সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পারিবারিক জীবন সম্বন্ধে

পারিবারিক জীবন সম্বন্ধে

যিশুর কাছ থেকে আমরা যা শিখি

পারিবারিক জীবন সম্বন্ধে

বিবাহ সম্বন্ধে কোন দৃষ্টিভঙ্গি পরিবারগুলোকে সুখী করে?

বিবাহ হচ্ছে এক পবিত্র বন্ধন। বিবাহবিচ্ছেদ অনুমোদনযোগ্য কি না, তা যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তখন যিশু বলেছিলেন: “তোমরা কি পাঠ কর নাই যে, সৃষ্টিকর্ত্তা আদিতে পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে নির্ম্মাণ করিয়াছিলেন, আর বলিয়াছিলেন, ‘এই কারণ মনুষ্য পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং সে দুই জন একাঙ্গ হইবে’? সুতরাং তাহারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ। অতএব ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক। . . . ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যাকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে; এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্ত স্ত্রীকে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে।” (মথি ১৯:৪-৬, ৯) কোনো বিবাহিত দম্পতি যখন যিশুর পরামর্শ অনুসরণ করে এবং পরস্পরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকে, তখন পরিবারের সবাই নিরাপদবোধ করে ও সুখী হয়।

কেন ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা পরিবারগুলোকে সুখী করে?

যিশু বলেছিলেন: “‘তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে,’ এইটী মহৎ ও প্রথম আজ্ঞা।” দ্বিতীয় মহৎ আজ্ঞাটি কী? যিশু বলেছিলেন: “তোমার প্রতিবাসীকে [যাদের অন্তর্ভুক্ত যারা আপনার সবচেয়ে নিকটে বসবাস করে—আপনার পরিবারকে] আপনার মত প্রেম করিবে।” (মথি ২২:৩৭-৩৯) তাই, পারিবারিক সুখের চাবিকাঠি হল, ঈশ্বরের সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্ক থাকা কারণ তাঁর প্রতি ভালোবাসা আমাদের পরস্পরকে ভালোবাসতে পরিচালিত করে।

কীভাবে স্বামী ও স্ত্রী একে অপরকে সুখী করতে পারে?

স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের সুখী করে, যখন তারা যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করে। যিশু তাঁর রূপক স্ত্রী, মণ্ডলীর প্রতি ভালোবাসা দেখানোর ক্ষেত্রে আত্মত্যাগ দেখিয়েছিলেন। (ইফিষীয় ৫:২৫) যিশু বলেছিলেন: “মনুষ্যপুত্র সেবা পেতে আসেন নি বরং সেবা করতে এসেছেন।” (মথি ২০:২৮, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) যিশু কখনোই সেই লোকেদের প্রতি স্বৈরচারী বা কঠোর হননি, যারা তাঁর যত্নাধীনে ছিল বরং তিনি তাদের বিশ্রাম বা সতেজতা প্রদান করেছিলেন। (মথি ১১:২৮) তাই, স্বামীদের তাদের কর্তৃত্বকে সদয়ভাবে ব্যবহার করা উচিত, যা পরিবারের সবাইকে উপকৃত করে।

স্ত্রীরাও যিশুর উদাহরণ থেকে উপকৃত হতে পারে। “খ্রীষ্টের মস্তকস্বরূপ ঈশ্বর,” বাইবেল বলে। এ ছাড়া, এটি এও বলে যে, “স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ পুরুষ।” (১ করিন্থীয় ১১:৩) ঈশ্বরের অধীনে থাকাকে যিশু তাঁর জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মনে করেননি। তাঁর পিতার জন্য তাঁর গভীর সম্মান ছিল। “আমি সর্ব্বদা তাঁহার সন্তোষজনক কার্য্য করি,” যিশু বলেছিলেন। (যোহন ৮:২৯) একজন স্ত্রী, যিনি ঈশ্বরের প্রতি প্রেম ও সম্মান দেখানোর জন্য তার স্বামীর মস্তকপদের বশীভূত হন, তিনি তার পারিবারিক জীবনকে সুখী করার ক্ষেত্রে অনেক কিছু করেন।

ছেলে-মেয়েদের প্রতি যিশুর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বাবা-মায়েরা কী শিখতে পারে?

যিশু ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছিলেন এবং তাদের চিন্তাধারা ও অনুভূতি সম্বন্ধে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। বাইবেল বলে: “যীশু তাহাদিগকে নিকটে ডাকিলেন, বলিলেন, শিশুগণকে আমার নিকটে আসিতে দেও।” (লূক ১৮:১৫, ১৬) একটা ঘটনায়, লোকেরা কিছু বালকের সমালোচনা করেছিল, যারা যিশুর প্রতি তাদের বিশ্বাস প্রকাশ করেছিল। কিন্তু, সমালোচকদের এই কথা বলার মাধ্যমে যিশু সেই অল্পবয়সিদের প্রশংসা করেছিলেন: “তোমরা কি কখনও পাঠ কর নাই যে, ‘তুমি শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ হইতে স্তব সম্পন্ন করিয়াছ’?”—মথি ২১:১৫, ১৬.

ছেলে-মেয়েরা যিশুর কাছ থেকে কী শিখতে পারে?

আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোর প্রতি আগ্রহ দেখানোর বিষয়ে যিশু ছেলে-মেয়েদের জন্য এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছেন। তাঁর বয়স যখন ১২ বছর, তখন তাঁকে “ধর্ম্মধামে” পাওয়া গিয়েছিল, যেখানে “তিনি গুরুদিগের মধ্যে বসিয়া তাঁহাদের কথা শুনিতেছিলেন ও তাঁহাদিগকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন।” এর ফলাফল কী হয়েছিল? “যাহারা তাঁহার কথা শুনিতেছিল, তাহারা সকলে তাঁহার বুদ্ধি ও উত্তরে অতিশয় আশ্চর্য্য জ্ঞান করিল।” (লূক ২:৪২, ৪৬, ৪৭) কিন্তু, যিশুর জ্ঞান তাঁকে অহংকারী করে তোলেনি। বরং, সেটা তাঁকে তাঁর বাবা-মার প্রতি সম্মান দেখাতে শিখিয়েছে। বাইবেল বলে: “তিনি . . . তাঁহাদের বশীভূত থাকিলেন।”—লূক ২:৫১. (w০৯-E ১১/০১)

আরও তথ্যের জন্য বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১৪ অধ্যায় দেখুন। *

[পাদটীকা]

^ যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।