সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

‘কীভাবে আমি প্রচার করতে সমর্থ হব?’

‘কীভাবে আমি প্রচার করতে সমর্থ হব?’

‘কীভাবে আমি প্রচার করতে সমর্থ হব?’

পৃথিবীজুড়ে আমাদের এমন ভাইবোনদের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য উদাহরণ রয়েছে, যারা গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করা সত্ত্বেও বিশ্বস্তভাবে প্রচার কাজে অংশ নিয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে ডালিয়ার কথা বিবেচনা করুন, যিনি লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে বাস করেন।

বোন ডালিয়ার বয়স ৩০-এর কোঠার মাঝামাঝি। জন্মের সময় থেকেই তিনি মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতে ভুগছেন। এই রোগটার কারণে তিনি পঙ্গু হয়ে পড়েন ও সেইসঙ্গে তার কথা বলার ক্ষমতাও গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে, কেবলমাত্র পরিবারের সদস্যরাই তার কথা ভালোভাবে বুঝতে পারে। ডালিয়া তার মা গ্যালিনার সঙ্গে বাস করেন, যিনি তার প্রয়োজনগুলোর যত্ন নেন। যদিও ডালিয়ার জীবন দুর্দশা এবং উদ্‌বিগ্নতায় পূর্ণ, তা সত্ত্বেও তিনি এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখেন। কীভাবে তা সম্ভব?

গ্যালিনা ব্যাখ্যা করেন: “১৯৯৯ সালে অ্যাপোলিয়নিয়া নামে আমার এক আত্মীয় আমাদেরকে দেখতে আসেন। আমরা লক্ষ করি যে, অ্যাপোলিয়নিয়া, যিনি একজন যিহোবার সাক্ষি, তিনি তার বাইবেল সম্বন্ধে ভালোভাবে জানেন আর তাই ডালিয়া তাকে অনেক প্রশ্ন করতে শুরু করেন। খুব শীঘ্র, ডালিয়ার সঙ্গে একটা বাইবেল অধ্যয়ন শুরু হয়। মাঝে মাঝে আমি ডালিয়ার কথাগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য তাদের সঙ্গে অধ্যয়নে বসতাম। যাই হোক, আমি লক্ষ করেছিলাম যে, সে যা কিছু শিখছিল, সেগুলো তাকে সত্যিই উপকৃত করছিল। শীঘ্র, আমিও বাইবেল অধ্যয়ন করতে চেয়ে অনুরোধ করি।”

ডালিয়া যখন বাইবেলের সত্যগুলো বুঝতে শুরু করেন, তখন থেকেই একটা প্রশ্ন তাকে বার বার কষ্ট দিতে থাকে। অবশেষে, তিনি অ্যাপোলিয়নিয়ার সঙ্গে কথা বলেন এবং জিজ্ঞেস করেন: “কীভাবে আমার মতো—পক্ষাঘাতগ্রস্ত—একজন ব্যক্তি প্রচার করতে সমর্থ হবে?” (মথি ২৮:১৯, ২০) অ্যাপোলিয়নিয়া শান্তভাবে ডালিয়াকে আশ্বস্ত করেন: “ভয় পেয়ো না। যিহোবা তোমাকে সাহায্য করবেন।” আর বাস্তবিকই যিহোবা তা করেন।

তাহলে, কীভাবে ডালিয়া প্রচার করেন? বিভিন্ন উপায়ে। খ্রিস্টান বোনেরা তাকে বাইবেলের একটা বার্তাসহ বিভিন্ন চিঠি প্রস্তুত করতে সাহায্য করে থাকে। প্রথমে, ডালিয়া বোনদের কাছে তার চিন্তাভাবনা প্রকাশ করেন। এরপর, তারা তার চিন্তাভাবনা সম্বলিত একটা চিঠি লেখে। এ ছাড়া, ডালিয়া তার মোবাইল ফোন থেকে টেক্সট ম্যাসেজ পাঠানোর মাধ্যমেও সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন। আর আবহাওয়া যখন অনুকূলে থাকে, তখন মণ্ডলীর সদস্যরা তাকে বাইরে নিয়ে যায়, যাতে তিনি সেইসমস্ত ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে কথা বলতে পারেন, যাদের সঙ্গে তাদের স্থানীয় পার্কে এবং রাস্তায় দেখা হয়।

ডালিয়া এবং তার মা ক্রমাগত আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি করে চলে। তারা দুজনেই যিহোবার কাছে নিজেদেরকে উৎসর্গ করে এবং ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে বাপ্তিস্ম নেয়। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভিলনিয়াসে পলিশভাষী একটা দল গঠিত হয়। যেহেতু, সেই দলে আরও রাজ্য প্রকাশকদের প্রয়োজন ছিল, তাই ডালিয়া এবং তার মা সেটাতে যোগ দেয়। ডালিয়া বলেন: “কোনো কোনো মাসে আমি যখন পরিচর্যায় বের হতে পারি না, তখন চিন্তায় পড়ে যাই। কিন্তু, বিষয়টা নিয়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করার পর, শীঘ্র কেউ না কেউ আমার সঙ্গে পরিচর্যায় যাওয়ার ব্যবস্থা করে।” আমাদের প্রিয় বোন ডালিয়া তার পরিস্থিতি সম্বন্ধে কেমন বোধ করেন? তিনি বলেন: “রোগটা আমার শরীরকে পঙ্গু করে দিয়েছে কিন্তু আমার মনকে নয়। অন্যদের কাছে যিহোবা সম্বন্ধে বলতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত!”