সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রতিশোধ নেওয়া কি সঠিক?

প্রতিশোধ নেওয়া কি সঠিক?

প্রতিশোধ নেওয়া কি সঠিক?

এইরকম কথিত রয়েছে যে, প্রতিশোধ মধুর। কারণ, আমরা যদি কোনো কারণে অসন্তুষ্ট হই বা কেউ আমাদের ক্ষতি করে, তাহলে রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সঠিক ও ভুল সম্বন্ধে আমাদের সহজাত বোধশক্তির কারণে আমরা জোরালোভাবে চাই যেন অন্যায়কে শোধরানো হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে?

অবশ্য, এমন অনেক পরিস্থিতি রয়েছে, যখন লোকেরা মনে করতে পারে যে তাদের প্রতিশোধ নিতে হবে, যেমন কেউ যদি তাদেরকে চড় মারে, ধাক্কা দেয়, তাচ্ছিল্য করে, গালিগালাজ করে কিংবা মারধর করে, তাদের জিনিস কেড়ে নেয় বা এইরকম অন্যান্য পরিস্থিতিতে। ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে যখন কোনো কারণে অপমান করা হয়, তখন আপনার কেমন লাগে? আজকে অনেকে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, ‘তারা যা করেছে, সেটার প্রতিশোধ আমি নেবই!’

যুক্তরাষ্ট্রে, জুনিয়র হাইস্কুলের (সপ্তম থেকে নবম শ্রেণীর) বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী, যে-শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের শাসন করেছিল, তাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছিল। নিউ অরলিয়েন্সের টিচার্স ইউনিয়ন-এর প্রেসিডেন্ট ব্রেন্ডা মিচেল বলেন, “একবার কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে, তার সুনাম নষ্ট হয়ে যায়।” এমনকী দায়েরকৃত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যাওয়ার পরেও, সেটার ক্ষত থেকে যেতে পারে।

কর্মক্ষেত্রে, দিন দিন বিরাট সংখ্যক অসন্তুষ্ট কর্মী কোম্পানির কম্পিউটার নেটওয়ার্ক থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নষ্ট করে বা মুছে দিয়ে তাদের নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে। অন্যেরা কোম্পানির বিভিন্ন গোপন তথ্য চুরি করে এবং সেগুলোকে বিক্রি করে বা ফাঁস করে দেয়। ইলেকট্রনিক ফাইলগুলো চুরি করা ছাড়াও, “কোম্পানির জিনিসপত্র চুরি করা কর্মীদের জন্য প্রতিশোধ নেওয়ার সাধারণ উপায়,” দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করে। প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকিকে দমন করার জন্য অনেক কোম্পানি বরখাস্তকৃত কর্মীর সঙ্গে তার ডেস্ক পর্যন্ত যেতে একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যিনি সেই কর্মী তার সমস্ত জিনিস সংগ্রহ না করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন এবং এরপর তাকে সেই অফিসের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসেন।

তবে, আমরা সাধারণত আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, পরিচিত ব্যক্তি ও পরিবারের সদস্যদের ওপর প্রতিশোধ নিয়ে থাকি। নির্দয় কথা বা অবিবেচনাপূর্ণ আচরণের কারণে কষ্ট পাওয়া প্রায়ই প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে থাকে। কোনো বন্ধু যদি আপনার সঙ্গে রূঢ়ভাবে কথা বলেন, তাহলে আপনিও কি পালটা তার সঙ্গে রূঢ়ভাবে কথা বলেন? পরিবারের কোনো সদস্য যদি আপনাকে কোনো কারণে দুঃখ দেন, তাহলে আপনি কি তার ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার ফন্দি আঁটতে থাকেন? কোনো ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি যদি আমাদের অসন্তুষ্ট করেন, তাহলে কত সহজেই না আমরা সেইরকম আচরণ করে ফেলতে পারি!

প্রতিশোধ নেওয়া মূর্খতা

প্রায়ই দেখা যায় যে, যারা প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে তারা সাধারণত কোনো অন্যায়ের কারণে প্রাপ্ত আবেগগত কষ্টকে লাঘব করার জন্য তা করতে চায়। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল আমাদের বলে যে, যখন ইব্রীয় কুলপতি যাকোবের ছেলেরা জানতে পেরেছিল যে, কনানীয় শিখিম তাদের বোন দীণাকে ভ্রষ্ট করেছে, তখন “তাহারা ক্ষুব্ধ ও অতি ক্রোধান্বিত হইয়াছিল।” (আদিপুস্তক ৩৪:১-৭) তাদের বোনের প্রতি যে-অন্যায় করা হয়েছে, সেটার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য যাকোবের ছেলেদের মধ্যে দুজন, শিখিম ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এঁটেছিল। শিমিয়োন ও লেবি ছলপূর্বক কনানীয় শহরে প্রবেশ করেছিল এবং শিখিমসহ প্রত্যেক পুরুষকে হত্যা করেছিল।—আদিপুস্তক ৩৪:১৩-২৭.

এত ব্যাপক রক্তপাত কি সেই বিষয়টাকে মিটমাট করেছিল? যাকোব যখন তার ছেলেদের কাজ সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলেন, তখন তিনি তাদের এই কথা বলে তিরস্কার করেছিলেন: ‘তোমরা এই দেশনিবাসীদের নিকটে আমাকে দুর্গন্ধস্বরূপ করিয়া ব্যাকুল করিলে; তাহারা আমার বিরুদ্ধে একত্র হইয়া আমাকে আঘাত করিবে; আর আমি সপরিবারে বিনষ্ট হইব।’ (আদিপুস্তক ৩৪:৩০) হ্যাঁ, বিষয়টাকে মিটমাট করার পরিবর্তে, তাদের প্রতিশোধপরায়ণ কাজগুলো বিপরীত পরিণতি নিয়ে এসেছিল; যাকোবের পরিবারকে এরপর সেই পালটা আক্রমণের আশঙ্কায় সতর্ক থাকতে হয়েছিল, যা ক্রুদ্ধ প্রতিবেশীদের কাছ থেকে আসতে পারত। সম্ভবত এইরকম এক পরিণতিকে দমন করার জন্য ঈশ্বর যাকোবকে তার পরিবারসহ সেই এলাকার বাইরে বৈথেলে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।—আদিপুস্তক ৩৫:১, ৫.

দীণার ধর্ষণকে কেন্দ্র করে ঘটা ঘটনাগুলো এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার ওপর জোর দেয়। প্রতিশোধ প্রায়ই আরও প্রতিশোধের জন্ম দেয় এবং সেই প্রক্রিয়া চলতেই থাকে।

যন্ত্রণার চত্র

আমাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করেছেন এমন কাউকে শাস্তি দেওয়ার ওপর আমাদের মন ও শক্তিকে নিবিষ্ট করা ধ্বংসাত্মক। ক্ষমা—আপনার অতীত জীবনের সঙ্গে যেভাবে মিটমাট করে এগিয়ে যাবেন (ইংরেজি) নামক বইটি মন্তব্য করে: “ক্রোধ আপনাকে গ্রাস করে। আপনি যখন আপনার কষ্টকর অতীত অভিজ্ঞতাগুলো নিয়ে চিন্তা করতে থাকেন, যারা আপনাকে কষ্ট দিয়েছে, তাদেরকে মনে মনে অভিশাপ দিতে থাকেন এবং প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ফন্দি আঁটতে থাকেন, তখন সেগুলো আপনার সময় ও শক্তিকে গ্রাস করে।” বাইবেল এই বিষয়টাকে এইরকম সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করে, “ঈর্ষা সকল অস্থির পচনস্বরূপ।”—হিতোপদেশ ১৪:৩০.

বস্তুতপক্ষে, কীভাবে একজন ব্যক্তি আনন্দিত হতে পারেন, যদি কিনা তিনি তার মনের মধ্যে ঘৃণা এবং ক্ষতি করার অনুভূতি পুষে রাখেন? একজন সমালোচক মন্তব্য করেছিলেন: “যদি আপনি মনে করেন যে, ‘প্রতিশোধ মধুর,’ তাহলে সেই ব্যক্তিদের চেহারার দিকে একটু তাকিয়ে দেখুন, যারা বছরের পর বছর ধরে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে এসেছে।”

পৃথিবীর বহু জায়গায়, যেখানে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উচ্ছৃঙ্খলতা বিরাজমান, সেই জায়গাগুলোতে কী ঘটছে, তা একটু বিবেচনা করুন। প্রায়ই একটা হত্যা আরেকটা হত্যার জন্ম দেয়, যা ঘৃণা ও মৃত্যুর অশেষ চক্রকে কেবল শক্তিশালী করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, এক সন্ত্রাসী বোমা হামলায় যখন ১৮ জন যুবক নিহত হয়েছিল, তখন একজন শোকার্ত মহিলা চিৎকার করে বলেছিলেন: “আমরা তাদেরকে কখনোই ছাড়ব না!” এভাবে, নৃশংসতা কেবল বেড়েই চলেছে আর অধিক সংখ্যক লোক সংঘর্ষে যোগ দিতে প্রভাবিত হচ্ছে।

“চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু”

কেউ কেউ তাদের প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য বাইবেলের কথার প্রতি নির্দেশ করে। তারা বলে, “বাইবেলই কি ‘চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু, দন্তের পরিশোধে দন্তের’ বিষয় বলে না?” (লেবীয় পুস্তক ২৪:২০) ওপর ওপর পড়ে মনে হতে পারে যে, “চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু” সম্বন্ধীয় আইনটা প্রতিশোধ নিতে উৎসাহিত করে। কিন্তু, প্রকৃতপক্ষে এটা প্রতিশোধ নেওয়ার মতো বিবেচনাহীন কাজকে দমন করেছিল বা কমিয়েছিল। কীভাবে?

একজন ইস্রায়েলীয় যদি কোনো সহইস্রায়েলীয়কে আক্রমণ করে তার চোখ উপড়ে ফেলত, তাহলে ব্যবস্থা অনুযায়ী এর জন্য ন্যায্য শাস্তি ছিল। কিন্তু, যাকে আক্রমণ করা হয়েছে সেই ব্যক্তি নিজে, আক্রমণকারী ব্যক্তির বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে পারতেন না। ব্যবস্থায় বলা হয়েছিল যে, তার সেই বিষয়টাকে সঠিকভাবে মিটমাট করার জন্য প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষের—নিযুক্ত বিচারকদের—কাছে যাওয়ার দরকার ছিল। কোনো একজনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছায় করা অপরাধমূলক বা হিংস্র কাজের কারণে যে একইরকম শাস্তি দেওয়া হতে পারে, এই বিষয়টা জানা প্রতিশোধ নেওয়ার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করেছিল। তবে, এর সঙ্গে আরও বেশি কিছু জড়িত।

ওপরে উল্লেখিত প্রতিশোধের নিয়ম সম্বন্ধে উল্লেখ করার আগে, যিহোবা ঈশ্বর মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েল জাতিকে বলেছিলেন: “তুমি হৃদয়মধ্যে আপন ভ্রাতাকে ঘৃণা করিও না। . . . তুমি . . . প্রতিহিংসা কি দ্বেষ করিও না।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:১৭, ১৮) হ্যাঁ, ‘চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু, দন্তের পরিশোধে দন্তের’ ধারণাকে সম্পূর্ণ ব্যবস্থা চুক্তির প্রসঙ্গের পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করা উচিত, যেটাকে দুটো আজ্ঞার মধ্যে সারাংশ করা হয়েছে, যেমন যিশু বলেছিলেন: “তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে” এবং “তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।” (মথি ২২:৩৭-৪০) তাই, সত্য খ্রিস্টানরা যদি অবিচার ভোগ করে, তাহলে তাদের কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত?

শান্তির পথে চলুন

বাইবেল যিহোবাকে “শান্তির ঈশ্বর” বলে বর্ণনা করে আর তাঁর উপাসকদের ‘শান্তির চেষ্টা ও তাহার অনুধাবন করিতে’ জোরালো পরামর্শ দেয়। (ইব্রীয় ১৩:২০; ১ পিতর ৩:১১) কিন্তু, শান্তির চেষ্টা করা কি আসলেই কার্যকারী হয়?

যিশুর পার্থিব পরিচর্যার সময় তাঁর শরীরে থুথু দেওয়া হয়েছিল, তাঁকে চাবুক মারা হয়েছিল এবং তাঁর শত্রুরা তাঁকে তাড়না করেছিল, তাঁর এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন ও এমনকী তাঁর নিজ অনুসারীরা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। (মথি ২৬:৪৮-৫০; ২৭:২৭-৩১) তিনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন? “তিনি নিন্দিত হইলে প্রতিনিন্দা করিতেন না,” প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন। তিনি “দুঃখভোগ কালে তর্জ্জন করিতেন না, কিন্তু যিনি ন্যায় অনুসারে বিচার করেন, তাঁহার উপর ভার রাখিতেন।”—১ পিতর ২:২৩.

“খ্রীষ্টও তোমাদের নিমিত্ত দুঃখ ভোগ করিলেন,” পিতর ব্যাখ্যা করেছিলেন, “এ বিষয়ে তোমাদের জন্য এক আদর্শ রাখিয়া গিয়াছেন, যেন তোমরা তাঁহার পদচিহ্নের অনুগমন কর।” (১ পিতর ২:২১) হ্যাঁ, খ্রিস্টানদের যিশুকে অনুকরণ করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে, যার অন্তর্ভুক্ত তিনি অবিচার ভোগ করার সময় যেরকম আচরণ করেছিলেন, সেই আচরণও। এই ব্যাপারে, যিশু নিজে পর্বতেদত্ত উপদেশে বলেছিলেন: “তোমরা আপন আপন শত্রুদিগকে প্রেম করিও, এবং যাহারা তোমাদিগকে তাড়না করে, তাহাদের জন্য প্রার্থনা করিও; যেন তোমরা আপনাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হও।”—মথি ৫:৪৪, ৪৫.

যারা খ্রিস্টের প্রেমকে অনুকরণ করে, তারা যখন কোনো অন্যায়ের মুখোমুখি হয় বা তারা যদি মনে করে যে, তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করা হয়েছে, তাহলে তারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়? হিতোপদেশ ১৯:১১ পদ বলে: “মানুষের বুদ্ধি তাহাকে ক্রোধে ধীর করে, আর দোষ ছাড়িয়া দেওয়া তাহার শোভা।” এ ছাড়া, তারা এই পরামর্শেও মনোযোগ দেয়: “তুমি মন্দের দ্বারা পরাজিত হইও না, কিন্তু উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাজয় কর।” (রোমীয় ১২:২১) বর্তমানে সর্বত্র বিরাজমান প্রতিশোধপরায়ণ মনোভাবের চেয়ে কতই না আলাদা! সত্য খ্রিস্টীয় প্রেম আমাদেরকে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতাকে কাটিয়ে উঠতে ও এর ফলে ‘দোষ ছাড়িয়া দিতে’ সাহায্য করতে পারে, কারণ প্রেম “অপকার গণনা করে না।”—১ করিন্থীয় ১৩:৫.

তার মানে কি এই যে, আমরা যদি কোনো অপরাধের শিকার হই বা কোনোভাবে হুমকির মুখোমুখি হই, তাহলে নম্রভাবে তা মেনে নেওয়া উচিত? কখনোই না! পৌল যখন বলেছিলেন যে, “উত্তমের দ্বারা মন্দকে পরাজয় কর,” তখন তিনি এইরকম বোঝাননি যে, একজন খ্রিস্টানকে শহিদ হওয়ার ধারণার দ্বারা আচ্ছন্ন থাকতে হবে। এর বিপরীতে, আমরা যদি আক্রমণের শিকার হই, তাহলে আমাদের নিশ্চয়ই নিজেদেরকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। যদি আপনার ওপর বা আপনার সম্পত্তির ওপর আক্রমণ করা হয়, তাহলে আপনি হয়তো পুলিশ ডাকতে চাইতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে বা স্কুলে কারো সঙ্গে যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে আমরা সেখানকার প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হতে পারি।—রোমীয় ১৩:৩, ৪.

তা সত্ত্বেও, এই বিষয়টা মনে রাখা ভালো যে, এই বিধিব্যবস্থায় প্রকৃত ন্যায়বিচার লাভ করা কঠিন হতে পারে। বস্তুতপক্ষে, অনেকে তা পাওয়ার চেষ্টায় সারাজীবন কাটিয়ে দিয়েছে কিন্তু তাদের প্রত্যাশাগুলো যখন বাস্তবায়িত হয়নি, তখন তারা শুধু তিক্তবিরক্তই হয়েছে।

শয়তান দেখতে চায় যে, প্রতিশোধ ও ঘৃণার কারণে লোকেরা যেন বিভক্ত হয়ে পড়ে। (১ যোহন ৩:৭, ৮) তবে, বাইবেলের এই কথাগুলো মনে রাখা অনেক ভালো: “হে প্রিয়েরা, তোমরা আপনারা প্রতিশোধ লইও না, বরং [ঈশ্বরের] ক্রোধের জন্য স্থান ছাড়িয়া দেও, কারণ লেখা আছে, ‘প্রতিশোধ লওয়া আমারই কর্ম্ম, আমিই প্রতিফল দিব, ইহা প্রভু [“যিহোবা,” NW] বলেন।’” (রোমীয় ১২:১৯) বিষয়গুলো যিহোবার হাতে ছেড়ে দিয়ে আমরা নিজেদেরকে অনেক কষ্ট, ক্রোধ ও দৌরাত্ম্য থেকে মুক্ত রাখি।—হিতোপদেশ ৩:৩-৬. (w০৯ ০৯/০১)

[১২ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে” এবং “তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে”

[১৩ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

প্রেম “অপকার গণনা করে না।”—১ করিন্থীয় ১৩:৫