সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ১৯

গান ২২ তোমার রাজ্য আসুক!

ভবিষ্যতে যিহোবা কীভাবে লোকদের বিচার করবেন?

ভবিষ্যতে যিহোবা কীভাবে লোকদের বিচার করবেন?

“যিহোবা . . . চান না, কেউ ধ্বংস হয়ে যাক।”২ পিতর ৩:৯.

আমরা কী শিখব?

আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, যিহোবা ভবিষ্যতে লোকদের ন্যায়বিচার করবেন।

১. কেন আমরা বলতে পারি যে, আমরা এক রোমাঞ্চকর সময়ে রয়েছি?

 আমরা এক রোমাঞ্চকর সময়ে রয়েছি। আমাদের চোখের সামনে প্রতিদিন বাইবেলের ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো পরিপূর্ণ হচ্ছে। যেমন, “দক্ষিণ দেশের রাজা” এবং “উত্তর দেশের রাজা” একে অন্যের সঙ্গে এটা নিয়ে লড়াই করছে যে, কে এই জগতের উপর শাসন করবে। (দানি. ১১:৪০) আমরা দেখতে পাচ্ছি, সারা পৃথিবীতে কত বড়ো আকারে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করা হচ্ছে আর লক্ষ লক্ষ লোক তাঁকে উপাসনা করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। (যিশা. ৬০:২২; মথি ২৪:১৪) এ ছাড়া, আমরা “উপযুক্ত সময়ে” প্রকাশনা পাচ্ছি, যেগুলোর ফলে আমরা যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে পারছি।—মথি ২৪:৪৫-৪৭.

২. (ক) আমরা কোন বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে পারি? (খ) কিন্তু, আমরা কী স্বীকার করি?

ভবিষ্যতে আরও বড়ো বড়ো ঘটনাগুলো ঘটবে আর সেগুলোর বিষয়ে যিহোবা আমাদের আরও স্পষ্টভাবে জানাবেন। (হিতো. ৪:১৮; দানি. ২:২৮) আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগেই আমরা সেইসমস্ত বিষয় জানতে পারব, যেগুলো আমাদের কঠিন সময়ে যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে এবং একতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু, আমরা এটাও স্বীকার করি যে, ভবিষ্যতে এমন কিছু ঘটনা ঘটতে চলেছে, যেগুলো আমরা জানি না। এই প্রবন্ধে আমরা দেখব, ভবিষ্যতের ঘটনাগুলোর বিষয়ে আমরা যা জানি, তাতে কোন রদবদল হয়েছে। আমরা এও দেখব যে, ভবিষ্যতে যিহোবা যা করবেন এবং যে-ঘটনাগুলো ঘটবে, সেগুলোর বিষয়ে আমরা কী জানি।

আমরা কী জানি না?

৩. যে-লোকেরা যিহোবার উপর বিশ্বাস করবে না, তাদের বিষয়ে আমরা কী মনে করতাম আর কেন?

অতীতে আমরা বলেছিলাম, মহাক্লেশ শুরু হওয়ার পর লোকদের কাছে যিহোবার উপর বিশ্বাস করার এবং আরমাগিদোন থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। আমরা মনে করতাম, জলপ্লাবনের সময়ে যে-ঘটনাগুলো ঘটেছিল, সেগুলো ভবিষ্যতের কিছু ঘটনাকে চিত্রিত করে। আমরা আগে চিন্তা করতাম, জলপ্লাবন শুরু হওয়ার আগে যিহোবা যেমন জাহাজের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তেমনই মহাক্লেশ শুরু হওয়ার পর শয়তানের এই জগতে থাকা লোকদের জন্য যিহোবা দরজা বন্ধ করে দেবেন অর্থাৎ তাদের কাছে রক্ষা পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।—মথি ২৪:৩৭-৩৯.

৪. আমরা কি এখন মনে করি, জলপ্লাবনের সময়ে যা-কিছু ঘটেছিল, সেগুলো ভবিষ্যতের কিছু ঘটনাকে চিত্রিত করে? বুঝিয়ে বলুন।

এটা বলা কি ঠিক হবে, জলপ্লাবনের সময়ে যা-কিছু ঘটেছিল, সেগুলো ভবিষ্যতের কিছু ঘটনাকে চিত্রিত করে? না। কেন? কারণ বাইবেলে আমরা এই বিষয়ে কিছুই পাই না। a এটা ঠিক যে, যিশু তাঁর উপস্থিতিকে ‘নোহের দিনের’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। কিন্তু তিনি কখনো বলেননি, নোহের দিনে যে-ঘটনাগুলো ঘটেছিল, সেগুলোর সবই ভবিষ্যতের ঘটনাগুলোকে চিত্রিত করে, যেমন জাহাজের দরজা বন্ধ হওয়ার বিষয়টা। তবে, আমরা নোহ এবং জলপ্লাবনের ঘটনা থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি।

৫. (ক) জলপ্লাবনের আগে কীভাবে নোহ দেখিয়েছিলেন যে, যিহোবার উপর তার সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে? (ইব্রীয় ১১:৭; ১ পিতর ৩:২০) (খ) প্রচারের বিষয়ে নোহের সময় এবং আমাদের সময়ের মধ্যে কোন মিল রয়েছে?

যিহোবা যখন নোহকে বলেছিলেন, তিনি কী করতে যাচ্ছেন, তখন নোহ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি জাহাজ তৈরি করার মাধ্যমে দেখিয়েছিলেন যে, যিহোবার উপর তার সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। (পড়ুন, ইব্রীয় ১১:৭; ১ পিতর ৩:২০.) একইভাবে, বর্তমানে লোকেরা যখন ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার শোনে, তখন তাদেরও পদক্ষেপ নিতে হবে। (প্রেরিত ৩:১৭-২০) পিতর লিখেছিলেন: “[নোহ] ঈশ্বরের সঠিক পথ সম্বন্ধে প্রচার করেছিলেন।” (২ পিতর ২:৫) নোহ মনপ্রাণ দিয়ে লোকদের কাছে প্রচার করেছিলেন। কিন্তু, বাইবেলে কোথাও লেখা নেই যে, জলপ্লাবন আসার আগে তিনি পৃথিবীতে থাকা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে প্রচার করেছিলেন। বর্তমানে আমরাও সারা পৃথিবীতে থাকা লোকদের কাছে মনপ্রাণ দিয়ে সুসমাচার প্রচার করছি। কিন্তু আমরা যত চেষ্টাই করি না কেন, শেষ আসার আগে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে প্রচার করতে পারব না। কেন?

৬-৭. কেন আমরা বলতে পারি, শেষ আসার আগে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে প্রচার করতে পারব না? বুঝিয়ে বলুন।

লক্ষ করুন, যিশু প্রচার কাজের বিষয়ে কী বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “সমস্ত জাতি যেন রাজ্যের সুসমাচার জানতে পারে, তাই পুরো পৃথিবীতে এই সুসমাচার প্রচার করা হবে।” (মথি ২৪:১৪) আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি, বর্তমানে এই ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ হচ্ছে! রাজ্যের এই সুসমাচার ১,০০০-রেরও বেশি ভাষায় পাওয়া যাচ্ছে। jw.org ওয়েবসাইটের সাহায্যে এটা যতবেশি সম্ভব লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন, “সমস্ত নগরে . . . কাজ শেষ হওয়ার আগেই” তিনি আসবেন। এর মানে হল, তিনি আসার আগে তারা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে প্রচার করতে পারবে না। (মথি ১০:২৩; ২৫:৩১-৩৩) যিশুর কথা আমাদের সময়ে পরিপূর্ণ হবে। বর্তমানে, লক্ষ লক্ষ লোক এমন জায়গায় থাকে, যেখানে প্রচার কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিটা মিনিটে হাজার হাজার বাচ্চা জন্মাচ্ছে। তাই, আমরা “প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও বর্ণের লোকদের কাছে” প্রচার করার যত চেষ্টাই করি না কেন, সত্যিটা হল শেষ আসার আগে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে প্রচার করতে পারব না।—প্রকা. ১৪:৬.

৮. ভবিষ্যতে যিহোবা যেভাবে লোকদের বিচার করবেন, তা জেনে আমাদের মনে কোন প্রশ্ন আসতে পারে? (ছবিগুলোও দেখুন।)

এখন প্রশ্ন হল: সেই লোকদের বিষয়ে কী বলা যায়, যারা হয়তো মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগে সুসমাচার জানার সুযোগ পায়নি? যিহোবা এবং তাঁর পুত্র যিশু, যাঁকে তিনি বিচার করার অধিকার দিয়েছেন, তাঁরা কীভাবে সেই লোকদের বিচার করবেন? (যোহন ৫:১৯, ২২, ২৭; প্রেরিত ১৭:৩১) এক কথায় বললে, আমরা এর উত্তর জানি না কারণ যিহোবা এখনও পর্যন্ত আমাদের তা জানাননি। যিহোবাকে এটা বলার প্রয়োজন নেই যে, তিনি কী কী করেছেন এবং ভবিষ্যতে কী কী করবেন। তবে, আমরা একটা বিষয় জানি, যেটা এই প্রবন্ধের মূল শাস্ত্রপদেও পাই: “[যিহোবা] চান না, কেউ ধ্বংস হয়ে যাক, বরং চান যেন সকলে অনুতপ্ত হয়।”—২ পিতর ৩:৯; ১ তীম. ২:৪.

যিহোবা কীভাবে সেই লোকদের বিচার করবেন, যারা মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগে সুসমাচার জানতে পারেনি? (৮ অনুচ্ছেদ দেখুন) c


৯. যিহোবা তাঁর বাক্য বাইবেলে আমাদের কী জানিয়েছেন?

ভবিষ্যতে যিহোবা কী কী করবেন, সেইসমস্ত কিছুর খুঁটিনাটি বিষয় আমরা জানি না। কিন্তু, তাঁর বাক্য বাইবেলে তিনি কিছু বিষয় জানিয়েছেন। বাইবেল জানায়, ‘যে-অধার্মিক’ লোকেরা সত্য শেখার এবং নিজেদের পরিবর্তন করার সুযোগ পায়নি, যিহোবা তাদের পুনরুত্থিত করবেন। (প্রেরিত ২৪:১৫; লূক ২৩:৪২, ৪৩) তবে, এর থেকে আরও কিছু প্রশ্ন উঠতে পারে।

১০. আমাদের মনে আর কোন কোন প্রশ্ন আসতে পারে?

১০ মহাক্লেশ চলাকালীন বিভিন্ন ঘটনা ঘটবে। সেই সময়ে যে-লোকেরা মারা যাবে, তারা কি চিরকালের জন্য মারা যাবে এবং তাদের কি পুনরুত্থিত করা হবে না? বাইবেল আমাদের স্পষ্টভাবে জানায়, যারা যিহোবার বিরুদ্ধে যাবে, তাদের যিহোবা এবং তাঁর স্বর্গীয় বাহিনী আরমাগিদোন যুদ্ধে একেবারে শেষ করে দেবে, তাদের আর পুনরুত্থিত করা হবে না। (২ থিষল. ১:৬-১০) কিন্তু, কিছু লোক হয়তো বয়সের কারণে, অসুস্থতার কারণে, অ্যাক্সিডেন্টে অথবা অন্যদের হাতে মারা যাবে। তাদের কী হবে? (উপ. ৯:১১; সখ. ১৪:১৩) তাদের মধ্যে কি কিছু “অধার্মিক” লোকও থাকবে, যাদের পরমদেশে পুনরুত্থিত করা হবে? এক কথায় বললে, আমরা জানি না।

আমরা কী জানি?

১১. যিশু কীসের উপর ভিত্তি করে লোকদের বিচার করবেন?

১১ ভবিষ্যতে যে-ঘটনাগুলো ঘটবে, সেই সম্বন্ধে কিছু বিষয় আমরা জানি। আমরা জানি, লোকেরা যেভাবে খ্রিস্টের ভাইদের প্রতি আচরণ করবে, সেটার উপর ভিত্তি করে যিশু তাদের বিচার করবেন। (মথি ২৫:৪০) যারা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের ও খ্রিস্টের পক্ষ নেবে, তাদের মেষ হিসেবে দেখা হবে। আমরা জানি, মহাক্লেশ শুরু হওয়ার পরও কিছু অভিষিক্ত খ্রিস্টান এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে, কিন্তু আরমাগিদোন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই তাদের সবাইকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে। যতদিন কিছু অবশিষ্ট অভিষিক্ত খ্রিস্টান এই পৃথিবীতে থাকবে, ততদিন সৎহৃদয়ের ব্যক্তিরা তাদের পক্ষ নেওয়ার এবং তাদের সঙ্গে প্রচার করার সুযোগ পাবে। (মথি ২৫:৩১, ৩২; প্রকা. ১২:১৭) কেন এই বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ?

১২-১৩. ‘মহতী বাবিলের’ ধ্বংস দেখে কিছু লোক হয়তো কী করবে? (ছবিগুলোও দেখুন।)

১২ হতে পারে, মহাক্লেশ চলাকালীন কিছু লোকের মনে পড়বে যে, যিহোবার সাক্ষিরা তাদের বলেছিল, সমস্ত মিথ্যা ধর্ম অর্থাৎ “মহতী বাবিল” ধ্বংস হয়ে যাবে। সেইসময় কেউ কেউ কি যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে এবং তাঁর সেবা করতে শুরু করবে?—প্রকা. ১৭:৫; যিহি. ৩৩:৩৩.

১৩ আপনার কি মনে আছে, মোশির দিনেও এইরকম কিছু ঘটেছিল? মিশর দেশ থেকে বের হওয়ার সময়ে ইজরায়েলীয়দের সঙ্গে “মিশ্রিত লোকদের মহাজনতা” ছিল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো দেখেছিল যে, মোশির বলা ১০টা আঘাত কীভাবে সত্যি হয়েছিল। এরপর, তারা যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল। (যাত্রা. ১২:৩৮) মহতী বাবিলের ধ্বংসের পর হয়তো এইরকমই কিছু ঘটবে। কেউ কেউ হয়তো আরমাগিদোন শুরু হওয়ার ঠিক আগেই যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে এবং তাঁর সেবা করতে শুরু করবে। সেইসময় তা দেখে আমরা কি অসন্তুষ্ট হব? একেবারেই না! আমরা আমাদের পিতা যিহোবার মতো হব, যিনি “স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান্‌।” bযাত্রা. ৩৪:৬.

মহাক্লেশের সময়ে যখন “মহতী বাবিল” ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন কিছু লোকের হয়তো মনে পড়বে যে, যিহোবার সাক্ষিরা তাদের এই বিষয়ে জানিয়েছিল (১২-১৩ অনুচ্ছেদ দেখুন) d


১৪-১৫. একজন ব্যক্তি অনন্তজীবন পাবেন কি না, সেটা কোন বিষয়গুলোর উপর নির্ভর করে না? বুঝিয়ে বলুন। (গীতসংহিতা ৩৩:৪, ৫)

১৪ কিছু লোক হয়তো মাঝে মাঝে চিন্তা করে, ‘আমার আত্মীয়েরা তো যিহোবার সেবা করে না। তারা যদি মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগেই মারা যায়, তা হলে যিহোবা হয়তো তাদের নতুন জগতে পুনরুত্থিত করবেন।’ তারা হয়তো ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই এমনটা চিন্তা করে। কিন্তু একজন ব্যক্তি অনন্তজীবন পাবেন কি না, এটা এই বিষয়ের উপর নির্ভর করে না যে, তিনি কোন সময়ে মারা যাবেন। যিহোবা ন্যায়বিচার ভালোবাসেন এবং তিনি যে-সিদ্ধান্ত নেন, সেটা সবসময় সঠিক আর তাঁর মান অনুযায়ী হয়। (পড়ুন, গীতসংহিতা ৩৩:৪, ৫.) তাই আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত থাকতে পারি, “সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা” সবসময় ন্যায়বিচার করবেন।—আদি. ১৮:২৫.

১৫ একজন ব্যক্তি অনন্তজীবন পাবেন কি না, এটা এই বিষয়ের উপরও নির্ভর করে না যে, তিনি কোথায় আছেন। এমনটা হতেই পারে না, যিহোবা সেই লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিকে “ছাগ” বলে মনে করবেন, যারা এমন দেশে থাকে, যেখানে সুসমাচার প্রচার করা হয়নি। (মথি ২৫:৪৬) সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্তা এই ব্যক্তিদের জন্য যতটা চিন্তা করেন, ততটা আর কেউ করে না। আমরা জানি না, মহাক্লেশ চলাকালীন যিহোবা কীভাবে ঘটনাগুলোকে একের পর এক সাজাবেন। এই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো যিহোবা সম্বন্ধে শেখার এবং তাঁর উপর বিশ্বাস করার সুযোগ পাবে। আর যিহোবা যখন সমস্ত জাতির সামনে নিজের নামকে পবিত্র হিসেবে তুলে ধরবেন, তখন তারাও হয়তো তাঁর পক্ষ নেবে।—যিহি. ৩৮:১৬.

মহাক্লেশ শুরু হওয়ার পর কেউ কেউ কি যিহোবার উপর বিশ্বাস করতে শুরু করবে?

১৬. বাইবেল অধ্যয়ন করে আমরা যিহোবার বিষয়ে কী জেনেছি? (ছবিও দেখুন।)

১৬ বাইবেল নিয়ে অধ্যয়ন করে আমরা জানতে পেরেছি, যিহোবা প্রত্যেক মানুষকে মূল্যবান হিসেবে দেখেন। তিনি তাঁর পুত্রের বলি দিয়েছিলেন, যাতে আমরা অনন্তজীবন পেতে পারি। (যোহন ৩:১৬) আমরা অনুভব করতে পেরেছি, যিহোবা আমাদের জন্য কত চিন্তা করেন এবং আমাদের কত ভালোবাসেন। (যিশা. ৪৯:১৫) যিহোবা আমাদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে জানেন। তিনি আমাদের এত ভালোভাবে জানেন যে, আমরা যদি মারাও যাই, তিনি আমাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারেন এবং আমরা যেরকম ছিলাম, ঠিক সেরকমই চেহারা ফিরিয়ে দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি আমাদের স্বভাব ও স্মৃতিও ফিরিয়ে দিতে পারেন। (মথি ১০:২৯-৩১) তাই আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, যিহোবা তাঁর মান অনুযায়ী বিচার করবেন এবং করুণা দেখাবেন।—যাকোব ২:১৩.

আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, যিহোবা তাঁর মান অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তির প্রতি ন্যায়বিচার করবেন এবং করুণাও দেখাবেন (১৬ অনুচ্ছেদ দেখুন)


১৭. পরের প্রবন্ধে আমরা কী জানতে পারব?

১৭ আমাদের বোধগম্যতায় যে-রদবদল হয়েছে, সেটা থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, প্রচার কাজ এখন আরও কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কেন আমরা তা বলতে পারি? আর উদ্যোগের সঙ্গে সুসমাচার জানানোর জন্য কোন বিষয়টা আমাদের সাহায্য করতে পারে? পরের প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে পারব।

গান ৭৬ কেমন লাগে তোমার?

a কেন এই রদবদল করা হয়েছে, তা জানার জন্য ২০১৫ সালের মার্চ ১৫ প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৭-১১ পৃষ্ঠায় দেওয়া “ইহা তোমার দৃষ্টিতে প্রীতিজনক হইল” প্রবন্ধ দেখুন।

b মহতী বাবিল ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর মাগোগ দেশীয় গোগ যখন আক্রমণ করবে, তখন যিহোবার লোকদের বিশ্বাস পরীক্ষিত হবে। যারা তাদের পক্ষ নেবে, তাদের বিশ্বাসও পরীক্ষিত হবে।

c ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: তিনটে ছবিতে দেখানো হয়েছে, কোন কোন কারণে কিছু লোকের কাছে হয়তো সুসমাচার পৌঁছাবে না: (১) একজন মহিলা এমন এক দেশে থাকেন, যেখানে অন্য ধর্মের লোকদের সংখ্যা বেশি এবং যেখানে সুসমাচার জানানো খুবই বিপদজনক, (২) একজন স্বামী-স্ত্রী এমন এক দেশে থাকেন, যেখানে সরকার প্রচার কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং যেখানে প্রচার করা খুবই বিপদজনক আর (৩) একজন ব্যক্তি এমন একটা জায়গায় থাকেন, যেখানে যাওয়া খুবই কঠিন।

d ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: “মহতী বাবিল” ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। একজন মহিলা, যিনি যিহোবাকে সেবা করা বন্ধ দিয়েছিলেন, এখন মনে করছেন যে, তিনি এই সম্বন্ধে শিখেছিলেন। তিনি অনুতপ্ত হন এবং তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আসেন, যারা যিহোবার সাক্ষি। ভবিষ্যতে যদি এইরকম কিছু হয়, তা হলে আমরা আমাদের পিতা যিহোবার মতো সেই ব্যক্তির প্রতি করুণা ও সমবেদনা দেখাব এবং তিনি যিহোবার কাছে ফিরে এসেছেন বলে আনন্দিত হব।