সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

গুপ্তধন আবিষ্কার করা

গুপ্তধন আবিষ্কার করা

গুপ্তধন আবিষ্কার করা

 আপনি কি কখনো কোনো অপ্রত্যাশিত জায়গায় গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছেন? ২০০৫ সালের ২৭ মার্চ এস্টোনিয়ার একজন যিহোবার সাক্ষি, ইভো লডের ক্ষেত্রে তা হয়েছিল। তিনি একজন বয়স্ক সহসাক্ষি আ্যলমা ভার্‌ডিয়াকে একটা ছোটো পুরোনো ঘর ভেঙে ফেলতে সাহায্য করছিলেন। বাইরের দেওয়ালটা সরানোর সময় তারা একটা কাঠের বোর্ড দেখতে পেয়েছিল, যেটা একটা স্তম্ভের এক দিক ঢেকে রেখেছিল। বোর্ডটা সরানোর পর তারা প্রায় ১০ সেন্টিমিটার চওড়া, ১.২ মিটার লম্বা এবং ১০ সেন্টিমিটার গভীর এক খাঁজ কাটা অংশ খুঁজে পেয়েছিল, যেটা একই মাপের কাঠের টুকরো দিয়ে ঢাকা ছিল। (১) গুপ্তধনের এক ভাণ্ডার! গুপ্তধনগুলো কী ছিল? কে সেগুলো সেখানে লুকিয়ে রেখেছিলেন?

সেই ভাণ্ডার থেকে কয়েকটা প্যাকেট বেরিয়ে এসেছিল, যেগুলো মোটা কাগজ দিয়ে সযত্নে মোড়ানো ছিল। (২) প্যাকেটের মধ্যে যিহোবার সাক্ষিদের সাহিত্যাদি ছিল, যেগুলোর বেশিরভাগই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার অধ্যয়ন প্রবন্ধ আর এগুলোর মধ্যে কিছু ছিল ১৯৪৭ সালের। (৩) সেগুলো এস্টোনীয় ভাষায় সতর্কতার সঙ্গে হাতে লেখা হয়েছিল। কে সেগুলো সেখানে লুকিয়ে রেখেছিলেন, সেই বিষয়ে কয়েকটা প্যাকেটে কিছু ইঙ্গিত ছিল। সেগুলো ছিল আ্যলমার স্বামী ভিলেম ভার্‌ডিয়াকে করা জিজ্ঞাসাবাদের নথিপত্র। খুঁজে পাওয়া তথ্যসমূহের মধ্যে তিনি জেলে যে-বছরগুলো কাটিয়েছিলেন, সেই সম্বন্ধীয় তথ্যও ছিল। কেন তাকে জেলে যেতে হয়েছিল?

ভিলেম ভার্‌ডিয়া টারটু মণ্ডলীর সাক্ষিদের মাঝে আর পরে প্রাক্তন সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র এস্টোনিয়ার ওটেপা মণ্ডলীতে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে সেবা করেছিলেন। স্পষ্টতই, তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিছু সময় আগে বাইবেলের সত্য শিখেছিলেন। কয়েক বছর পর, ১৯৪৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর সাম্যবাদী সরকার ভাই ভার্‌ডিয়াকে তার ধর্মীয় কাজকর্মের জন্য গ্রেপ্তার করেছিল। গুপ্ত পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল এবং তাকে তার সহবিশ্বাসীদের নাম বলে দিতে বাধ্য করতে চেষ্টা করার সময় তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিল। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার পর, তাকে রাশিয়ার বন্দি শিবিরগুলোতে দশ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

১৯৯০ সালের ৬ মার্চ তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত, ভিলেম ভার্‌ডিয়া নিজেকে যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত বলে প্রমাণিত করেছিলেন। বিদ্যমান সাহিত্যাদি সম্বন্ধে তার স্ত্রীর কোনো ধারণাই ছিল না। তিনি নিশ্চয়ই তাকে যেকোনো ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ থেকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন। কেন তাকে সাহিত্যাদি লুকিয়ে রাখতে হয়েছিল? তিনি সেগুলো লুকিয়ে রেখেছিলেন কারণ সোভিয়েত রাষ্ট্র নিরাপত্তা কমিটি অর্থাৎ কেজিবি ধর্মীয় প্রকাশনাদির খোঁজে প্রায়ই অপ্রত্যাশিতভাবে যিহোবার সাক্ষিদের বাড়িগুলোতে তল্লাশি চালাত। সম্ভবত, ভাই ভার্‌ডিয়া এই বিষয়টা নিশ্চিত করার জন্য সাহিত্যাদি লুকিয়ে রেখেছিলেন যে, যদি কেজিবি সবকিছু নিয়ে চলে যায়, তবুও সহবিশ্বাসীদের জন্য আধ্যাত্মিক খাদ্যের সরবরাহ বজায় থাকবে। সাহিত্যাদির অন্যান্য ভাণ্ডার আগেই ১৯৯০ সালের গ্রীষ্মকালে পাওয়া গিয়েছিল। একটা দক্ষিণ এস্টোনিয়ার টারটুতে আবিষ্কার করা হয়েছিল। এটাও ভিলেম ভার্‌ডিয়া লুকিয়ে রেখেছিলেন।

কেন আমরা এই নথিগুলোকে ধন বলছি? কারণ অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে হাতে লেখা এবং সাবধানে লুকিয়ে রাখা এই কপিগুলো সেই সময়ে প্রাপ্তিসাধ্য আধ্যাত্মিক খাদ্যের প্রতি সাক্ষিদের যে উপলব্ধি ছিল, সেই বিষয়ে সুন্দরভাবে প্রকাশ করে। (মথি ২৪:৪৫) আপনার এলাকাতে আপনি এখন যে-আধ্যাত্মিক খাদ্য লাভ করছেন, তার জন্য কি আপনি উপলব্ধি দেখান? সেগুলোর মধ্যে এস্টোনীয় এবং ১৭০টারও বেশি ভাষায় প্রহরীদুর্গ পত্রিকা রয়েছে।