বিপদের আশঙ্কা করেছিলেন, তা থেকে তিনি পালাতে পেরেছেন। কিন্তু হঠাৎই, আবহাওয়া খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

প্রবল বাতাসের কারণে সমুদ্রে ভয়াবহ গর্জন হচ্ছিল, এমন উত্তাল ঢেউ উঠছিল যে, এমনকী সেগুলো আধুনিক দিনের জাহাজগুলোকে পর্যন্ত ডুবিয়ে দিতে পারে। প্রকাণ্ড ঢেউগুলোর জলময় প্রান্তরে হারিয়ে যাওয়া সেই কাঠের জাহাজটাকে অত্যন্ত ক্ষুদ্র ও ভঙ্গুর বলে মনে হতে কতক্ষণ-ই বা সময় লেগেছিল? সেই সময় যোনা কি তা জানতেন, যা তিনি পরে লিখেছিলেন—“সদাপ্রভু সমুদ্রে প্রচণ্ড বায়ু পাঠাইয়া দিলেন”? তা বলা কঠিন। কিন্তু তিনি দেখেছিলেন যে, নাবিকরা তাদের বিভিন্ন দেবতার কাছে কান্নাকাটি করতে শুরু করেছে আর তিনি জানতেন যে, সেইসব মিথ্যা দেবতার কাছ থেকে কোনো সাহায্যই আসবে না। তার বিবরণ বলে: “জাহাজ ভাঙ্গিয়া যাইবার উপক্রম হইল।” (যোনা ১:৪; লেবীয় পুস্তক ১৯:৪) আর যোনাই বা কীভাবে সেই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারতেন, যাঁর কাছ থেকে তিনি পালিয়ে যাচ্ছিলেন?

সাহায্য করার ক্ষেত্রে নিজেকে অসহায় মনে করে যোনা জাহাজের পাটাতনের নীচে গিয়ে শোয়ার জন্য একটা জায়গা খুঁজে পেয়েছিলেন। আর তিনি দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। * জাহাজের অধ্যক্ষ যোনাকে পেয়ে তাকে ডেকে তুলেছিলেন আর প্রত্যেকে যেমন করছিল, তেমনই তাকেও তার ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সেই ঝড়ে যে অতিপ্রাকৃতিক কিছু ব্যাপার ছিল, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যাত্রীদের মধ্যে কে তাদের সমস্যার সম্ভাব্য কারণ, তা দেখার জন্য নাবিকরা গুলিবাঁট করেছিল। কোনো সন্দেহ নেই যে, গুলিবাঁটে যখন একে একে সবাই বাদ পড়ছিল, তখন যোনার বুক কাঁপতে শুরু করেছিল। শীঘ্র সত্যটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যিহোবাই ঝড় ও সেইসঙ্গে গুলিবাঁটকে একজন ব্যক্তির—যোনার—দিকেই নির্দেশ করেছিলেন!—যোনা ১:৫-৭.

যোনা নাবিকদের সব কিছু খুলে বলেছিলেন। তিনি ছিলেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিহোবার একজন দাস। সেই ঈশ্বরের কাছ থেকেই তিনি পালিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন এবং তাদের সবাইকে চরম বিপদে ফেলেছিলেন। সব শুনে সেই লোকেরা হতবাক হয়ে গিয়েছিল; যোনা তাদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ভাব দেখেছিলেন। তারা জিজ্ঞেস করেছিল যে, জাহাজ ও তাদের প্রাণ বাঁচানোর জন্য তারা তার প্রতি কী করবে। তিনি তাদেরকে কী বলেছিলেন? সেই উত্তাল সমুদ্রের কনকনে ঠাণ্ডা জলে ডুবে যাওয়ার কথা ভেবে যোনা হয়তো ভয়ে কেঁপে উঠেছিলেন। কিন্তু কী করে তিনি এই লোকেদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারেন, যখন কিনা তিনি জানেন যে, তিনি তাদেরকে বাঁচাতে পারেন? তাই তিনি বলেছিলেন: “আমাকে ধরিয়া সমুদ্রে ফেলিয়া দেও, তাহাতে সমুদ্র তোমাদের পক্ষে ক্ষান্ত হইবে; কেননা আমি জানি আমারই দোষে তোমাদের উপরে এই ভারী ঝড় উপস্থিত হইয়াছে।”—যোনা ১:১২.

একজন কাপুরুষ ব্যক্তি নিশ্চয়ই এইরকম কথা বলতে পারেন না, তাই নয় কি? সেই ভয়াবহ মুহূর্তে যোনার সাহসী, আত্মত্যাগমূলক মনোভাব দেখা নিশ্চয় যিহোবার হৃদয়কে উষ্ণ করেছিল। এখানে আমরা যোনার দৃঢ় বিশ্বাস দেখতে পাই। আজকে আমরা নিজেদের চেয়ে অন্যদের মঙ্গলের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে তা অনুকরণ করতে পারি। (যোহন ১৩:৩৪, ৩৫) আমরা যখন দেখি যে, কারো কোনো প্রয়োজন রয়েছে, তা সেটা শারীরিক, মানসিক বা আধ্যাত্মিক যা-ই হোক না কেন, আমরা কি সাহায্য করার জন্য নিজেদেরকে বিলিয়ে দিই? আমরা যখন তা করি, তখন আমরা যিহোবাকে কতই না খুশি করি!

এই বিষয়টা সম্ভবত সেই নাবিকদের হৃদয়ও স্পর্শ করেছিল, কারণ প্রথমে তারা তা করতে রাজি হয়নি! এর পরিবর্তে, ঝড়ের মধ্যে দিয়েই এগিয়ে যাওয়ার জন্য তারা তাদের যথাসাধ্য সমস্তকিছুই করেছিল—কিন্তু কোনো ফলই হয়নি। সেই ঝড় উত্তরোত্তর প্রচণ্ড হয়ে উঠেছিল। শেষপর্যন্ত, তারা এ ছাড়া আর কোনো উপায় খুঁজে পায়নি। তাদের প্রতি করুণা দেখানোর জন্য যোনার ঈশ্বর যিহোবাকে ডেকে, তারা যোনাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিল।—যোনা ১:১৩-১৫.

যোনা করুণা ও উদ্ধার লাভ করেন

যোনা দুর্বার গতিতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। সম্ভবত, তিনি জলের ওপর ভেসে থাকার জন্য লড়াই করেছিলেন ও দেখতে পেয়েছিলেন যে, ফেনা এবং জলরাশির প্রচণ্ড গর্জনের মধ্যে দিয়ে জাহাজটা দ্রুত দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু, প্রচণ্ড শক্তিশালী ঢেউগুলো তার ওপরে পড়েছিল ও তাকে ডুবে যেতে বাধ্য করেছিল। তিনি ধীরে ধীরে ডুবে যেতে থাকেন এবং বুঝতে পারেন যে, সমস্ত আশা শেষ হয়ে যাচ্ছিল।

সেই সময় যোনার কেমন অনুভূতি হয়েছিল, পরে তিনি তা বর্ণনা করেছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে তার মনে বিভিন্ন ছবি ভেসে উঠেছিল। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে তিনি ভেবেছিলেন যে, তিনি আর কখনো যিরূশালেমে অবস্থিত যিহোবার অপূর্ব মন্দিরটা দেখতে পাবেন না। সমুদ্রের গভীরে, পাহাড়ের মূলে তলিয়ে যাওয়ার অনুভূতি তার হয়েছিল, যেখানে মৃণাল বা সমুদ্র-শৈবালগুলো তাকে জড়িয়ে ফেলেছিল। সেই জায়গাকে তার জন্য খনন করা কূপ অর্থাৎ তার কবর বলে মনে হয়েছিল।—যোনা ২:২-৬.

কিন্তু, একটু দাঁড়ান! কাছেই কিছু একটা ঘোরাঘুরি করছিল—এক প্রকাণ্ড, কালো, জীবিত কিছু। এটা তার দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছিল। একটা বিশাল মুখ তার সামনে খুলে গিয়েছিল, তাকে গ্রাস করেছিল ও গিলে ফেলেছিল!

এখানেই নিশ্চয়ই তার জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ, যোনা আশ্চর্যজনক কিছু অনুভব করেছিলেন। তিনি তখনও বেঁচে ছিলেন! তিনি টুকরো টুকরো হয়ে যাননি, তাকে পরিপাক করাও হয়নি বা এমনকী তার দমও বন্ধ হয়ে যায়নি। তার শ্বাসবায়ু তখনও ছিল, যদিও তিনি সেখানেই ছিলেন, যেটা উপযুক্তভাবেই তার কবর হওয়া উচিত ছিল। ধীরে ধীরে বিস্ময় যোনাকে ঘিরে ধরে। কোনো সন্দেহ নেই যে, যিহোবা ঈশ্বরই “যোনাকে গ্রাস করণার্থে একটা বৃহৎ মৎস্য নিরূপণ করিয়াছিলেন।” *যোনা ১:১৭.

মিনিটের পর মিনিট এবং এরপর ঘন্টার পর ঘন্টা অতিবাহিত হয়। সেখানে, তার জানামতে ঘুটঘুটে গহীন অন্ধকারের মধ্যে যোনা তার চিন্তাগুলোকে সাজিয়েছিলেন এবং যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। তার প্রার্থনাটি, যেটি যোনা বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ে সম্পূর্ণভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে, তা এই বিষয়টা প্রকাশ করে। এই প্রার্থনাটি দেখায় যে, শাস্ত্র সম্বন্ধে যোনার বিস্তারিত জ্ঞান ছিল, কারণ সেখানে প্রায়ই গীতসংহিতা থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া, এটি এক হৃদয়গ্রাহী গুণকেও তুলে ধরে, যা হল কৃতজ্ঞতা। যোনা উপসংহার করেছিলেন: “আমি তোমার উদ্দেশে স্তবধ্বনি সহ বলিদান করিব; আমি যে মানত করিয়াছি, তাহা পূর্ণ করিব; পরিত্রাণ সদাপ্রভুরই কাছে।”—যোনা ২:৯.

যোনা শিখেছিলেন যে, পরিত্রাণ হল এমন কিছু যা যিহোবা যে-কারো জন্য, যেকোনো জায়গায়, যেকোনো সময়ে আনতে পারেন। এমনকী ‘মৎস্যের উদরেও’ যিহোবা তাঁর বিপদগ্রস্ত দাসকে খুঁজে পেয়েছিলেন এবং রক্ষা করেছিলেন। (যোনা ১:১৭) একমাত্র যিহোবাই একজন মানুষকে একটা বৃহৎ মাছের পেটের ভিতরে তিন দিন তিন রাত বাঁচিয়ে রাখতে পারেন। আজকে, আমাদের এটা মনে রাখা ভালো যে, যিহোবা হলেন ‘সেই ঈশ্বর, আপনার নিঃশ্বাস যাঁহার হস্তগত।’ (দানিয়েল ৫:২৩) আমরা আমাদের নিঃশ্বাস, আমাদের অস্তিত্বের জন্য তাঁর কাছে ঋণী। আমরা কি এর জন্য কৃতজ্ঞ? তাহলে, আমরা কি যিহোবার প্রতি বশীভূত থাকতে বাধ্য নই?

যোনার সম্বন্ধে কী বলা যায়? তিনি কি বাধ্য হওয়ার দ্বারা যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাতে শিখেছিলেন? হ্যাঁ, তিনি শিখেছিলেন। তিন দিন ও তিন রাত পরে, সেই মাছটা যোনাকে তীরে নিয়ে এসেছিল এবং “যোনাকে শুষ্ক ভূমির উপরে উদ্গীরণ করিয়া দিল।” (যোনা ২:১০) একটু কল্পনা করুন—এত কিছুর পরে, তীরে আসার জন্য যোনাকে এমনকী সাঁতার পর্যন্ত কাটতে হয়নি! অবশ্য, তাকে সমুদ্রতীর থেকে তার পথ খুঁজে নিতে হয়েছিল, তা সেটা যেখানেই থাকুক না কেন। কিন্তু, শীঘ্র তার কৃতজ্ঞতার মনোভাব পরীক্ষিত হয়েছিল। যোনা ৩:১, ২ পদ বলে: “পরে দ্বিতীয় বার সদাপ্রভুর বাক্য যোনার কাছে উপস্থিত হইল; তিনি কহিলেন, তুমি উঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর আমি তোমাকে যাহা ঘোষণা করিতে বলি, তাহা সেই নগরের উদ্দেশে ঘোষণা কর।” যোনা এখন কী করবেন?

যোনা ইতস্তত করেননি। আমরা পড়ি: “তখন যোনা উঠিয়া সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে নীনবীতে গেলেন।” (যোনা ৩:৩) হ্যাঁ, তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। স্পষ্টতই, তিনি তার ভুলগুলো থেকে শিখেছিলেন। এই ক্ষেত্রে আমাদেরও যোনার বিশ্বাস অনুকরণ করতে হবে। আমরা সকলেই পাপ করি; সকলেই ভুল করি। (রোমীয় ৩:২৩) কিন্তু, আমরা কি হাল ছেড়ে দিই নাকি আমরা আমাদের ভুলগুলো থেকে শিখি ও বাধ্যতার সঙ্গে ঈশ্বরকে সেবা করার পথে ফিরে আসি?

যিহোবা কি যোনাকে তার বাধ্যতার পুরস্কার দিয়েছিলেন? অবশ্যই তিনি দিয়েছিলন। একটা বিষয় হল, যোনা পরিশেষে জানতে পেরেছিলেন বলে মনে হয় যে, সেই নাবিকরা রক্ষা পেয়েছিল। যোনার আত্মত্যাগমূলক কাজের পর সঙ্গেসঙ্গে সেই ঝড় থেমে গিয়েছিল আর সেই নাবিকরা “সদাপ্রভু [যিহোবা, NW] হইতে অতিশয় ভীত হইল” এবং তাদের মিথ্যা দেবতাদের পরিবর্তে, তাঁর কাছে বলি উৎসর্গ করেছিল।—যোনা ১:১৫, ১৬.

আরও অনেক পরে এর চেয়েও বড়ো পুরস্কার এসেছিল। যিশু এক বৃহৎ মৎস্যের উদরে যোনার থাকার সময়কালকে, তাঁর নিজের কবরে বা পাতালে থাকার সময়কালের এক ভাববাণীমূলক চিত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। (মথি ১২:৩৮-৪০) যোনা যখন পৃথিবীতে জীবনে পুনরুত্থিত হবেন, তখন তিনি এটা জেনে কতই না রোমাঞ্চিত হবেন! (যোহন ৫:২৮, ২৯) যিহোবা আপনাকেও আশীর্বাদ করতে চান। যোনার মতো আপনিও কি আপনার ভুলগুলো থেকে শিখবেন ও এক বাধ্য, আত্মত্যাগমূলক মনোভাব দেখাবেন? (w০৯ ১/১)

[পাদটীকাগুলো]

^ গালীল শহরে যোনার জন্ম এক লক্ষণীয় বিষয়, কারণ যিশুর সম্বন্ধে ফরীশীরা উদ্ধতভাবে বলেছিল: “অনুসন্ধান করিয়া দেখ, গালীল হইতে কোন ভাববাদীর উদয় হয় না।” (যোহন ৭:৫২) অনেক অনুবাদক এবং গবেষক ইঙ্গিত করে যে, ফরীশীরা এই বিষয়ে খুব বেশি তথ্য বিচার-বিবেচনা না করেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, গালীলের মতো একটা অখ্যাত জায়গা থেকে কখনো কোনো ভাববাদী আসেননি বা আসতে পারেন না। যদি তা-ই হয়, তাহলে সেই লোকেরা ইতিহাস ও সেইসঙ্গে ভাববাণীকেও অগ্রাহ্যই করছিল।—যিশাইয় ৯:১, ২.

^ যোনার ঘুম কতটা গভীর ছিল, তা জোর দিয়ে সেপ্টুয়াজেন্ট যোগ করে যে, তিনি নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিলেন। কিন্তু, যোনার এই ঘুমকে আমরা তার দিক থেকে অন্যদের প্রতি উদাসীনতা হিসেবে বিচার করার পরিবর্তে, আমরা হয়তো স্মরণ করে দেখতে পারি যে, কখনো কখনো ঘুম পাওয়া সেই ব্যক্তিদের মনের অবস্থাকে কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে, যারা কোনো কারণে খুবই বিষণ্ণতা বোধ করছে। গেৎশিমানী বাগানে যিশুর যন্ত্রণাদায়ক সময়ে পিতর, যাকোব ও যোহন ‘দুঃখ হেতু ঘুমাইয়া পড়িয়াছিলেন।’—লূক ২২:৪৫.

^ “মৎস্য”-এর জন্য ইব্রীয় শব্দটিকে যখন গ্রিক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল, তখন সেটিকে “সামুদ্রিক দানব” বা “প্রকাণ্ড মৎস্য” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে। যদিও সেটা কী ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী ছিল, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার কোনো উপায় নেই, তবুও দেখা গিয়েছে যে, ভূমধ্যসাগরে এমন হাঙরগুলো রয়েছে, যেগুলো একটা সম্পূর্ণ মানুষকে গিলে ফেলতে পারে। অন্য জায়গাগুলোতে এর চেয়েও বড়ো বড়ো হাঙর রয়েছে; তিমি জাতীয় হাঙর (হোয়েল শার্ক) লম্বায় প্রায় ১৫ মিটার—সম্ভবত তার চেয়েও দীর্ঘ হতে পারে!

[৩১ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্র]

যোনা সমালোচকদের মুখোমুখি হন

◼ বাইবেলের যোনা বইয়ে বর্ণিত ঘটনাগুলো কি সত্যিই ঘটেছিল? সেই প্রাচীনকাল থেকেই এই বইটি বিভিন্ন সমালোচকের মুখোমুখি হয়েছিল। বাইবেলকে নিয়ে সমালোচনার এই আধুনিক যুগেও বইটিকে প্রায়ই—নীতিগল্প, রূপকথা, পৌরাণিক কাহিনি বা অলীক গল্প—হিসেবে বাতিল করে দেওয়া হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন গ্রন্থকার রিপোর্ট করেছিলেন যে, একজন পাদরি কীভাবে যোনা ও বৃহৎ মৎস্যের বিবরণকে এক অদ্ভুত ধরনের রূপক বর্ণনা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন, যা হল: যোনা যাফো শহরের একটা হোটেলে থেকেছিলেন, যেটার নাম ছিল দ্যা হোয়েল (তিমি)। হোটেলের বিল মেটানোর জন্য তার কাছে যখন যথেষ্ট পয়সা ছিল না, তখন হোটেলের মালিক তাকে বের করে দিয়েছিলেন। এই অর্থে, যোনাকে একটা তিমি মাছ “খেয়ে ফেলেছিল” এবং “উদ্গীরণ” করেছিল! বস্তুতপক্ষে, বাইবেলের সমালোচকরা যোনাকে সেই বৃহৎ মৎস্যের চেয়ে আরও বেশি গ্রাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল বলেই মনে হয়!

বাইবেলের এই বইটি কেন এত সন্দেহের উদ্রেক করে? কারণ এটি বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনার বর্ণনা করে। অনেক সমালোচক, এই অলৌকিক ঘটনাগুলোর সম্বন্ধে এই একরোখা প্রতিকূল ধারণা বহন করে বলে মনে হয়: এইরকম বিষয়গুলো অসম্ভব। কিন্তু, এইরকম বিষয়গুলো কি যুক্তিযুক্ত? নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘বাইবেলের এই প্রথম কথাগুলোকে কি আমি বিশ্বাস করি?’ এটি বলে: “আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করিলেন।” (আদিপুস্তক ১:১) পৃথিবীব্যাপী লক্ষ লক্ষ যুক্তিবাদী লোক বিজ্ঞতার সঙ্গে এই সরল সত্যটিকে গ্রহণ করে নিয়েছে। কিন্তু, এক অর্থে, শুধুমাত্র এই বিবৃতিটিই পরবর্তী সময়ে বাইবেলে বর্ণিত অন্য যেকোনো অলৌকিক ঘটনার চেয়ে বেশি কিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে।

এই বিষয়টা বিবেচনা করুন: যিনি বিশাল তারকাখচিত আকাশ এবং পৃথিবীতে বিদ্যমান সমস্ত বিস্ময়কর জটিল জীবিত বস্তু সৃষ্টি করেছেন, তাঁর পক্ষে যোনার বইয়ে বর্ণিত কোন বিষয়গুলো অসম্ভব হবে? একটা ঝড় সৃষ্টি করা? একটা বৃহৎ মৎস্যকে একজন মানুষকে গিলে ফেলার জন্য চালিত করা? নাকি সেই একই মাছকে দিয়ে আবার সেই ব্যক্তিকে উদ্গীরণ করানো? অসীম শক্তির অধিকারী একজন ব্যক্তির পক্ষে এই ধরনের বিষয়গুলো মোটেও কঠিন কিছু নয়।—যিশাইয় ৪০:২৬.

এমনকী ঐশিক শক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়াই কখনো কখনো বিস্ময়কর ঘটনাগুলো ঘটে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, এইরকম কথিত রয়েছে যে, ১৭৫৮ সালে একজন নাবিক তার জাহাজ থেকে ভূমধ্যসাগরে পড়ে গিয়েছিলেন ও একটা হাঙর তাকে গিলে ফেলেছিল। কিন্তু, সেই হাঙরটাকে লক্ষ্য করে কামানের গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছিল। ফলে, গোলার আঘাতে হাঙরটি সেই নাবিককে উদ্গীরণ করেছিল আর সেই নাবিককে নিরাপদে জীবিত অবস্থায় টেনে তোলা হয়েছিল ও তিনি তেমন একটা আহত হননি। এই ঘটনাটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে আমরা হয়তো এই গল্পটাকে উল্লেখযোগ্য ও এমনকী বিস্ময়কর হিসেবে মনে করতে পারি—কিন্তু এক অলৌকিক ঘটনা হিসেবে নয়। তাহলে, ঈশ্বর কি তাঁর শক্তিকে এর চেয়েও আরও বেশি কিছু করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন না?

সন্দেহবাদীরা এটাও জোরের সঙ্গে বলে যে, দম বন্ধ না করে কোনো মানুষই একটা মাছের পেটে তিন দিন থাকতে পারে না। কিন্তু, দীর্ঘসময় ধরে জলের নীচে থাকার সময় নিঃশ্বাস নিতে ব্যবহার করার জন্য কীভাবে ট্যাঙ্কগুলোকে সংকুচিত বায়ুর দ্বারা পূর্ণ করতে হয়, সেটা বের করার ক্ষেত্রে মানুষ যথেষ্ট বুদ্ধিমান। তাহলে, ঈশ্বর কি যোনাকে তিনদিন বাঁচিয়ে রাখার ও তার শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার জন্য তাঁর অসীম শক্তি ও প্রজ্ঞাকে ব্যবহার করতে পারেন না? যিহোবার এক দূত একবার যিশুর মা, মরিয়মকে বলেছিলেন, “ঈশ্বরের কোন বাক্য শক্তিহীন হইবে না।”—লূক ১:৩৭.

এ ছাড়া, আর কোন বিষয়টি দেখায় যে, যোনার বইটি এক সঠিক ইতিহাস? জাহাজ ও জাহাজের নাবিকদলের সম্বন্ধে যোনার বর্ণনা হল বিশদ এবং বাস্তবসম্মত ঘটনা। যোনা ১:৫ পদে, আমরা দেখতে পাই যে, নাবিকরা জাহাজের ভার লাঘব করার জন্য জাহাজ থেকে মালপত্র সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিল। প্রাচীন ইতিহাসবেত্তারা ও এমনকী রব্বিদের বিধি দেখায় যে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মুখোমুখি হলে সাধারণত এইরকমই করা হতো। নীনবী সম্বন্ধে পরবর্তী সময়ে দেওয়া যোনার বর্ণনাও ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণের সঙ্গে মিলে যায়। কিন্তু সর্বোপরি, যিশু খ্রিস্ট যোনার তিন দিন বৃহৎ মৎস্যের উদরে থাকার বিষয়টাকে, তাঁর নিজের কবরে থাকার ভবিষ্যদ্‌বাণীমূলক চিত্র হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। (মথি ১২:৩৮-৪০) যিশুর দেওয়া সাক্ষ্য প্রমাণ করে যে, যোনার গল্পটি সত্য। (w০৯ ১/১)

“ঈশ্বরের কোন বাক্য শক্তিহীন হইবে না।”—লূক ১:৩৭