সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যেভাবে শয়তানের একটা ফাঁদ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা যায়

যেভাবে শয়তানের একটা ফাঁদ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা যায়

প্রাচীন ইস্রায়েলীয়রা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করার জন্য যর্দন নদী পার করার ঠিক আগে কিছু অতিথি তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সেই অতিথিরা ছিল বিদেশি নারী, যারা ইস্রায়েলীয় পুরুষদের এক ভোজে নিমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এটাকে হয়তো এক চমৎকার সুযোগ বলে মনে হতে পারে। নতুন নতুন বন্ধু তৈরি করা, নাচ করা এবং এক উত্তম ভোজে খাবার খাওয়াকে অনেক বেশি রোমাঞ্চকর বলে মনে হতে পারে। যদিও সেই নারীদের প্রথা এবং নৈতিক মান ইস্রায়েলীয়দের দেওয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার চেয়ে আলাদা ছিল, তা সত্ত্বেও কোনো কোনো ইস্রায়েলীয় পুরুষ হয়তো ভেবেছিল: ‘আমাদের কিছু হবে না। আমরা সতর্ক থাকব।’

এরপর কী হয়েছিল? অনুপ্রাণিত বিবরণ আমাদের জানায়: “লোকেরা মোয়াবের কন্যাদের সহিত ব্যভিচার করিতে প্রবৃত্ত হইল।” আসলে, সেই নারীরা চেয়েছিল যেন ইস্রায়েলীয় পুরুষরা মিথ্যা দেবতাদের উপাসনা করে। আর তারা ঠিক তা-ই করেছিল! স্বাভাবিকভাবেই, ‘ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইয়াছিল।’—গণনা. ২৫:১-৩.

সেই ইস্রায়েলীয়রা দু-রকমভাবে ঈশ্বরের ব্যবস্থা লঙ্ঘন করেছিল: তারা প্রতিমার উপাসনা করেছিল এবং যৌন অনৈতিকতায় লিপ্ত হয়েছিল। হাজার হাজার ইস্রায়েলীয় অবাধ্যতার কারণে মারা গিয়েছিল। (যাত্রা. ২০:৪, ৫, ১৪; দ্বিতীয়. ১৩:৬-৯) কোন বিষয়টা তাদের যন্ত্রণাকে বাড়িয়ে তুলেছিল? সময়। সেই হাজার হাজার পুরুষ যদি ঈশ্বরের ব্যবস্থা লঙ্ঘন না করত, তা হলে তারা শীঘ্রই যর্দন নদী পার করে প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করতে পারত।—গণনা. ২৫:৫, ৯.

সেই ঘটনাগুলো সম্বন্ধে প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “এই সকল তাহাদের প্রতি দৃষ্টান্তস্বরূপে ঘটিয়াছিল, এবং আমাদেরই চেতনার জন্য লিখিত হইল; আমাদের, যাহাদের উপরে যুগকলাপের অন্ত আসিয়া পড়িয়াছে।” (১ করি. ১০:৭-১১) এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই যে, ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে কেউ কেউ যখন গুরুতর পাপ করেছিল এবং প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করার সুযোগ হারিয়েছিল, তখন শয়তান খুবই খুশি হয়েছিল। তাদের ভুল থেকে আমাদের শিক্ষা লাভ করতে হবে কারণ আমরা জানি, শয়তান যদি আমাদের ঈশ্বরের নতুন জগতে প্রবেশ করা থেকে বিরত করতে পারে, তা হলে সে খুবই খুশি হবে!

এক বিপদজনক ফাঁদ

বর্তমানে, শয়তান দিয়াবল খ্রিস্টানদের শিকার করতে চায় এবং তা করার জন্য সে বিভিন্ন চাতুরী ব্যবহার করে, যেগুলো ব্যবহার করে সে অতীতে অনেক লোককে বোকা বানিয়েছে। আগে যেমনটা উল্লেখ করা হয়েছে, শয়তান ইস্রায়েলীয়দের বোকা বানানোর জন্য যৌন অনৈতিকতাকে ব্যবহার করেছিল। আমাদের সময়েও অনৈতিকতা হল এক বিপদজনক ফাঁদ। একটা যে-জোরালো উপায়ে আমরা এটার ফাঁদে পড়তে পারি, সেটা হল পর্নোগ্রাফি।

বর্তমানে, একজন ব্যক্তি এমনভাবে পর্নোগ্রাফি দেখতে পারেন যে, অন্যেরা তা জানতে পারে না। কয়েক দশক আগে, একজন ব্যক্তিকে পর্নোগ্রাফি দেখার জন্য কোনো থিয়েটারে গিয়ে পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত সিনেমা অথবা ভিডিও দেখতে হতো কিংবা পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত বিষয়বস্তু কেনার জন্য এমন কোনো বইয়ের দোকানে যেতে হতো, যেখানে তা পাওয়া যায়। অন্যদের চোখে পড়তে পারে, এই লজ্জার কারণে অনেকে হয়তো সেই সমস্ত জায়গায় যেত না। কিন্তু, বর্তমানে একজন ব্যক্তি যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন, তা হলে তিনি কাজের জায়গায় অথবা গাড়িতে বসে পর্নোগ্রাফি দেখতে পারেন। আর অনেক দেশে একজন পুরুষ অথবা মহিলা নিজেদের বাড়িতেই পর্নোগ্রাফি দেখতে পারেন।

শুধু তা-ই নয়। মোবাইল ডিভাইসের ফলে পর্নোগ্রাফি দেখা আরও বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে। লোকেরা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ে অথবা বাস কিংবা ট্রেনে করে যাওয়ার সময়ে তাদের মোবাইল ডিভাইসের স্ক্রিনে অনৈতিক ছবি দেখতে পারে।

যেহেতু একজন ব্যক্তি সহজে ও গোপনে পর্নোগ্রাফি দেখতে পারেন, তাই এটা অতীতের তুলনায় বর্তমানে আরও বেশি করে লোকেদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। পর্নোগ্রাফি দেখে এমন অগণিত ব্যক্তি নিজেদের বিয়ে, আত্মসম্মান এবং বিবেককে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এর চেয়েও খারাপ বিষয় হল তারা ঈশ্বরের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ককে গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, পর্নোগ্রাফি দর্শকদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। অনেক সময়ে এটা এক গভীর আবেগগত ক্ষতের সৃষ্টি করে। এই ক্ষত ধীরে ধীরে সেরে গেলেও এক দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলে।

যিহোবা যদিও শয়তানের এই ফাঁদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করেন, তারপরও আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। আমরা যদি যিহোবার সুরক্ষা লাভ করতে চাই, তা হলে আমাদের অবশ্যই এমন কিছু করতে হবে, যা প্রাচীন ইস্রায়েলীয়রা করতে ব্যর্থ হয়েছিল—তাঁর বাক্যে ‘অবধান করিতে’ হবে। (যাত্রা. ১৯:৫) আমাদের এটা উপলব্ধি করতে হবে যে, ঈশ্বর পর্নোগ্রাফিকে ঘৃণা করেন। কেন আমরা তা বলতে পারি?

এটাকে ঘৃণা করুন—ঠিক যেমনটা যিহোবা করেন

ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে যে-সমস্ত আইন দিয়েছিলেন, সেগুলো যেভাবে সেই সময়কার অন্যান্য জাতির আইনগুলোর চেয়ে আলাদা ছিল, সেই বিষয়ে চিন্তা করুন। একটা প্রাচীরের মতো সেই আইনগুলো ইস্রায়েলীয়দের তাদের চারপাশের লোকেদের এবং তাদের মন্দ অভ্যাসগুলো থেকে পৃথক রেখেছিল। (দ্বিতীয়. ৪:৬-৮) সেই আইনগুলো একটা গুরুত্বপূর্ণ সত্যকে স্পষ্ট করে দিয়েছিল: যিহোবা যৌন অনৈতিকতাকে ঘৃণা করেন।

যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের চারপাশে থাকা জাতির লোকেদের অনৈতিক কাজের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “যে কনান দেশে আমি তোমাদিগকে লইয়া যাইতেছি, তথাকারও আচারানুযায়ী আচরণ করিও না,” ‘দেশ অশুচি হইয়াছে; অতএব আমি উহার অপরাধ উহাকে ভোগ করাইব।’ ইস্রায়েলের পবিত্র ঈশ্বরের দৃষ্টিতে কনানীয়দের জীবনযাত্রার মান এতটাই জঘন্য ও অনৈতিক হয়ে গিয়েছিল যে, তিনি তাদের দেশকে অশুচি ও কলুষিত হিসেবে দেখেছিলেন।—লেবীয়. ১৮:৩, ২৪, ২৫.

যিহোবা যদিও কনানীয়দের শাস্তি দিয়েছিলেন, তবে অন্যান্য লোকেরা যৌন অনৈতিকতায় লিপ্ত হওয়া ছেড়ে দেয়নি। প্রায় ১,৫০০ বছর পর, খ্রিস্টানরা যেখানে বাস করত, সেই দেশের লোকেদের বিষয়ে পৌল ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, ‘তাহারা অসাড় হইয়াছে।’ সত্যি বলতে কী, তারা “সলোভে সর্ব্বপ্রকার অশুচি ক্রিয়া করিবার জন্য আপনাদিগকে স্বৈরিতায় সমর্পণ করিয়াছে।” (ইফি. ৪:১৭-১৯) বর্তমানে, অনেকে অনৈতিক কাজ করে আর তারা এরজন্য লজ্জা বোধ করে না। কিন্তু, সত্য খ্রিস্টানদের এই জগতের অনৈতিক ক্রিয়াকলাপ দেখা এড়িয়ে চলার জন্য অবশ্যই যথাসাধ্য করতে হবে।

পর্নোগ্রাফি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গভীর অসম্মান প্রকাশ করে। কীভাবে? তিনি মানুষকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে ও সাদৃশ্যে সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি আমাদের ভালো-মন্দ অনুভব করার ক্ষমতা দিয়েছেন। ঈশ্বর বিজ্ঞতার সঙ্গে যৌনতা সম্বন্ধে যুক্তিযুক্ত সীমা নির্ধারণ করেছেন। তিনি চেয়েছিলেন যেন বিবাহিত দম্পতিরা একত্রে যৌন সম্পর্ককে উপভোগ করে। (আদি. ১:২৬-২৮; হিতো. ৫:১৮, ১৯) কিন্তু, সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা পর্নোগ্রাফি তৈরি করে অথবা সেটাকে তুলে ধরে? তারা ঈশ্বরের নৈতিক মানকে একেবারে উপেক্ষা করে। হ্যাঁ, যারা পর্নোগ্রাফিকে তুলে ধরে, তারা যিহোবাকে গভীরভাবে অসম্মানিত করে। ঈশ্বর সেই সমস্ত ব্যক্তির বিচার করবেন, যারা তাঁর মানকে উপেক্ষা করে অনৈতিক বিষয়বস্তু তৈরি করে অথবা সেগুলোকে তুলে ধরে।—রোমীয় ১:২৪-২৭.

তবে, সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কী বলা যায়, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে পর্নোগ্রাফি পড়ে অথবা দেখে? কেউ কেউ হয়তো এটাকে এক অক্ষতিকর আমোদপ্রমোদ হিসেবে মনে করে। কিন্তু, তারা আসলে সেই ব্যক্তিদের সমর্থন করে, যারা যিহোবার মানের প্রতি অসম্মান প্রকাশ করে। তারা যখন পর্নোগ্রাফি দেখতে শুরু করে, তখন তাদের উদ্দেশ্য হয়তো এমনটা থাকে না। কিন্তু, বাইবেল স্পষ্টভাবে দেখায় যে, সত্য ঈশ্বরের উপাসকদের পর্নোগ্রাফিকে গভীরভাবে ঘৃণা করা উচিত। বাইবেল জোরালো পরামর্শ দেয়: “হে সদাপ্রভু-প্রেমিকগণ, দুষ্টতাকে ঘৃণা কর।”—গীত. ৯৭:১০.

যারা এমনকী পর্নোগ্রাফি দেখা এড়িয়ে চলতে চায়, তারা এমনটা করাকে কঠিন বলে মনে করতে পারে। আমরা অসিদ্ধ আর আমাদের অবশ্যই অশুচি যৌন আকাঙ্ক্ষার প্রতিরোধ করার জন্য লড়াই করতে হবে। এ ছাড়া, অসিদ্ধ হওয়ায় আমরা হয়তো নিজেদের বলতে পারি, পর্নোগ্রাফি দেখা ভুল কিছু নয়। (যির. ১৭:৯) কিন্তু, অনেকে এই লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে এবং যিহোবার সেবা করছে। আপনিও যদি এই বিষয়ে লড়াই করছেন, তা হলে এটা জানা আপনার জন্য উৎসাহজনক হতে পারে। লক্ষ করুন, কীভাবে ঈশ্বরের বাক্য আপনাকে শয়তানের এই ফাঁদ—পর্নোগ্রাফি—এড়িয়ে চলার জন্য সাহায্য করতে পারে।

অনৈতিক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চিন্তা করবেন না

আগে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক ইস্রায়েলীয় মন্দ আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধি পেতে দিয়েছিল আর এটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে চালিত করেছিল। বর্তমানেও এমনটা ঘটতে পারে। যিশুর সৎভাই যাকোব বিপদ সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করেছিলেন: “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কামনা দ্বারা আকর্ষিত ও প্ররোচিত . . . হয়। পরে কামনা সগর্ভা হইয়া পাপ প্রসব করে।” (যাকোব ১:১৪, ১৫) কোনো ব্যক্তির হৃদয়ে একবার কোনো অনৈতিক আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে খুব সম্ভবত এক পর্যায়ে গিয়ে তিনি পাপ করবেন। তাই, আমাদের অবশ্যই অনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করতে হবে।

অনৈতিক চিন্তাভাবনা যদি আপনাকে প্ররোচিত করে, তা হলে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। যিশু বলেছিলেন: “তোমার হস্ত কিম্বা চরণ যদি তোমার বিঘ্ন জন্মায়, তবে তাহা কাটিয়া ফেলিয়া দেও; . . . আর তোমার চক্ষু যদি তোমার বিঘ্ন জন্মায়, তবে তাহা উপড়াইয়া ফেলিয়া দেও।” (মথি ১৮:৮, ৯) যিশু আক্ষরিকভাবে নিজের অঙ্গচ্ছেদ করতে বলছিলেন না। তিনি বিঘ্নের উৎসকে দ্রুত সরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে দৃষ্টান্ত দিয়েছিলেন। কীভাবে আমরা পর্নোগ্রাফির ক্ষেত্রে এই পরামর্শকে কাজে লাগাতে পারি?

আপনি যদি পর্নোগ্রাফির মুখোমুখি হন, তা হলে কখনোই মনে করবেন না যে, ‘আমার কিছু হবে না।’ সঙ্গেসঙ্গে চোখ সরিয়ে নিন। তৎক্ষণাৎ, টেলিভিশন বন্ধ করে দিন। আর দেরি না করে কম্পিউটার অথবা মোবাইল বন্ধ করে দিন। কোনো শুচি বিষয়ের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করুন। এমনটা করা আপনাকে আপনার চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে, না হলে মন্দ আকাঙ্ক্ষা আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করবে।

অনৈতিক আমোদপ্রমোদের স্মৃতিগুলোর বিষয়ে কী বলা যায়?

কিন্তু কী হবে, আপনি যদি পর্নোগ্রাফি দেখা বন্ধ করায় সফল হওয়ার পরও অতীতের স্মৃতিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার মনে পড়তে থাকে? পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত ছবি অথবা চিন্তাভাবনাগুলো দীর্ঘদিন পর্যন্ত একজন ব্যক্তির মনে গেঁথে থাকতে পারে। আর সেগুলো যেকোনো সময়ে মনের মধ্যে ভেসে উঠতে পারে। যদি এমনটা হয়, তা হলে আপনি হয়তো অশুচি কিছু করার, যেমন হস্তমৈথুন করার জন্য তীব্র চাপ অনুভব করতে পারেন। তাই, এই ধরনের চিন্তাভাবনা যে উঠে আসতে পারে, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকুন এবং সেগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত থাকুন।

ঈশ্বর আপনার কাছ থেকে যেমনটা চান, সেই মতো চিন্তা করার এবং কাজ করার বিষয়ে আপনার সংকল্পকে আরও দৃঢ় করুন। প্রেরিত পৌলের মতো হোন, যিনি ‘নিজ দেহকে প্রহার করিয়া দাসত্বে রাখিতে’ ইচ্ছুক ছিলেন। (১ করি. ৯:২৭) অশুচি আকাঙ্ক্ষার কাছে কখনো নতিস্বীকার করবেন না। “মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।” (রোমীয় ১২:২) মনে রাখবেন: আপনি যদি অনৈতিক কাজ করেন, তা হলে আপনি সুখী হবেন না কিন্তু আপনি যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী চিন্তা করেন এবং কাজ করেন, তা হলে আপনি সুখী হবেন।

আপনি যদি অনৈতিক কাজ করেন, তা হলে আপনি সুখী হবেন না কিন্তু আপনি যদি ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী চিন্তা করেন এবং কাজ করেন, তা হলে আপনি সুখী হবেন

নির্দিষ্ট কিছু বাইবেলের শাস্ত্রপদ মুখস্থ করার চেষ্টা করুন। তারপর, মন্দ চিন্তাভাবনা যখন আপনার মনে আসে, তখন সেই শাস্ত্রপদগুলো নিয়ে চিন্তা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করুন। বিভিন্ন শাস্ত্রপদ, যেমন গীতসংহিতা ১১৯:৩৭; যিশাইয় ৫২:১১; মথি ৫:২৮; ইফিষীয় ৫:৩; কলসীয় ৩:৫ এবং ১ থিষলনীকীয় ৪:৪-৮ পদ পর্নোগ্রাফি সম্বন্ধে যিহোবার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে এবং তিনি আপনার কাছ থেকে যা আশা করেন, সেটার সঙ্গে আপনার চিন্তাভাবনাকে মিল রাখতে সাহায্য করবে।

আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি অনৈতিক বিষয়গুলো দেখা অথবা সেগুলো নিয়ে চিন্তা করাকে প্রতিরোধ করতে পারছেন না, তা হলে আপনার কী করা উচিত? আমাদের আদর্শ যিশুর পদচিহ্ন আরও ভালোভাবে অনুগমন বা অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। (১ পিতর ২:২১) যিশু বাপ্তাইজিত হওয়ার পর শয়তান ক্রমাগত তাকে প্রলুব্ধ করেছিল। যিশু কী করেছিলেন? তিনি ক্রমাগত প্রতিরোধ করেছিলেন। তিনি একের-পর-এক শাস্ত্রপদ ব্যবহার করে শয়তানের তুলে ধরা প্রলোভনগুলোর প্রতিরোধ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “দূর হও, শয়তান” আর শয়তান তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। ঠিক যেমন যিশু দিয়াবলের বিরুদ্ধে তাঁর যুদ্ধে হাল ছেড়ে দেননি, তেমনই আপনি যেন হাল ছেড়ে না দেন। (মথি ৪:১-১১) শয়তান ও তার জগৎ ক্রমাগত অনৈতিক চিন্তাভাবনার দ্বারা আপনার মন পূর্ণ করার চেষ্টা করবে কিন্তু লড়াই করার ক্ষেত্রে আপনি যেন হাল ছেড়ে না দেন। পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে আপনি জয়ী হতে পারেন। যিহোবার সাহায্যে আপনি আপনার শত্রুকে পরাজিত করতে পারেন।

যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন এবং তাঁর বাধ্য হোন

ক্রমাগত যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন এবং তাঁর কাছে সাহায্য চান। পৌল বলেছিলেন: “তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর। তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি, তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।” (ফিলি. ৪:৬, ৭) ঈশ্বর আপনাকে মনের শান্তি প্রদান করবেন, যেটা আপনাকে যা মন্দ, তা প্রতিরোধ করার জন্য সাহায্য করবে। আপনি যদি যিহোবার নিকটবর্তী হন, তা হলে “তিনিও [আপনার] নিকটবর্ত্তী হইবেন।”—যাকোব ৪:৮.

আমরা শয়তানের যেকোনো ফাঁদের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকব, যদি আমরা নিখিলবিশ্বের শাসকের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে দৃঢ় রাখি। যিশু বলেছিলেন: “জগতের অধিপতি [শয়তান] আসিতেছে, আর আমাতে তাহার কিছুই নাই।” (যোহন ১৪:৩০) কেন যিশুর এইরকম আস্থা ছিল? তিনি একবার ব্যাখ্যা করেছিলেন: “যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তিনি আমার সঙ্গে আছেন; তিনি আমাকে একা ছাড়িয়া দেন নাই, কেননা আমি সর্ব্বদা তাঁহার সন্তোষজনক কার্য্য করি।” (যোহন ৮:২৯) আপনি যখন যিহোবাকে খুশি করে এমন কাজগুলো করেন, তখন তিনি আপনাকেও কখনো পরিত্যাগ করবেন না। পর্নোগ্রাফির ফাঁদ এড়িয়ে চলুন, তা করলে শয়তান আপনার উপর কর্তৃত্ব করতে পারবে না।