সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান?

যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান?

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান?

দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১২, ১৩

বাধ্য হব, নাকি হব না—এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সবসময় সহজ নয়। রূঢ় অথবা অতিরিক্ত দাবি করেন এমন একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির প্রতি তার অধীনস্ত ব্যক্তিরা হয়তো অনিচ্ছুকভাবে বাধ্যতা দেখায়। কিন্তু, যিহোবা ঈশ্বরের উপাসকরা স্বেচ্ছায় তাঁর বাধ্য হয়। কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য, আসুন আমরা দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১২, ১৩ পদে প্রাপ্ত মোশির কথাগুলো পরীক্ষা করে দেখি। *

ঈশ্বরের চাহিদাগুলো সম্বন্ধে সংক্ষেপে বলার সময়, মোশি আগ্রহজনক এক প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন: “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার কাছে কি চাহেন?” (১২ পদ) ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে যা-কিছু আশা করেন, সেটা চাওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে। বস্তুতপক্ষে, তিনি হচ্ছেন সার্বভৌম প্রভু এবং জীবনের উনুই বা উৎস ও রক্ষাকর্তা। (গীতসংহিতা ৩৬:৯; যিশাইয় ৩৩:২২) আমাদের বাধ্যতা পাওয়ার অধিকার যিহোবার রয়েছে। তবে, তিনি জোরপূর্বক বাধ্যতা চান না। তিনি আমাদের কাছ থেকে কী চান? তিনি চান যেন আমরা ‘অন্তঃকরণের সহিত আজ্ঞাবহ হই।’—রোমীয় ৬:১৭.

কী আমাদেরকে স্বেচ্ছায় ঈশ্বরের বাধ্য হতে অনুপ্রাণিত করতে পারে? মোশি এই বলে একটা কারণ উল্লেখ করেন: “তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় কর।” * (১২ পদ) এটা মন্দ পরিণতিগুলোর জন্য আতঙ্কজনক ভয় করা নয় বরং ঈশ্বর ও তাঁর পথগুলোর প্রতি এক গঠনমূলক, সশ্রদ্ধ ভয়। ঈশ্বরের প্রতি যদি আমাদের গভীর সশ্রদ্ধ ভয় থাকে, তাহলে আমরা তাঁকে অখুশি করা এড়াতে চাইব।

কিন্তু, ঈশ্বরের বাধ্য হওয়ার পিছনে আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত? মোশি বলেন: “তাঁহাকে [সদাপ্রভুকে] প্রেম কর, এবং তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণের সহিত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর।” (১২ পদ) ঈশ্বরকে প্রেম করার সঙ্গে আমাদের অনুভূতির চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত। একটি তথ্যগ্রন্থ ব্যাখ্যা করে: “অনুভূতির জন্য ব্যবহৃত ইব্রীয় ক্রিয়াপদগুলো মাঝেমধ্যে সেই কাজগুলোকেও ইঙ্গিত করে, যেগুলো সেই অনুভূতি প্রকাশ করার ফলে করা হয়।” সেই একই গ্রন্থ বলে যে, ঈশ্বরকে প্রেম করার অর্থ তাঁর প্রতি “প্রেমের সঙ্গে কাজ করা।” অন্য কথায়, আমরা যদি ঈশ্বরকে সত্যিই ভালোবাসি, তাহলে আমরা সেইসমস্ত উপায়ে কাজ করব, যেগুলো তাঁকে খুশি করে বলে আমরা জানি।—হিতোপদেশ ২৭:১১.

ঈশ্বরের প্রতি আমাদের কতটা বাধ্যতা দেখানো উচিত? মোশি বলেন: “তাঁহার [ঈশ্বরের] সকল পথে চল।” (১২ পদ) যিহোবা আশা করেন যেন আমরা সেই সমস্তকিছু করি, যেগুলো তিনি আমাদের কাছ থেকে চান। এই ধরনের সম্পূর্ণ বাধ্যতা কি আমাদের অমঙ্গল নিয়ে আসতে পারে? এটা একেবারেই অসম্ভব।

স্বেচ্ছায় আমাদের বাধ্য হওয়া বিভিন্ন আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। মোশি লেখেন: “অদ্য আমি তোমার মঙ্গলার্থে . . . যে যে আজ্ঞা দিতেছি, সেই সকল যেন পালন কর।” (১৩ পদ) হ্যাঁ, যিহোবার সমস্ত আজ্ঞা—তিনি আমাদের কাছ থেকে যা চান, সেগুলোর সমস্তই—আমাদের মঙ্গলের জন্য। কীভাবেই বা এর বিপরীতটা হতে পারে? বাইবেল বলে, “ঈশ্বর প্রেম।” (১ যোহন ৪:৮) তাই, তিনি আমাদের কেবল সেই আজ্ঞাগুলোই দিয়েছেন, যেগুলো আমাদের স্থায়ী মঙ্গল সাধন করবে। (যিশাইয় ৪৮:১৭) যিহোবা আমাদের কাছ থেকে যা চান, সেই সমস্তকিছু করা আমাদেরকে এখনই বিভিন্ন হতাশা থেকে রেহাই দেবে এবং তাঁর রাজ্য শাসনের অধীনে অফুরন্ত ভবিষ্যৎ আশীর্বাদগুলোর দিকে পরিচালিত করবে। *

বাধ্য হব, নাকি হব না—যিহোবা আমাদের কাছ থেকে যা চান, যখন সেই বিষয়টা আসে, তখন কেবল একটাই বিজ্ঞ বাছাই রয়েছে। সম্পূর্ণ ও স্বেচ্ছায় দেখানো বাধ্যতা হচ্ছে সবসময়ই সর্বোত্তম। এই ধরনের এক বিশ্বস্ত পথ আমাদেরকে সেই প্রেমময় ঈশ্বর যিহোবার আরও নিকটবর্তী করে, যিনি সবসময়ই আমাদের মঙ্গল চান। (w০৯-E ১০/০১)

[পাদটীকাগুলো]

^ যদিও মোশির কথাগুলো প্রাচীন ইস্রায়েলের প্রতি প্রযোজ্য ছিল কিন্তু সাধারণভাবে এই কথাগুলো সেই সমস্ত ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য, যারা আজকে ঈশ্বরকে খুশি করতে চায়।—রোমীয় ১৫:৪.

^ পুরো দ্বিতীয় বিবরণ বইজুড়ে, মোশি এই বিষয়টার ওপর জোর দিয়েছিলেন যে, ঈশ্বরের প্রতি ভয় যেন তাঁর দাসদের জীবনে এক নির্দেশনামূলক নীতি হয়।—দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১০; ৬:১৩, ২৪; ৮:৬; ১৩:৪; ৩১:১২, ১৩.

^ আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৩ অধ্যায়ে “পৃথিবীর জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য কী?” শিরোনামের বিষয়বস্তু দেখুন।