সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩২

সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস শক্তিশালী করুন

সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস শক্তিশালী করুন

“বিশ্বাসের অর্থ হল, . . . সেই বিষয়ে দৃঢ়নিশ্চয়তা এবং বাস্তবে যা দেখা যায় না, সেটার স্পষ্ট প্রমাণ।”—ইব্রীয় ১১:১.

গান ১৫ সৃষ্টি যিহোবার গৌরব করে

সারাংশ *

১. আপনি ছোটোবেলা থেকে যিহোবা সম্বন্ধে কী শিখেছেন?

আপনার বাবা-মা কি যিহোবার সাক্ষি? যদি হয়ে থাকেন, তা হলে আপনি হয়তো ছোটোবেলা থেকে শিখেছেন, যিহোবাই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। তাঁর মধ্যে বিভিন্ন ভালো গুণ রয়েছে। তিনি আমাদের ভালোবাসেন আর খুব শীঘ্রই তিনি এই পৃথিবীকে পরমদেশে পরিণত করবেন।—আদি. ১:১; প্রেরিত ১৭:২৪-২৭.

২. যারা সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে, তাদের সম্বন্ধে কিছু লোক কী মনে করে?

কিন্তু, অনেক লোক এটা বিশ্বাস করে না যে, ঈশ্বর অস্তিত্বে রয়েছেন, যিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। তারা মনে করে, সমস্ত কিছু আপনা-আপনি অস্তিত্বে এসেছে এবং জীবের বিবর্তন হয়েছে। যে-লোকেরা বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করে, তাদের মধ্যে কিছু লোক অনেক পড়াশোনা করেছে। তারা বিজ্ঞানের উপর বিশ্বাস করে। তারা দাবি করে, বিজ্ঞান বাইবেলের শিক্ষাগুলো ভুল বলে প্রমাণ করেছে আর সৃষ্টিকর্তার উপর শুধুমাত্র সেই লোকেরাই বিশ্বাস করে, যারা কম পড়াশোনা করেছে, মূর্খ এবং সহজেই অন্যদের কথায় বিশ্বাস করে।

৩. কেন আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করতে হবে?

সেই শিক্ষিত লোকদের প্রভাব কি আমাদের উপর পড়তে পারে আর আমরা কি এই বিষয়ে সন্দেহ করা শুরু করতে পারি যে, যিহোবাই হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা? হ্যাঁ এমনটা হতে পারে, যদি আমরা যিহোবার উপর শুধুমাত্র এই কারণে বিশ্বাস করি যে, কেউ আমাদের তা করতে বলেছিল। কিন্তু, আমরা যদি সময় বের করে সেই প্রমাণগুলো পরীক্ষা করে থাকি, যেগুলো থেকে বোঝা যায়, যিহোবা হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা, তা হলে আমাদের প্রতি এমনটা হবে না। (১ করি. ৩:১২-১৫) আমরা যত দীর্ঘসময় ধরে যিহোবার সেবা করি না কেন, তারপরও সৃষ্টিকর্তার উপর আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করতে হবে। এভাবে, আমরা সেই লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হব না, যারা বলে থাকে, বাইবেলের শিক্ষাগুলো ভুল। (কল. ২:৮; ইব্রীয় ১১:৬) এই প্রবন্ধে আমরা আলোচনা করব, (১) কেন অনেক লোক সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে না, (২) কীভাবে আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তা যিহোবার উপর আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে পারি এবং (৩) আমরা কী করতে পারি, যাতে আমাদের বিশ্বাস দুর্বল হয়ে না পড়ে।

যে-কারণে অনেক লোক সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে না

৪. ইব্রীয় ১১:১ পদ অনুযায়ী বিশ্বাস কী?

কিছু লোক মনে করে, কোনো বিষয়ের উপর বিশ্বাস করার জন্য প্রমাণের প্রয়োজন নেই। কিন্তু, বাইবেল বলে যে, এটা বিশ্বাস নয়। (পড়ুন, ইব্রীয় ১১:১.) বিশ্বাস প্রমাণের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। যেমন আমরা যিহোবা, যিশু ও ঈশ্বরের রাজ্যকে দেখতে পাই না, কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, যিহোবা ও যিশু সত্যিই রয়েছেন এবং ঈশ্বরের রাজ্যও রয়েছে। কারণ এই বিষয়ে আমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। (ইব্রীয় ১১:৩) একজন ভাই, যিনি জীববিজ্ঞানী, বলেন: “যিহোবার সাক্ষিরা কোনো কিছু চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে না। তারা প্রমাণগুলো পরীক্ষা করে দেখে আর এমনকী বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রমাণগুলোও পরীক্ষা করে।”

৫. কেন অনেক লোক সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে না?

যদি এই বিষয়ে জোরালো প্রমাণ থাকে, একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন, তা হলে কেন আজকে অনেক লোক তাঁর উপর বিশ্বাস করে না? এর কারণ হল, তারা প্রমাণগুলোর উপর মনোযোগ দেয় না। রবার্ট, যিনি এখন একজন যিহোবার সাক্ষি, বলেন: “স্কুলে কখনোই আমাদের বলা হয়নি, এই পৃথিবীকে সৃষ্টি করা হয়েছিল। তাই, আমিও এই বিষয়টা কখনো বিশ্বাস করতাম না। আমার বয়স যখন ২২ বছর, তখন যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তারা আমাকে বাইবেল থেকে অনেক প্রমাণ দেখায়, যেগুলো পড়ে আমি বুঝতে পারি, একজন সৃষ্টিকর্তা সত্যিই রয়েছেন।” *—“ বাবা-মায়েদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

৬. কিছু লোক আর কোন কারণে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে না?

এমন কিছু লোকও রয়েছে, যারা সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে না কারণ তারা মনে করে, যা দেখা যায় না, তা বিশ্বাস করা অসম্ভব। কিন্তু বাস্তবে, তারা অদৃশ্য বিষয়গুলোর উপর বিশ্বাস করে কারণ সেগুলোর প্রমাণ রয়েছে। যেমন, বাতাস। বাইবেলও বলে, সেই বিষয়গুলোর উপর আমরা বিশ্বাস করতে পারি, যেগুলো ‘বাস্তবে দেখা যায় না’ কারণ সেগুলোর প্রমাণ রয়েছে। (ইব্রীয় ১১:১) এই প্রমাণগুলো পরীক্ষা করতে সময় ও পরিশ্রম লাগে। কিন্তু, অনেক লোক তা করতে চায় না। এইজন্যই তারা বলে থাকে, ঈশ্বর বলে কেউ নেই।

৭. সমস্ত শিক্ষিত লোক কি এটা মনে করে যে, সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই? ব্যাখ্যা করুন।

তবে, কিছু বিজ্ঞানী প্রমাণগুলো পরীক্ষা করে দেখেছে আর এটার প্রমাণ পেয়েছে যে, একজন সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন। * অনুচ্ছেদ ৫-এ উল্লেখিত রবার্টের মতো অনেক বিজ্ঞানীর মনে হত, সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই কারণ তাদের স্কুল-কলেজে এই বিষয়ে কখনো শেখানো হয়নি। কিন্তু পরে, তারা যিহোবা সম্বন্ধে জেনেছে আর তাঁর উপর বিশ্বাস করেছে। এই বিজ্ঞানীদের মতো আমাদেরও ঈশ্বরের উপর আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে হবে, তা আমরা বেশি পড়াশোনা জানি কিংবা কম জানি। এটা আমাদের নিজেদেরই করতে হবে।

সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি করার উপায়

৮-৯. (ক) এখন আমরা কোন প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করব? (খ) সৃষ্টির বিষয়ে শেখার ফলে কীভাবে আমরা উপকৃত হতে পারি?

কীভাবে আপনি সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে পারেন? আসুন, চারটে উপায় নিয়ে বিবেচনা করে দেখি।

প্রকৃতি দেখুন আর তা থেকে শিখুন। আপনি জীবজন্তু, গাছপালা ও তারাগুলো মনোযোগ সহকারে দেখার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে পারেন। (গীত. ১৯:১; যিশা. ৪০:২৬) আপনি যতবেশি সেগুলো থেকে শিখবেন, ততবেশি আপনি নিশ্চিত হবেন যে, যিহোবাই হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা। আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনাতেও সৃষ্টির বিষয়ে অনেক প্রবন্ধ রয়েছে। সেই প্রবন্ধগুলোতে দেওয়া তথ্য বোঝা একটু কঠিন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু, সেগুলো পড়তে ইতস্তত বোধ করবেন না। সেগুলো থেকে শেখার প্রচেষ্টা করুন। পূর্বে আমাদের কিছু আঞ্চলিক সম্মেলনে সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন ভিডিও দেখানো হয়েছিল। সেগুলো আবারও আমাদের ওয়েবসাইট jw.org থেকে দেখুন।

১০. একটা উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন যে, প্রকৃতি থেকে সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে আমরা কী শিখতে পারি। (রোমীয় ১:২০)

১০ আপনি যখন সৃষ্টির বিষয়ে শেখেন, তখন এটা জানার চেষ্টা করুন, সেগুলো থেকে সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে আপনি কী জানতে পেরেছেন। (পড়ুন, রোমীয় ১:২০.) উদাহরণ স্বরূপ, সূর্য মানুষের জন্য খুবই প্রয়োজন। এটা থেকে আমরা উত্তাপ ও আলো পাই। কিন্তু, এটা থেকে কিছু ক্ষতিকর রশ্মি নির্গত হয়। তবে, এগুলোর কারণে মানুষের কোনো ক্ষতি হয়ে না। কেন? পৃথিবীর চারিদিকে ওজোন গ্যাস রয়েছে, যেটা ক্ষতিকর রশ্মিকে শুষে নেয়। এই ক্ষতিকর রশ্মি যখন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, তখন ওজোনের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। আপনার কি মনে হয় না, এই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার পিছনে একজন প্রেমময় ও বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন?

১১. আপনি কোথা থেকে সৃষ্টির বিষয়ে তথ্য পেতে পারেন? (“ সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য তথ্য” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)

১১ আপনি গবেষণা নির্দেশিকা আর jw.org ওয়েবসাইটে সৃষ্টির বিষয়ে তথ্য খুঁজতে পারেন। এভাবে, সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পাবে। আপনি চাইলে সবচেয়ে প্রথমে “এটা কি সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?” শিরোনামের বিভিন্ন প্রবন্ধ অথবা ভিডিও দেখতে পারেন। এগুলো সংক্ষিপ্ত হয় আর এতে জীবজন্তু ও গাছপালার বিষয়ে আগ্রহজনক তথ্য রয়েছে। এগুলোতে এও তুলে ধরা হয়েছে যে, প্রকৃতি দেখে বিজ্ঞানীরা কী কী তৈরি করেছে।

১২. বাইবেল অধ্যয়ন করার সময়ে আমাদের কোন কোন বিষয়ের উপর মনোযোগ দিতে হবে?

১২বাইবেল অধ্যয়ন করুন। অনুচ্ছেদ ৪-এ উল্লেখিত জীববিজ্ঞানী শুরুতে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করতেন না। কিন্তু পরে, তিনি তাঁর উপর বিশ্বাস করতে শুরু করেন। তিনি বলেন: “শুধু বিজ্ঞানের বিষয় অধ্যয়ন করে আমার বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়নি। আমি বাইবেল নিয়েও অধ্যয়ন করি।” হতে পারে, বাইবেল সম্বন্ধে আপনার জ্ঞান রয়েছে। কিন্তু, সৃষ্টিকর্তার উপর আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য আপনাকে গভীরভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করতে হবে। (যিহো. ১:৮; গীত. ১১৯:৯৭) উদাহরণ স্বরূপ, সেই ঘটনাগুলোর বিষয়ে চিন্তা করুন, যেগুলো অনেক বছর আগে ঘটেছিল আর যেগুলোর বিষয়ে বাইবেলে বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। এই বিষয়েও মনোযোগ দিন, বাইবেলে দেওয়া ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো কীভাবে পরিপূর্ণ হয়েছে আর এটির ভিন্ন ভিন্ন লেখক যে-বইগুলো লিখেছেন, সেগুলোর মধ্যে কতটা মিল রয়েছে। এভাবে, আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে যে, আমাদের সৃষ্টির পিছনে একজন প্রেমময় ও বুদ্ধিমান সৃষ্টিকর্তা রয়েছেন আর তিনিই বাইবেল লিখিয়েছেন। *২ তীম. ৩:১৪; ২ পিতর ১:২১.

১৩. বাইবেলে দেওয়া পরামর্শগুলো যে উপকারজনক, তা একটা উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১৩ বাইবেল অধ্যয়ন করার সময় এই বিষয়ের উপরও মনোযোগ দিন যে, সেখানে দেওয়া পরামর্শগুলো কতটা উপকারজনক। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অনেক বছর আগে বাইবেলে বলা হয়েছিল, একজন ব্যক্তি যদি টাকাপয়সার প্রতি ভালোবাসা গড়ে তোলে, তা হলে তাকে “অনেক দুঃখ” ভোগ করতে হবে। (১ তীম. ৬:৯, ১০; হিতো. ২৮:২০; মথি ৬:২৪) এই কথা কি বর্তমানেও প্রযোজ্য? একটা বই বলে, “যারা মনে করে, টাকাপয়সাই সব কিছু, তারা হতাশ হয়ে পড়ে এবং দুঃখের মধ্যে থাকে। আর যারা আরও টাকাপয়সা রোজগার করতে চায়, তারাও চাপের মধ্যে থাকে এবং তাদের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়।” সত্যিই, টাকাপয়সার প্রতি ভালোবাসা গড়ে না তোলার বিষয়ে বাইবেলের পরামর্শ উপকারজনক! আপনি কি বাইবেলের আরও নীতির বিষয়ে চিন্তা করতে পারেন, যেগুলো থেকে আপনি উপকৃত হয়েছেন? আমরা যতবেশি এই বিষয়ে বুঝতে পারব যে, বাইবেলে দেওয়া পরামর্শগুলো উপকারজনক, ততবেশি আমরা সেগুলো কাজে লাগাব। (যাকোব ১:৫) এর ফলে, আমাদের জীবন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে পূর্ণ হয়ে উঠবে।—যিশা. ৪৮:১৭, ১৮.

১৪. বাইবেল অধ্যয়ন করার ফলে আপনি যিহোবা সম্বন্ধে কী শিখবেন?

১৪যিহোবাকে জানার উদ্দেশ্য নিয়ে বাইবেল অধ্যয়ন করুন। (যোহন ১৭:৩) ফলে আপনি জানতে পারবেন, তাঁর মধ্যে সেই সমস্ত গুণ রয়েছে, যেগুলো আপনি সৃষ্টি দেখে শিখেছিলেন। আপনি বুঝতে পারবেন, তিনি সত্যিই অস্তিত্বে রয়েছেন আর তিনি কোনো কাল্পনিক ব্যক্তি নন। (যাত্রা. ৩৪:৬, ৭; গীত. ১৪৫:৮, ৯) আপনি যতবেশি যিহোবা সম্বন্ধে জানবেন, ততবেশি তাঁর উপর আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, তাঁর প্রতি আপনার ভালোবাসা গভীর হবে আর তাঁর সঙ্গে আপনার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক শক্তিশালী হবে।

১৫. সৃষ্টিকর্তা সম্বন্ধে অন্যদের জানানোর মাধ্যমে কীভাবে আপনি উপকৃত হবেন?

১৫যিহোবা সম্বন্ধে আপনি যা-কিছু শেখেন, তা অন্যদের জানান। এভাবে, আপনার বিশ্বাস শক্তিশালী হবে। ধরুন, কেউ আপনাকে বলল, ঈশ্বর বলে কেউ নেই আর আপনি জানেন না যে, উত্তরে আপনি তাকে কী বলবেন। এইরকম ক্ষেত্রে আপনি কী করতে পারেন? আপনি আমাদের প্রকাশনা থেকে গবেষণা করতে পারেন আর তারপর সেই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে পারেন। (১ পিতর ৩:১৫) আপনি কোনো ভাই কিংবা বোনের কাছ থেকেও সাহায্য নিতে পারেন। সেই ব্যক্তি আপনার উত্তর শুনে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করুক বা না-ই করুক, গবেষণা করার মাধ্যমে আপনার বিশ্বাস শক্তিশালী হবে। আপনি জগতের শিক্ষিত লোকদের দ্বারা প্রভাবিত হবেন না, যারা সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করে না।

আপনার বিশ্বাসকে দুর্বল হয়ে পড়তে দেবেন না

১৬. আমরা যদি আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করার জন্য পরিশ্রম না করি, তা হলে কী হবে?

১৬ হতে পারে, আমরা অনেক বছর ধরে যিহোবার সেবা করছি, তারপরও আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করার জন্য ক্রমাগত পরিশ্রম করতে হবে। তা না হলে, আমাদের বিশ্বাস দুর্বল হয়ে পড়বে। আমরা যেমনটা শিখেছি, বিশ্বাস হল বাস্তবে যা দেখা যায় না, সেটার স্পষ্ট প্রমাণ। যে-বিষয়গুলো আমরা দেখতে পাই না, সেগুলো আমরা সহজেই ভুলে যেতে পারি। পৌল বলেছিলেন, দুর্বল বিশ্বাস হল এমন ‘পাপের’ মতো, যেটা “সহজেই আমাদের জন্য বাধা তৈরি করে।” (ইব্রীয় ১২:১) তাহলে, আমাদের কী করতে হবে, যাতে আমাদের বিশ্বাস দুর্বল হয়ে না পড়ে?—২ থিষল. ১:৩.

১৭. নিজেদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের কী করতে হবে?

১৭যিহোবার পবিত্র শক্তির জন্য তাঁর কাছে অনুরোধ করুন আর তা বার বার করুন। বিশ্বাস হল পবিত্র শক্তির একটা দিক। (গালা. ৫:২২, ২৩) পবিত্র শক্তি ছাড়া আমরা সৃষ্টিকর্তার উপর আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে পারব না। আমরা যদি যিহোবার কাছে পবিত্র শক্তি চাইতে থাকি, তা হলে তিনি আমাদের তা দেবেন। (লূক ১১:১৩) এ ছাড়া, আমরা সরাসরি তাঁকে বলতে পারি: ‘আমার বিশ্বাস আরও দৃঢ় করুন।’—লূক ১৭:৫.

১৮. বর্তমানে আমরা কোন উপহার উপভোগ করছি? (গীতসংহিতা ১:২, ৩)

১৮বাইবেল অধ্যয়নের জন্য সময় আলাদা করে রাখুন এবং তাতে স্থির থাকুন। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১:২, ৩.) যখন এই গীত রচনা করা হয়েছিল, সেইসময় শুধুমাত্র কিছু ইজরায়েলীয়ের কাছে ঈশ্বরের সম্পূর্ণ ব্যবস্থা লিখিত আকারে ছিল। যেমন, রাজা ও যাজকদের কাছে ছিল। আর প্রতি সাত বছর অন্তর “পুরুষ, স্ত্রী, বালক-বালিকা” ও বিদেশিদের একত্র করে ব্যবস্থা পড়ে শোনানো হত। (দ্বিতীয়. ৩১:১০-১২) যিশুর দিনে কিছু লোকের কাছে শাস্ত্রের গোটানো পুস্তকগুলো থাকত কিংবা এগুলো সমাজগৃহে রাখা থাকত। তবে, বর্তমানে বেশিরভাগ লোকের কাছে বাইবেলের কিছু অংশ কিংবা পুরো বাইবেল রয়েছে। সত্যিই, এটা কতই-না অপূর্ব এক উপহার! কিন্তু, কীভাবে আমরা এটির প্রতি আমাদের উপলব্ধি প্রকাশ করতে পারি?

১৯. নিজেদের বিশ্বাস শক্তিশালী করার জন্য আমাদের কী করতে হবে?

১৯ আমাদের প্রতিদিন বাইবেল পড়তে হবে এবং অধ্যয়ন করার জন্য সময় আলাদা করে রাখতে হবে। আমাদের এইরকম চিন্তা করা উচিত নয়, যখন সময় হবে, তখন অধ্যয়ন করব। আমরা যদি ক্রমাগত বাইবেল অধ্যয়ন করি, তা হলে আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী হবে।

২০. আপনি কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ?

২০ আমরা এই জগতের “বিজ্ঞ ও বুদ্ধিমান লোকদের” মতো নই। আমাদের বিশ্বাস দৃঢ় কারণ এই বিশ্বাস বাইবেলে দেওয়া প্রমাণগুলোর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। (মথি ১১:২৫, ২৬) বাইবেল অধ্যয়ন করার ফলে আমরা জানতে পেরেছি, আজ জগতের অবস্থা কেন এতটা খারাপ আর ভবিষ্যতে যিহোবা কী করতে চলেছেন। তাই আসুন, আমরা দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই, আমরা নিজেদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী রাখব এবং যতবেশি লোককে সম্ভব সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস গড়ে তুলতে সাহায্য করব। (১ তীম. ২:৩, ৪) আমরা সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করব, যখন এই পৃথিবীর বসবাসকারী সমস্ত লোক যিহোবার প্রশংসায় এই কথাগুলো বলবে: “হে আমাদের ঈশ্বর যিহোবা, তুমিই গৌরব . . . পাওয়ার যোগ্য, কারণ তুমিই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছ।”—প্রকা. ৪:১১.

গান ১ যিহোবার গুণাবলি

^ অনু. 5 বাইবেল স্পষ্টভাবে জানায়, যিহোবাই হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা। কিন্তু, অনেক লোক বলে থাকে, সমস্ত কিছু আপনা-আপনি অস্তিত্বে এসেছে, সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই। আমরা যদি চাই, তাদের কথা আমাদের উপর কোনো প্রভাব না ফেলুক, তা হলে ঈশ্বর ও বাইবেলের উপর আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করতে হবে। এই প্রবন্ধে আমরা জানতে পারব, আমরা কীভাবে তা করতে পারি।

^ অনু. 5 অনেক স্কুলে, শিক্ষকেরা এটাও কখনো বলে না যে, হয়তো ঈশ্বর সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন। তারা মনে করে, তারা যদি এমনটা বলে, তা হলে তারা আসলে ছেলে-মেয়েদের ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস করার জন্য চাপ দিচ্ছে।

^ অনু. 7 কিছু শিক্ষিত লোক ও বিজ্ঞানীর সাক্ষাৎকার যিহোবার সাক্ষিদের জন্য গবেষণা নির্দেশিকা-এ তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো পড়ার জন্য “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি” বিষয়বস্তুর অধীনে “‘সাক্ষাৎকার’ (সচেতন থাক! ধারাবাহিক)” দেখুন।

^ অনু. 12 উদাহরণ স্বরূপ, ২০০৮ সালের জানুয়ারি-মার্চ মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় দেওয়া “যিহোবা যা ভবিষ্যদ্বাণী করেন তা পরিপূর্ণ হয়” শিরোনামের প্রবন্ধটা দেখুন।