সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি এখনই সেই উত্তম জগতে বাস করার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন, যা খুবই কাছে

নতুন জগৎ একেবারেই কাছে!

নতুন জগৎ একেবারেই কাছে!

ঈশ্বর এই উদ্দেশ্য নিয়ে পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন, যেন ভালো লোকেরা এখানে চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে। (গীতসংহিতা ৩৭:২৯) প্রথম মানবদম্পতি আদম ও হবাকে সৃষ্টি করে তিনি সুন্দর এদন উদ্যানে রেখেছিলেন এবং তাদের ও তাদের সন্তানদের পৃথিবীতে কৃষিকাজ করার এবং এটার দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন।—আদিপুস্তক ১:২৮; ২:১৫.

প্রথম থেকেই ঈশ্বর চেয়েছিলেন, পুরো পৃথিবী এক পরমদেশে পরিণত হোক। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, আজকের জগৎ সেই সুন্দর পরমদেশের মতো নয়। কীভাবে ঈশ্বর তাঁর এই আদি উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করবেন? আগের প্রবন্ধগুলো থেকে আমরা দেখেছি যে, ঈশ্বর এই পৃথিবীকে ধ্বংস না করে, এখানে ভালো মানুষদের থাকার সুযোগ দেবেন। ঈশ্বর যখন তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ করবেন, তখন এই পৃথিবীর অবস্থা কেমন হবে?

পুরো পৃথিবীর উপর শুধু একটা সরকার শাসন করবে

শীঘ্রই ঈশ্বরের স্বর্গীয় সরকার পুরো মানবজাতির উপর শাসন করবে। সেই সময় পৃথিবীতে লোকেরা একত্রে ও শান্তিতে বাস করবে। আর সবার কাছে কাজ থাকবে এবং সেই কাজ করে তারা আনন্দ পাবে। ঈশ্বর পৃথিবীর উপর শাসন করার জন্য যিশু খ্রিস্টকে মনোনীত করেছেন। যিশু বর্তমান জগতের সেই শাসকদের মতো নন না, যারা লোকদের প্রতি কোনো চিন্তা দেখায় না। বরং তিনি সবসময় লোকদের জন্য যা সবচেয়ে ভালো, তা-ই করবেন। তিনি লোকদের সত্যিই ভালোবাসেন এবং সবার সঙ্গে ন্যায্য বিচার করবেন।—যিশাইয় ১১:৪.

সকলের মধ্যে একতা থাকবে

নতুন জগতে লোকদের মধ্যে জাতি বা বর্ণের কারণে ভেদাভেদ থাকবে না। পুরো মানবজাতির মধ্যে একতা থাকবে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯, ১০) তারা ঈশ্বরকে এবং একে অন্যকে ভালোবাসবে। ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করার জন্য তারা শান্তিপূর্ণভাবে ও একত্রে পৃথিবীর দেখাশোনা করবে।—গীতসংহিতা ১১৫:১৬.

প্রকৃতিতে ভারসাম্য থাকবে

ঈশ্বরের রাজ্য যখন পৃথিবীর উপর শাসন করতে শুরু করবে, তখন প্রকৃতির নিখুঁত ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার জন্য ঈশ্বর আবহাওয়াকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন। (গীতসংহিতা ২৪:১, ২) ঈশ্বরের যে আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আছে, তার একটা ছোট্ট প্রমাণ যিশু পৃথিবীতে থাকাকালীন দেখিয়েছিলেন, যখন তিনি খুব সহজেই এক ভয়ংকর ঝড় থামিয়ে দিয়েছিলেন। (মার্ক ৪:৩৯, ৪১) যিশু খ্রিস্ট যখন শাসন করতে শুরু করবেন, তখন প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটার কোনো ভয় থাকবে না। সেই সময় এমনকী মানুষ ও জীবজন্তুর মধ্যেও শান্তি থাকবে আর কেউই প্রকৃতিকে নষ্ট করবে না।—হোশেয় ২:১৮.

উত্তম স্বাস্থ্য ও প্রচুর খাবার থাকবে

প্রত্যেকেরই উত্তম স্বাস্থ্য থাকবে। কেউই অসুস্থ হবে না, বৃদ্ধ হবে না কিংবা মারাও যাবে না। (যিশাইয় ৩৫:৫, ৬) এদন উদ্যানে থাকার সময় প্রথম মানবদম্পতি যে-পরিষ্কার ও সুন্দর পরিবেশে ছিলেন, আসন্ন নতুন জগতেও লোকেরা ঠিক একইরকম পরিবেশে থাকবে। তখন পৃথিবীতে বসবাসকারী সমস্ত লোকের কাছেই যথেষ্ট খাবার থাকবে কারণ ভূমি প্রচুর পরিমাণে খাবার উৎপাদন করবে। (আদিপুস্তক ২:৯) লোকেরা সেই পরমদেশে “তৃপ্তি পর্য্যন্ত অন্ন ভোজন করিবে,” ঠিক যেমন প্রাচীন ইজরায়েলে ঈশ্বরের লোকেরা উপভোগ করেছিল।—লেবীয় পুস্তক ২৬:৪, ৫.

প্রকৃত শান্তি ও সুরক্ষা থাকবে

ঈশ্বরের সরকারের অধীনে পৃথিবীর সমস্ত লোক শান্তিতে বাস করবে আর একে অন্যের সঙ্গে দয়া দেখিয়ে এবং ন্যায্য আচরণ করবে। তখন যুদ্ধ হবে না, কেউই ক্ষমতার অপব্যবহার করবে না এবং কাউকেই তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর জন্য হিমশিম খেতে হবে না। কারণ বাইবেল এই প্রতিজ্ঞা করে: “প্রত্যেকে আপন আপন দ্রাক্ষালতার ও আপন আপন ডুমুরবৃক্ষের তলে বসিবে; কেহ তাহাদিগকে ভয় দেখাইবে না।”—মীখা ৪:৩, ৪.

যথেষ্ট থাকার জায়গা এবং পরিতৃপ্তিদায়ক কাজ থাকবে

প্রত্যেক মানুষ তার পরিবারের সঙ্গে নিজের বাড়িতে থাকতে পারবে। তাদের মধ্যে সেটা হারানোর ভয় আর থাকবে না। আমরা যা-ই করি না কেন, প্রতিটা কাজের উত্তম ফলাফল লাভ করব। কারণ বাইবেল বলে যে, ঈশ্বরের নতুন জগতে যারা বাস করবে, তারা “বৃথা পরিশ্রম করিবে না।”—যিশাইয় ৬৫:২১-২৩.

সকলে সর্বোত্তম শিক্ষা লাভ করবে

বাইবেল এই প্রতিজ্ঞা করে: “পৃথিবী সদাপ্রভু-বিষয়ক জ্ঞানে পরিপূর্ণ হইবে।” (যিশাইয় ১১:৯) ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে লোকেরা তাদের সৃষ্টিকর্তা যিহোবার অসীম প্রজ্ঞা থেকে শিক্ষা লাভ করবে। তারা তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি সম্বন্ধেও শিখবে। তারা বুদ্ধি খাটিয়ে কোনো অস্ত্র তৈরি করবে না কিংবা তারা অন্যের ক্ষতিও করবে না। (যিশাইয় ২:৪) এর পরিবর্তে, তারা একে অন্যের সঙ্গে শান্তিতে বাস করতে শিখবে। আর এর পাশাপাশি তারা পৃথিবীর দেখাশোনাও করতে শিখবে।—গীতসংহিতা ৩৭:১১.

মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকবে

ঈশ্বর খুব যত্ন করে এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যেন আমরা প্রতিদিন আমাদের জীবন পুরোপুরিভাবে উপভোগ করতে পারি। তিনি চান যেন মানুষ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকে। (গীতসংহিতা ৩৭:২৯; যিশাইয় ৪৫:১৮) তাঁর এই আদি উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করার জন্য তিনি ‘মৃত্যুকে অনন্তকালের জন্য বিনষ্ট করিবেন।’ (যিশাইয় ২৫:৮) বাইবেল প্রতিজ্ঞা করে, “মৃত্যু আর থাকবে না; শোক বা আর্তনাদ বা ব্যথা আর থাকবে না।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:৪) ঈশ্বর সমস্ত ধরনের মানুষকেই অর্থাৎ যাদের তিনি এই মন্দ জগতের ধ্বংস থেকে রক্ষা করবেন এবং যাদের আসন্ন নতুন জগতে আবার জীবন ফিরিয়ে দেবেন, তাদের সবাইকে চিরকাল বেঁচে থাকার সুযোগ দেবেন।—যোহন ৫:২৮, ২৯; প্রেরিত ২৪:১৫.

নতুন জগৎ একেবারেই কাছে! আর সেখানে থাকার জন্য বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ লোক ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও, তারা এমন ব্যক্তি হওয়ার প্রচেষ্টা করছে, যাদের ঈশ্বর নতুন জগতে থাকার সুযোগ দেবেন। কীভাবে? যিহোবা ঈশ্বর ও যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে আরও ভালোভাবে শেখার মাধ্যমে।—যোহন ১৭:৩.

আপনি কীভাবে এই জগতের ধ্বংস থেকে রক্ষা পেতে পারেন এবং সেই উত্তম জগতে বাস করতে পারেন, তা আরও ভালো করে জানুন। এর জন্য একজন যিহোবার সাক্ষির সঙ্গে চিরকাল জীবন উপভোগ করুন! বইটা ব্যাবহার করে বিনা মূল্যে বাইবেল অধ্যয়ন করুন।