সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩৫

বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্যবান হিসেবে দেখুন

বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্যবান হিসেবে দেখুন

“পক্ব কেশ শোভার মুকুট।”—হিতো. ১৬:৩১.

গান ৪ ঈশ্বরের কাছে সুনাম অর্জন করা

সারাংশ *

১-২. (ক) হিতোপদেশ ১৬:৩১ পদ অনুযায়ী আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনদের কীভাবে দেখা উচিত? (খ) এই প্রবন্ধে আমরা কোন প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করব?

যুক্তরাষ্ট্রের একটা পার্কে অনেক হিরে পড়ে থাকে। কিন্তু, লোকেরা হয়তো সেগুলোর উপর মনোযোগ দেয় না কারণ সেগুলো পালিশ করা থাকে না। আর সেগুলো দেখতে পাথরের মতো।

সেই হিরেগুলোর মতো আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনেরাও মূল্যবান। বাইবেলে লেখা রয়েছে, তাদের পক্বকেশ শোভার মুকুটের মতো। (পড়ুন, হিতোপদেশ ১৬:৩১; হিতো. ২০:২৯) আমরা হয়তো তাদের উপেক্ষা করি। কিন্তু, আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্যবান হিসেবে দেখা উচিত। অপেক্ষাকৃত কমবয়সি ভাই-বোনেরা যদি তাদের মূল্যবান হিসেবে দেখে, তা হলে তারা সেই বয়স্ক ভাই-বোনদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে। এই প্রবন্ধে তিনটে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে: কেন যিহোবা আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্যবান হিসেবে দেখেন? যিহোবার সংগঠনে তাদের কোন মূল্য রয়েছে? তাদের কাছ থেকে শেখার জন্য আমাদের কী করতে হবে?

কেন যিহোবা বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্যবান হিসেবে দেখেন?

বয়স্ক ভাই-বোনেরা যিহোবা ও আমাদের কাছে অনেক মূল্যবান (৩ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৩. গীতসংহিতা ৯২:১২-১৫ পদ অনুযায়ী কেন যিহোবা বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্যবান হিসেবে দেখেন?

আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনেরা যিহোবার কাছে খুবই মূল্যবান। তিনি জানেন, তাদের মধ্যে ভালো ভালো গুণ রয়েছে। যেমন, অনেক বছর ধরে যিহোবার সেবা করে চলার মাধ্যমে তারা প্রজ্ঞা অর্জন করেছে। তাই, তারা যখন ছোটো ছেলে-মেয়ে ও যুবক-যুবতীদের ভালো পরামর্শ দেয়, তখন তা দেখে যিহোবা খুব খুশি হন। (ইয়োব ১২:১২; হিতো. ১:১-৪) যিহোবা এও জানেন, তারা সারাজীবন ধৈর্য ধরেছে। (মালাখি ৩:১৬) অনেক কঠিন পরিস্থিতি থাকা সত্ত্বেও, তারা যিহোবার উপর তাদের বিশ্বাসকে মজবুত রেখেছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের কাছে নতুন জগতে বেঁচে থাকার আশা আগের চেয়ে আরও বেশি দৃঢ় হয়ে গিয়েছে। তারা ‘তাদের বৃদ্ধ বয়সেও’ যিহোবার নাম ঘোষণা করে থাকে। এইজন্য, যিহোবা তাদের অনেক ভালোবাসেন।—পড়ুন, গীতসংহিতা ৯২:১২-১৫.

৪. বয়স্ক ভাই-বোনেরা কোন বিষয়গুলো থেকে উৎসাহ লাভ করতে পারে?

আপনি যদি একজন বয়স্ক ভাই কিংবা বোন হয়ে থাকেন, তা হলে আস্থা রাখুন যে, আপনি এই পর্যন্ত যিহোবার সেবায় যা-কিছু করেছেন, সেগুলো যিহোবা ভুলে যাননি। (ইব্রীয় ৬:১০) আপনি উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার কাজ করেছেন। বিভিন্ন কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরেছেন। বাইবেলের নীতি অনুযায়ী জীবনযাপন করেছেন। যিহোবার সংগঠনে আপনি বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন আর অন্যদেরও আলাদা আলাদা কাজ করতে শিখিয়েছেন। সংগঠনে যখন কোনো রদবদল হয়েছে, তখন আপনি সেই অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন করেছেন। যারা পূর্ণসময়ের সেবা করেছে, তাদের আপনি উৎসাহিত করেছেন। আপনার এই বিশ্বস্ততা দেখে যিহোবা অনেক আনন্দিত আর তিনি আপনাকে খুব ভালোবাসেন। যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন: “তিনি আপন সাধুগণকে [“অনুগত ব্যক্তিদের,” NW] পরিত্যাগ করেন না।” (গীত. ৩৭:২৮) শুধু তা-ই নয়, তিনি এও আশ্বাস দিয়েছেন: “পক্বকেশ হওয়া পর্য্যন্ত আমিই তুলিয়া বহন করিব।” (যিশা. ৪৬:৪) তাই, আপনার বয়স যদি বৃদ্ধি পেতে থাকে, তা হলে এমনটা চিন্তা করবেন না যে, যিহোবার সংগঠনে আপনার আর কোনো প্রয়োজন নেই। আপনার সত্যিই অনেক মূল্য রয়েছে!

যিহোবার সংগঠনে বয়স্ক ভাই-বোনদের মূল্য রয়েছে

৫. বয়স্ক ভাই-বোনদের কোন বিষয়টা মনে রাখতে হবে?

যদিও বয়স্ক ভাই-বোনদের আগের মতো শক্তি নেই, তারপরও তাদের জীবনের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই, যিহোবার সংগঠনে তারা এখনও অনেক কিছু করতে পারে। এটা জানার জন্য আসুন, অতীত ও বর্তমান সময়ের বয়স্ক ব্যক্তিদের উদাহরণের উপর মনোযোগ দিই।

৬-৭. (ক) এমন ব্যক্তিদের উদাহরণ দিন, যারা বয়সকালে যিহোবার সেবা করে গিয়েছিলেন। (খ) শিমিয়োন ও হান্না তাদের বিশ্বস্ততার কারণে কোন পুরস্কার লাভ করেছিলেন?

বাইবেলে এমন অনেক ব্যক্তির উদাহরণ রয়েছে, যারা বয়সকালেও যিহোবার সেবা করে গিয়েছিল। যেমন, মোশির বয়স যখন ৮০ বছর, তখন যিহোবা তাকে একজন ভাববাদী আর ইজরায়েলের নেতা হিসেবে বাছাই করেছিলেন। দানিয়েলের বয়স ৯০ বছরেরও বেশি হয়ে গিয়েছিল, তা সত্ত্বেও যিহোবা তাকে ভাববাদী হিসেবে ক্রমাগত ব্যবহার করেছিলেন। আর যখন যিহোবা প্রেরিত যোহনকে প্রকাশিত বাক্য বই লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন, তখন তারও বয়স ৯০ বছরের বেশি ছিল।

অতীতে এমন অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ছিল, যাদের বিষয়ে বাইবেলে বেশি কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তারপরও, যিহোবা তাদের প্রতি মনোযোগ দিয়েছিলেন এবং তাদের বিশ্বস্ততার জন্য পুরস্কার দিয়েছিলেন। আসুন, এই বিষয়ে দুটো উদাহরণ লক্ষ করি। প্রথমত, শিমিয়োনের। তিনি একজন “ধার্মিক ও ঈশ্বরভয়শীল” ব্যক্তি ছিলেন, তাই যিহোবা তাকে এক বিশেষ সুযোগ দিয়েছিলেন। শিমিয়োন শিশু যিশুকে দেখেছিলেন আর তিনি যিশু ও তাঁর মায়ের বিষয়ে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন। (লূক ২:২২, ২৫-৩৫) দ্বিতীয় উদাহরণ হল, ভাববাদিনী হান্নার। তার বয়স ৮৪ বছর ছিল আর তিনি একজন বিধবা ছিলেন। তা সত্ত্বেও, “তিনি কখনো মন্দিরে আসা বাদ দিতেন না।” তার এই বিশ্বস্ততার জন্য যিহোবা তাকে পুরস্কার দিয়েছিলেন। তিনিও শিশু যিশুকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। শিমিয়োন ও হান্না দু-জনেই যিহোবার কাছে খুব মূল্যবান ছিলেন।—লূক ২:৩৬-৩৮.

বর্তমানে, বোন লোয়িসের বয়স ৮১ বছর। তারপরও, তিনি উদ্যোগের সঙ্গে যিহোবার সেবা করে চলেছেন (৮ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৮-৯. কিছু বোন তাদের স্বামীদের মৃত্যুর পরও কী করে চলেছে?

বর্তমানেও, এমন অনেক বয়স্ক ভাই-বোন রয়েছে, যারা কমবয়সিদের জন্য উত্তম উদাহরণ। বোন লোয়িস ডিডরের উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন। তার বয়স যখন ২১ বছর, তখন তিনি কানাডায় একজন বিশেষ অগ্রগামী হিসেবে সেবা করতে শুরু করেন। পরে, তার স্বামী জন অনেক বছর ধরে একজন সীমা অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন এবং সেই সময়ে বোন তাকে সহযোগিতা করেন। পরে, তারা কানাডা বেথেলে যান। সেখানে তারা প্রায় ২০ বছর ধরে সেবা করেন। বোনের বয়স যখন ৫৮ বছর, তখন তাদের দু-জনকে ইউক্রেনে সেবা করার জন্য বলা হয়। তারা কী করেন? তারা কি এইরকম চিন্তা করেন, তাদের বয়স হয়ে গিয়েছে আর অন্য দেশে গিয়ে সেবা করতে পারবেন না? না, তারা এইরকমটা চিন্তা করেননি। তারা দু-জনে ইউক্রেনে যান আর ভাই জনকে সেখানকার শাখা কমিটি-র একজন সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। সাত বছর পর, ভাই জন মারা যান। তারপরও, বোন ইউক্রেনে থেকে সেবা করার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে, বোন লোয়িসের বয়স ৮১ বছর আর তিনি আনন্দের সঙ্গে বেথেলে সেবা করছেন। ইউক্রেন বেথেলের ভাই-বোনেরা তাকে খুব ভালোবাসে।

লোয়িসের মতো এমন অনেক বোন রয়েছে, যাদের স্বামী মারা গিয়েছে। অন্যেরা হয়তো তাদের প্রতি আগের মতো আর মনোযোগ দেয় না। কিন্তু, যিহোবার কাছে এই বোনেরা খুবই মূল্যবান। তারা অনেক বছর ধরে নিজ নিজ স্বামীদের সহযোগিতা করেছে আর তারা এখনও যিহোবার সেবা করে চলেছে। তাই, যিহোবা তাদের অনেক মূল্যবান হিসেবে দেখেন। (১ তীম. ৫:৩) এই বোনেরা কমবয়সিদের জন্য এক উত্তম উদাহরণ।

১০. ভাই টোনির কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১০ এমন অনেক ভাই-বোন রয়েছে, যারা বৃদ্ধাশ্রমে কিংবা নার্সিং হোমে থাকে। তা সত্ত্বেও, যিহোবার সংগঠনে তাদের অনেক মূল্য রয়েছে। এর একটা উদাহরণ হল ভাই টোনির। ১৯৪২ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে তার বাপ্তিস্ম হয়। সেইসময় তার বয়স ছিল ২০ বছর। এর কিছু সময় পর, তাকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এই কারণে তাকে আড়াই বছরের জন্য জেলে বন্দি করে রাখা হয়। পরে, বোন হিল্ডার সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং তাদের দুই সন্তান হয়। তারা সন্তানদের ছোটোবেলা থেকে যিহোবা সম্বন্ধে শেখান। ভাই টোনি তিনটে মণ্ডলীর পরিচালক অধ্যক্ষ ছিলেন (বর্তমানে, এটাকে প্রাচীনগোষ্ঠীর কোঅর্ডিনেটর বলা হয় থাকে) আর তিনি সীমা সম্মেলনের অধ্যক্ষও ছিলেন। তিনি একটা জেলে গিয়ে অনেক লোককে বাইবেল অধ্যয়ন করিয়েছিলেন আর সভাও পরিচালনা করেছিলেন। এখন ভাই টোনির বয়স ৯৮ বছর আর তিনি নিজের মণ্ডলীতে ভাই-বোনদের সঙ্গে একত্রে উদ্যোগ সহকারে যিহোবার সেবা করে চলেছেন।

১১. আমরা বয়স্ক ভাই-বোনদের কীভাবে মূল্যবান হিসেবে দেখতে পারি?

১১ যে-বয়স্ক ভাই-বোনেরা বৃদ্ধাশ্রম কিংবা নার্সিং হোমে থাকে অথবা এমন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে থাকে, যারা সত্যে নেই, তাদের মূল্যবান হিসেবে আমাদের দেখা উচিত। কীভাবে? প্রাচীনেরা এমন ব্যবস্থা করতে পারেন, যাতে তারা সভাতে আসতে পারে কিংবা সভা শুনতে পারে অথবা প্রচার করতে পারে। আমাদের সবারই তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া উচিত কিংবা ভিডিও কলের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। যে-বয়স্ক ভাই-বোনেরা অনেক দূরে থাকে, আমরা তাদের ভুলে যেতে পারি। কিন্তু, আমাদের তাদের প্রতিও মনোযোগ দেওয়া উচিত। কিছু বয়স্ক ভাই-বোন নিজের সম্বন্ধে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করে। এইজন্য, আমাদের তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা উচিত। আর তারা যখন আমাদের বলে যে, যিহোবার সংগঠনে তারা কী কী করেছে আর কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করেছে, তখন তাদের কথা আমাদের মন দিয়ে শোনা উচিত। এভাবে আমরা তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব।

১২. মণ্ডলীর বয়স্ক ভাই-বোনদের সঙ্গে কথা বললে, আপনি কী জানতে পারবেন?

১২ আমরা যখন নিজেদের মণ্ডলীর বয়স্ক ভাই-বোনদের সঙ্গে কথা বলব, তখন হতে পারে আমরা তাদের অপূর্ব অভিজ্ঞতা শুনে অবাক হয়ে যাব। বোন হ্যারিয়েটের উদাহরণ লক্ষ করুন। বোন অনেক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির এক মণ্ডলীতে সেবা করেন। পরে, তিনি নিজের মেয়ের কাছে থাকার জন্য চলে যান। সেখানকার মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা তার সঙ্গে সময় কাটায় এবং তাকে জানার জন্য চেষ্টা করে। সেই ভাই-বোনেরা জানতে পারে, তাদের জন্য বোন কত উত্তম এক উদাহরণ। বোন হ্যারিয়েট তাদের বলেন, প্রায় ১৯২৫ সালে সত্য শেখার পর তিনি কীভাবে প্রচার কাজ করেছিলেন। যখনই তিনি প্রচারে যেতেন, তখনই তিনি নিজের সঙ্গে করে টুথব্রাশ নিয়ে যেতেন কারণ তিনি জানতেন না যে, কখন তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। ১৯৩৩ সালে বোনকে দু-বার জেলে বন্দি করা হয়েছিল আর দু-বারই তাকে পুরো এক সপ্তাহ জেলে কাটাতে হয়েছিল। সেই সময়ে তার স্বামী, যিনি সত্যে ছিলেন না, সন্তানদের যত্ন নিয়েছিলেন। সত্যিই, হ্যারিয়েটের মতো বয়স্ক ভাই-বোনেরা আমাদের কাছে মূল্যবান রত্নের মতো!

১৩. যিহোবার সংগঠনে বয়স্ক ভাই-বোনদের কতটা মূল্য রয়েছে?

১৩ আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনেরা যিহোবার কাছে অনেক মূল্যবান এবং তাঁর সংগঠনেও তাদের অনেক মূল্য রয়েছে। এই ভাই-বোনেরা দেখেছে, কীভাবে যিহোবা তাঁর সংগঠনের বিভিন্ন কাজে আশীর্বাদ দিয়েছেন এবং তাদেরও আশীর্বাদ দিয়েছেন। তারা নিজেদের ভুল থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা লাভ করেছে। এই ভাই-বোনেরা আমাদের কাছে ‘প্রজ্ঞার উৎসের’ মতো। (হিতো. ১৮:৪) তাই, আমরা যদি সময় বের করে তাদের জানার চেষ্টা করি, তা হলে আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী হবে আর আমরা তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারব।

বয়স্ক ভাই-বোনদের কাছ থেকে শিখুন

ইলীশায় এলিয়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছিলেন। ঠিক একইভাবে, আমরা বয়স্ক ভাই-বোনদের অভিজ্ঞতা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি (১৪-১৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৪. দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৭ পদে যেমনটা লেখা রয়েছে, কমবয়সি ভাই-বোনদের কী করা উচিত?

১৪ বয়স্ক ভাই-বোনদের সঙ্গে দেখা করুন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলুন। (পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৩২:৭.) যদিও তারা আগের মতো ভালোভাবে দেখতে পায় না, হাঁটাচলা করতে পারে না আর ধীরে ধীরে কথা বলে, কিন্তু এখনও তাদের মধ্যে যিহোবাকে সেবা করার উদ্যোগ রয়েছে। আর তারা যিহোবার দৃষ্টিতে “সুখ্যাতি” অর্থাৎ এক ভালো নাম অর্জন করেছে। (উপ. ৭:১) মনে রাখবেন, কেন যিহোবা তাদের মূল্যবান হিসেবে দেখেন। তাদের সমাদর করুন। ইলীশায়ের মতো হোন। যখন এলিয় তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন, তখন ইলীশায় তিন বার এলিয়কে বলেছিলেন: “আমি আপনাকে ছাড়িব না।”—২ রাজা. ২:২, ৪, ৬.

১৫. আমরা বয়স্ক ভাই-বোনদের কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি?

১৫ আপনি যখন বয়স্ক ভাই-বোনদের সঙ্গে কথা বলেন, তখন সম্মানের সঙ্গে তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন। (হিতো. ১:৫; ২০:৫; ১ তীম. ৫:১, ২) যেমন: “কোন বিষয়টা থেকে আপনি নিশ্চিত হয়েছেন যে, এটাই হল সত্য?” “আপনার জীবনে এমন কী ঘটেছিল, যেটা আপনাকে যিহোবার আরও নিকটবর্তী হতে সাহায্য করেছে?” “আপনি যিহোবার সেবায় সবসময় আনন্দিত থাকেন, এর রহস্য কী?” (১ তীম. ৬:৬-৮) এরপর, তারা যখন তাদের অভিজ্ঞতা শোনান, তখন তাদের কথা মন দিয়ে শুনুন।

১৬. বয়স্ক ভাই-বোনদের সঙ্গে কথা বললে কী হবে?

১৬ কমবয়সিরা, আপনারা যখন বয়স্ক ভাই-বোনদের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন এটা থেকে শুধু আপনারাই উৎসাহিত হবেন না, কিন্তু সেইসঙ্গে তারাও উৎসাহিত হবে। (রোমীয় ১:১২) আপনারা নিশ্চিত হবেন, যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকদের যত্ন নেন। আর বয়স্ক ভাই-বোনেরা জানতে পারবে, আপনারা তাদের অনেক ভালোবাসেন। সেই বয়স্ক ভাই-বোনেরা এটা বলে অনেক খুশি হবে যে, যিহোবা তাদের কোন কোন আশীর্বাদ দিয়েছেন।

১৭. বছর গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ভাই-বোনেরা কোন অর্থে আরও সুন্দর হয়ে ওঠে?

১৭ বছর গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু, যে-লোকেরা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকে, তাদের ভিতরের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। (১ থিষল. ১:২, ৩) কেন এমনটা হয়? কারণ বয়স্ক ভাই-বোনেরা ঈশ্বরের পবিত্র শক্তির সাহায্যে ভালো ভালো গুণ গড়ে তুলতে পেরেছে। আমরা যতবেশি সেই ভাই-বোনদের জানব, তাদের সমাদর করব আর তাদের কাছ থেকে শিখব, ততবেশি আমরা তাদের মূল্যবান হিসেবে দেখব।

১৮. পরবর্তী প্রবন্ধে আমরা কী শিখব?

১৮ শুধু যে কমবয়সিরাই বয়স্ক ব্যক্তিদের মূল্যবান হিসেবে দেখবে এমন নয়, কিন্তু বয়স্ক ব্যক্তিদেরও কমবয়সিদের মূল্যবান হিসেবে দেখা উচিত। তা হলেই, মণ্ডলীর একতা বৃদ্ধি পাবে। পরবর্তী প্রবন্ধে আমরা শিখব, বয়স্ক ভাই-বোনেরা কমবয়সি ভাই-বোনদের কীভাবে মূল্যবান হিসেবে দেখতে পারে।

গান ২৪ পুরস্কারে তোমার চোখ রাখো!

^ অনু. 5 বয়স্ক ভাই-বোনেরা আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান। এই প্রবন্ধে আমাদের উৎসাহিত করা হয়েছে, আমরা যেন তাদের প্রতি আরও বেশি প্রেম দেখাই এবং সম্মানের সঙ্গে আচরণ করি। আমরা জানব যে, তাদের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কী শিখতে পারি। এই প্রবন্ধে আমরা এও জানব, যিহোবার সংগঠনে আমাদের বয়স্ক ভাই-বোনদের কতটা মূল্য রয়েছে। আর এটা জেনে তারা অনেক আশ্বস্ত হবে।