সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

প্রচ্ছদ বিষয় | আপনি কোথায় সান্ত্বনা খুঁজে পেতে পারেন?

ঈশ্বর যেভাবে সান্ত্বনা প্রদান করেন

ঈশ্বর যেভাবে সান্ত্বনা প্রদান করেন

প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, যিহোবা * হলেন ‘সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর; যিনি আমাদের সমস্ত ক্লেশের মধ্যে আমাদিগকে সান্ত্বনা করেন।’ (২ করিন্থীয় ১:৩, ৪) তাই, বাইবেল আমাদের আশ্বাস দেয়, ঈশ্বর প্রত্যেক ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারেন এবং যত দুঃখজনক ঘটনাই ঘটুক না কেন, আমাদের স্বর্গীয় পিতা আমাদের সান্ত্বনা প্রদান করতে পারেন।

অবশ্য, আমরা যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করতে চাই, তা হলে আমাদেরও কিছু করতে হবে। আমরা যদি হাসপাতালে গিয়ে কখনো ডাক্তার না দেখাই, তা হলে কীভাবে একজন ডাক্তার আমাদের সাহায্য করতে পারবেন? তাই, শাস্ত্র আমাদের এই জোরালো পরামর্শ দেয়: “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।”—যাকোব ৪:৮.

আমরা কীভাবে নিশ্চিত হতে পারি যে, ঈশ্বর আমাদের নিকটবর্তী হবেন? প্রথমত, তিনি বার বার আমাদের বলেন যে, তিনি আমাদের সাহায্য করতে চান। ( প্রবন্ধের সঙ্গে দেওয়া বাক্সটা দেখুন।) দ্বিতীয়ত, আমাদের কাছে বর্তমান সময়ের ও অতীতের এমন ব্যক্তিদের দৃঢ় সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে, যাদেরকে ঈশ্বর সান্ত্বনা প্রদান করেছেন।

আজকে ঈশ্বরের কাছে সাহায্যের অন্বেষণ করে এমন অনেকের মতো রাজা দায়ূদকেও বিভিন্ন দুঃখজনক ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তিনি একবার যিহোবার কাছে এই বিনতি করেছিলেন: “যখন আমি তোমার নিকটে আর্ত্তনাদ করি, . . . তখন তুমি আমার বিনতির রব শ্রবণ করিও।” ঈশ্বর কি এই বিনতি শুনেছিলেন? হ্যাঁ। কারণ দায়ূদ বলেছিলেন: “আমি সাহায্য পাইয়াছি; এজন্য আমার অন্তঃকরণ উল্লাসিত হইয়াছে।”—গীতসংহিতা ২৮:২, ৭.

সমস্ত শোকার্ত ব্যক্তিকে সান্ত্বনা দেওয়ার ক্ষেত্রে যিশুর ভূমিকা

ঈশ্বরের উদ্দেশ্য ছিল, যেন সান্ত্বনা প্রদান করার বিষয়ে যিশু এক মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ঈশ্বর তাঁকে যে-সমস্ত কার্যভার দিয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে একটা ছিল, ‘ভগ্নান্তঃকরণ লোকদের ক্ষত বাঁধিয়া দেওয়া’ এবং “সমস্ত শোকার্ত্তকে সান্ত্বনা” দেওয়া। (যিশাইয় ৬১:১, ২) ভবিষ্যদ্‌বাণী অনুযায়ী, যিশু “পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত” লোকেদের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছিলেন।—মথি ১১:২৮-৩০.

যিশু লোকেদেরকে বিজ্ঞ পরামর্শ দেওয়ার, তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করার এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমনকী তাদের অসুস্থতা দূর করার মাধ্যমে তাদের সান্ত্বনা দিয়েছিলেন। একদিন, একজন কুষ্ঠরোগী যিশুকে এই অনুরোধ করেছিলেন: “যদি আপনার ইচ্ছা হয়, আমাকে শুচি করিতে পারেন।” করুণাবিষ্ট হয়ে যিশু উত্তর দিয়েছিলেন: “আমার ইচ্ছা, তুমি শুচীকৃত হও।” (মার্ক ১:৪০, ৪১) আর সেই কুষ্ঠরোগী সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন।

যদিও, ঈশ্বরের পুত্র ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য পৃথিবীতে আর নেই কিন্তু তাঁর পিতা, “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” যিহোবা সেই ব্যক্তিদের সাহায্য করে চলেছেন, যাদের সান্ত্বনা প্রয়োজন। (২ করিন্থীয় ১:৩) চারটে প্রধান মাধ্যম বিবেচনা করুন, যেগুলোর দ্বারা ঈশ্বর লোকেদের সান্ত্বনা প্রদান করেন।

  • বাইবেল। “পূর্ব্বকালে যাহা যাহা লিখিত হইয়াছিল, সে সকল আমাদের শিক্ষার নিমিত্তে লিখিত হইয়াছিল, যেন শাস্ত্রমূলক ধৈর্য্য ও সান্ত্বনা দ্বারা আমরা প্রত্যাশা প্রাপ্ত হই।”—রোমীয় ১৫:৪.

  • ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা। যিশুর মৃত্যুর পর খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর অনেক সান্ত্বনার প্রয়োজন ছিল। বাইবেল জানায়, ঈশ্বর তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে সেই সান্ত্বনা জুগিয়েছিলেন। (প্রেরিত ৯:৩১) পবিত্র আত্মা অর্থাৎ ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তি অত্যন্ত কার্যকরী। ঈশ্বর যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো ব্যক্তিকে সান্ত্বনা প্রদান করার জন্য এই শক্তি ব্যবহার করতে পারেন।

  • প্রার্থনা। বাইবেল আমাদের পরামর্শ দেয়, “কোন বিষয়ে ভাবিত হইও না।” বরং এটি বলে, “তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি, তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন . . . রক্ষা করিবে।”—ফিলিপীয় ৪:৬, ৭.

  • সহখ্রিস্টানরা এমন প্রকৃত বন্ধুর মতো, যাদের উপর আমরা কঠিন পরিস্থিতিতেও সান্ত্বনার জন্য নির্ভর করি। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, তার বন্ধুরা “সঙ্কটের ও ক্লেশের” সময়ে তার জন্য “সান্ত্বনাজনক” ছিল।—কলসীয় ৪:১১; ১ থিষলনীকীয় ৩:৭.

কিন্তু, আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, এই বিষয়গুলো কি আসলেই কার্যকরী? আসুন আমরা সেই ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতাগুলো পরীক্ষা করি, যারা শুরুতে উল্লেখিত সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের মতো আপনিও দেখতে পাবেন, ঈশ্বর এখনও এই হৃদয়গ্রাহী প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেন: “মাতা যেমন আপন পুত্ত্রকে সান্ত্বনা করে, তেমনি আমি তোমাদিগকে সান্ত্বনা করিব।”—যিশাইয় ৬৬:১৩. (wp16-E No. 5)

^ অনু. 3 যিহোবা হল ঈশ্বরের নাম, যা বাইবেলে প্রকাশ করা হয়েছে।