সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যিহোবার ব্যবস্থা থেকে পূর্ণরূপে উপকার লাভ করুন

যিহোবার ব্যবস্থা থেকে পূর্ণরূপে উপকার লাভ করুন

“আমি সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর, আমি তোমার উপকারজনক শিক্ষা দান করি।”—যিশা. ৪৮:১৭.

গান সংখ্যা: ২০, ৩৭

১, ২. (ক) যিহোবার সাক্ষিরা বাইবেলকে কীভাবে দেখে থাকে? (খ) আপনি বাইবেলের কোন অংশ পড়তে বেশি পছন্দ করেন?

যিহোবার সাক্ষি হিসেবে আমরা বাইবেল পড়তে ভালোবাসি। বাইবেল আমাদের সান্ত্বনা, আশা ও নির্দেশনা প্রদান করে আর এগুলোর উপর আমরা আস্থা রাখতে পারি। (রোমীয় ১৫:৪) বাইবেল মানুষের ধারণা নিয়ে লেখা কোনো বই নয় বরং এটি হল “ঈশ্বরের বাক্য।”—১ থিষল. ২:১৩.

খুব সম্ভবত, আমাদের মধ্যে সকলেই বাইবেলের কোনো না কোনো অংশ পড়তে বেশি পছন্দ করি। কেউ কেউ সুসমাচারের বিবরণ পড়তে পছন্দ করে কারণ সেখানে যিশুর মাধ্যমে যিহোবার চমৎকার ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে তুলে ধরা হয়েছে। (যোহন ১৪:৯) অন্যেরা ভবিষ্যদ্‌বাণীর বইগুলো, যেমন প্রকাশিত বাক্য পড়তে পছন্দ করে, যে-বইয়ে “যাহা যাহা শীঘ্র ঘটিবে, সেই সকল” বর্ণনা করা আছে। (প্রকা. ১:১) কেউ কেউ গীতসংহিতা পড়ে সান্ত্বনা লাভ করে, আবার অন্যেরা হিতোপদেশ বইয়ের উপকারী পরামর্শ পড়তে পছন্দ করে। তাই এটা স্পষ্ট, বাইবেল হল এমন এক বই, যা সবাই পড়তে পারে।

৩, ৪. (ক) আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনাকে আমরা কীভাবে দেখে থাকি? (খ) কিছু প্রকাশনা আমরা কোন বিশেষ দলের ব্যক্তিদের জন্য পেয়ে থাকি?

আমরা যেহেতু বাইবেল পড়তে ভালোবাসি, তাই আমরা আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনা পড়তেও ভালোবাসি, যেগুলো ঈশ্বরের বাক্যের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়। আমরা যে-সমস্ত বই, ব্রোশার, পত্রিকা ও অন্যান্য প্রকাশনা পাই, সেগুলো হচ্ছে যিহোবার জোগানো ব্যবস্থা। এগুলো আমাদেরকে তাঁর নিকটবর্তী থাকতে এবং বিশ্বাসে দৃঢ় থাকতে সাহায্য করে।—তীত ২:২.

আমাদের অনেক প্রকাশনা সাধারণত সমস্ত যিহোবার সাক্ষির জন্য লেখা হয়। তবে, কিছু প্রকাশনা বিশেষ দল যেমন, অল্পবয়সিদের অথবা বাবা-মায়েদের জন্য লেখা হয়। আমাদের ওয়েবসাইটের অধিকাংশ প্রবন্ধ ও ভিডিও বিশেষভাবে সেই লোকেদের জন্য তৈরি করা হয়, যারা যিহোবার সাক্ষি নয়। আমরা যে বিভিন্ন ধরনের বিষয়বস্তু পাচ্ছি, সেটা প্রমাণ করে, সমস্ত লোকের জন্য প্রচুর নির্দেশনা জোগানোর বিষয়ে যিহোবা যে-প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তা তিনি রক্ষা করেছেন।—যিশা. ২৫:৬.

৫. যিহোবা কোন বিষয়টা উপলব্ধি করেন বলে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি?

আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তিই বাইবেল ও আমাদের প্রকাশনা পড়ার জন্য আরও সময় বের করতে চাই। তবে, প্রতিটা প্রকাশনা অধ্যয়ন করার জন্য আমরা হয়তো সবসময় একই পরিমাণ সময় ব্যয় করতে পারি না। আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, আমরা যখন বাইবেল ও আমাদের প্রকাশনা পড়ার এবং অধ্যয়ন করার জন্য বিজ্ঞতার সঙ্গে সময় ব্যবহার করি, তখন যিহোবা খুশি হন। (ইফি. ৫:১৫, ১৬) কিন্তু, আমাদের একটা বিপদ এড়িয়ে চলার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। সেটা কী?

৬. কোন কারণে আমরা যিহোবার কিছু ব্যবস্থা থেকে উপকার লাভ করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হতে পারি?

আমরা যদি সতর্ক না থাকি, তা হলে আমরা হয়তো এমনটা মনে করতে পারি, বাইবেলের নির্দিষ্ট কোনো অংশ অথবা কোনো কোনো প্রকাশনা আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। উদাহরণ স্বরূপ, বাইবেলের কোনো বিবরণ যদি আমাদের পরিস্থিতির জন্য ব্যাবহারিক বলে মনে না হয়, তখন আমরা কী করি? অথবা কোনো প্রকাশনা মূলত যে-পাঠকদের উদ্দেশে লেখা হয়েছে, আমরা যদি সেই দলে না পড়ি, তখন আমরা কী করি? আমরা কি সেই তথ্য দ্রুত পড়ে ফেলি কিংবা বাদ দিয়ে যাই? আমরা যদি তা করি, তা হলে আমরা হয়তো আমাদের জন্য উপকারজনক এমন কোনো মূল্যবান তথ্য লাভ করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হতে পারি। কীভাবে আমরা এই বিপদ এড়িয়ে চলতে পারি? আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা যে-সমস্ত তথ্য পাই, সেগুলোর সবই যিহোবার কাছ থেকে আসে। বাইবেল বলে: “আমি সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর, আমি তোমার উপকারজনক শিক্ষা দান করি।” (যিশা. ৪৮:১৭) এই প্রবন্ধে আমরা তিনটে পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করব, যেগুলো আমাদেরকে পুরো বাইবেল থেকে উপকার লাভ করতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া, যিহোবা আমাদের জন্য যে-সমস্ত ব্যবস্থা জুগিয়েছেন, সেগুলো থেকে আমরা কীভাবে উপকার লাভ করতে পারি, সেই বিষয়েও আমরা বিবেচনা করব।

ফলপ্রসূ বাইবেল পাঠের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ

৭. কেন আমাদের শেখার মনোভাব নিয়ে বাইবেল পড়তে হবে?

শেখার মনোভাব নিয়ে পড়ুন। এটা ঠিক যে, বাইবেলের কিছু কিছু অংশ যদিও নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি অথবা দলের জন্য লেখা হয়েছিল, কিন্তু আপনিও সেখান থেকে শিখতে পারেন। কারণ বাইবেল স্পষ্টভাবে বলে, “ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি . . . উপকারী।” (২ তীম. ৩:১৬) তাই, বাইবেল পড়ার সময় আমাদের শেখার মনোভাব নিয়ে পড়তে হবে। আমাদের একজন ভাই সবসময় এটা মনে রাখার চেষ্টা করেন, একটা বিবরণ থেকে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা লাভ করতে পারেন। এই প্রচেষ্টা করার ফলে তিনি এমন শিক্ষাগুলো খুঁজে বের করতে পারেন, যেগুলো হয়তো সহজেই বোঝা যায় না। তাই, বাইবেল পড়ার আগে আমাদের যিহোবার কাছে প্রার্থনা করা উচিত, যেন তিনি আমাদের যে-শিক্ষা দিতে চান, তা বোঝার জন্য আমরা শেখার মনোভাব গড়ে তুলতে পারি এবং প্রজ্ঞা লাভ করতে পারি।—ইষ্রা ৭:১০; পড়ুন, যাকোব ১:৫.

আপনি কি বাইবেল পাঠ থেকে পূর্ণরূপে উপকার লাভ করছেন? (৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৮, ৯. (ক) বাইবেল পড়ার সময় আমরা নিজেদের কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি? (খ) খ্রিস্টান প্রাচীনদের যোগ্যতার তালিকা আমাদেরকে যিহোবা সম্বন্ধে কী জানায়?

প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন। বাইবেল পড়ার সময় আমরা হয়তো একটু থেমে নিজেদের এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি: ‘এই বিবরণ যিহোবা সম্বন্ধে আমাকে কী জানায়? কীভাবে আমি এই তথ্য নিজের জীবনে কাজে লাগাতে পারি? কীভাবে আমি এই তথ্য অন্যদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করতে পারি?’ বাইবেল পড়ার সময় এই প্রশ্নগুলো নিয়ে ধ্যান করলে আমরা বাইবেল পাঠ থেকে আরও বেশি উপকার লাভ করব। আসুন একটা উদাহরণ লক্ষ করি। বাইবেলে খ্রিস্টান প্রাচীনদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা সম্বন্ধে বর্ণনা করা আছে। (পড়ুন, ১ তীমথিয় ৩:২-৭.) যেহেতু আমাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তিই প্রাচীন হিসেবে সেবা করি না, তাই আমরা হয়তো মনে করতে পারি, এই বিবরণ আমাদের কোনো কাজে আসবে না। কিন্তু, যোগ্যতার এই তালিকা কীভাবে আমাদের সবাইকে সাহায্য করতে পারে, সেই বিষয়ে আসুন আমরা উপরে উল্লেখিত তিনটে প্রশ্ন ব্যবহার করে আলোচনা করি।

এই বিবরণ যিহোবা সম্বন্ধে আমাকে কী জানায়? যিহোবা প্রাচীনদের জন্য যোগ্যতার তালিকা দিয়েছেন। যারা মণ্ডলীর যত্ন নেন, তাদের জন্য তিনি এক উচ্চমান তুলে ধরেছেন। এটা প্রকাশ করে, যিহোবার কাছে মণ্ডলী অত্যন্ত মূল্যবান। বাইবেল জানায়, তিনি এই মণ্ডলী “নিজ [“নিজ পুত্রের,” NW] রক্ত দ্বারা” ক্রয় করেছেন। (প্রেরিত ২০:২৮) তাই যিহোবা চান, যেন প্রাচীনরা মণ্ডলীতে উত্তম উদাহরণ বজায় রাখেন। আর মণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে তারা যেভাবে আচরণ করেন, সেটার জন্য তাদের যিহোবার কাছে নিকাশ দিতে হবে। তিনি চান, যেন আমরা প্রাচীনদের যত্নের অধীনে নিরাপদ বোধ করি। (যিশা. ৩২:১, ২) আমরা যখন প্রাচীনদের এই যোগ্যতা সম্বন্ধে পড়ি, তখন আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা সত্যিই আমাদের অনেক যত্ন নেন।

১০, ১১. (ক) প্রাচীনদের যোগ্যতার তালিকা পড়ার সময় আমরা সেই তথ্য কীভাবে নিজেদের জীবনে কাজে লাগাতে পারি? (খ) কীভাবে আমরা এই তথ্য অন্যদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করতে পারি?

১০ কীভাবে আমি এই তথ্য নিজের জীবনে কাজে লাগাতে পারি? আপনি যদি ইতিমধ্যেই একজন প্রাচীন হয়ে থাকেন, তা হলে আপনার নিয়মিতভাবে এই তালিকা পুনরালোচনা করা এবং আরও উন্নতি করার চেষ্টা করা উচিত। আর আপনি যদি “অধ্যক্ষপদের আকাঙ্ক্ষী” হয়ে থাকেন, তা হলে এই গুণাবলি অর্জন করার জন্য আপনার যথাসাধ্য করা উচিত। (১ তীম. ৩:১) তবে যোগ্যতার এই তালিকা থেকে সমস্ত খ্রিস্টানই শিক্ষা লাভ করতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যিহোবা চান যেন আমরা প্রত্যেকে ক্ষান্ত বা শান্তভাব বজায় রাখার মাধ্যমে যুক্তিবাদী হই এবং আত্মসংযম বজায় রেখে উত্তম বিচারবুদ্ধি দেখাই। (ফিলি. ৪:৫; ১ পিতর ৪:৭) প্রাচীনরা যখন “পালের আদর্শ” হয়ে ওঠেন, তখন আমরা তাদের কাছ থেকে শিখতে পারি এবং “তাঁহাদের বিশ্বাসের অনুকারী” হতে পারি।—১ পিতর ৫:৩; ইব্রীয় ১৩:৭.

১১ কীভাবে আমি এই তথ্য অন্যদের সাহায্য করার জন্য ব্যবহার করতে পারি? খ্রিস্টান প্রাচীনদের যোগ্যতার এই তালিকা ব্যবহার করে আমরা বাইবেল ছাত্রদের ও অন্যান্য আগ্রহী ব্যক্তিকে এটা বুঝতে সাহায্য করতে পারি, কীভাবে প্রাচীনরা খ্রিস্টীয়জগতের পাদরিদের চেয়ে আলাদা। এ ছাড়া, এই তালিকা আমাদের মনে রাখতে সাহায্য করে, আমাদের মণ্ডলীতে প্রাচীনরা কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন। ফল স্বরূপ, আমরাও এই ভাইদের ‘চিনিয়া লইতে [‘সম্মান করতে,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]’ অনুপ্রাণিত হই। (১ থিষল. ৫:১২) আমরা তাদের প্রতি যত বেশি সম্মান দেখাব, ততই তারা আনন্দের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।—ইব্রীয় ১৩:১৭.

১২, ১৩. (ক) আমাদের কাছে যে-সমস্ত হাতিয়ার রয়েছে, সেগুলো ব্যবহার করে আমরা কোন ধরনের গবেষণা করতে পারি? (খ) একটা উদাহরণ দিন, যেটা দেখায় কীভাবে আমরা কোনো বিবরণের পিছনের তথ্য থেকে এমন শিক্ষা লাভ করতে পারি, যে-শিক্ষা হয়তো সহজে বোঝা যায় না।

১২ গবেষণা করুন। বাইবেল অধ্যয়নের সময় আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে পারি:

  • বাইবেলের এই বিবরণ কে লিখেছেন?

  • এই বিবরণ কখন ও কোথায় লেখা হয়েছিল?

  • এই বিবরণ লেখার সময় কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটছিল?

এই ধরনের তথ্য হয়তো আমাদের এমন শিক্ষা খুঁজে বের করতে সাহায্য করে, যা সহজেই বোঝা যায় না।

১৩ উদাহরণ স্বরূপ, যিহিষ্কেল ১৪:১৩, ১৪ পদ বলে: “কোন দেশ সত্যলঙ্ঘন দ্বারা আমার বিরুদ্ধে পাপ করিলে যখন আমি তাহার বিরুদ্ধে আপন হস্ত বিস্তার করি, তাহার অন্নরূপ যষ্টি ভাঙ্গিয়া ফেলি, ও তাহার মধ্যে দুর্ভিক্ষ প্রেরণ করিয়া তথাকার মনুষ্য ও পশু উচ্ছিন্ন করি; তখন তাহার মধ্যে যদি নোহ, দানিয়েল ও ইয়োব, এই তিন ব্যক্তি থাকে, তবে তাহারা আপন আপন ধার্ম্মিকতায় আপন আপন প্রাণমাত্র রক্ষা করিবে, ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন।” আমরা যদি একটু গবেষণা করি, তা হলে আমরা জানতে পারি, যিহিষ্কেল খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৬১২ বছর আগে এই কথাগুলো লিখেছিলেন। নোহ ও ইয়োব যদিও এই বিবরণ লেখার শত শত বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন, কিন্তু যিহোবা তখনও তাদের বিশ্বস্ততা মনে রেখেছেন। তবে দানিয়েল এই বিবরণ লেখার সময় বেঁচে ছিলেন। যিহোবা যখন দানিয়েলকে নোহ ও ইয়োবের মতো ধার্মিক ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, তখন খুব সম্ভবত দানিয়েলের বয়স ২০ বছর। এখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি? যিহোবা তাঁর সমস্ত বিশ্বস্ত দাসের কাজ লক্ষ করেন ও তাদের মূল্যবান বলে মনে করেন আর তাদের মধ্যে অল্পবয়সিরাও রয়েছে।—গীত. ১৪৮:১২-১৪.

বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনা থেকে উপকার লাভ করুন

১৪. অল্পবয়সিদের জন্য প্রকাশিত বিষয়বস্তু কীভাবে তাদের সাহায্য করে আর এগুলো কীভাবে অন্যদের জন্যও উপকারী হতে পারে? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

১৪ অল্পবয়সিদের জন্য প্রকাশনা। এই পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি, পুরো বাইবেল থেকেই আমরা উপকার লাভ করতে পারি। একইভাবে, আমরা আমাদের সমস্ত প্রকাশনা থেকে উপকার লাভ করতে পারি। আসুন আমরা কয়েকটা উদাহরণ বিবেচনা করি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, যিহোবা অল্পবয়সিদের জন্য প্রচুর তথ্য জুগিয়েছেন। [১] এই তথ্য তাদেরকে স্কুলের বিভিন্ন চাপ এবং কিশোর বয়সের বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। কিন্তু কীভাবে আমরা সকলে এসব প্রবন্ধ ও বই পড়ে উপকার লাভ করতে পারি? আমরা যখন এই তথ্য পড়ি, তখন আমরা অল্পবয়সিদের বিভিন্ন সমস্যা সম্বন্ধে জানতে পারি এবং তাদেরকে আরও ভালোভাবে সাহায্য ও উৎসাহ প্রদান করতে পারি।

১৫. অল্পবয়সিদের জন্য প্রকাশিত তথ্যের ব্যাপারে প্রাপ্তবয়স্ক খ্রিস্টানদের কেন আগ্রহী হওয়া উচিত?

১৫ অল্পবয়সিদের জন্য প্রকাশিত তথ্যকে প্রাপ্তবয়স্ক খ্রিস্টানদের হালকা করে দেখা উচিত নয়। অধিকাংশ খ্রিস্টানই এসব প্রবন্ধে আলোচিত সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়ে থাকে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের সবাইকে বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করতে হয়, নিজেদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়, সঙ্গীসাথির চাপ প্রত্যাখ্যান করতে হয় এবং কুসংসর্গ ও ক্ষতিকর বিনোদন এড়িয়ে চলতে হয়। তাই, এসব প্রকাশনা যদিও অল্পবয়সিদের জন্য লেখা হয়েছে, কিন্তু সেগুলোর মধ্যে যে-তথ্য রয়েছে, তা বাইবেল থেকেই তুলে ধরা হয়েছে আর সমস্ত খ্রিস্টান সেখান থেকে উপকার লাভ করতে পারে।

১৬. আমাদের প্রকাশনাগুলো অল্পবয়সিদের আর কী করতে সাহায্য করে?

১৬ এ ছাড়া, অল্পবয়সিদের জন্য লেখা প্রকাশনাগুলো তাদেরকে যিহোবার সঙ্গে বন্ধুত্ব দৃঢ় করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। (পড়ুন, উপদেশক ১২:১, ১৩.) আর প্রাপ্তবয়স্করাও সেগুলো থেকে উপকৃত হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসের সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকায় “যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য . . . কীভাবে আমি বাইবেল পড়াকে এক উপভোগ্য বিষয় করে তুলতে পারি?” শিরোনামের প্রবন্ধ তুলে ধরা হয়েছিল। সেই প্রবন্ধে বিভিন্ন উপকারী পরামর্শ ও সেইসঙ্গে একটা বাক্স ছিল, যে-বাক্সটা কেটে নিয়ে অধ্যয়নের সময় ব্যবহার করার জন্য রেখে দেওয়া যায়। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা কি এই প্রবন্ধ থেকে উপকৃত হয়েছিল? একজন স্ত্রী ও মা বলেছিলেন, বাইবেল পড়া তার জন্য সবসময়ই এক কঠিন বিষয় ছিল। কিন্তু তিনি এই প্রবন্ধের পরামর্শ ব্যবহার করেছিলেন আর এখন তিনি বাইবেল পড়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। তিনি বলেন, বাইবেলের বইগুলো যে একটা অন্যটার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং এক চমৎকার চিত্র গঠন করে, তা বুঝতে পেরে তিনি অনেক আনন্দ লাভ করেছেন। তিনি আরও বলেন, “আগে বাইবেল পড়া আমার কাছে এত উপভোগ্য বলে মনে হতো না।”

১৭, ১৮. জনসাধারণের জন্য প্রস্তুতকৃত প্রকাশনা পড়ে আমরা কীভাবে উপকৃত হতে পারি? একটা উদাহরণ দিন।

১৭ জনসাধারণের জন্য প্রকাশনা। ২০০৮ সাল থেকে আমরা প্রহরীদুর্গ পত্রিকার অধ্যয়ন সংস্করণ পাচ্ছি। এই সংস্করণ মূলত যিহোবার সাক্ষিদের জন্য লেখা হয়। তবে আমাদের কাছে এমন পত্রিকাও আছে, যেগুলো মূলত জনসাধারণের জন্য লেখা হয়। কীভাবে আমরা সেগুলো থেকেও উপকার লাভ করতে পারি? আসুন আমরা একটা উদাহরণ বিবেচনা করি। মনে করুন, আপনি কোনো ব্যক্তিকে কিংডম হলে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি যখন সভাতে আসেন, তখন আপনি খুবই আনন্দিত হন। বক্তা যখন জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তৃতা তুলে ধরেন, তখন আপনি সেই ব্যক্তির বিষয়ে চিন্তা করেন। আপনি চিন্তা করেন, তিনি বক্তৃতা থেকে যে-বিষয়গুলো শুনছেন, সেগুলোর বিষয়ে তিনি কী মনে করেন আর সেই তথ্য কীভাবে তার জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে। ফল স্বরূপ, সেই বক্তৃতার বিষয়বস্তু আপনার হৃদয় স্পর্শ করে এবং আপনি সেই বিষয়ের জন্য অনেক কৃতজ্ঞ হন।

১৮ আমরা যখন জনসাধারণের জন্য প্রস্তুতকৃত প্রকাশনা পড়ি, তখনও একইরকম কিছু ঘটতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রহরীদুর্গ পত্রিকার জনসাধারণের সংস্করণে এবং jw.org ওয়েবসাইটে তুলে ধরা প্রবন্ধগুলোতে বাইবেল সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করার সময় এমন শব্দ ও অভিব্যক্তি ব্যবহার করা হয়, যা সহজে বোঝা যায়। আমরা যখন সেই তথ্য পড়ি, তখন বাইবেলের যে-সমস্ত সত্য সম্বন্ধে আমরা ইতিমধ্যেই জানি, সেগুলোর বিষয়ে আমাদের বোধগম্যতা ও ভালোবাসা আরও গভীর হয়। এ ছাড়া, আমরা হয়তো পরিচর্যার সময় আমাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করার নতুন নতুন উপায় শিখতে পারি। একইভাবে, সচেতন থাক! (বর্তমানে সজাগ হোন!) পত্রিকাও আমাদের এই বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে পারে যে, একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন। এ ছাড়া, কীভাবে বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করতে হয়, তা শেখার ক্ষেত্রে এই পত্রিকা আমাদের সাহায্য করে।—পড়ুন, ১ পিতর ৩:১৫.

১৯. কীভাবে আমরা যিহোবার ব্যবস্থাগুলোর জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারি?

১৯ স্পষ্টতই, আমাদের উপকারের জন্য যিহোবা প্রচুর পরামর্শ ও নির্দেশনা জুগিয়েছেন। তিনি আমাদের যে-সমস্ত তথ্য দিয়েছেন, আসুন আমরা সবসময় সেইসমস্ত তথ্য পড়ি এবং কাজে লাগাই। আমরা যদি তা করি, তা হলে আমরা নিজেরা উপকৃত হব এবং যিহোবাকে দেখাব, তিনি আমাদের জন্য যে-সমস্ত ব্যবস্থা জুগিয়েছেন, সেই সমস্ত কিছুর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।—যিশা. ৪৮:১৭.

^ [১] (১৪ অনুচ্ছেদ) এর মধ্যে রয়েছে যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে-উত্তরগুলো কাজ করে (ইংরেজি) বইয়ের খণ্ড ১ ও  আর সেইসঙ্গে “Young People Ask” শিরোনামের ধারাবাহিক প্রবন্ধ, যা আমাদের ইংরেজি ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।