সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

মথি ১৯:১০-১২ পদে প্রাপ্ত যিশুর কথাগুলো কি এই ইঙ্গিত দেয় যে, যারা অবিবাহিত থাকা বেছে নেয়, তারা অলৌকিক কোনো উপায়ে অবিবাহিত থাকার ক্ষমতা লাভ করেছে?

▪ যিশু যে-প্রেক্ষাপটে অবিবাহিত থাকার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন, তা বিবেচনা করুন। ফরীশীরা যখন যিশুর কাছে এসে বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টা উত্থাপন করেছিল, তখন যিশু বিবাহ সম্বন্ধে যিহোবার মান স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছিলেন। যদিও ব্যবস্থা অনুযায়ী একজন পুরুষ তার স্ত্রীর মধ্যে “কোন প্রকার অনুপযুক্ত ব্যবহার” খুঁজে পেলে তাকে একটা ত্যাগপত্র লিখে দিতে পারতেন কিন্তু আদি থেকে বিষয়টা এইরকম ছিল না। (দ্বিতীয়. ২৪:১, ২) তার পর যিশু উল্লেখ করেছিলেন: “ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যাকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে।”—মথি ১৯:৩-৯.

এই কথা শোনার পর শিষ্যরা বলেছিল: “যদি আপন স্ত্রীর সঙ্গে পুরুষের এরূপ সম্বন্ধ হয়, তবে বিবাহ করা ভাল নয়।” উত্তরে যিশু বলেছিলেন: “সকলে এই কথা গ্রহণ করে না, কিন্তু যাহাদিগকে ক্ষমতা দত্ত হইয়াছে, তাহারাই করে। কারণ এমন নপুংসক আছে, যাহারা মাতার উদর হইতে সেইরূপ হইয়া জন্মিয়াছে; আর এমন নপুংসক আছে, যাহাদিগকে মানুষে নপুংসক করিয়াছে; আর এমন নপুংসক আছে, যাহারা স্বর্গ-রাজ্যের নিমিত্তে আপনাদিগকে নপুংসক করিয়াছে। যে গ্রহণ করিতে পারে, সে গ্রহণ করুক।”—মথি ১৯:১০-১২.

আক্ষরিক নপুংসকরা ছিল সেই ব্যক্তিরা, যারা জন্মগত ত্রুটির কারণে অথবা কোনো দুর্ঘটনা কিংবা অঙ্গচ্ছেদের কারণে সেইরকম হয়েছে। কিন্তু, এমন ব্যক্তিরাও ছিল, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেদের নপুংসক করেছে। বিয়ে করার জন্য যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও, তারা ইন্দ্রিয়দমন করে থাকে এবং “স্বর্গ-রাজ্যের নিমিত্তে” অবিবাহিত থাকে। যিশুর মতো তারাও অবিবাহিত থাকা বেছে নেয়, যেন তারা রাজ্যের সেবায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করতে পারে। তারা অবিবাহিত থাকার ক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেনি কিংবা তাদেরকে এই ক্ষমতা দেওয়াও হয়নি। আসলে, তারা নিজেরা এটা গ্রহণ করে নিয়েছে। অর্থাৎ তারা স্বেচ্ছাকৃতভাবে এই ক্ষমতা অর্জন করেছে।

যিশুর কথার ওপর ভিত্তি করে প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, যদিও অবিবাহিত বা বিবাহিত সমস্ত খ্রিস্টান গ্রহণযোগ্য উপায়ে ঈশ্বরকে সেবা করতে পারে কিন্তু যে-অবিবাহিত ব্যক্তিরা “হৃদয়ে স্থির,” তারা “আরও ভাল করে।” কীভাবে? বিবাহিত ব্যক্তিদের অবশ্যই তাদের সময় ও শক্তি আলাদা করে রাখতে হয়, যেন তারা তাদের সাথিকে সন্তুষ্ট করতে এবং তাদের যত্ন নিতে পারে। অন্যদিকে, অবিবাহিত খ্রিস্টানরা এইরকম কোনো বাধ্যবাধকতা ছাড়াই প্রভুর সেবায় নিজেদের বিলিয়ে দিতে পারে। তারা তাদের এই অবস্থাকে ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটা “অনুগ্রহ-দান” বা ক্ষমতা হিসেবে দেখে থাকে।—১ করি. ৭:৭, ৩২-৩৮.

তাই শাস্ত্র আমাদের বলে যে, একজন খ্রিস্টান কোনো অলৌকিক উপায়ে অবিবাহিত থাকার ক্ষমতা লাভ করেন না। এর পরিবর্তে, তিনি অবিবাহিত থাকার মাধ্যমে এই ক্ষমতা গড়ে তোলেন, যেন কোনো বিক্ষেপ ছাড়াই তিনি রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। বর্তমানে, অনেকে এই কারণেই অবিবাহিত থাকার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ এবং অন্যদেরও এই ব্যক্তিদের উৎসাহিত করা উচিত।