সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোয়াশ কুসংসর্গের কারণে যিহোবাকে পরিত্যাগ করেছিলেন

যিহোয়াশ কুসংসর্গের কারণে যিহোবাকে পরিত্যাগ করেছিলেন

আপনাদের সন্তানদের শিক্ষা দিন

যিহোয়াশ কুসংসর্গের কারণে যিহোবাকে পরিত্যাগ করেছিলেন

 যিরূশালেমে, যে-নগরে ঈশ্বরের মন্দির ছিল সেখানে দুঃসময় চলছিল। সবেমাত্র রাজা অহসিয়কে হত্যা করা হয়েছে। এরপর অহসিয়ের মা অথলিয়া যা করেছিলেন, তা এমনকী কল্পনা করাও কঠিন। তিনি অহসিয়ের সন্তানদের—তার নিজের নাতিদের—হত্যা করেছিলেন! তুমি কি জানো কেন?— * যাতে তাদের মধ্যে কারো পরিবর্তে, তিনি শাসক হতে পারেন।

কিন্তু, অথলিয়ার নাতিদের মধ্যে একজন, ছোট্ট যিহোয়াশ (বা যোয়াশ) রক্ষা পেয়েছিল আর তার ঠাকুরমা এই সম্বন্ধে এমনকী জানতেনও না। তুমি কি জানতে চাও কীভাবে?—শিশুটির যিহোশেবা নামে এক পিসি ছিল আর তিনি যিহোয়াশকে ঈশ্বরের মন্দিরে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তিনি এটা করতে পেরেছিলেন কারণ তার স্বামী ছিলেন মহাযাজক যিহোয়াদা। তাই তারা দুজনে মিলে যিহোয়াশের সুরক্ষিত থাকার বিষয়টা নিশ্চিত করেছিল।

যিহোয়াশকে ছয় বছর ধরে মন্দিরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাকে যিহোবা ঈশ্বর এবং তাঁর আইন সম্বন্ধে সমস্তকিছু শেখানো হয়েছিল। অবশেষে, যখন যিহোয়াশের বয়স সাত বছর হয়, তখন যিহোয়াদা যিহোয়াশকে রাজা করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। যিহোয়াদা কীভাবে তা করেছিলেন এবং যিহোয়াশের ঠাকুরমা দুষ্ট রানি অথলিয়ার কী হয়েছিল, তা কি তুমি শুনতে চাও?—

সেই সময়ে যিরূশালেমে রাজাদের যে-বিশেষ দেহরক্ষীরা ছিল, যিহোয়াদা গোপনে তাদের সবাইকে ডেকেছিলেন। তিনি তাদের বলেছিলেন যে, কীভাবে তিনি এবং তার স্ত্রী, অহসিয়ের পুত্রসন্তানটিকে রক্ষা করেছিলেন। তারপর যিহোয়াদা যিহোয়াশকে সেই দেহরক্ষীদের সামনে নিয়ে এসেছিলেন, যারা বুঝতে পেরেছিল যে সে হল ন্যায্য শাসক। আর একটা পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

যিহোয়াদা যিহোয়াশকে বের করে এনেছিলেন ও তাকে মুকুট পরিয়ে দিয়েছিলেন। এতে লোকেরা “করতালি দিয়া কহিলেন, রাজা চিরজীবী হউন।” যিহোয়াশকে রক্ষা করার জন্য দেহরক্ষীরা তার চারদিকে ঘিরে ছিল। অথলিয়া যখন এইসমস্ত আনন্দধ্বনি শুনতে পেয়েছিলেন, তখন দৌড়ে গিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু যিহোয়াদার আদেশে দেহরক্ষীরা অথলিয়াকে হত্যা করেছিল।—২ রাজাবলি ১১:১-১৬.

তোমার কি মনে হয় যে, যিহোয়াশ সবসময় যিহোয়াদার কথা শুনেছিলেন এবং যা সঠিক, তা করেছিলেন?—যতদিন যিহোয়াদা বেঁচে ছিলেন, ততদিন তিনি তা করেছিলেন। যিহোয়াদা এমনকী এটাও নিশ্চিত করেছিলেন যে, লোকেরা যেন ঈশ্বরের মন্দির মেরামতের জন্য অর্থ প্রদান করে, যা তার বাবা অহসিয় এবং ঠাকুরদাদা যিহোরাম উপেক্ষা করেছিল। কিন্তু এসো দেখি মহাযাজক যিহোয়াদা মারা যাওয়ার পর কী হয়েছিল।—২ রাজাবলি ১২:১-১৬.

সেই সময়ে যিহোয়াশের বয়স প্রায় ৪০ বছর। যারা যিহোবাকে সেবা করত, তাদের সঙ্গে মেলামেশা করে চলার পরিবর্তে, যিহোয়াশ সেই ব্যক্তিদের বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন, যারা মিথ্যা দেবতাদের উপাসনা করত। সেই সময় যিহোয়াদার ছেলে সখরিয় যিহোবার যাজক ছিলেন। যিহোয়াশ তখন যে-মন্দ কাজগুলো করছিলেন সেই সম্বন্ধে সখরিয় যখন জানতে পেরেছিলেন, তখন তিনি কী করেছিলেন বলে তোমার মনে হয়?—

সখরিয় যিহোয়াশকে ও লোকেদেরকে বলেছিলেন: “তোমরা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করিয়াছ, তিনিও তোমাদিগকে ত্যাগ করিলেন।” সেই কথাগুলো যিহোয়াশকে এতটাই রাগান্বিত করেছিল যে, তিনি আদেশ দিয়েছিলেন যেন সখরিয়কে পাথর মেরে হত্যা করা হয়। একটু কল্পনা করো—যিহোয়াশকে একজন হত্যাকারীর হাত থেকে রক্ষা করা হয়েছিল কিন্তু এখন তিনি নিজেই সখরিয়কে হত্যা করেছেন!—২ বংশাবলি ২৪:১-৩, ১৫-২২.

এই বিবরণ থেকে আমাদের শেখার মতো কোনো শিক্ষা কি তুমি দেখতে পেয়েছ?—আমরা কখনোই অথলিয়ার মতো হতে চাইব না, যিনি অত্যন্ত মন্দ এবং নিষ্ঠুর ছিলেন। এর পরিবর্তে, আমাদের উচিত আমাদের সহউপাসকদের আর এমনকী আমাদের শত্রুদেরও প্রেম করা, যেমনটা যিশু আমাদের করতে শিক্ষা দিয়েছেন। (মথি ৫:৪৪; যোহন ১৩:৩৪, ৩৫) আর মনে রেখো, আমরা যদি যিহোয়াশের মতো যা সঠিক তা করতে শুরু করি, তাহলে আমাদের সবসময় সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে, যারা যিহোবাকে ভালোবাসে এবং তাঁকে সেবা করার জন্য আমাদেরকে উৎসাহিত করে। (w০৯ ৪/১)

[পাদটীকা]

^ আপনি যদি সন্তানের সঙ্গে এই প্রবন্ধটি পড়েন, তাহলে ড্যাশগুলো আপনাকে একটু থামতে ও সন্তানকে তার মনের কথা প্রকাশ করার জন্য উৎসাহ দেওয়ার বিষয়টা মনে করিয়ে দেয়।

প্রশ্নাবলি:

❍ যিহোয়াশ কীভাবে এবং কার কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন?

❍ কীভাবে যিহোয়াশ ন্যায্য শাসক হয়েছিলেন এবং তিনি কোন ভালো কাজগুলো করেছিলেন?

❍ কেন যিহোয়াশ মন্দ হয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি কাকে হত্যা করেছিলেন?

❍ বাইবেলের এই গল্প থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোয়াশকে রক্ষা করা হয়েছিল