সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩৩

আপনি যা করতে পারছেন, তাতে আনন্দ লাভ করুন

আপনি যা করতে পারছেন, তাতে আনন্দ লাভ করুন

“দৃষ্টিসুখ যত ভাল, প্রাণের লালসা তত ভাল নহে।”—উপ. ৬:৯.

গান ২৮ নতুন গীত

সারাংশ *

১. যিহোবার সেবা করার জন্য অনেকে কোন কোন লক্ষ্য স্থাপন করেছে?

এই জগৎ খুব শীঘ্রই ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু, এর আগে আমাদের কাছে অনেক কাজ রয়েছে। (মথি ২৪:১৪; লূক ১০:২; ১ পিতর ৫:২) আমরা সবাই মনপ্রাণ দিয়ে সেই কাজগুলোতে অংশ নিতে চাই। তাই, অনেকে আলাদা আলাদা লক্ষ্য স্থাপন করেছে। যেমন, অগ্রগামী হিসেবে সেবা করা, বেথেলে সেবা করা কিংবা নির্মাণ প্রকল্পে অংশ নেওয়া। অনেক ভাই পরিচারক দাস কিংবা প্রাচীন হওয়ার জন্য পরিশ্রম করছেন। (১ তীম. ৩:১, ৮) যিহোবা যখন দেখেন, তাঁর লোকেরা তাঁর সেবা করার জন্য কত কিছু করতে চায়, তখন তাঁর হৃদয় আনন্দে ভরে ওঠে!—গীত. ১১০:৩; যিশা. ৬:৮.

২. আমরা যদি আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে না পারি, তা হলে কী হতে পারে?

হতে পারে, অনেক বার আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারি না। এইরকম ক্ষেত্রে আমরা হতাশ হয়ে পড়তে পারি। লক্ষ্য অর্জন না করার পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন, আমাদের বয়স হয়ে গিয়েছে কিংবা আমাদের পরিস্থিতি ঠিক নয়। (হিতো. ১৩:১২) বোন মঞ্জুর * প্রতি এমনই কিছু ঘটেছিল। বোনের বেথেলে সেবা করার কিংবা ‘রাজ্যের সুসমাচার প্রচারকদের জন্য স্কুল’-এ যোগ দেওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু, তিনি বলেন: “আমি চাইলেও এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারব না কারণ আমার বয়স পার হয়ে গিয়েছে। কখনো কখনো আমি এই বিষয়ে চিন্তা করে দুঃখে ভেঙে পড়ি।”

৩. দায়িত্ব পাওয়ার জন্য একজন ভাইকে হয়তো কী করতে হবে?

অপর দিকে, কিছু যুবক ভাই দ্রুত নিজেদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না। তাদের মধ্যে হয়তো কিছু গুণ গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। হতে পারে, তারা খুবই বুদ্ধিমান, তাদের মধ্যে উদ্যোগ রয়েছে কিংবা তারা যেকোনো কাজ দ্রুত করতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, তাদের কিছু গুণ গড়ে তুলতে হবে। যেমন, ধৈর্য ধরা, প্রতিটা কাজ মনোযোগ সহকারে করা এবং অন্যদের সম্মান করা। তারা যদি এই গুণগুলো গড়ে তোলার জন্য পরিশ্রম করে, তা হলে তারা শীঘ্র তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। ভাই নিকের উদাহরণের প্রতি মনোযোগ দিন। তার বয়স যখন ২০ বছর ছিল, তখন তিনি খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, কারণ তাকে একজন পরিচারক দাস হিসেবে নিযুক্ত করা হয়নি। তিনি বলেন: “আমার মনে হয়েছিল, যেন আমার মধ্যেই কোনো ত্রুটি রয়েছে।” কিন্তু, ভাই হাল ছেড়ে দেননি। তিনি প্রচার কাজে পরিশ্রম করতে থাকেন আর মণ্ডলীর কাজে সাহায্যও করতে থাকেন। বর্তমানে, তিনি শাখা কমিটি-র একজন সদস্য হিসেবে সেবা করছেন।

৪. এই প্রবন্ধে আমরা কী নিয়ে আলোচনা করব?

আপনি যদি এই বিষয়ে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন যে, আপনি এখনও পর্যন্ত কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেননি, তা হলে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন। তাঁর কাছে নিজের মনের কথা খুলে বলুন। (গীত. ৩৭:৫-৭) আপনি মণ্ডলীর পরিপক্ব ভাইদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন। তারা আপনাকে পরামর্শ দিতে পারেন, যাতে আপনি ঈশ্বরের সেবা আরও ভালোভাবে করতে পারেন। তাই, তাদের পরামর্শ কাজে লাগান। আপনি যদি তা করেন, তা হলে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন। কিন্তু, আপনার পরিস্থিতি যদি বোন মঞ্জুর মতো হয়, তা হলে আপনি কী করতে পারেন, যাতে আপনি যিহোবার সেবায় আনন্দ বজায় রাখতে পারেন? এই প্রশ্নের উত্তর এই প্রবন্ধে দেওয়া হবে। আমরা এও আলোচনা করব, নিজেদের আনন্দ আরও বৃদ্ধি করার জন্য আমরা কী করতে পারি এবং আমরা কোন লক্ষ্যগুলো স্থাপন করতে পারি।

আনন্দ লাভ করার জন্য আমাদের কী করতে হবে?

৫. আনন্দ লাভ করার জন্য আমাদের কী করতে হবে? (উপদেশক ৬:৯)

উপদেশক ৬:৯ পদ জানায়, আনন্দ লাভ করার জন্য আমাদের কী করতে হবে। (পড়ুন।) আমরা যদি সেই বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিই, যেগুলো আমাদের কাছে দৃষ্টিসুখ অর্থাৎ আমাদের চোখের সামনে যা-কিছু রয়েছে কিংবা আমরা যে-পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি, তা হলে আমরা আনন্দে থাকব। কিন্তু, আমরা যদি আমাদের লালসা বা আকাঙ্ক্ষার পিছনে দৌড়াতে থাকি অর্থাৎ সেই বিষয়গুলোর পিছনে দৌড়াতে থাকি, যেগুলো আমরা কখনো লাভ করতে পারব না, তা হলে আমাদের আনন্দ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

৬. আমরা কোন দৃষ্টান্ত নিয়ে আলোচনা করব আর সেখান থেকে কী শিখব?

এমনটা কি হতে পারে, আমাদের কাছে যা-কিছু রয়েছে, তাতে আমরা আনন্দে থাকতে পারি? অনেক লোক মনে করে, এমনটা সম্ভব নয়। কারণ মানুষ নতুন নতুন বিষয় করতে এবং নতুন নতুন বিষয় শিখতে পছন্দ করে। কিন্তু, বাইবেল বলে, আমাদের কাছে যা-কিছু রয়েছে, তাতে আমরা আনন্দে থাকতে পারি। কীভাবে? এটা জানার জন্য আসুন আমরা মথি ২৫:১৪-৩০ পদে উল্লেখিত তালন্তের দৃষ্টান্ত নিয়ে আলোচনা করি। সেই দৃষ্টান্ত থেকে আমরা এও শিখব যে, যিহোবার সেবায় কীভাবে আমরা আরও আনন্দ লাভ করতে পারি।

যেভাবে আরও আনন্দ লাভ করা যায়

৭. সংক্ষেপে যিশুর বলা তালন্তের দৃষ্টান্ত ব্যাখ্যা করুন।

যিশু তাঁর দৃষ্টান্তে বলেছিলেন যে, একজন ব্যক্তি বিদেশে যান। তবে, যাওয়ার আগে তিনি তার তিন জন দাসকে ডাকেন। তিনি প্রত্যেকের ক্ষমতা অনুযায়ী তাদের তালন্ত দেন। * তিনি প্রথম দাসকে পাঁচ তালন্ত দেন, দ্বিতীয় দাসকে দুই তালন্ত দেন আর তৃতীয় দাসকে এক তালন্ত দেন। প্রথম ও দ্বিতীয় দাস পরিশ্রম করে আরও তালন্ত লাভ করে। কিন্তু, তৃতীয় দাস কোনো পরিশ্রম করে না। তাই, তার প্রভু তাকে কাজ থেকে বের করে দেন।

৮. কেন প্রথম দাস অনেক খুশি হয়েছিল?

প্রভু যখন তার প্রথম দাসকে পাঁচ তালন্ত দিয়েছিলেন, তখন সে অনেক খুশি হয়েছিল। তার এই বিষয়ে ভালো লেগেছিল যে, তার প্রভু তার উপর নির্ভর করেন। এটা দেখে দ্বিতীয় দাস হতাশ হয়ে পড়তে পারত কারণ সে প্রথম দাসের চেয়ে কম তালন্ত লাভ করেছিল। কিন্তু কী মনে হয়, সে কি হতাশ হয়ে পড়েছিল?

যিশুর বলা দৃষ্টান্তে দ্বিতীয় দাসের কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (১) প্রভু তাকে দুই তালন্ত দিয়েছিলেন। (২) সে পরিশ্রম করে আরও টাকা অর্জন করেছিল। (৩) সে তার প্রভুর কাছ থেকে যা পেয়েছিল, সেটা দ্বিগুণ করেছিল। (৯-১১ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৯. দ্বিতীয় দাস কী করেনি? (মথি ২৫:২২, ২৩)

মথি ২৫:২২, ২৩ পদ পড়ুন। দৃষ্টান্তে এমনটা কোথাও উল্লেখ করা হয়নি যে, দ্বিতীয় দাস রেগে গিয়েছিল কিংবা হতাশ হয়ে পড়েছিল। এ ছাড়া, সে এমনটা বলেনি, “প্রভু প্রথম দাসকে পাঁচ তালন্ত দিয়েছেন আর আমাকে মাত্র দুই তালন্ত দিয়েছেন! আমি কি ওর মতো যোগ্য নই? প্রভু যদি আমার কাজকে গুরুত্ব না-ই দেন, তা হলে কেন আমি তার জন্য পরিশ্রম করব? আমি নিজের জন্য কাজ করব।”

১০. দ্বিতীয় দাস কী করেছিল?

১০ প্রথম দাসের মতো দ্বিতীয় দাসও অনেক পরিশ্রম করেছিল। সে তার প্রভুর কাছ থেকে যা পেয়েছিল, সেটাকে দ্বিগুণ করেছিল। এটা দেখে তার প্রভু খুব খুশি হয়েছিলেন। প্রভু দ্বিতীয় দাসের প্রশংসা করেছিলেন এবং তাকে আরও দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

১১. কীভাবে আমরা যিহোবার সেবায় আরও আনন্দ লাভ করতে পারি?

১১ দ্বিতীয় দাসের মতো আমাদেরও যে-কাজ দেওয়া হয়ে থাকে, সেটা আমাদের মনপ্রাণ দিয়ে করতে হবে। আমাদের ‘সমস্ত সময়ে’ প্রচার কাজ করতে হবে এবং মণ্ডলীর প্রতিটা কাজে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য করতে হবে। (প্রেরিত ১৮:৫; ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) আমাদের সভাতে মন্তব্য করার এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অংশ তুলে ধরার সময়ও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের যদি মণ্ডলীতে কোনো কাজ দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে সেটা সঠিক সময়ে এবং ভালোভাবে করতে হবে। কোনো কাজকেই আমাদের ছোটো বলে মনে করা উচিত নয়। (হিতো. ২২:২৯) আমরা যখন যিহোবার সেবায় কঠোর পরিশ্রম করব, তখন তাঁর সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গভীর হবে। আর আমরা আরও আনন্দ লাভ করব। (গালা. ৬:৪) এ ছাড়া, যখন কেউ সেই দায়িত্ব লাভ করে, যেটা আমরা পেতে চাই, তখন আমরা তার সঙ্গে আনন্দ করতে পারব।—রোমীয় ১২:১৫; গালা. ৫:২৬.

১২. বোন মঞ্জু ও ভাই নিক নিজেদের আনন্দ বৃদ্ধি করার জন্য কী করেছিলেন?

১২ অনুচ্ছেদ ২-এ উল্লেখিত বোন মঞ্জু কী করেছিলেন, তা লক্ষ করুন। যদিও তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি, তবে তিনি বলেন: “আমি অগ্রগামী সেবার উপর আমার সম্পূর্ণ মনোযোগ দিই আর প্রচার করার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করার চেষ্টা করি। এতে আমি অনেক আনন্দ পাই।” অনুচ্ছেদ ৩-এ উল্লেখিত ভাই নিকও এমনই কিছু করেছিলেন। যদিও তিনি এক সময় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন, তবে তিনি নিজের আনন্দ বৃদ্ধি করার জন্য কিছু করেছিলেন। ভাই বলেন: “আমি সেটাই করি, যেটা আমি করতে পারতাম। আমি প্রচার কাজ চালিয়ে যাই আর সভাতে ভালোভাবে মন্তব্য করার চেষ্টা করে চলি। আমি বেথেলে সেবা করার জন্য আবেদনও করি। আর পরের বছরই আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।”

১৩. আমরা যদি মনপ্রাণ দিয়ে আমাদের দায়িত্বগুলো পালন করি, তা হলে কী হবে? (উপদেশক ২:২৪)

১৩ আমরা যে-দায়িত্বগুলো পেয়েছি, সেগুলো যদি মনপ্রাণ দিয়ে করি, তা হলে ভাই নিকের মতো ভবিষ্যতে আমরা আরও দায়িত্ব লাভ করতে পারব। কিন্তু, আমরা যদি আরও দায়িত্ব না পাই, তখনও বোন মঞ্জুর মতো যিহোবার সেবায় আনন্দ ও সন্তুষ্টি লাভ করব। (পড়ুন, উপদেশক ২:২৪.) আমরা এই বিষয়েও আনন্দিত হব যে, আমাদের পরিশ্রম দেখে আমাদের প্রভু যিশু খ্রিস্ট আনন্দিত।

আনন্দ লাভ করতে পারবেন এমন লক্ষ্যগুলো স্থাপন করুন

১৪. যিহোবার সেবায় আমাদের কী করতে হবে?

১৪ আমরা যদি মনপ্রাণ দিয়ে যিহোবার সেবা করে থাকি, তা হলে আমাদের কি তাতেই আনন্দিত থাকা উচিত এবং অন্য কোনো লক্ষ্য স্থাপন করা উচিত নয়? এমনটা নয়। যিহোবার সেবায় আমাদের সবসময় কিছু লক্ষ্য স্থাপন করতে হবে। আমাদের এমন লক্ষ্যগুলো স্থাপন করতে হবে, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা একজন উত্তম প্রচারক ও শিক্ষক হতে পারব এবং আমাদের ভাই-বোনদের সাহায্য করতে পারব। আমরা এই লক্ষ্যগুলো তখনই অর্জন করতে পারব, যখন আমরা নিজেদের উপর নয় বরং নম্র হয়ে অন্যদের সেবা করার উপর মনোযোগ রাখব।—হিতো. ১১:২; প্রেরিত ২০:৩৫.

১৫. কোন লক্ষ্যগুলো স্থাপন করার মাধ্যমে আপনি আরও আনন্দ লাভ করতে পারবেন?

১৫ আপনি কোন লক্ষ্যগুলো স্থাপন করতে পারেন? আপনি সহায়ক অগ্রগামী হিসেবে কিংবা নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে অথবা বেথেলে সেবা করার লক্ষ্য স্থাপন করতে পারেন। এ ছাড়া, আপনি নির্মাণ প্রকল্পে অংশ নেওয়ার লক্ষ্য স্থাপন করতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, আপনি একটা নতুন ভাষা শেখার কিংবা এমন এলাকায় গিয়ে প্রচার করার কথা চিন্তা করতে পারেন, যেখানে বেশি প্রকাশকের প্রয়োজন রয়েছে। এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করার জন্য আপনাকে কী করতে হবে, তা জানার জন্য যিহোবার ইচ্ছা পালন করার জন্য সংগঠিত (ইংরেজি) বইয়ের ১০ অধ্যায় পড়ুন এবং মণ্ডলীর প্রাচীনদের সঙ্গে কথা বলুন। * যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন আর তাঁকে জিজ্ঞেস করুন, কোন লক্ষ্যগুলো স্থাপন করা আপনার জন্য সঠিক হবে। (হিতো. ১৬:৩; যাকোব ১:৫) আপনি যখন এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করার জন্য পরিশ্রম করবেন, তখন অন্যেরা দেখতে পাবে যে, আপনি উন্নতি করছেন। এতে আপনি আরও আনন্দ লাভ করতে পারবেন।

১৬. আপনি যদি একটা লক্ষ্য অর্জন করতে না পারেন, তা হলে আপনি কী করতে পারেন?

১৬ আপনার পরিস্থিতির কারণে আপনি যদি উপরে উল্লেখিত লক্ষ্যগুলোর মধ্যে একটাও লক্ষ্য স্থাপন করতে না পারেন, তা হলে আপনি অন্য কোনো লক্ষ্য স্থাপন করতে পারেন, যেটা আপনি অর্জন করতে পারবেন।

আপনি এমন কোন লক্ষ্য স্থাপন করতে পারেন, যেটা আপনি অর্জন করতে পারেন? (১৭ অনুচ্ছেদ দেখুন) *

১৭. প্রথম তীমথিয় ৪:১৩, ১৫ পদ অনুযায়ী একজন ভাই উত্তম শিক্ষক হওয়ার জন্য কী করতে পারেন?

১৭ প্রথম তীমথিয় ৪:১৩, ১৫ পদ পড়ুন। আপনি যদি একজন ভাই হয়ে থাকেন আর আপনার যদি বাপ্তিস্ম নেওয়া হয়ে গিয়ে থাকে, তা হলে আপনি কথা বলার ও শিক্ষা দেওয়ার ক্ষমতাকে উন্নত করতে পারেন। কেন? কারণ আপনি যদি পড়ার ও কথা বলার এবং শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে “নিবিষ্ট” থাকেন, তা হলে আপনার শ্রোতারা তা থেকে উপকৃত হবে। পড়ার ও শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা করে চলুন শিরোনামের ব্রোশারটা অধ্যয়ন করার লক্ষ্য স্থাপন করুন। এক এক করে প্রতিটা গুণের বিষয়ে পড়ুন আর সেখানে দেওয়া পরামর্শগুলো মনে রেখে প্র্যাকটিস করুন আর বক্তৃতা দিন। সহায়ক পরামর্শদাতা কিংবা অন্য কোনো প্রাচীনের দেওয়া পরামর্শগুলো কাজে লাগান, “যারা ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে কথা বলার এবং শিক্ষা দেওয়ার কাজে কঠোর পরিশ্রম করেন।” * (১ তীম. ৫:১৭) এর পাশাপাশি, আপনার শ্রোতাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য চিন্তা করুন কিংবা তাদের কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করুন। আপনি যদি তা করেন, তা হলে আপনার ও সেইসঙ্গে অন্যদের আনন্দ বৃদ্ধি পাবে।

আপনি এমন কোন লক্ষ্য স্থাপন করতে পারেন, যেটা আপনি অর্জন করতে পারেন? (১৮ অনুচ্ছেদ দেখুন) *

১৮. প্রচার করার ক্ষেত্রে কীভাবে আমরা আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারি?

১৮ প্রত্যেক খ্রিস্টানকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ দেওয়া হয়েছে আর সেটা হল, প্রচার করা ও শিষ্য তৈরি করা। (মথি ২৮:১৯, ২০; রোমীয় ১০:১৪) এই কাজ ভালোভাবে করার জন্য আমরা কিছু লক্ষ্য স্থাপন করতে পারি। আমরা সেই লক্ষ্যগুলো অর্জন করার জন্য শিক্ষা দেওয়া ব্রোশার পড়তে পারি আর সেখানে দেওয়া পরামর্শগুলো কাজে লাগাতে পারি। আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা এবং “কথোপকথনের নমুনা” হিসেবে দেওয়া ভিডিওগুলোতে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমরা সেগুলোর মধ্যে থেকে যেকোনো পরামর্শ কাজে লাগাতে পারি। আমরা যদি তা করি, তা হলে আমরা একজন উত্তম শিক্ষক হয়ে উঠতে পারব আর এতে আমরা অনেক আনন্দ লাভ করব।—২ তীম. ৪:৫.

আপনি এমন কোন লক্ষ্য স্থাপন করতে পারেন, যেটা আপনি অর্জন করতে পারেন? (১৯ অনুচ্ছেদ দেখুন) *

১৯. কীভাবে আপনি এমন গুণগুলো বৃদ্ধি করতে পারেন, যেগুলো যিহোবা পছন্দ করেন?

১৯ একটা লক্ষ্য রয়েছে, যেটা আমাদের প্রত্যেকের রাখা উচিত। সেটা হল এমন গুণগুলো বৃদ্ধি করা, যেগুলো যিহোবা পছন্দ করেন। (গালা. ৫:২২, ২৩; কল. ৩:১২; ২ পিতর ১:৫-৮) যেমন, বিশ্বাস। কীভাবে আপনি এই গুণ বৃদ্ধি করতে পারেন? আপনি আমাদের বিভিন্ন প্রকাশনায় দেওয়া প্রবন্ধ পড়তে পারেন এবং সেখানে দেওয়া পরামর্শগুলো কাজে লাগাতে পারেন। আপনি JW ব্রডকাস্টিং দেখতে পারেন। সেখানে এমন ভাই-বোনদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে, যারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী রেখেছিল। এরপর, আপনি তাদের মতো হওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।

২০. আমরা আরও আনন্দ লাভ করার জন্য কী করতে পারি?

২০ বর্তমানে, আমরা যিহোবার সেবায় অনেক কিছু করতে চাই। তবে, আমাদের পক্ষে তা করা সম্ভব না-ও হতে পারে। ঈশ্বরের নতুন জগতে কোনো বিষয় আমাদের বাধা দিতে পারবে না। সেই সময় না আসা পর্যন্ত আমরা এখন যা করতে পারছি, সেটা যদি মনপ্রাণ দিয়ে করি, তা হলে আমরা হতাশ হব না বরং আরও আনন্দ লাভ করব। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আমরা আমাদের ‘সুখী ঈশ্বর’ যিহোবার সমাদর ও গৌরব করতে পারব। (১ তীম. ১:১১) তাই আসুন, আমরা প্রত্যেকে যিহোবার সেবায় যে-দায়িত্ব পেয়েছি, তাতে আনন্দ লাভ করি।

গান ৪৫ এগিয়ে চলো!

^ অনু. 5 আমরা যিহোবাকে অনেক ভালোবাসি। তাই, আমরা তাঁর সেবায় অনেক কিছু করতে চাই। আমরা হয়তো লক্ষ্য স্থাপন করেছি, আমরা আরও বেশি প্রচার কাজ করব কিংবা মণ্ডলীতে আরও দায়িত্ব পাওয়ার চেষ্টা করব। কিন্তু, পরিশ্রম করার পরও আমরা হয়তো আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারি না। এইরকম ক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি, যাতে আমরা আমাদের আনন্দ বজায় রাখতে ও যিহোবার সেবা চালিয়ে যেতে পারি? যিশু তালন্তের যে-দৃষ্টান্ত দিয়েছিলেন, সেখান থেকে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাব।

^ অনু. 2 কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

^ অনু. 7 এই অভিব্যক্তির অর্থ: এক তালন্ত, একজন সাধারণ মজুরের প্রায় ২০ বছরের বেতন ছিল।

^ অনু. 15 যে-ভাইদের বাপ্তিস্ম নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাদের উৎসাহিত করা হয়ে থাকে, তারা যেন একজন পরিচারক দাস ও প্রাচীন হওয়ার লক্ষ্য স্থাপন করে। এরজন্য কোন যোগ্যতাগুলোর প্রয়োজন রয়েছে, তা জানার জন্য তারা যিহোবার ইচ্ছা পালন করার জন্য সংগঠিত বইয়ের ৬ অধ্যায় পড়তে পারে।

^ অনু. 17 এই অভিব্যক্তির অর্থ: মণ্ডলীর একজন প্রাচীনকে সহায়ক পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তার দায়িত্ব হল, প্রাচীন ও পরিচারক দাসেরা মণ্ডলীতে যে-সমস্ত কার্যভার তুলে ধরেন, সেই বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শ দেওয়া। আর তিনি প্রয়োজনে এমনটা করেন।

^ অনু. 64 ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: একজন ভাই উত্তম শিক্ষক হওয়ার লক্ষ্য স্থাপন করেছেন। এরজন্য ভাই একটা প্রকাশনা পড়ছেন।

^ অনু. 66 ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: একজন বয়স্ক বোন আলাদা আলাদা সময়ে সাক্ষ্য দেওয়ার লক্ষ্য স্থাপন করেছেন। তিনি হোটেলে একটি মেয়েকে কনট্যাক্ট কার্ড দিচ্ছেন।

^ অনু. 68 ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: একজন বোন উদার হওয়ার লক্ষ্য স্থাপন করেছেন। তিনি অন্য বোনের জন্য কিছু তৈরি করে নিয়ে এসেছেন।