সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৫

আমরা তোমাদের সঙ্গে যাব

আমরা তোমাদের সঙ্গে যাব

“আমরা তোমাদের সহিত যাইব, কেননা আমরা শুনিলাম, ঈশ্বর তোমাদের সহবর্ত্তী।”—সখ. ৮:২৩.

গান সংখ্যা ৫৩ একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা

সারাংশ *

আরও মেষকে (“দশ দশ পুরুষ”) অভিষিক্ত ব্যক্তিদের (‘এক এক যিহূদী পুরুষ’) সঙ্গে যিহোবার সেবা করার বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে (১-২ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১. আমাদের সময় কী ঘটবে বলে যিহোবা উল্লেখ করেছিলেন?

যিহোবা আমাদের সময় সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন: “জাতিগণের সর্ব্ব ভাষাবাদী দশ দশ পুরুষ এক এক যিহূদী পুরুষের বস্ত্রের অঞ্চল ধরিয়া এই কথা কহিবে, আমরা তোমাদের সহিত যাইব, কেননা আমরা শুনিলাম, ঈশ্বর তোমাদের সহবর্ত্তী।” (সখ. ৮:২৩) এখানে উল্লেখিত ‘যিহূদী পুরুষ’ সেই ব্যক্তিদের চিত্রিত করে, যাদের পবিত্র আত্মা দ্বারা ঈশ্বর অভিষিক্ত করেছেন। এ ছাড়া, তাদের ‘ঈশ্বরের “ইস্রায়েলও”’ বলা হয়। (গালা. ৬:১৬) “দশ দশ পুরুষ” সেই ব্যক্তিদের চিত্রিত করে, যাদের এই পৃথিবীতে চিরকাল বাস করার আশা রয়েছে। তারা জানে যে, যিহোবা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের এই দলকে আশীর্বাদ করেছেন আর তারা এই ব্যক্তিদের সঙ্গে তাঁর উপাসনা করাকে এক সম্মানের বিষয় বলে মনে করে।

২. কীভাবে “দশ দশ পুরুষ” অভিষিক্ত ব্যক্তিদের ‘সহিত যায়’?

যদিও বর্তমানে পৃথিবীতে বসবাসরত প্রত্যেক অভিষিক্ত ব্যক্তির নাম জানা সম্ভব নয়, * তারপরও যারা পৃথিবীতে বাস করার আশা রাখে, তারা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের ‘সহিত যাইতে’ পারে। কীভাবে? বাইবেল বলে, “দশ দশ পুরুষ এক এক যিহূদী পুরুষের বস্ত্রের অঞ্চল ধরিয়া এই কথা কহিবে, আমরা তোমাদের সহিত যাইব, কেননা আমরা শুনিলাম, ঈশ্বর তোমাদের সহবর্ত্তী।” বাইবেলের এই পদে এক এক যিহুদি বলা হয়েছে। তবে “তোমাদের” শব্দটা উল্লেখ করার মাধ্যমে এখানে একজন ব্যক্তির চেয়ে বেশি লোককে নির্দেশ করা হয়েছে। এর অর্থ হল যিহুদি শব্দটা কেবল একজন ব্যক্তিকে নয় বরং অভিষিক্ত ব্যক্তিদের পুরো দলকে চিত্রিত করে। যারা অভিষিক্ত নয়, তারা এই অভিষিক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যিহোবার সেবা করে। কিন্তু, তারা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের তাদের নেতা হিসেবে দেখে না কারণ তারা বোঝে যে, তাদের আচার্য বা নেতা হলেন যিশু।—মথি ২৩:১০.

৩. এই প্রবন্ধে কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া হবে?

যেহেতু বর্তমানে ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে এখনও অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা রয়েছে, তাই কেউ কেউ ভাবতে পারে: (১) অভিষিক্ত ব্যক্তিদের নিজেদের সম্বন্ধে কেমন দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত? (২) যারা স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সঙ্গে আমাদের কেমন আচরণ করা উচিত? (৩) যারা প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সংখ্যা যদি বেড়ে যায়, তা হলে আমাদের কি চিন্তিত হওয়া উচিত? এই প্রবন্ধে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া হবে।

অভিষিক্ত ব্যক্তিদের নিজেদের সম্বন্ধে কেমন দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত?

৪. প্রথম করিন্থীয় ১১:২৭-২৯ পদে পাওয়া কোন সতর্কবাণী নিয়ে অভিষিক্ত ব্যক্তিদের গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করা উচিত এবং কেন?

অভিষিক্ত ব্যক্তিদের ১ করিন্থীয় ১১:২৭-২৯ পদে পাওয়া সতর্কবাণী নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করা উচিত। (পড়ুন।) কীভাবে একজন অভিষিক্ত ব্যক্তি হয়তো স্মরণার্থ সভায় “অযোগ্যরূপে” প্রতীকগুলো গ্রহণ করেন? তিনি এমনটা করবেন, যদি তিনি প্রতীকগুলো গ্রহণ করেন অথচ যিহোবার ধার্মিক মান অনুযায়ী জীবনযাপন না করেন। (ইব্রীয় ৬:৪-৬; ১০:২৬-২৯) অভিষিক্ত ব্যক্তিরা এটা বোঝে যে, তারা যদি “খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের কৃত ঊর্দ্ধ্বদিক্‌স্থ আহ্বানের পণ” বা পুরস্কার লাভ করতে চায়, তা হলে তাদের অবশ্যই বিশ্বস্ত থাকতে হবে।—ফিলি. ৩:১৩-১৬.

৫. অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের নিজেদের সম্বন্ধে কেমন অনুভব করা উচিত?

যিহোবার পবিত্র আত্মা তাঁর দাসদের অহংকারী নয় বরং নম্র হতে সাহায্য করে। (ইফি. ৪:১-৩; কল. ৩:১০, ১২) তাই, অভিষিক্ত ব্যক্তিরা এমনটা মনে করে না যে, তারা অন্যদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তারা জানে, বিষয়টা এমন নয় যে, যিহোবা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের তাঁর অন্যান্য দাসদের চেয়ে বেশি পবিত্র আত্মা দেন। তারা মনে করে না যে, তারা বাইবেলের সত্যগুলো অন্যদের চেয়ে আরও ভালোভাবে বোঝে। আর তারা কখনো অন্য কোনো ব্যক্তিকে বলবে না যে, সেই ব্যক্তিও অভিষিক্ত হয়েছেন আর তাই তারও স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করতে শুরু করা উচিত। এর পরিবর্তে, তারা নম্রতার সঙ্গে স্বীকার করে, একমাত্র যিহোবাই লোকেদের স্বর্গে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান।

৬. প্রথম করিন্থীয় ৪:৭, ৮ পদ অনুযায়ী অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের কেমন আচরণ করা উচিত?

যদিও অভিষিক্ত ব্যক্তিরা স্বর্গে যাওয়ার আমন্ত্রণ লাভ করাকে এক সম্মানের বিষয় বলে মনে করে, কিন্তু তারা আশা করে না যে, অন্যেরা তাদের সঙ্গে বিশেষ উপায়ে আচরণ করবে। (ফিলি. ২:২, ৩) এ ছাড়া, তারা জানে যে, যখন যিহোবা তাদের অভিষিক্ত করেছিলেন, তখন তিনি সেই বিষয়ে অন্য সবাইকে জানাননি। তাই, একজন অভিষিক্ত ব্যক্তি সেইসময় অবাক হন না, যখন কেউ কেউ সঙ্গেসঙ্গে বিশ্বাস করে না যে, তিনি অভিষিক্ত। তিনি এটা বুঝতে পারেন, বাইবেল আমাদের বলে, আমরা যেন দ্রুত সেই ব্যক্তির কথায় বিশ্বাস করে না ফেলি, যিনি বলেন, ঈশ্বর তাকে এক বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছেন। (প্রকা. ২:২) যেহেতু একজন অভিষিক্ত খ্রিস্টান নিজের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করাতে চান না, তাই প্রথম বার কারো সঙ্গে দেখা হলে তিনি তাকে বলেন না যে, তিনি অভিষিক্ত। আর নিশ্চিতভাবেই তিনি এই বিষয়ে অন্যদের সামনে বড়াই করেন না।—পড়ুন, ১ করিন্থীয় ৪:৭, ৮.

৭. অভিষিক্ত ব্যক্তিরা কী করা এড়িয়ে চলবে এবং কেন?

অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা মনে করে না যে, তাদের কেবল অন্যান্য অভিষিক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গেই সময় কাটানো উচিত, যেন তারা কোনো বিশেষ ক্লাবের সদস্য। তারা এই উদ্দেশ্য নিয়ে অন্যান্য অভিষিক্ত ব্যক্তির খোঁজ করে না যে, তারা নিজেদের অভিষিক্তকরণ সম্বন্ধে তাদের সঙ্গে আলোচনা করবে অথবা বাইবেল অধ্যয়নের জন্য ব্যক্তিগত দল তৈরি করবে। (গালা. ১:১৫-১৭) অভিষিক্ত ব্যক্তিরা যদি এইসমস্ত বিষয় করে, তা হলে মণ্ডলী একতাবদ্ধ থাকবে না। তারা সেই পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কাজ করে ফেলবে, যেটা ঈশ্বরের লোকেদের শান্তি ও একতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।—রোমীয় ১৬:১৭, ১৮.

অভিষিক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত?

অভিষিক্ত ব্যক্তিদের কিংবা যারা নেতৃত্ব নেয়, তাদের কারো সঙ্গে আমাদের এমন আচরণ করা উচিত নয়, যেন তারা কোনো নামকরা ব্যক্তি (৮ অনুচ্ছেদ দেখুন) *

৮. যারা স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সঙ্গে আপনি যেভাবে আচরণ করেন, সেই বিষয়ে কেন আপনার সতর্ক হতে হবে? (এ ছাড়া, পাদটীকা দেখুন।)

অভিষিক্ত ভাই-বোনদের সঙ্গে আমাদের কেমন আচরণ করা উচিত? কোনো ব্যক্তির অতিরিক্ত প্রশংসা করা ভুল হবে, এমনকী তিনি যদি খ্রিস্টের একজন অভিষিক্ত ভাইও হয়ে থাকেন। (মথি ২৩:৮-১২) বাইবেল যখন প্রাচীনদের বিষয়ে বলে, তখন এটি আমাদের উৎসাহ দেয় যেন আমরা তাদের বিশ্বাসের অনুকারী হই, কিন্তু এটি বলে না যে, আমরা কোনো মানুষকে আমাদের নেতা বানাতে পারি। (২ করি. ১:২৪) এটা সত্য যে, বাইবেল বলে, কেউ কেউ “দ্বিগুণ সমাদরের যোগ্য।” তবে এটার কারণ এই নয় যে, তারা অভিষিক্ত, বরং এটার কারণ হল তারা “উত্তমরূপে শাসন করেন” এবং “বাক্যে ও শিক্ষাদানে পরিশ্রম করেন।” (১ তীম. ৫:১৭) আমরা যদি অভিষিক্ত ব্যক্তিদের অতিরিক্ত প্রশংসা করি এবং তাদের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিই, তা হলে আমরা তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারি। * অথবা এর চেয়েও খারাপ বিষয় হল, আমরা তাদের অহংকারী হয়ে ওঠার জন্য প্ররোচিত করতে পারি। (রোমীয় ১২:৩) আমাদের মধ্যে কেউই এমন কিছু করতে চাইব না, যার ফলে খ্রিস্টের একজন অভিষিক্ত ভাই হয়তো এই ধরনের গুরুতর ভুল করে ফেলতে পারেন!—লূক ১৭:২.

৯. কীভাবে আমরা দেখাতে পারি, আমরা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের সম্মান করি?

কীভাবে আমরা দেখাতে পারি, যিহোবার অভিষিক্ত ব্যক্তিদের আমরা সম্মান করি? আমরা তাদের জিজ্ঞেস করব না, তারা কীভাবে অভিষিক্ত হয়েছেন। এটা একটা ব্যক্তিগত বিষয়, যা জানার অধিকার আমাদের নেই। (১ থিষল. ৪:১১; ২ থিষল. ৩:১১) এ ছাড়া, আমাদের এমনটা ধরে নেওয়া উচিত নয় যে, তাদের স্বামী অথবা স্ত্রী, তাদের বাবা অথবা মা কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যও অভিষিক্ত। একজন ব্যক্তি তার পরিবারের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে তার স্বর্গীয় আশা লাভ করেন না। তিনি সেটা ঈশ্বরের কাছ থেকে লাভ করেন। (১ থিষল. ২:১২) এ ছাড়া, আমাদের এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা এড়িয়ে চলতে হবে, যেগুলো অন্যদের আঘাত দিতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা একজন অভিষিক্ত ভাইয়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করব না, তার স্বামীকে ছাড়া এই পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার প্রত্যাশার বিষয়ে তিনি কেমন অনুভব করেন। কারণ আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত থাকতে পারি, নতুন জগতে যিহোবা “সমুদয় প্রাণীর বাঞ্ছা পূর্ণ” করবেন।—গীত. ১৪৫:১৬.

১০. আমরা যদি ‘মনুষ্যদের তোষামোদ করা’ এড়িয়ে চলি, তা হলে কীভাবে আমরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখি?

১০ আমরা যদি অভিষিক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে এমন আচরণ না করি যেন তারা অন্যদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলে আমরা নিজেদেরও সুরক্ষিত রাখি। কীভাবে? বাইবেল আমাদের জানায়, অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ বিশ্বস্ত না-ও থাকতে পারে। (মথি ২৫:১০-১২; ২ পিতর ২:২০, ২১) কিন্তু আমরা যদি ‘মনুষ্যদের তোষামোদ করা’ এড়িয়ে চলি, তা হলে আমরা কখনো অন্যদের অনুসরণ করব না, এমনকী অভিষিক্ত ব্যক্তিদের অথবা সুপরিচিত ব্যক্তিদের কিংবা দীর্ঘসময় ধরে যিহোবার সেবা করছে এমন ব্যক্তিদেরও না। (যিহূদা ১৬) এতে সেই ব্যক্তিরা যদি অবিশ্বস্ত হয়ে পড়ে অথবা মণ্ডলী ত্যাগ করে, তা হলে আমরা যিহোবার প্রতি আমাদের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলব না কিংবা তাঁর সেবা করা বন্ধ করে দেব না।

যারা প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সংখ্যা নিয়ে কি আমাদের চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে?

১১. যারা স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সংখ্যার ক্ষেত্রে কী দেখা যাচ্ছে?

১১ অনেক বছর ধরে, যারা স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি, সেই সংখ্যা প্রতি বছর বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের কি এই ব্যাপারে চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে? না। আমাদের কেন চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, আসুন আমরা সেটার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিবেচনা করি।

১২. স্মরণার্থ সভায় যারা প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সংখ্যার বিষয়ে কেন আমাদের চিন্তা করা উচিত নয়?

১২ “প্রভু [ঈশ্বর] জানেন, কে কে তাঁহার।” (২ তীম. ২:১৯) কে আসলে অভিষিক্ত, তা যিহোবা জানেন। কিন্তু, স্মরণার্থ সভার সময় প্রতীক গ্রহণকারীদের সংখ্যা গণনা করে এমন ভাইয়েরা তা জানে না। তাই, সেই সংখ্যার মধ্যে এমন ব্যক্তিরা রয়েছে, যারা মনে করে, তারা অভিষিক্ত, কিন্তু আসলে তারা অভিষিক্ত নয়। উদাহরণ স্বরূপ, আগে প্রতীকগুলো গ্রহণ করত এমন কেউ কেউ সেগুলো গ্রহণ করা বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদের হয়তো মানসিক কিংবা আবেগগত সমস্যা রয়েছে, যার ফলে তারা মনে করে, তারা স্বর্গে খ্রিস্টের সঙ্গে শাসন করবে। স্পষ্টতই, পৃথিবীতে ঠিক কত জন অভিষিক্ত ব্যক্তি বাকি রয়েছে, তা আমরা জানি না।

১৩. বাইবেল কি জানায় যে, যখন মহাক্লেশ শুরু হবে, তখন পৃথিবীতে কত জন অভিষিক্ত ব্যক্তি থাকবে?

১৩ যিশু যখন অভিষিক্ত ব্যক্তিদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসবেন, তখন পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে তারা থাকবে। (মথি ২৪:৩১) বাইবেল বলে, শেষকালে পৃথিবীতে অল্পসংখ্যক অভিষিক্ত ব্যক্তি থাকবে। (প্রকা. ১২:১৭) কিন্তু, এটি বলে না যে, যখন মহাক্লেশ শুরু হবে, তখন তাদের মধ্যে কত জন থাকবে।

কেউ যদি স্মরণার্থ সভার প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তা হলে আমাদের কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত? (১৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৪. রোমীয় ৯:১১, ১৬ পদ অনুযায়ী অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মনোনীত করার বিষয়ে আমরা কী শিখি?

১৪ যিহোবাই সিদ্ধান্ত নেন যে, কখন তিনি অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মনোনীত করবেন। (রোমীয় ৮:২৮-৩০) যিশুর পুনরুত্থানের পর যিহোবা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মনোনীত করতে শুরু করেছিলেন। সম্ভবত, প্রথম শতাব্দীতে সমস্ত সত্য খ্রিস্টানই অভিষিক্ত ছিল। এরপর শত শত বছর ধরে, যারা নিজেদের খ্রিস্টান বলে দাবি করেছিল, তাদের মধ্যে অধিকাংশ ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে খ্রিস্টকে অনুসরণ করেনি। তা সত্ত্বেও, সেই বছরগুলোতে যিহোবা এমন অল্পসংখ্যক ব্যক্তিদের অভিষিক্ত করেছিলেন, যারা সত্য খ্রিস্টান ছিল। তারা সেই গমের মতো, যারা শ্যামাঘাসের মধ্যে বৃদ্ধি পাবে বলে যিশু বলেছিলেন। (মথি ১৩:২৪-৩০) শেষকালে, যিহোবা সেই লোকেদের মনোনীত করে চলেছেন, যারা ১,৪৪,০০০ জনের অংশ হবে। * তাই, শেষ আসার ঠিক আগে ঈশ্বর যদি তাদের কাউকে কাউকে মনোনীত করার সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে আমাদের তাঁর প্রজ্ঞা নিয়ে সন্দেহ করা উচিত নয়। (পড়ুন, রোমীয় ৯:১১, ১৬.) * আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন আমরা সেই মজুরদের মতো প্রতিক্রিয়া না দেখাই, যাদের বিষয়ে যিশু তাঁর একটা দৃষ্টান্তে উল্লেখ করেছিলেন। শেষ ঘণ্টায় কাজ শুরু করেছিল এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের কর্তা যেভাবে আচরণ করেছিলেন, তা নিয়ে সেই মজুরেরা অভিযোগ করেছিল।—মথি ২০:৮-১৫.

১৫. সমস্ত অভিষিক্ত ব্যক্তিই কি মথি ২৪:৪৫-৪৭ পদে উল্লেখিত ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাসের’ অংশ? ব্যাখ্যা করুন।

১৫ স্বর্গে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে এমন সকলে ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাসের’ অংশ নয়। (পড়ুন, মথি ২৪:৪৫-৪৭.) প্রথম শতাব্দীর মতো, বর্তমানেও যিহোবা ও যিশু অনেক লোককে খাদ্য বা শিক্ষা দেওয়ার জন্য অল্পসংখ্যক ভাইকে ব্যবহার করছেন। প্রথম শতাব্দীতে, খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্র লেখার জন্য কেবল অল্পসংখ্যক অভিষিক্ত খ্রিস্টানকে ব্যবহার করা হয়েছিল। বর্তমানে, ঈশ্বরের লোকেদের “উপযুক্ত সময়ে খাদ্য” দেওয়ার জন্য কেবল অল্পসংখ্যক অভিষিক্ত খ্রিস্টানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

১৬. এই প্রবন্ধ থেকে আপনি কী শিখেছেন?

১৬ এই প্রবন্ধ আমাদের কী শিক্ষা দেয়? যিহোবা তাঁর অধিকাংশ লোককে পৃথিবীতে অনন্তজীবন দেওয়ার এবং সেই অল্পসংখ্যক ব্যক্তিকে স্বর্গে জীবন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যারা যিশুর সঙ্গে শাসন করবে। যিহোবা তাঁর সকল দাসকে—‘যিহূদি পুরুষ’ ও সেইসঙ্গে ‘দশ দশ পুরুষকে’—পুরস্কার দেন আর তিনি চান, যেন তারা একই আইনের প্রতি বাধ্য থাকে এবং বিশ্বস্ততা বজায় রাখে। সকলকে নম্রতা বজায় রাখতে হবে। সকলকে একসঙ্গে তাঁর সেবা করতে হবে এবং একতাবদ্ধ হতে হবে। আর সকলকে মণ্ডলীতে শান্তি বজায় রাখার জন্য কাজ করতে হবে। যতই আমরা শেষ সময়ের আরও নিকটবর্তী হচ্ছি, আসুন আমরা সকলে যিহোবার সেবা করে চলি এবং “এক পাল” হিসেবে খ্রিস্টকে অনুসরণ করে চলি।—যোহন ১০:১৬.

^ অনু. 5 এই বছর, খ্রিস্টের মৃত্যুর স্মরণার্থ দিন ৭ এপ্রিল, মঙ্গলবার পালন করা হবে। সেই সন্ধ্যায় যারা স্মরণার্থ সভায় প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, আমাদের তাদের কীভাবে দেখা উচিত? যারা প্রতীকগুলো গ্রহণ করে, তাদের সংখ্যা যদি বাড়তে থাকে, তা হলে আমাদের কি চিন্তিত হওয়া উচিত? এই প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাব, যেটা ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার একটা প্রবন্ধের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।

^ অনু. 2 গীতসংহিতা ৮৭:৫, ৬ পদ অনুযায়ী, ঈশ্বর হয়তো ভবিষ্যতে সেই সমস্ত ব্যক্তির নাম প্রকাশ করবেন, যারা স্বর্গে যিশুর সঙ্গে শাসন করছে।—রোমীয় ৮:১৯.

^ অনু. 8 ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৭ পৃষ্ঠায় “প্রেম ‘অশিষ্টাচরণ করে না’” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

^ অনু. 14 যদিও প্রেরিত ২:৩৩ পদ দেখায় যে, পবিত্র আত্মা যিশুর মাধ্যমে বর্ষণ করা হয়, কিন্তু যিহোবাই প্রত্যেক ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানান।

^ অনু. 14 আরও তথ্যের জন্য ২০০৭ সালের ১ মে প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় “পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল” দেখুন।

গান সংখ্যা ২৯ নীতিনিষ্ঠার পথে চলা

^ অনু. 56 ছবি সম্বন্ধে: কল্পনা করুন, একটা সম্মেলনে বিশ্বপ্রধান কার্যালয়ের একজন প্রতিনিধি এবং তার স্ত্রীকে অনেকে ঘিরে ধরে তাদের ছবি তোলার চেষ্টা করছে। এটা কতই-না অসম্মানজনক বিষয়!