সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না”

“পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না”

ঈশ্বরের নিকটবর্তী হোন

“পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না”

স্মৃতি এক আশীর্বাদস্বরূপ হতে পারে। প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটানো মনোরম দিনগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা আমাদের হৃদয়কে উষ্ণ করতে পারে। কিন্তু, অন্যান্য ক্ষেত্রে স্মৃতি এক অভিশাপস্বরূপ বলে মনে হতে পারে। অতীতের দুঃখজনক বিভিন্ন অভিজ্ঞতার যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতি কি আপনাকে জর্জরিত করে? যদি করে, তাহলে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, ‘এই দুঃখজনক স্মৃতিগুলো কি আমার মন থেকে কখনো দূর হবে?’ আমরা যিশাইয় ভাববাদীর দ্বারা লিপিবদ্ধ কথাগুলোতে সবচেয়ে আশ্বাসজনক উত্তরটা খুঁজে পাই।—পড়ুন, যিশাইয় ৬৫:১৭.

যিহোবার উদ্দেশ্য হল যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতিগুলোকে সমূলে দূর করা। কীভাবে? সমস্ত দুঃখকষ্টসহ এই দুষ্ট জগৎকে সরিয়ে ফেলার এবং এর স্থানে চিরকালের জন্য উত্তম কিছু নিয়ে আসার দ্বারা। যিশাইয়ের মাধ্যমে যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেন: “দেখ, আমি নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি করি।” এই প্রতিজ্ঞাটি বুঝতে পারা আমাদের হৃদয়কে আশায় ভরিয়ে দিতে পারে।

নতুন আকাশমণ্ডল কী? বাইবেল দুটো ইঙ্গিত দেয়, যেগুলো আমাদের সাহায্য করতে পারে। প্রথমত, নতুন আকাশমণ্ডলের ধারণাটি আরও দুজন বাইবেল লেখক উল্লেখ করেছে এবং উভয় ক্ষেত্রেই এই শব্দগুলো পৃথিবীর ওপর তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। (২ পিতর ৩:১৩; প্রকাশিত বাক্য ২১:১-৪) দ্বিতীয়ত, বাইবেলে ‘আকাশমণ্ডল’ শব্দটি শাসনব্যবস্থা বা সরকারকে চিত্রিত করতে পারে। (যিশাইয় ১৪:৪, ১২; দানিয়েল ৪:২৫, ২৬) তাই, নতুন আকাশমণ্ডল হল এক নতুন সরকার, যা পৃথিবীতে ধার্মিক পরিস্থিতি স্থাপন করতে সমর্থ। কেবল একটা শাসনব্যবস্থাই রয়েছে, যেটা এই সমস্তকিছু করতে সমর্থ আর তা হল ঈশ্বরের রাজ্য, স্বর্গীয় সরকার, যেটার বিষয়ে যিশু আমাদেরকে প্রার্থনা করতে শিখিয়েছেন। সেই রাজ্য পৃথিবীব্যাপী ঈশ্বরের ধার্মিক ইচ্ছাকে সিদ্ধ করবে।—মথি ৬:৯, ১০.

নতুন পৃথিবী কী? দুটো শাস্ত্রীয় বিষয় বিবেচনা করুন, যেগুলো আমাদেরকে সঠিক উপসংহারে আসতে সাহায্য করে। প্রথমত, বাইবেলে ‘পৃথিবী’ শব্দটি কখনো কখনো ভূগোলককে নয়, বরং লোকেদেরকে নির্দেশ করে। (গীতসংহিতা ৯৬:১) দ্বিতীয়ত, বাইবেল ভবিষ্যদ্‌বাণী করে যে, ঈশ্বরের শাসনাধীনে বিশ্বস্ত মানুষেরা ধার্মিকতার বিষয়ে শিখবে, যেটা পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। (যিশাইয় ২৬:৯) তাই, নতুন পৃথিবী সেই লোকেদের এক সমাজকে নির্দেশ করে, যারা ঈশ্বরের শাসনব্যবস্থার বশীভূত হবে এবং তাঁর ধার্মিক মান অনুযায়ী জীবনযাপন করবে।

কীভাবে যিহোবা যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতিগুলোকে সমূলে দূর করবেন, এখন কি আপনি সেটা বুঝতে পারছেন? শীঘ্র, যিহোবা এক ধার্মিক নতুন জগৎ স্থাপন করার দ্বারা নতুন আকাশমণ্ডল ও নতুন পৃথিবী সম্বন্ধীয় তাঁর প্রতিজ্ঞাকে পুরোপুরিভাবে পূর্ণ করবেন। * সেই নতুন জগতে, দুঃখজনক স্মৃতির কারণগুলো—শারীরিক, মানসিক ও আবেগগত কষ্ট—অতীতের বিষয় হবে। বিশ্বস্ত মানুষেরা পূর্ণমাত্রায় জীবন উপভোগ করবে এবং তারা অতিবাহিত প্রত্যেকটা দিনের মনোরম স্মৃতিগুলোকে মূল্যবান বলে গণ্য করবে।

আজকে, আমরা হয়তো যে-যন্ত্রণা ভোগ করছি, সেগুলো সম্বন্ধে কী বলা যায়? যিশাইয়ের মাধ্যমে যিহোবা আরও প্রতিজ্ঞা করেন: “পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না, আর মনে পড়িবে না।” এই পুরোনো জগতে যেকোনো যন্ত্রণা আমরা ভোগ করে থাকি না কেন, সেগুলো ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে। এই আশা কি আপনাকে আকৃষ্ট করে? যদি করে, তাহলে যিনি এই ধরনের এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে প্রতিজ্ঞা করেন, কীভাবে আপনি সেই ঈশ্বরের আরও নিকটবর্তী হতে পারেন, তা জানুন না কেন? (w১২-E ০৩/০১)

[পাদটীকা]

^ ঈশ্বরের রাজ্য এবং শীঘ্র এটা যা সম্পাদন করবে, সেই সম্বন্ধে আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ৩, ৮ ও ৯ অধ্যায় দেখুন।