সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

“ধন্য তোমার সুবিচার”

“ধন্য তোমার সুবিচার”

উপরের এই কথাগুলো প্রাচীন ইস্রায়েলের দায়ূদ, একজন মহিলার প্রশংসায় বলেছিলেন, যার সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। তার নাম ছিল অবীগল। কী দায়ূদকে তার প্রশংসা করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল? আর কীভাবে আমরা অবীগলের উদাহরণ থেকে উপকার লাভ করতে পারি?

দায়ূদ যখন রাজা শৌলের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, তখন তার এই বিবাহিত মহিলার সঙ্গে দেখা হয়। অবীগলের স্বামীর নাম ছিল নাবল আর তিনি একজন ধনী ব্যক্তি ছিলেন। নাবলের প্রচুর মেষপাল ছিল, যেগুলোকে দক্ষিণ যিহূদার পার্বত্য অঞ্চলে চরানো হতো। দায়ূদ এবং তার লোকেরা কিছু সময়ের জন্য নাবলের মেষপালকদের ও মেষপালের প্রতি “প্রাচীরস্বরূপ” হয়ে সুরক্ষা প্রদান করেছিলেন। পরে, দায়ূদ নাবলের কাছে বার্তাবাহক পাঠিয়ে খাবারের বিষয়ে এই বলে অনুরোধ করেছিলেন, নাবল যেন ‘যাহা তাহার হাতে উঠে,’ তা তাদের দেন। (১ শমূ. ২৫:৮, ১৫, ১৬) এটা কোনো অযৌক্তিক অনুরোধ ছিল না কারণ ইতিমধ্যে দায়ূদ এবং তার লোকেরা নাবলের বিষয়সম্পত্তি সুরক্ষিত রাখার জন্য সাহায্য করেছিলেন।

কিন্তু নাবল, যার নামের অর্থ “মূর্খ” বা “বোকা,” ঠিক তার নাম অনুযায়ী কাজ করেছিলেন। তিনি রূঢ়ভাবে ও অপমানজনক উপায়ে উত্তর দিয়েছিলেন এবং দায়ূদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তাই, দায়ূদ নাবলের অশোভন আচরণ এবং অযৌক্তিক প্রতিক্রিয়ার কারণে তাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন। নাবল এবং তার পুরো পরিবারকে তার বোকামির জন্য শাস্তি পেতে হবে।—১ শমূ. ২৫:২-১৩, ২১, ২২.

এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে যে-ভয়াবহ পরিণতি ঘটতে পারে, সেই বিষয়টা বুঝতে পেরে অবীগল সাহসের সঙ্গে দায়ূদকে থামানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সম্মানপূর্বক দায়ূদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং দায়ূদকে যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্কের বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আর তিনি দায়ূদকে—যিনি পরবর্তী সময়ে রাজা হবেন—এবং তার লোকেদের প্রচুর পরিমাণে খাবার জুগিয়েছিলেন। অপর দিকে, দায়ূদ স্বীকার করেছিলেন যে, যিহোবাই অবীগলকে ব্যবহার করেছিলেন, যেন তিনি দায়ূদকে এমন কাজ করা থেকে নিবৃত্ত করেন বা বিরত করেন, যেটা দায়ূদকে ঈশ্বরের সামনে দোষী করে তুলতে পারত। দায়ূদ অবীগলকে বলেছিলেন: “ধন্য তোমার সুবিচার, এবং ধন্যা তুমি, কারণ অদ্য তুমি রক্তপাত ও স্বহস্তে প্রতিশোধ লইতে আমাকে নিবৃত্ত করিলে।”—১ শমূ. ২৫:১৮, ১৯, ২৩-৩৫.

আমরা সহজেই বুঝতে পারছি যে, আমরা কখনোই নাবলের মতো হতে চাইব না, আমাদের জন্য যে-ভালো কাজগুলো করা হয়, সেগুলোর প্রতি অকৃতজ্ঞ হতে চাইব না। এর পাশাপাশি, আমরা যখন বুঝতে পারি যে, কোনো ভুল বিষয় ঘটতে চলেছে, তখন আমরা সেই পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য যথাসাধ্য করব। হ্যাঁ, আমরা সেই গীতরচকের মতো একই অনুভূতি প্রকাশ করতে পারি, যিনি ঈশ্বরকে বলেছিলেন: “উত্তম বিচার ও জ্ঞান আমাকে শিখাও।”—গীত. ১১৯:৬৬.

অন্যেরা হয়তো আমাদের কাজের মধ্যে প্রজ্ঞা অথবা সুবিচার লক্ষ করতে পারে। তারা সেটা মুখে প্রকাশ করুক অথবা না-ই করুক, তারা হয়তো দায়ূদের মতো অনুভব করতে পারে, যিনি বলেছিলেন: “ধন্য তোমার সুবিচার।”