সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

একে অপরকে উৎসাহিত করুন, বিশেষভাবে এখন!

একে অপরকে উৎসাহিত করুন, বিশেষভাবে এখন!

“আইস, আমরা পরস্পর মনোযোগ করি, . . . পরস্পরকে চেতনা [“উৎসাহ,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন] দিই; আর তোমরা সেই দিন যত অধিক সন্নিকট হইতে দেখিতেছ, ততই যেন অধিক এ বিষয়ে তৎপর হই।”—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.

গান সংখ্যা: ৫৩, ২০

১. কেন প্রেরিত পৌল ইব্রীয় খ্রিস্টানদের একে অপরকে আরও বেশি করে উৎসাহিত করার জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন?

প্রথম শতাব্দীতে, প্রেরিত পৌল ইব্রীয় খ্রিস্টানদের এই পরামর্শ দিয়েছিলেন: “আইস, আমরা পরস্পর মনোযোগ করি, যেন প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া তুলিতে পারি; এবং আপনারা সমাজে সভাস্থ হওয়া পরিত্যাগ না করি—যেমন কাহারও কাহারও অভ্যাস—বরং পরস্পরকে উৎসাহ দিই; আর তোমরা সেই দিন যত অধিক সন্নিকট হইতে দেখিতেছ, ততই যেন অধিক এ বিষয়ে তৎপর হই।” (ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) সেই ভাইয়েরা হয়তো চিন্তা করেছিল যে, কেন পৌল তাদের একে অপরকে আরও বেশি করে উৎসাহিত করতে বলেছিলেন। পাঁচ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এর একটা কারণ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় তারা বুঝতে পেরেছিল যে, যিরূশালেমের উপর প্রভু যিহোবার বিচার দিন খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে। তারা বুঝেছিল, তাদের সেই নগর থেকে পালিয়ে যেতে হবে, ঠিক যেমনটা যিশু তাদের করতে বলেছিলেন। (লূক ২১:২০-২২; প্রেরিত ২:১৯, ২০) যিহোবার সেই দিন এসেছিল ৭০ খ্রিস্টাব্দে, যখন রোমীয়রা যিরূশালেমকে ধ্বংস করেছিল।

২. কেন বর্তমানে আমাদের একে অপরকে উৎসাহিত করার বিষয়ে আরও বেশি করে চিন্তা করা উচিত?

বর্তমানে, আমরাও একইরকম পরিস্থিতিতে রয়েছি। যিহোবার “মহৎ ও অতি ভয়ানক” দিন খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে। (যোয়েল ২:১১) ভাববাদী সফনিয়ের এই কথাগুলোও আমাদের সময়ের প্রতি প্রযোজ্য: “সদাপ্রভুর মহাদিন নিকটবর্ত্তী, তাহা নিকটবর্ত্তী, অতি শীঘ্র আসিতেছে।” (সফ. ১:১৪) এই কারণে আমাদের ‘পরস্পর মনোযোগ করা’ উচিত যেন আমরা “প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া তুলিতে পারি।” (ইব্রীয় ১০:২৪) আমাদের আরও বেশি করে ভাই-বোনদের প্রতি আগ্রহ দেখাতে হবে, যাতে আমরা তাদের প্রয়োজনে উৎসাহিত করতে পারি।

কাদের উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে?

৩. উৎসাহের বিষয়ে প্রেরিত পৌল কী বলেছিলেন? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

“মনুষ্যের মনোব্যথা মনকে নত করে; কিন্তু উত্তম বাক্য তাহা হর্ষযুক্ত করে।” (হিতো. ১২:২৫) আমাদের সবারই কোনো-না-কোনো সময় উৎসাহের প্রয়োজন হয়। পৌল এই বিষয়টা স্পষ্ট করেছিলেন যে, এমনকী যাদের অন্যদের উৎসাহিত করার দায়িত্ব রয়েছে, তাদের নিজেদেরও উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি তার রোমীয় ভাইদের লিখেছিলেন: “আমি তোমাদিগকে দেখিবার আকাঙ্ক্ষা করিতেছি, যেন তোমাদিগকে এমন কোন আত্মিক বর প্রদান করি, যাহাতে তোমরা স্থিরীকৃত হও; অর্থাৎ যাহাতে তোমাদের ও আমার, উভয় পক্ষের, আন্তরিক বিশ্বাস দ্বারা তোমাদিগেতে আমি আপনিও সঙ্গে সঙ্গে আশ্বাস পাই” বা উৎসাহ পাই। (রোমীয় ১:১১, ১২) তাই, এমনকী প্রেরিত পৌলেরও কোনো কোনো সময় উৎসাহের প্রয়োজন হয়েছিল।—পড়ুন, রোমীয় ১৫:৩০-৩২.

৪, ৫. বর্তমানে আমরা কাদের উৎসাহিত করতে পারি এবং কেন?

বর্তমানে আমরা যিহোবার পূর্ণসময়ের সেবকদের, যেমন বিশ্বস্ত অগ্রগামীদের উৎসাহিত করতে পারি। তাদের মধ্যে অনেকে অগ্রগামীর কাজ করার জন্য এমন বিষয়গুলো ত্যাগ করেছে, যেগুলো করে তারা আনন্দ লাভ করত। এটা মিশনারি, সীমা অধ্যক্ষ ও তাদের স্ত্রীদের এবং যারা শাখা অফিসে অথবা শাখা থেকে দূরবর্তী অনুবাদ অফিসে সেবা করে, তাদের ক্ষেত্রেও সত্য। তারা সবাই যিহোবার সেবায় আরও বেশি সময় ব্যয় করার জন্য ত্যাগস্বীকার করে থাকে। তাই, আমাদের তাদের উৎসাহিত করা উচিত। এ ছাড়া, এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে, যাদের এখনও পূর্ণসময়ের সেবা করে চলার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে কিন্তু তারা আর এমনটা করতে পারে না। তারা যখন উৎসাহ লাভ করে, তখন তারাও কৃতজ্ঞ হয়।

আর কারা উৎসাহ পাওয়ার যোগ্য? আমরা সেই অসংখ্য ভাই-বোনদের উৎসাহিত করতে পারি, যারা যিহোবার বাধ্য হওয়ার ও “কেবল প্রভুতেই” বিয়ে করার জন্য অবিবাহিত থাকা বেছে নিয়েছে। (১ করি. ৭:৩৯) স্ত্রীরা সেইসময় উৎসাহিত হয়, যখন তাদের স্বামীরা তাদের বলে যে, তারা তাদের ভালোবাসে এবং তারা তাদের সমস্ত কাজের জন্য কৃতজ্ঞ। (হিতো. ৩১:২৮, ৩১) যে-খ্রিস্টানরা তাড়না অথবা অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশ্বস্ত থাকে, তাদেরও উৎসাহের প্রয়োজন হয়। (২ থিষল. ১:৩-৫) যিহোবা ও যিশু এই সমস্ত বিশ্বস্ত ব্যক্তিকে সান্ত্বনা প্রদান করেন।—পড়ুন, ২ থিষলনীকীয় ২:১৬, ১৭.

প্রাচীনরা আমাদের উৎসাহিত করতে পারেন

৬. যিশাইয় ৩২:১, ২ পদ থেকে আমরা প্রাচীনদের ভূমিকা সম্বন্ধে কী শিখি?

যিশাইয় ৩২:১, ২ পদ পড়ুন। আমরা এক কঠিন সময়ে বাস করছি এবং খুব সহজেই দুঃখিত ও নিরুৎসাহিত হয়ে যেতে পারি। যিশু খ্রিস্ট আমাদের উৎসাহিত করার জন্য তাঁর অভিষিক্ত ভাইদের এবং আরও মেষের বিশ্বস্ত ‘শাসনকর্ত্তৃগণকে’ ব্যবহার করেন। মণ্ডলীর এই প্রাচীনরা আমাদের বিশ্বাসের উপর ‘প্রভুত্বকারী’ ব্যক্তি নন বরং আমাদের আনন্দের “সহকারী।” তারা আমাদের সুখী হওয়ার ও বিশ্বস্ত থাকার জন্য সাহায্য করতে চান।—২ করি. ১:২৪.

৭, ৮. কীভাবে প্রাচীনরা তাদের কথা ও কাজের মাধ্যমে অন্যদের উৎসাহিত করতে পারেন?

প্রাচীনরা প্রেরিত পৌলকে অনুকরণ করতে পারেন, যিনি সবসময় তার ভাইদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিলেন। থিষলনীকীতে যে-খ্রিস্টানরা তাড়িত হচ্ছিল, তাদের উদ্দেশে তিনি লিখেছিলেন: “আমরা তোমাদিগকে স্নেহ করাতে কেবল ঈশ্বরের সুসমাচার নয়, আপন আপন প্রাণও তোমাদিগকে দিতে সন্তুষ্ট ছিলাম, যেহেতুক তোমরা আমাদের প্রিয়পাত্র হইয়াছিলে।”—১ থিষল. ২:৮.

প্রাচীনরা তাদের কথার মাধ্যমে প্রচুর উৎসাহ প্রদান করতে পারেন। কিন্তু, এটা কি সবসময় যথেষ্ট? পৌল ইফিষের প্রাচীনদের বলেছিলেন: “দুর্ব্বলদিগের সাহায্য করিতে হইবে, এবং প্রভু যীশুর বাক্য স্মরণ করা উচিত, কেননা তিনি আপনি বলিয়াছেন, গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হইবার বিষয়।” (প্রেরিত ২০:৩৫) পৌল তার ভাইদের জন্য নিজেকে ‘ব্যয় করিতে, এবং ব্যয়িতও হইতে’ ইচ্ছুক ছিলেন। তিনি তার কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন, তিনি তাদের জন্য তার সর্বোত্তমটা দিতে ইচ্ছুক। (২ করি. ১২:১৫) একইভাবে, প্রাচীনদের কেবল তাদের কথার মাধ্যমে নয় কিন্তু তাদের কাজের মাধ্যমেও অন্যদের আশ্বাস বা উৎসাহ ও সান্ত্বনা প্রদান করা উচিত। এটা দেখায় যে, তারা সত্যিই আমাদের জন্য চিন্তা করেন।—১ করি. ১৪:৩.

৯. কীভাবে প্রাচীনরা এক উৎসাহজনক উপায়ে পরামর্শ দিতে পারেন?

ভাইদের শক্তিশালী করার জন্য কখনো কখনো প্রাচীনদের তাদের পরামর্শ দিতে হয়। প্রাচীনরা বাইবেল থেকে শিখতে পারেন যে, কীভাবে এটা এক উৎসাহজনক উপায়ে করা যায়। যিশু তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের পর যখন এশিয়া মাইনরের মণ্ডলীগুলোর কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলেন, তখন তিনি পরামর্শ দেওয়ার বিষয়ে এক চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন। তিনি ইফিষ, পর্গাম ও থুয়াতীরার মণ্ডলীগুলোকে দৃঢ় পরামর্শ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই পরামর্শ দেওয়ার আগে তিনি তাদের সমস্ত উত্তম কাজের জন্য প্রশংসা করেছিলেন। (প্রকা. ২:১-৫, ১২, ১৩, ১৮, ১৯) যিশু লায়দিকেয়ার মণ্ডলীকে বলেছিলেন: “আমি যত লোককে ভালবাসি, সেই সকলকে অনুযোগ করি ও শাসন করি; অতএব উদ্যোগী হও, ও মন ফিরাও।” (প্রকা. ৩:১৯) আমাদের প্রাচীনরা যেভাবে পরামর্শ দেন, তাতে খ্রিস্টকে অনুকরণ করার চেষ্টা করেন।

কেবল প্রাচীনদেরই যে অন্যদের উৎসাহিত করার প্রয়োজন, এমন নয়

বাবা-মায়েরা, আপনারা কি আপনাদের সন্তানদের অন্যদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষিত করছেন? (১০ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১০. কীভাবে আমরা সকলেই একে অপরকে শক্তিশালী করতে পারি?

১০ কেবল প্রাচীনদেরই যে অন্যদের উৎসাহিত করার প্রয়োজন, এমন নয়। পৌল সমস্ত খ্রিস্টানকে জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, তাদের মুখ থেকে “প্রয়োজনমতে গাঁথিয়া তুলিবার জন্য সদালাপ বাহির হউক, যেন” অন্যদের “অনুগ্রহ দান করা হয়।” (ইফি. ৪:২৯) আমাদের প্রত্যেকেরই অন্যদের প্রয়োজনের বিষয়ে অবগত থাকা উচিত, যাতে আমরা তাদের সাহায্য করতে পারি। পৌল ইব্রীয় খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লিখেছিলেন: “তোমরা শিথিল হস্ত ও অবশ হাঁটু সবল কর; এবং আপন আপন চরণের জন্য সরল পথ প্রস্তুত কর, যেন যাহা খঞ্জ তাহা স্থানচ্যুত না হয়, বরং সুস্থ হয়।” (ইব্রীয় ১২:১২, ১৩) আমরা সকলেই আমাদের কথার মাধ্যমে একে অপরকে শক্তিশালী ও উৎসাহিত করতে পারি, এমনকী আমাদের বয়স যদি অনেক অল্পও হয়ে থাকে।

১১. বোন মিলি যখন বিষণ্ণ ছিলেন, তখন কী তাকে সাহায্য করেছিল?

১১ মিলি নামে একজন বোন কিছু সময়ের জন্য বিষণ্ণ ছিলেন। * তিনি লেখেন: “একদিন, আমি উৎসাহ লাভ করার জন্য যিহোবার কাছে প্রার্থনা করার কিছুসময় পরই আমার একজন বয়স্ক বোনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, যিনি আমার প্রতি স্নেহ ও সমবেদনা দেখিয়েছিলেন। সেইসময় আমার সেগুলোরই বিশেষভাবে প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া, আমি যে-পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম, সেই একই পরীক্ষার বিষয়ে তিনি তার অভিজ্ঞতাও আমাকে জানিয়েছিলেন আর এতে আমার মনে হয়েছিল, আমি এক্ষেত্রে একা নই।” সেই বয়স্ক বোন হয়তো এমনকী বুঝতেও পারেননি যে, তার কথাগুলো বোন মিলিকে কতটা সাহায্য করেছিল!

১২, ১৩. কীভাবে আমরা ফিলিপীয় ২:১-৪ পদে পাওয়া পরামর্শ কাজে লাগাতে পারি?

১২ পৌল ফিলিপীর খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লিখেছিলেন: “অতএব খ্রীষ্টে যদি কোন আশ্বাস” বা উৎসাহ, “যদি প্রেমের কোন সান্ত্বনা, যদি আত্মার কোন সহভাগিতা, যদি কোন স্নেহ ও করুণা থাকে, তবে তোমরা আমার আনন্দ পূর্ণ কর—একই বিষয় ভাব, এক প্রেমের প্রেমী, একপ্রাণ, এক ভাববিশিষ্ট হও। প্রতিযোগিতার কিম্বা অনর্থক দর্পের বশে কিছুই করিও না, বরং নম্রভাবে প্রত্যেক জন আপনা হইতে অন্যকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান কর; এবং প্রত্যেক জন আপনার বিষয়ে নয়, কিন্তু পরের বিষয়েও লক্ষ্য রাখ।”—ফিলি. ২:১-৪.

১৩ আমাদের সকলেরই একে অপরকে সাহায্য করার উপায় খোঁজা উচিত। আমরা আমাদের ভাই-বোনদের উৎসাহিত করার জন্য ‘প্রেমের সান্ত্বনা’ ও ‘আত্মার সহভাগিতা [“আধ্যাত্মিক সাহচর্য,” NW]’ প্রদান করতে পারি এবং “স্নেহ ও করুণা” দেখাতে পারি।

উৎসাহিত করার কিছু উপায়

১৪. একটা কোন উপায়ে আমরা উৎসাহ প্রদান করতে পারি?

১৪ আমরা যখন শুনি যে, অতীতে আমরা যাদের সাহায্য করেছিলাম, তারা বিশ্বস্তভাবে যিহোবার সেবা করে যাচ্ছে, তখন আমরা আনন্দিত হই। প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “আমার সন্তানগণ সত্যে চলে, ইহা শুনিলে যে আনন্দ হয়, তদপেক্ষা মহত্তর আনন্দ আমার নাই।” (৩ যোহন ৪) অনেক অগ্রগামী যখন জানতে পারে, বহু বছর আগে তারা যাদের সত্য শিখতে সাহায্য করেছিল, তারা বিশ্বস্তভাবে যিহোবার সেবা করে যাচ্ছে আর হয়তো এমনকী অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছে, তখন তারা খুবই রোমাঞ্চিত হয়। তাই, অগ্রগামীরা যদি নিরুৎসাহিত বোধ করে, তা হলে আমরা তাদের সেইসমস্ত ভালো বিষয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারি, যেগুলো তারা অন্যদের সাহায্য করার জন্য করেছিল।

১৫. যারা বিশ্বস্তভাবে সেবা করছে, তাদের উৎসাহিত করার জন্য আমরা একটা কোন বিষয় করতে পারি?

১৫ অনেক সীমা অধ্যক্ষ বলেছেন যে, একটা মণ্ডলী পরিদর্শন করার পর তারা যখন ধন্যবাদের কোনো কার্ড বা চিঠি পান, তখন তারা ও তাদের স্ত্রীরা খুবই উৎসাহিত হন। এটা প্রাচীন, মিশনারি, অগ্রগামী ও বেথেলকর্মীদের ক্ষেত্রেও সত্য, যারা সকলেই বিশ্বস্তভাবে যিহোবার সেবা করে। তাদের ধন্যবাদ জানানোর মাধ্যমে আমরা হয়তো যতটা মনে করি, সেটার চেয়েও বেশি তাদের উৎসাহিত করতে পারি।

যেভাবে আমরা সবাই উৎসাহ দিতে পারি

১৬. কোন সাধারণ বিষয়গুলো কোনো ব্যক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে?

১৬ আপনি অন্যদের সম্বন্ধে যেমনটা অনুভব করেন, সেটা তাদের বলা যদি আপনার পক্ষে সহজ না হয়, তা হলে? আসলে, অন্যদের উৎসাহিত করা ততটাও কঠিন নয়। কাউকে দেখে মিষ্টিভাবে হাসুন। সেই ব্যক্তি যদি আপনাকে দেখে না হাসেন, তা হলে এমনটা হতে পারে, তিনি কোনো সমস্যার মধ্যে রয়েছেন এবং তার কারো সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন। আপনি হয়তো কেবল তার কথা শোনার মাধ্যমেই তাকে সান্ত্বনা প্রদান করতে পারেন।—যাকোব ১:১৯.

১৭. কী একজন অল্পবয়সি ভাইকে উৎসাহিত করেছিল?

১৭ রতন নামে একজন অল্পবয়সি ভাই সেইসময় একেবারে ভেঙে পড়েছিলেন, যখন তার কয়েক জন নিকট পরিজন যিহোবার সেবা করা বন্ধ করে দিয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন তার বাবা, যিনি একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করতেন। একজন সীমা অধ্যক্ষ লক্ষ করেছিলেন যে, রতন দুঃখের মধ্যে রয়েছেন আর তাই, তিনি তাকে কফি খাওয়ার জন্য বাইরে নিয়ে গিয়েছিলেন। রতন যখন তার মনের কথা খুলে বলেছিলেন, তখন তিনি ভালোভাবে তা শুনেছিলেন। রতন বুঝেছিলেন যে, তিনি যদি নিজে বিশ্বস্ত থাকেন, একমাত্র তা হলেই তিনি তার পরিবারকে সত্যে ফিরে আসার জন্য সাহায্য করতে পারবেন। এ ছাড়া, তিনি গীতসংহিতা ৪৬ গীত, সফনিয় ৩:১৭ পদ এবং মার্ক ১০:২৯, ৩০ পদ পড়ার মাধ্যমেও সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন।

আমরা সকলেই একে অপরকে শক্তিশালী করতে ও উৎসাহিত করতে পারি (১৮ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৮. (ক) রাজা শলোমন উৎসাহ সম্বন্ধে কী লিখেছিলেন? (খ) প্রেরিত পৌল কোন পরামর্শ দিয়েছিলেন?

১৮ বোন মিলি ও ভাই রতনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী শিখতে পারি? আমাদের মধ্যে যেকোনো ব্যক্তিই এমন কোনো ভাই অথবা বোনকে সান্ত্বনা ও উৎসাহ প্রদান করতে পারে, যার সেগুলোর প্রয়োজন রয়েছে। রাজা শলোমন লিখেছিলেন: “যথাকালে কথিত বাক্য কেমন উত্তম। চক্ষুর জ্যোতিঃ চিত্তকে আনন্দিত করে, মঙ্গল-সমাচার অস্থি সকল পুষ্ট করে।” (হিতো. ১৫:২৩, ৩০) আপনি কি এমন কারো সম্বন্ধে চিন্তা করতে পারেন, যিনি নিরুৎসাহিত হয়ে গিয়েছেন অথবা দুঃখের মধ্যে রয়েছেন? আপনি কি তাকে উৎসাহিত করার জন্য সাধারণ কিছু, যেমন প্রহরীদুর্গ  পত্রিকা অথবা আমাদের ওয়েবসাইট থেকে তাকে কোনো বিষয় পড়ে শোনানোর মতো কিছু করতে পারেন? এ ছাড়া, পৌল শিখিয়েছিলেন যে, একসঙ্গে রাজ্যের গান গাওয়া আমাদের মনমেজাজ ভালো করতে পারে। তিনি লিখেছিলেন: “তোমরা সমস্ত বিজ্ঞতায় গীত, স্ত্রোত্র ও আত্মিক সঙ্কীর্ত্তন দ্বারা পরস্পর শিক্ষা ও চেতনা [“উৎসাহ,” NW ] দান কর; অনুগ্রহে আপন আপন হৃদয়ে ঈশ্বরের উদ্দেশে গান কর।”—কল. ৩:১৬; প্রেরিত ১৬:২৫.

১৯. কেন উৎসাহ প্রদান করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে এবং আমাদের কী করা উচিত?

১৯ যিহোবার দিনের আরও নিকটবর্তী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জন্য একে অপরকে উৎসাহিত করা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। (ইব্রীয় ১০:২৫) আমরা যদি পৌলের এই পরামর্শ কাজে লাগাই, তা হলে আমরা সুখী হব: “যেমন তোমরা করিয়াও থাক, তেমনি তোমরা পরস্পরকে আশ্বাস” বা উৎসাহ “দেও, এবং এক জন অন্যকে গাঁথিয়া তুল।”—১ থিষল. ৫:১১.

^ অনু. 11 নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।