সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“তোমাদের কার্য্য পুরস্কৃত হইবে”

“তোমাদের কার্য্য পুরস্কৃত হইবে”

“তোমাদের কার্য্য পুরস্কৃত হইবে”

তার সৈন্যবাহিনীর সামনে অবস্থিত রাজা আসা দ্রুত যিহূদিয়ার উচ্চভূমি থেকে গভীর উপত্যকার মধ্য দিয়ে উপকূলবর্তী তলভূমিতে নামতে থাকেন। যেখানে উপত্যকাটা প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে, সেখানে আসা একটু থামেন এবং হাঁপাতে থাকেন। তার ঠিক নীচেই শত্রুপক্ষের একটা শিবির রয়েছে—আর এটা অত্যন্ত বিশাল! ওই কূশীয় সৈন্যদের সংখ্যা নিশ্চয়ই—আক্ষরিকভাবে—দশ লক্ষ। আসার সৈন্যবাহিনীর সংখ্যা তাদের সংখ্যার অর্ধেকের চেয়ে একটু বেশি।

আসন্ন যুদ্ধের সামনে দাঁড়িয়ে কোন বিষয়টা নিয়ে আসা সবচেয়ে বেশি চিন্তিত ছিলেন? তার সেনাপতিদের আদেশ দেওয়ার বিষয়ে? তার সৈন্যবাহিনীকে উৎসাহ দেওয়ার বিষয়ে? তার পরিবারকে পত্র দেওয়ার বিষয়ে? না, এগুলোর কোনোটাই নয়! এই সংকটের সময় আসা প্রার্থনা করেন।

সেই প্রার্থনাটা পুনর্বিবেচনা করার এবং ওই পরিস্থিতিতে কী ঘটেছিল, তা পরীক্ষা করে দেখার পূর্বে আসুন আমরা বিবেচনা করে দেখি যে, আসা কেমন ব্যক্তি ছিলেন। কোন বিষয়টা তাকে প্রার্থনা করতে পরিচালিত করেছিল? তিনি কি ঈশ্বরের সাহায্য লাভের যোগ্য ছিলেন? যিহোবা তাঁর দাসদের কাজগুলোকে যেভাবে আশীর্বাদ করেন, সেই সম্বন্ধে আসার বিবরণ আমাদের কী জানায়?

আসার বিবরণ

ইস্রায়েল দুই রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ২০ বছরের মধ্যেই যিহূদা পুরোপুরিভাবে পৌত্তলিক অভ্যাসগুলোর দ্বারা কলুষিত হয়ে পড়ে। খ্রিস্টপূর্ব ৯৭৭ সালে আসা যখন রাজা হন, তখন এমনকী রাজসভার ব্যক্তিরাও কনানীয় উর্বতার দেবতাদের উপাসনার মাধ্যমে কলুষিত হয়ে পড়ে। কিন্তু, আসার রাজত্বের সময় সম্পর্কে অনুপ্রাণিত বিবরণ বলে যে, তিনি “আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যাহা ভাল ও ন্যায্য, তাহাই করিতেন।” আসা “বিজাতীয় যজ্ঞবেদি ও উচ্চস্থলী সকল উঠাইয়া ফেলিলেন, স্তম্ভ সকল খণ্ড খণ্ড করিলেন ও আশেরা-মূর্ত্তি সকল ছেদন করিলেন।” (২ বংশা. ১৪:২, ৩) এ ছাড়াও, আসা যিহূদা রাজ্য থেকে “পুংগামীদিগকে” তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যারা ধর্মের নামে সমকামীতায় লিপ্ত ছিল। আসা কেবল বহিষ্করণের কাজই করেননি। তিনি লোকেদেরকে “তাহাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অন্বেষণ” করার এবং ঈশ্বরের “ব্যবস্থা ও আজ্ঞা” পালন করার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন।—১ রাজা. ১৫:১২, ১৩; ২ বংশা. ১৪:৪.

সত্য উপাসনার জন্য আসার উদ্যোগ দেখে সন্তুষ্ট হয়ে যিহোবা তাকে কয়েক বছরের জন্য শান্তি প্রদান করেছিলেন। তাই, রাজা এটা বলতে পেরেছিলেন: “আমরা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিয়াছি। আমরা তাঁহার অন্বেষণ করিয়াছি, আর তিনি সকল দিকে আমাদিগকে বিশ্রাম দিয়াছেন।” যিহূদা রাজ্যের নগরগুলো শক্তিশালী করে তোলার মাধ্যমে লোকেরা এই পরিস্থিতির সদ্‌ব্যবহার করেছিল। “তাহারা নগরগুলি গাঁথিয়া কুশলে সমাপ্ত করিল,” বাইবেলের বিবরণ বলে।—২ বংশা. ১৪:১, ৬, ৭.

যুদ্ধক্ষেত্রে

আসা জানতেন যে, যারা তাদের কাজের মাধ্যমে বিশ্বাস দেখায়, তাদেরকে যিহোবা পুরস্কৃত করেন। এই কারণে আসা সেই সময় যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন, যখন তাকে বাইবেলে উল্লেখিত সর্ববৃহৎ মানব সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। তার প্রার্থনায় রাজা যিহোবার সাহায্যের জন্য মিনতি করেছিলেন। আসা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, তিনি যদি ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করেন এবং তাঁর সমর্থন লাভ করেন, তাহলে শত্রুদের সংখ্যা যত বিশালই হোক না কেন বা তারা যত শক্তিশালীই হোক না কেন, তাতে কিছু যায়-আসে না। এই যুদ্ধের সঙ্গে যিহোবার নাম জড়িত ছিল আর এটার ভিত্তিতেই আসা ঈশ্বরের কাছে মিনতি করেছিলেন। রাজা এই বলে প্রার্থনা করেছিলেন: “হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমাদের সাহায্য কর; কেননা আমরা তোমার উপরে নির্ভর করি, এবং তোমারই নামে এই জন-সমারোহের বিরুদ্ধে আসিয়াছি। হে সদাপ্রভু তুমি আমাদের ঈশ্বর, তোমার বিরুদ্ধে মর্ত্ত্য প্রবল না হউক।” (২ বংশা. ১৪:১১) এটা এইরকমটা বলার মতোই ছিল: ‘যিহোবা, কূশীয়দের এই যুদ্ধযাত্রা তোমারই বিরুদ্ধে এক আক্রমণ। যারা তোমার নাম বহন করে, তাদেরকে দুর্বল মানুষদের দ্বারা পরাজিত হতে দিয়ে তোমার নামকে অসম্মানিত হতে দিও না।’ তাই, ‘সদাপ্রভুই আসার ও যিহূদার সম্মুখে কূশীয়দিগকে আঘাত করিলেন, আর কূশীয়েরা পলায়ন করিল।’—২ বংশা. ১৪:১২.

বর্তমানে, যিহোবার লোকেরা অনেক শক্তিশালী বিরোধীদের মুখোমুখি হয়ে থাকে। আমরা তাদের সঙ্গে এক আক্ষরিক যুদ্ধক্ষেত্রে সত্যিকারের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করব না। তবে, এই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, যিহোবা সেইসমস্ত বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের জয়ী করবেন, যারা তাঁর নামের জন্য আধ্যাত্মিক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। আমাদের ব্যক্তিগত যুদ্ধের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, চারিদিকে ছড়িয়ে থাকা নৈতিক শিথিলতার আত্মা প্রতিরোধ করার প্রচেষ্টা করা, আমাদের নিজেদের দুর্বলতাগুলোর সঙ্গে লড়াই করা অথবা আমাদের পরিবারকে কলুষিত প্রভাবগুলো থেকে সুরক্ষা করা। কিন্তু, আমরা যে-দুর্দশাগুলোর মুখোমুখিই হই না কেন, আসার প্রার্থনা থেকে আমরা উৎসাহ লাভ করতে পারি। তার বিজয় ছিল যিহোবারই বিজয়। এটা দেখিয়েছিল যে, যারা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে, তারা কী প্রত্যাশা করতে পারে। কোনো মানবশক্তিই যিহোবাকে প্রতিরোধ করতে পারে না।

উৎসাহ এবং এক সাবধানবাণী

যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার সময়, আসা অসরিয়ের দেখা পান। এই ভাববাদী উৎসাহের পাশাপাশি এই সাবধানবাণীও প্রদান করেছিলেন: “হে আসা, এবং হে যিহূদার ও বিন্যামীনের সমস্ত লোক, তোমরা আমার বাক্য শুন; তোমরা যতদিন সদাপ্রভুর সঙ্গে থাক, ততদিন তিনিও তোমাদের সঙ্গে আছেন; আর যদি তোমরা তাঁহার অন্বেষণ কর, তবে তিনি তোমাদিগকে তাঁহার উদ্দেশ পাইতে দিবেন; কিন্তু যদি তাঁহাকে ত্যাগ কর, তবে তিনি তোমাদিগকে ত্যাগ করিবেন। . . . কিন্তু তোমরা বলবান হও, তোমাদের হস্ত শিথিল না হউক, কেননা তোমাদের কার্য্য পুরস্কৃত হইবে।”—২ বংশা. ১৫:১, ২, ৭.

এই কথাগুলো আমাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে পারে। এগুলো দেখায় যে, যতদিন পর্যন্ত আমরা বিশ্বস্তভাবে যিহোবাকে সেবা করব, ততদিন পর্যন্ত তিনি আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন। আমরা যখন তাঁর কাছে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করি, তখন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তিনি আমাদের কথা শোনেন। অসরিয় বলেছিলেন, “বলবান হও” বা সাহস করো। যা-সঠিক, তা করার জন্য প্রায়ই অনেক সাহসের দরকার হয় কিন্তু আমরা জানি যে, যিহোবার সাহায্যে আমরা তা করতে পারব।

আসার ঠাকুরমা মাখা “আশেরার জন্য এক ভীষণ প্রতিমা” নির্মাণ করেছিলেন বলে, আসা তাকে “মাতারাণীর” পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো এক কঠিন কাজের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মোকাবিলা করেছিলেন এবং তার প্রতিমাটাও পুড়িয়ে ফেলেছিলেন। (১ রাজা. ১৫:১৩) আসা তার দৃঢ়সংকল্প আর সাহসের জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলেন। আমাদেরও যিহোবা ও তাঁর ধার্মিক মানগুলোর প্রতি অটলভাবে লেগে থাকতে হবে আর তা আমাদের আত্মীয়রা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থাকুক বা না-ই থাকুক। আমরা যদি তা করি, তাহলে যিহোবা আমাদের বিশ্বস্ত আচরণের জন্য আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেন।

আসা তার পুরস্কারের একটা অংশ হিসেবে দেখতে পেরেছিলেন যে, অনেক ইস্রায়েলীয় ধর্মভ্রষ্ট উত্তর রাজ্য থেকে যিহূদায় ফিরে এসেছিল কারণ তারা বুঝতে পেরেছিল যে, যিহোবা আসার সহবর্তী আছেন। তারা বিশুদ্ধ উপাসনাকে এতটাই মূল্যবান বলে গণ্য করেছিল যে, তারা যিহোবার দাসদের সঙ্গে বসবাস করার জন্য নিজেদের বাড়িঘর পর্যন্ত ত্যাগ করা বেছে নিয়েছিল। তখন আসা এবং সমস্ত যিহূদা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ‘এই নিয়মে আবদ্ধ হইল যে, আপন আপন সমস্ত অন্তঃকরণ ও সমস্ত প্রাণের সহিত আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিবে।’ এর ফল কি হয়েছিল? ঈশ্বর “তাহাদিগকে তাঁহার উদ্দেশ পাইতে দিলেন; আর তিনি চারিদিকে তাহাদিগকে বিশ্রাম দিলেন।” (২ বংশা. ১৫: ৯-১৫) আমরা কতই না আনন্দিত হই, যখন ধার্মিকতার প্রেমিকরা যিহোবার বিশুদ্ধ উপাসনাকে নিজের করে নেয়!

কিন্তু, ভাববাদী অসরিয়ের কথাগুলোর মধ্যে একটা অশুভ দিকও ছিল। তিনি সাবধান করেছিলেন: “যদি [সদাপ্রভুকে] ত্যাগ কর, তবে তিনি তোমাদিগকে ত্যাগ করিবেন।” আমাদের প্রতি যেন কখনো এমনটা না ঘটে কারণ এর পরিণতি দুঃখজনক হতে পারে! (২ পিতর ২:২০-২২) যদিও শাস্ত্র জানায় না যে, কেন যিহোবা আসাকে এই সাবধানবাণী জানিয়েছিলেন কিন্তু রাজা এতে মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

“আপনি অজ্ঞানের কার্য্য করিয়াছেন”

আসার রাজত্বের ৩৬-তম বছরে, ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে যাত্রা করেছিলেন। সম্ভবত তার প্রজাদেরকে আসা ও যিহোবার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করার বিষয়টাকে প্রতিরোধ করার জন্য বাশা সীমান্তবর্তী নগর রামাকে আরও শক্তিশালী করতে শুরু করেছিলেন, যেটা যিরূশালেম থেকে ৮ কিলোমিটার (৫ মাইল) উত্তরে অবস্থিত ছিল। কূশীয়দের আক্রমণ করার সময় আসা যেমন ঈশ্বরের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন, সেইরকমটা করার পরিবর্তে তিনি মানুষের কাছ থেকে সাহায্য লাভের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি অরামের রাজার কাছে উপঢৌকন পাঠিয়েছিলেন, তাকে বলেছিলেন যেন তিনি ইস্রায়েলের উত্তর রাজ্য আক্রমণ করেন। যখন অরামীয়রা আক্রমণ করতে শুরু করেছিল, তখন বাশা রামা থেকে প্রস্থান করেছিলেন।—২ বংশা. ১৬:১-৫.

যিহোবা আসার ব্যাপারে সন্তুষ্ট ছিলেন না আর এই বিষয়টা বলার জন্য তিনি ভাববাদী হনানিকে পাঠিয়েছিলেন। কূশীয়দের প্রতি যিহোবা কেমন আচরণ করেছিলেন, তা জানায় আসার এই বিষয়টা শেখা উচিত ছিল যে, “সদাপ্রভুর প্রতি যাহাদের অন্তঃকরণ একাগ্র, তাহাদের পক্ষে আপনাকে বলবান দেখাইবার জন্য” যিহোবার “চক্ষু পৃথিবীর সর্ব্বত্র ভ্রমণ করে।” হতে পারে যে, আসা ভালো উপদেশ পাননি অথবা বাশা ও তার সৈন্যবাহিনীকে বড়ো ধরনের হুমকি বলে মনে করেননি আর তাই হয়তো চিন্তা করেছিলেন যে, তিনি নিজেই তাদের মোকাবিলা করতে পারবেন। যা-ই হোক না কেন, আসা মানব যুক্তির ওপর নির্ভর করেছিলেন এবং যিহোবার ওপর নির্ভর করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। “এ বিষয়ে আপনি অজ্ঞানের কার্য্য করিয়াছেন,” হনানি বলেছিলেন, “কেননা ইহার পরে পুনঃপুনঃ আপনার বিপক্ষে যুদ্ধ উপস্থিত হইবে।”—২ বংশা. ১৬:৭-৯.

আসা খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি ভাববাদী হনানিকে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিলেন। (২ বংশা. ১৬:১০) আসা হয়তো এইরকম চিন্তা করেছিলেন, ‘অনেক বছর বিশ্বস্ত থাকার পর আমি কি তিরস্কার লাভের যোগ্য?’ তার সেই বার্ধক্যের বছরগুলোতে তিনি কি তার যুক্তি করার ক্ষমতা কিছুটা হারিয়ে ফেলেছিলেন? বাইবেল এই সম্বন্ধে কিছু বলে না।

তার রাজত্বের ৩৯-তম বছরে, আসা পায়ের একটা রোগের কারণে চরম অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। “রোগের সময়েও তিনি সদাপ্রভুর অন্বেষণ না করিয়া বৈদ্যগণেরই অন্বেষণ করিলেন,” বিবরণ বলে। সেই সময়, আসা হয়তো তার আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যেক অবহেলা করেছিলেন। স্পষ্টতই, সেই অবস্থাতেই এবং সেই মনোভাব নিয়েই তিনি তার রাজত্বের ৪১-তম বছরে মারা গিয়েছিলেন।—২ বংশা. ১৬:১২-১৪.

যাই হোক, আসার উত্তম গুণাবলি এবং বিশুদ্ধ উপাসনার প্রতি উদ্যোগ তার ভুলগুলোকেও ছাড়িয়ে যায় বলে মনে হয়। তিনি কখনোই যিহোবাকে সেবা করা বন্ধ করে দেননি। (১ রাজা. ১৫:১৪) তাই, এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে তার জীবনকাহিনী আমাদেরকে কোন শিক্ষা দিতে পারে? এটা আমাদেরকে এই বিষয়টা বুঝতে সাহায্য করে যে, অতীতে যিহোবা আমাদেরকে যেভাবে সাহায্য করেছিলেন, তা নিয়ে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত কারণ এই ধরনের মূল্যবান স্মৃতিগুলো আমরা যখন নতুন নতুন পরীক্ষার মুখোমুখি হই, তখন আমাদেরকে তাঁর সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করতে পারে। তবে, আমাদের এইরকম ধরে নেওয়া উচিত নয় যে, বছরের পর বছর ধরে আমরা যিহোবাকে বিশ্বস্তভাবে সেবা করছি বলে আমাদের শাস্ত্রীয় কোনো পরামর্শের প্রয়োজন নেই। আমাদের যে-নথিই থাকুক না কেন, আমরা যদি ভুল করি, তাহলে যিহোবা আমাদের তিরস্কার করবেন। এই ধরনের সংশোধনকে আমাদের নম্রতার সঙ্গে মেনে নিতে হবে, যেন আমরা তা থেকে উপকার লাভ করতে পারি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা হল, আমাদের স্বর্গীয় পিতা ততদিন আমাদের সঙ্গে থাকবেন, যতদিন আমরা তাঁর সঙ্গে থাকব। যিহোবার চক্ষু পৃথিবীর সর্বত্র সেই ব্যক্তিদের অন্বেষণ করে, যারা তাঁর উদ্দেশ্যে বিশ্বস্তভাবে কাজ করছে। তিনি তাঁর শক্তিকে তাদের পক্ষে ব্যবহার করার মাধ্যমে তাদেরকে পুরস্কৃত করেন। আসার ক্ষেত্রে যিহোবা তা করেছিলেন এবং আমাদের বেলায়ও তিনি তা করবেন।

[৯ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

যিহোবা সেই বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের পুরস্কার প্রদান করেন, যারা আধ্যাত্মিক যুদ্ধে রত হয়

[১০ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

যিহোবার দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা করার জন্য সাহসের প্রয়োজন