সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পৃথিবী কি ২০১২ সালে রক্ষা পাবে?

পৃথিবী কি ২০১২ সালে রক্ষা পাবে?

আমাদের পাঠক-পাঠিকাদের জিজ্ঞাস্য . . .

পৃথিবী কি ২০১২ সালে রক্ষা পাবে?

▪ “ফ্রান্সের একটা গ্রামে এমন অনেক লোক এসেছিল, যারা বিশ্বাস করে যে, জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। তারা বিশ্বাস করে যে, প্রাচীন মায়া ক্যালেন্ডারের ৫,১২৫ বছরের দীর্ঘ চক্রের শেষে অর্থাৎ ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসের ২১ তারিখে জগৎ ধ্বংস হয়ে যাবে।”—বিবিসি নিউজ।

বিপর্যয় আসবে বলে দাবি করে এমন অনেক ধর্মীয় নেতা, তথাকথিত বিজ্ঞানী এবং একবিংশ শতাব্দীর অন্য যেকোনো ভবিষ্যদ্‌বক্তাদের ভবিষ্যদ্‌বাণী সত্ত্বেও, পৃথিবী দীর্ঘসময় ধরে টিকে থাকবে। হ্যাঁ, ২০১২ সালে পৃথিবী রক্ষা পাবে। অধিকন্তু, পৃথিবী গ্রহ শুধু সেই বছরই নয় বরং পরবর্তী প্রতিটা বছরই রক্ষা পাবে।

বাইবেল আমাদের বলে: “এক পুরুষ চলিয়া যায়, আর এক পুরুষ আইসে; কিন্তু পৃথিবী নিত্যস্থায়ী।” (উপদেশক ১:৪) এ ছাড়া, যিশাইয় ৪৫:১৮ পদে যা বলা আছে, সেটার তাৎপর্যও বিবেচনা করে দেখুন: “সদাপ্রভু, . . . যিনি পৃথিবীকে সংগঠন করিয়া নির্ম্মাণ করিয়াছেন, তাহা স্থাপন করিয়াছেন, ও অনর্থক সৃষ্টি না করিয়া বাসস্থানার্থে নির্ম্মাণ করিয়াছেন, তিনি এই কথা কহেন, আমিই সদাপ্রভু, আর কেহ নয়।”

একজন প্রেমময় বাবা কি তার ছেলের আনন্দের জন্য একটা খেলনা নৌকা অথবা তার মেয়ের আনন্দের জন্য একটা পুতুল ঘরের নকশা করার এবং তা নির্মাণ করার জন্য অনেক সময় ব্যয় করবেন আর এরপর সেটা তার ছেলে বা মেয়েকে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই নষ্ট করে দেবেন? এটা হবে এক নিষ্ঠুর কাজ! একইভাবে, ঈশ্বর মূলত তাঁর মানব সৃষ্টির আনন্দের জন্য পৃথিবী নির্মাণ করেছেন। প্রথম মানব দম্পতি আদম ও হবাকে ঈশ্বর বলেছিলেন: “তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও বশীভূত কর।” এরপর “ঈশ্বর আপনার নির্ম্মিত বস্তু সকলের প্রতি দৃষ্টি করিলেন, আর দেখ, সে সকলই অতি উত্তম।” (আদিপুস্তক ১:২৭, ২৮, ৩১) ঈশ্বর পৃথিবীর জন্য তাঁর উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করেননি; তিনি পৃথিবীকে ধ্বংস হতে দেবেন না। তিনি যেসমস্ত প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেই সম্বন্ধে যিহোবা দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন: “তাহা নিষ্ফল হইয়া আমার কাছে ফিরিয়া আসিবে না, কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি, তাহা সম্পন্ন করিবে, এবং যে জন্য তাহা প্রেরণ করি, সে বিষয়ে সিদ্ধার্থ হইবে।”—যিশাইয় ৫৫:১১.

কিন্তু, যিহোবার ইচ্ছা হল, ‘পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ করা।’ (প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮) তাঁর বাক্যে তিনি এই প্রতিজ্ঞা করেন: “সরলগণ দেশে বাস করিবে, সিদ্ধেরা তথায় অবশিষ্ট থাকিবে। কিন্তু দুষ্টগণ দেশ হইতে উচ্ছিন্ন হইবে, বিশ্বাসঘাতকেরা তথা হইতে উন্মূলিত হইবে।”—হিতোপদেশ ২:২১, ২২.

এটা কখন ঘটবে? কোনো মানুষই তা জানে না। “সেই দিনের বা সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না,” যিশু বলেছিলেন, “স্বর্গস্থ দূতগণও জানেন না, পুত্ত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।” (মার্ক ১৩:৩২) যিহোবার সাক্ষিরা এই সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করার চেষ্টা করে না যে, কখন ঈশ্বর দুষ্টদেরকে ধ্বংস করবেন। যদিও তারা শেষকালের ‘চিহ্ন’ সম্বন্ধে সতর্ক আছে এবং বিশ্বাস করে যে, মানবজাতি বাইবেলে বলা “শেষ কালে” বাস করছে, কিন্তু ঠিক কখন ‘শেষ’ আসবে, তা তারা জানে না। (মার্ক ১৩:৪-৮, ৩৩; ২ তীমথিয় ৩:১) এটা তারা সম্পূর্ণরূপে তাদের স্বর্গীয় পিতা এবং তাঁর পুত্রের হাতে ছেড়ে দেয়।

সেই সময় না আসা পর্যন্ত, যিহোবার সাক্ষিরা নিজেদেরকে ঈশ্বরের রাজ্যের অর্থাৎ স্বর্গীয় সরকার সম্বন্ধীয় সুসমাচার প্রচার কাজে ব্যস্ত রাখে, যে-সরকার শাসন করবে এবং পৃথিবী গ্রহটাকে এমন এক শান্তিপূর্ণ পরমদেশে পরিণত করবে, “ধার্ম্মিকেরা” যেটার “অধিকারী হইবে এবং নিয়ত তথায় বাস করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:২৯. (w১১-E ১২/০১)

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

Image Science and Analysis Laboratory, NASA-Johnson Space Center