সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

‘তোমার রাজত্ব স্থির থাকিবে’

‘তোমার রাজত্ব স্থির থাকিবে’

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

‘তোমার রাজত্ব স্থির থাকিবে’

২ শমূয়েল ৭:১-১৬

ইতিহাস জুড়ে, অনেক মানব শাসককে তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। কিছুজনকে ভোটের মাধ্যমে, অন্যদেরকে জোর করে অপসারণ করা হয়েছে। ঈশ্বরের স্বর্গীয় রাজ্যের রাজা যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে কী বলা যায়? কোনো কিছু কি তাঁকে ঈশ্বরের নিযুক্ত রাজা হিসেবে শাসন করা থেকে বাধা দিতে পারবে? ২ শমূয়েল ৭ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদকে বলা যিহোবার কথাগুলোতে উত্তরটা পাওয়া যেতে পারে।

অধ্যায়টি শুরু হওয়ার সঙ্গেসঙ্গে আমরা শিখি যে, দায়ূদ অস্বস্তিবোধ করেন, কারণ তিনি অর্থাৎ একজন সামান্য মানব রাজা এক সুন্দর প্রাসাদে বাস করছেন, অথচ ঈশ্বরের সিন্দুক একটা সাধারণ তাঁবুতে রয়েছে। * দায়ূদ যিহোবার জন্য একটা যোগ্য গৃহ অথবা মন্দির নির্মাণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। (২ পদ) কিন্তু দায়ূদ সেই গৃহ নির্মাণ করবেন না। ভাববাদী নাথনের মাধ্যমে যিহোবা দায়ূদকে বলেন যে, তার এক ছেলে মন্দির নির্মাণ করবেন।—৪, ৫, ১২, ১৩ পদ।

দায়ূদের আন্তরিক ইচ্ছা যিহোবার হৃদয় স্পর্শ করে। দায়ূদের ভক্তির প্রতি সাড়া দিয়ে ও ভবিষ্যদ্‌বাণীর সঙ্গে মিল রেখে, ঈশ্বর দায়ূদের সঙ্গে এই নিয়ম বা চুক্তি করেন যে, তিনি দায়ূদের রাজবংশে এমন একজনকে উৎপন্ন করবেন, যিনি চিরকাল রাজত্ব করবেন। নাথন দায়ূদের কাছে ঈশ্বরের এই গুরুগম্ভীর প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে জানান: “তোমার কুল ও তোমার রাজত্ব তোমার সম্মুখে চিরকাল স্থির থাকিবে; তোমার সিংহাসন চিরস্থায়ী হইবে।” (১৬ পদ) কে এই চুক্তির স্থায়ী উত্তরাধিকারী—যিনি চিরকাল রাজত্ব করবেন?—গীতসংহিতা ৮৯:২০, ২৯, ৩৪-৩৬.

নাসরতের যিশু ছিলেন দায়ূদের এক বংশধর। যিশুর জন্ম সম্বন্ধে ঘোষণা করার সময় একজন স্বর্গদূত বলেছিলেন: “প্রভু ঈশ্বর তাঁহার পিতা দায়ূদের সিংহাসন তাঁহাকে দিবেন; তিনি যাকোব-কুলের উপরে যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন, ও তাঁহার রাজ্যের শেষ হইবে না।” (লূক ১:৩২, ৩৩) এভাবে, দায়ূদের সঙ্গে করা চুক্তি যিশু খ্রিস্টতে পরিপূর্ণতা লাভ করে। তাই, তিনি মানুষের মনোনয়নের দ্বারা নয় বরং ঈশ্বরের এক গুরুগম্ভীর প্রতিজ্ঞার মাধ্যমে রাজত্ব করেন, যেটা তাঁকে চিরকাল রাজত্ব করার অধিকার প্রদান করে। আসুন আমরা মনে রাখি যে, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলো সবসময়ই সত্য বলে প্রমাণিত হয়।—যিশাইয় ৫৫:১০, ১১.

২ শমূয়েল ৭ অধ্যায়ে দুটো মূল্যবান শিক্ষা রয়েছে। প্রথমত, আমরা আস্থা রাখতে পারি যে, কোনো কিছুই বা কেউ-ই যিশু খ্রিস্টকে রাজত্ব করা থেকে বাধা দিতে পারবে না। তাই, আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তাঁর রাজত্ব করা সম্বন্ধীয় ঘোষিত উদ্দেশ্যটি তিনি পূর্ণ করবেন, যেটি হল ঈশ্বরের ইচ্ছা যেমন স্বর্গে তেমনই পৃথিবীতে পুরোপুরিভাবে সম্পাদন করা।—মথি ৬:৯, ১০.

দ্বিতীয়ত, এই বিবরণ আমাদেরকে যিহোবা সম্বন্ধে এক হৃদয়গ্রাহী শিক্ষা প্রদান করে। স্মরণ করে দেখুন যে, যিহোবা দায়ূদের হৃদয়ের উদ্দেশ্য লক্ষ করেছিলেন ও সেটাকে মূল্যবান বলে গণ্য করেছিলেন। এটা জানা আশ্বাসজনক যে, তাঁকে উপাসনা করার জন্য আমাদের ভক্তিকে যিহোবা উপলব্ধি করেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা পরিস্থিতিগুলো, যেমন খারাপ স্বাস্থ্য, বার্ধক্য হয়তো ঈশ্বরের সেবায় আমাদের হৃদয় যতটা করতে চায়, ততটা করতে আমাদেরকে বাধা দিতে পারে। যদি তা-ই হয়, তাহলে আমরা যেন এই বিষয়টা থেকে সান্ত্বনা লাভ করি যে, যিহোবা এমনকী তাঁর উপাসনার প্রতি ভক্তিতে পূর্ণ এক হৃদয়ের উদ্দেশ্যও দেখে থাকেন। (w১০-E  ০৪/০১)

[পাদটীকা]

^ নিয়ম-সিন্দুক ছিল এক পবিত্র সিন্দুক, যেটা যিহোবার নির্দেশনায় ও তাঁর প্রদত্ত নকশা অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রাচীন ইস্রায়েলে এটা যিহোবার উপস্থিতিকে চিত্রিত করত।—যাত্রাপুস্তক ২৫:২২.