সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৯

যিশুর মতো অন্যদের সেবা করুন

যিশুর মতো অন্যদের সেবা করুন

“নেওয়ার চেয়ে বরং দেওয়ার মধ্যে আরও বেশি সুখ।”—প্রেরিত ২০:৩৫.

গান ২৫ শিষ্যত্বের প্রমাণ

সারাংশ *

১. যিহোবার লোকেরা কোন মনোভাব নিয়ে সেবা করে?

বাইবেলে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল যে, ঈশ্বরের লোকেরা তাঁকে সেবা করার জন্য “স্বেচ্ছায় দত্ত উপহার হইবে” অর্থাৎ স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসবে। (গীত. ১১০:৩) তারা যিশুর অধীনে থেকে তা করবে। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী বর্তমানে পরিপূর্ণ হচ্ছে। প্রতি বছর, যিহোবার উদ্যোগী উপাসকেরা সুসমাচার প্রচার করার জন্য লক্ষ লক্ষ ঘণ্টা ব্যয় করে। এই কাজের জন্য তারা কোনো টাকাপয়সা পায় না বরং স্বেচ্ছায় তা করে থাকে। এ ছাড়া, তারা একে অন্যকে সাহায্য করার, উৎসাহিত করার এবং একে অন্যের বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য সময় বের করে। প্রাচীন ও পরিচারক দাসেরাও অন্যদের সেবা করার জন্য অনেক ঘণ্টা ব্যয় করেন। যেমন, তারা সভায় নিজেদের অংশ তুলে ধরার জন্য প্রস্তুতি নেন এবং ভাই-বোনদের সঙ্গে দেখা করে তাদের উৎসাহিত করেন। কেন ঈশ্বরের লোকেরা এত পরিশ্রম করে? কারণ তারা যিহোবাকে এবং তাদের প্রতিবেশীকে ভালোবাসে।—মথি ২২:৩৭-৩৯.

২. রোমীয় ১৫:১-৩ পদে যেমনটা উল্লেখ করা হয়েছে, যিশু কোন ক্ষেত্রে এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছেন?

যিশু সবসময় নিজের বিষয়ে নয় বরং অন্যদের বিষয়ে চিন্তা করতেন। আমরাও যিশুর মতো হওয়ার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করি। (পড়ুন, রোমীয় ১৫:১-৩.) যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করার ফলে আমরা অনেক উপকার পাই। তিনি বলেছিলেন: “নেওয়ার চেয়ে বরং দেওয়ার মধ্যে আরও বেশি সুখ।”—প্রেরিত ২০:৩৫.

৩. এই প্রবন্ধে আমরা কী জানব?

এই প্রবন্ধে আমরা জানব, অন্যদের সাহায্য করার জন্য যিশু কোন কোন ত্যাগস্বীকার করেছিলেন এবং কীভাবে আমরা তাঁর মতো হতে পারি। আমরা এও জানব, আমরা কীভাবে অন্যদের সেবা করার জন্য নিজেদের আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করতে পারি।

যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করুন

যিশু অনেক ক্লান্ত ছিলেন, তা সত্ত্বেও তিনি যখন লোকদের ভিড় দেখতে পেয়েছিলেন, তখন তিনি কী করেছিলেন? (৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৪. কীভাবে যিশু দেখিয়েছিলেন যে, নিজের চেয়ে বরং অন্যদের প্রতি তাঁর বেশি চিন্তা রয়েছে?

যিশু ক্লান্ত থাকা সত্ত্বেও অন্যদের সাহায্য করেছিলেন। একবার, যিশু যখন সম্ভবত কফরনাহূমের কাছে ছিলেন, তখন তিনি সারারাত ধরে প্রার্থনা করেছিলেন। পরের দিন, তিনি হয়তো খুব ক্লান্ত ছিলেন। কিন্তু, যিশু যখন লোকদের ভিড় দেখতে পেয়েছিলেন, তখন তিনি কী করেছিলেন, তা লক্ষ করুন। তিনি দেখেছিলেন, সেই লোকদের মধ্যে অনেকে গরিব ও অসুস্থ। এটা দেখে তিনি গভীর সমবেদনা বোধ করেছিলেন। তিনি শুধু অসুস্থদের সুস্থই করেননি, কিন্তু সেইসঙ্গে এক উৎসাহজনক বক্তৃতাও দিয়েছিলেন, যেটা বর্তমানে ‘পর্বতের উপরে দেওয়া উপদেশ’ হিসেবে পরিচিত।—লূক ৬:১২-২০.

কীভাবে আমরা যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করতে পারি? (৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৫. পরিবারের মস্তকেরা ক্লান্ত থাকার পরও কী করে?

কীভাবে পরিবারের মস্তকেরা যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করে? একটা উদাহরণ লক্ষ করুন। সারা দিন কাজ করার পর, একজন ভাই ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে আসেন। তিনি চিন্তা করেন, ‘আজ নয়, অন্য একদিন পারিবারিক উপাসনা করব।’ কিন্তু, পরে তিনি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেন এবং তাঁর কাছ থেকে শক্তি চান। যিহোবা তার প্রার্থনা শোনেন এবং ভাই তার পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক উপাসনা করতে পারেন। সেই দিন সন্ধ্যা বেলায় তার সন্তানেরা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখে। তারা শেখে যে, তাদের বাবা-মায়ের কাছে যিহোবাকে উপাসনা করা হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৬. একটা উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন যে, কীভাবে যিশু লোকদের জন্য তাঁর সময় দিতেন।

যিশু লোকদের জন্য তাঁর সময় দিয়েছিলেন। একটু চিন্তা করে দেখুন, যিশু যখন খবর পেয়েছিলেন যে, তাঁর বন্ধু যোহন বাপ্তাইজকের শিরশ্ছেদ করা হয়েছে, তখন তিনি কতটা দুঃখ পেয়েছিলেন। বাইবেল বলে: “তা শুনে যিশু সেখান থেকে নৌকায় করে একটা নির্জন স্থানে চলে গেলেন, যাতে তিনি একা থাকতে পারেন।” (মথি ১৪:১০-১৩) আমরা বুঝতে পারি, কেন যিশু একা থাকতে চেয়েছিলেন। বর্তমানেও, অনেক লোক যখন শোক করে, তখন তারা কিছু সময়ের জন্য একা থাকতে চায়। কিন্তু, যিশু চাইলেও একা থাকতে পারেননি। তিনি যখন একটা নির্জন স্থানে পৌঁছালেন, তখন তিনি দেখলেন, অনেক লোকের ভিড় তাঁর কথা শোনার জন্য ইতিমধ্যে সেখানে রয়েছে। সেইসময় যিশু কী করলেন? তিনি লোকদের সম্বন্ধে চিন্তা করলেন। তিনি তাদের দেখে “গভীর সমবেদনা বোধ” করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে, তাদের ঈশ্বরকে জানার কতটা খিদে রয়েছে। তাই, তিনি তাদের অল্প কিছু বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে পাঠিয়ে দেননি। এর পরিবর্তে, “তিনি তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।”—মার্ক ৬:৩১-৩৪; লূক ৯:১০, ১১.

৭-৮. একটা উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন যে, কীভাবে প্রাচীনেরা যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করেন।

কীভাবে প্রাচীনেরা যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করেন? প্রাচীনেরা আমাদের জন্য যে-সমস্ত কাজ করে থাকেন, সেগুলোর জন্য আমরা তাদের প্রতি খুব কৃতজ্ঞ। প্রাচীনদের বেশিরভাগ কাজের বিষয়ে মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা জানে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যখন হঠাৎই কোনো ভাই কিংবা বোনের চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়, তখন হসপিটাল লিয়েইজন কমিটি-র ভাইয়েরা তাকে সাহায্য করার জন্য দ্রুত এগিয়ে আসেন। প্রায় দেখা গিয়েছে, এইরকম সমস্যা রাতের বেলায় হয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও, প্রাচীনেরা এমনটা মনে করেন না যে, এখন অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। তারা এবং তাদের পরিবার ভাই-বোনদের ভালোবাসে আর তাই ত্যাগস্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকে।

এ ছাড়া, প্রাচীনেরা কিংডম হল এবং অন্যান্য বিল্ডিং নির্মাণ করার আর সেইসঙ্গে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর কাজে অংশ নিয়ে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, তারা মণ্ডলীর ভাই-বোনদের শেখানোর এবং উৎসাহিত করার জন্য অনেক ঘণ্টা ব্যয় করে থাকেন। প্রাচীনেরা এবং তাদের পরিবার যে-ত্যাগস্বীকার করে থাকে, সেটার জন্য সত্যিই তারা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য! আমরা প্রার্থনা করি যেন যিহোবা তাদের সাহায্য করেন, যাতে তারা এভাবে ত্যাগস্বীকার করে যেতে পারে। কিন্তু, সবার মতো প্রাচীনদেরও খেয়াল রাখতে হবে যেন তারা মণ্ডলীর কাজে অতিরিক্ত ব্যস্ত হয়ে না পড়েন, যেটার ফলে পরিবারের জন্য তাদের হাতে সময়ই থাকবে না।

কীভাবে ত্যাগস্বীকারের মনোভাব গড়ে তোলা যায়?

৯. ফিলিপীয় ২:৪, ৫ পদ অনুযায়ী খ্রিস্টানদের মনোভাব কেমন হওয়া উচিত?

ফিলিপীয় ২:৪, ৫ পদ পড়ুন। এটা ঠিক যে, আমরা সবাই প্রাচীন নই, তারপরও আমরা সবাই যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করতে পারি। বাইবেলে লেখা রয়েছে, যিশু একজন “দাসের মতো হয়েছিলেন।” (ফিলি. ২:৭) লক্ষ করুন, এর অর্থ কী। একজন পরিশ্রমী দাস তার প্রভুর সেবা করার জন্য সুযোগ খোঁজে। আমরা সবাই যিহোবার দাস এবং আমরা ভাই-বোনদের সেবা করি। তাই, আমাদের আকাঙ্ক্ষা হল যেন আমরা যিহোবা এবং ভাই-বোনদের জন্য ব্যবহৃত হই। কীভাবে আমরা এই আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি করতে পারি?

১০. আমাদের কোন প্রশ্নগুলো নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত?

১০নিজেকে পরীক্ষা করুন। আমাদের এই প্রশ্নগুলো নিজেদের জিজ্ঞেস করা উচিত: ‘আমি কি অন্যদের সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত থাকি? যেমন, আমাকে যদি কোনো বয়স্ক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে অথবা কোনো বয়স্ক বোনকে সভায় নিয়ে আসতে বলা হয়, তা হলে আমি কি তা করব? যদি সম্মেলনের জায়গা পরিষ্কার করার অথবা কিংডম হল রক্ষণাবেক্ষণ করার কাজে কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তা হলে আমি কি তা করার জন্য নিজে থেকে এগিয়ে যাব?’ আমরা যখন যিহোবার কাছে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলাম, তখন আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, তাঁর সেবায় আমরা আমাদের সমস্ত কিছু বিলিয়ে দেব। যিহোবা চান যেন আমরা আমাদের সময়, শক্তি ও টাকাপয়সা অন্যদের সেবা করার জন্য ব্যবহার করি। তাই, আমরা যখন এভাবে ত্যাগস্বীকার করি, তখন তিনি খুব খুশি হন। কিন্তু, আমাদের যদি ত্যাগস্বীকার করতে কঠিন লাগে, তা হলে আমরা কী করতে পারি?

১১. আমাদের যদি ত্যাগস্বীকার করতে কঠিন লাগে, তা হলে কেন আমাদের প্রার্থনা করা উচিত?

১১যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন। ধরুন, নিজেকে পরীক্ষা করার পর আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, আপনাকে আরও ত্যাগস্বীকার করতে হবে। তবে, তা করার আকাঙ্ক্ষা আপনার নেই। এইরকম ক্ষেত্রে আপনি কী করতে পারেন? মন খুলে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন। তাঁকে নির্দ্বিধায় বলুন, আপনার মনে কী চলছে। আর তাঁকে বলুন যেন তিনি আপনাকে ত্যাগস্বীকার করার জন্য “আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতা, উভয়ই দেন।”—ফিলি. ২:১৩.

১২. মণ্ডলীর একজন অল্পবয়সি ভাই কী করার জন্য এগিয়ে আসতে পারে?

১২ তুমি কি একজন অল্পবয়সি এবং তোমার বাপ্তিস্ম হয়ে গিয়েছে? যদি হ্যাঁ হয়, তা হলে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করো যেন তিনি তোমার মধ্যে ভাই-বোনদের সেবা করার আকাঙ্ক্ষা গড়ে তোলেন। অনেক দেশে, পরিচারক দাসদের চেয়ে প্রাচীনদের সংখ্যা বেশি। সেই পরিচারক দাসদের মধ্যে বেশিরভাগই মাঝবয়সি অথবা বয়স্ক। সংগঠনে দিন দিন ভাই-বোনদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই, আমাদের আরও অল্পবয়সি ভাইদের প্রয়োজন রয়েছে, যারা মণ্ডলীর ভাই-বোনদের দেখাশোনা করার ক্ষেত্রে প্রাচীনদের সাহায্য করতে পারে। এইরকম সেবা করার জন্য এগিয়ে এলে তুমি অনেক উপকার পাবে। তুমি যে অন্যদের সেবা করছ, তা দেখে যিহোবা খুশি হবেন, ভাই-বোনদের ভালো লাগবে আর তুমি নিজেও আনন্দিত হবে।

যিহূদিয়ার খ্রিস্টানেরা জর্ডন নদী পার হয়ে পেল্লা নগরে পালিয়ে এসেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অনেক আগে এখানে চলে এসেছে। তারা সেই খ্রিস্টানদের খাবার বিতরণ করছে, যারা সবেমাত্র এসেছে (১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৩-১৪. ভাই-বোনদের সাহায্য করার জন্য আমরা কী করতে পারি? (প্রচ্ছদে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

১৩খেয়াল রাখুন যে, কার সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। প্রেরিত পৌল যিহূদিয়ায় বসবাসরত খ্রিস্টানদের উদ্দেশে তার চিঠিতে লিখেছিলেন: “ভালো কাজ করতে এবং নিজের যা আছে, তা দিয়ে অন্যদের সাহায্য করতে ভুলে যেয়ো না, কারণ ঈশ্বর এই ধরনের বলিদানে খুবই সন্তুষ্ট হন।” (ইব্রীয় ১৩:১৬) এটা সত্যিই এক উত্তম পরামর্শ ছিল! পৌলের চিঠি পাওয়ার কিছুসময় পর তাদের “পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে” যেতে হয়েছিল। (মথি ২৪:১৬) এটা করার জন্য তাদের অনেক কিছু ছাড়তে হয়েছিল, যেমন ঘরবাড়ি, ব্যাবসা এবং সেই আত্মীয়স্বজন, যারা খ্রিস্টান ছিল না। এইরকম সময়ে একে অন্যকে সাহায্য করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তারা যদি পালিয়ে যাওয়ার আগে পৌলের পরামর্শ শুনে থাকে, তা হলে পরবর্তী সময়ও তাদের পক্ষে পরামর্শ শোনা ও তা মেনে চলা হয়তো সহজ হয়েছিল। এভাবে, তারা হয়তো নতুন জায়গায় গিয়ে অভাবের মধ্যেও জীবনযাপন করতে পেরেছিল।

১৪ আমাদের ভাই-বোনেরা হয়তো সবসময় বলবে না যে, তাদের সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন ভাই যখন মৃত্যুতে তার স্ত্রীকে হারিয়ে থাকেন, তখন তার হয়তো রান্না করার, কোথাও যাতায়াত করার কিংবা ঘরের কাজ করার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হয়। তিনি হয়তো এই বিষয়ে কাউকে বলবেন না কারণ তিনি অন্যদের উপর বোঝা হতে চান না। কিন্তু, আমরা যদি নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে তাকে সাহায্য করি, তা হলে তার খুব ভালো লাগবে। আমাদের এমনটা চিন্তা করা উচিত নয়, অন্য কেউ তাকে সাহায্য করবে অথবা তার যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তা হলে তিনি নিজেই তা জানাবেন। এর পরিবর্তে, আমাদের চিন্তা করা উচিত, ‘আমি যদি তার জায়গায় থাকতাম, তা হলে আমার কোন কোন জিনিসের প্রয়োজন হত?’ কিংবা ‘কী করার জন্য আমার সাহায্যের প্রয়োজন হত?’

১৫. অন্যদের সাহায্য করার জন্য আমাদের কেমন হতে হবে?

১৫বন্ধুত্বপরায়ণ হোন। আমাদের মণ্ডলীতে নিশ্চয়ই এমন ভাই-বোনেরা রয়েছে, যারা সবসময় অন্যদের সাহায্য করে। তারা কখনো আমাদের এটা অনুভব করায় না যে, আমরা তাদের বিরক্ত করছি অথবা তাদের উপর বোঝা হয়ে রয়েছি। আমরা জানি, যখনই আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তখনই আমরা তাদের কাছে যেতে পারি। আমরাও তাদের মতো হতে চাই। ৪৫ বছর বয়সি অ্যালেন নামে একজন প্রাচীন বলেন: “যদিও যিশু অনেক ব্যস্ত থাকতেন, তারপরও তিনি লোকদের জন্য সময় বের করতেন। তিনি তাদের প্রতি প্রকৃত চিন্তা দেখাতেন। তাই, সব বয়সের ব্যক্তিরাই তাঁর কাছে আসত। তারা নির্দ্বিধায় তাঁর কাছে সাহায্য চাইত। আমিও যিশুর মতো হতে চাই। আমি চাই যেন লোকেরা আমাকে তাদের বন্ধু হিসেবে দেখে এবং নির্দ্বিধায় আমার কাছে আসে।”

১৬. যিশুর পদচিহ্ন অনুসরণ করার জন্য আমাদের কী করতে হবে? (গীতসংহিতা ১১৯:৫৯, ৬০)

১৬ আমাদের এটা ভেবে নিরুৎসাহিত হওয়া উচিত নয় যে, আমরা নিখুঁতভাবে যিশুর মতো হতে পারব না। (যাকোব ৩:২) একটা উদাহরণ লক্ষ করুন। একজন ছাত্র তার শিক্ষকের কাছ থেকে ছবি আঁকা শিখছে। তার শিক্ষক খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারেন। ছাত্র হয়তো তার শিক্ষকের মতো ছবি আঁকতে পারে না। তবে, সে যদি নিজের ভুলগুলো সংশোধন করে এবং পরিশ্রম করে চলে, তা হলে সে অনেকটা তার শিক্ষকের মতো আঁকতে পারবে। একইভাবে, আমরা কখনো যিশুর মতো হতে পারব না। তবে, আমরা যদি ব্যক্তিগতভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করি এবং নিজেদের সংশোধন করি, তা হলে আমরা যিশুর পদচিহ্ন অনুসরণ করতে পারব।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৯:৫৯, ৬০.

ত্যাগস্বীকার করার বিভিন্ন উপকার

যখন প্রাচীনেরা যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করেন, তখন তারা অল্পবয়সিদের জন্য এক উত্তম উদাহরণ রাখেন (১৭ অনুচ্ছেদ দেখুন) *

১৭-১৮. যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করার বিভিন্ন উপকার কী?

১৭ আমরা যখন লোকদের সাহায্য করি, তখন তা দেখে অন্যেরাও লোকদের সাহায্য করার জন্য উৎসাহিত হয়। টিম নামে একজন প্রাচীন বলেন: “আমাদের মণ্ডলীতে অনেক অল্পবয়সি ভাই পরিচারক দাস হিসেবে নিযুক্ত হয়েছে। এর একটা কারণ হল, তারা অন্য ভাই-বোনদের কাছ থেকে সাহায্য করার বিষয়টা শিখেছে। এই অল্পবয়সি ভাইয়েরা মণ্ডলীর ভাই-বোনদের এবং প্রাচীনদের অনেক সাহায্য করে।”

১৮ আজ জগতের বেশিরভাগ লোক খুব স্বার্থপর। কিন্তু, যিহোবার উপাসকেরা একেবারেই তাদের মতো নয়। যিশুর ত্যাগস্বীকারের মনোভাব আমাদের উপর গভীরভাবে ছাপ ফেলেছে আর আমরা তাঁর মতো হওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়েছি। এটা ঠিক যে, আমরা নিখুঁতভাবে তাঁর মতো হতে পারব না, তবে আমরা “পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর পদচিহ্ন অনুসরণ” করতে পারব। (১ পিতর ২:২১) আমরা যদি যিশুর মতো ত্যাগস্বীকার করি, তা হলে আমাদের উপর যিহোবার অনুমোদন থাকবে আর এর ফলে, আমরা আনন্দিত হব।

গান ৫ খ্রিস্ট, আমাদের আদর্শ

^ অনু. 5 যিশু সবসময় নিজের চেয়ে অন্যদের প্রতি চিন্তা দেখাতেন এবং তাদের সাহায্য করতেন। এই প্রবন্ধে আমরা জানব যে, কীভাবে আমরা যিশুর মতো হতে পারি আর তা করা কেন ভালো।

^ অনু. 57 ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: ড্যান নামে একজন অল্পবয়সি ভাই দেখছে যে, হাসপাতালে তার বাবার সঙ্গে দু-জন প্রাচীন দেখা করতে এসেছেন। এটা দেখে সে খুব খুশি হয়। প্রাচীনদের মতো সেও মণ্ডলীর ভাই-বোনদের সাহায্য করতে শুরু করে। এটা দেখে বেন নামে আরেকজন অল্পবয়সি ভাই উৎসাহিত হয়। সেও ড্যানের মতো কিংডম হল পরিষ্কারের কাজে সাহায্য করছে।