সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যেভাবে আপনার দান ব্যবহার করা হয়

সুসমাচারের বিবরণে যিশুর জীবনকাহিনি—ক্যামেরার পিছনে

সুসমাচারের বিবরণে যিশুর জীবনকাহিনি—ক্যামেরার পিছনে

অক্টোবর ১, ২০২৪

 এই বছর যিহোবার সাক্ষিরা সুসমাচারের বিবরণে যিশুর জীবনকাহিনি নাটকের প্রথম পর্ব দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। ইতিমধ্যেই লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি এই পর্ব দেখে ফেলেছে। আর এটা হল, সেই ১৮টা পর্বগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র প্রথম পর্ব! এই পর্বগুলোকে ভালোভাবে সম্পন্ন করার জন্য ভাই-বোনেরা কী কাজ করছে এবং এই কাজে সাহায্য করার জন্য আপনি কী করছেন?

অভিনয়কারীদের এবং শুটিংয়ে সাহায্যকারীদের দেখাশোনা করা

 যিশুর জীবনকাহিনি ভিডিও সিরিজের বেশিরভাগ শুটিং অস্ট্রেলেশিয়ার শাখা অফিসে হচ্ছে। a প্রতিটা দৃশ্যের শুটিংয়ের সময় প্রায় ৫০ থেকে ৮০ জন সেটে থাকে। অভিনয়কারী এবং শুটিংয়ে সাহায্যকারী ভাই-বোনদের জন্য দুপুরের ও রাতের খাবার এবং জলখাবারের ব্যবস্থা করার জন্য অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করা হয়। এস্টার নামে একজন বোন, যিনি ফুড সার্ভিস ডিপার্টমেন্টে কাজ করেন, তিনি বলেন, “আমরা আলাদা আলাদা জায়গা থেকে খাবারের জিনিসপত্র কিনি, যাতে আমরা ভালো দামে ভালো জিনিস পাই। আমরা প্রায়ই রেসিপিতে রদবদল করে থাকি, যাতে এতটা পরিমাণে খাবার না বাঁচে, যেটা ফেলে দিতে হয়।” প্রতিদিন একজন ব্যক্তির খাবারের জন্য প্রায় ৩০০ টাকা খরচ করা হয়ে থাকে।

 এ ছাড়া, অভিনয়কারী এবং শুটিংয়ে সাহায্যকারী ভাই-বোনদের সুরক্ষারও প্রয়োজন রয়েছে। কী থেকে সুরক্ষা? অস্ট্রেলিয়ায় বছরের বেশিরভাগ দিন কড়া রোদ থাকে, যে-কারণে আবহাওয়া উষ্ণ থাকে। সেইসঙ্গে অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবও বেশি থাকে। এই বিপদ থেকে বাঁচার জন্য এবং গরমে ভাই-বোনেরা যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়ে, তার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রোডাকশন সহায়ক দল তাঁবু খাটানো এবং এমন জায়গা তৈরি করার জন্য অনেক পরিশ্রম করে থাকে, যেখানে ভাই-বোনেরা সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পেতে পারে। এ ছাড়া, তারা সানস্ক্রিন, ছাতা এবং জলের ব্যবস্থা করে থাকে। কেভিন নামে একজন ভাই, যিনি অডিও/ভিডিও বিভাগে কাজ করেন, তিনি বলেন, “প্রোডাকশন সহায়ক দলে বেশিরভাগ এমন ভাই-বোনেরা কাজ করে, যারা কিছু দিনের জন্য বেথেলে সেবা করতে আসে। তারা এই কাজ এবং অন্যান্য কাজ নম্রভাবে আর আনন্দের সঙ্গে করে থাকে। তাদের ছাড়া এই প্রজেক্টের কাজগুলো করা অনেক কঠিন হত।”

দূরবর্তী এলাকাগুলোতে শুটিং

 এই ভিডিওতে বাইবেলের সময়ের দৃশ্য রয়েছে। এই ভিডিওর কিছু দৃশ্যের শুটিং যদি শাখা অফিসের খোলা জায়গায় বা স্টুডিওতে করা হয়, তা হলে সেগুলো বাস্তব বলে মনে হবে না। সেখানে বৈদ্যুতিক তার, পাকা রাস্তা এবং আধুনিক দিনের বাড়িঘর দেখা যাবে। প্রায়ই, এই ধরনের দৃশ্যের শুটিং করার জন্য ভাই-বোনদের দূরবর্তী এলাকায় যেতে হয়। তারা তাদের সঙ্গে অভিনয়কারীদের কাপড় এবং জিনিস, সেটের জিনিস, ক্যামেরা, লাইট এবং অন্যান্য জিনিস নিয়ে যায় আর শুটিংয়ের জায়গায় সেগুলো সংরক্ষণ করে রাখে। সেখানে শুটিং শুরু করার আগে প্রোডাকশন কোঅর্ডিনেটরের সহায়ক এই বিষয়টা খেয়াল রাখেন যে, জেনারেটর ভালোভাবে কাজ করছে, পানীয় জল এবং টয়লেটের সুব্যবস্থা আছে। অভিনয়কারী এবং শুটিংয়ে সাহায্যকারী সমস্ত ভাই-বোন বিশ্রাম নেওয়ার জন্য স্থানীয় ভাই-বোনদের বাড়িতে, ট্রেলর ঘরে, হোটেলে বা কেবিনে থাকে।

দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে শুটিং করার ফলে, বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়

 কিন্তু, দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে শুটিং করা অনেক ব্যয়বহুল হয়, এতে অনেক সময় যায় এবং সবাই ক্লান্ত হয় পড়ে। তাই, ২০২৩ সালে পরিচালকগোষ্ঠী ২০ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার ভিডিও ওয়াল কেনার অনুমোদন দেয়। এই ওয়ালে পিছনের দৃশ্য খুবই স্পষ্টভাবে দেখা যায়। আর এর সামনে যদি সঠিক লাইটিং রেখে শুটিং করা হয়, তা হলে মনে হবে যেন বাইরে কোথাও শুটিং করা হয়েছে। এর ফলে, এখন আমাদের দূরবর্তী এলাকায় শুটিং করতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। অস্ট্রেলেশিয়া শাখা কমিটির সদস্য ভাই ড্যারেন বলেন, “শুটিংয়ে ভিডিও ওয়াল ব্যবহার করার ফলে অভিনয়কারী ভাই-বোনেরা খুব বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে না। শুধু তা-ই নয়, কোনো কোনো দৃশ্যের শুটিং আমরা আবারও করতে পারি। যেমন, আমরা যদি সূর্যাস্তের শুটিং করার জন্য বাইরে যেতাম, তা হলে সেটার শুটিং করার জন্য আমাদের হাতে মাত্র কয়েক মিনিটই থাকত। তবে, এই ভিডিও ওয়ালের সাহায্যে আমরা সেই দৃশ্যের শুটিং ততক্ষণ পর্যন্ত করতে পারি, যতক্ষণ না আমরা সেই দৃশ্যের সঠিক শট পাই।”

শুটিংয়ের আগে নতুন লাগানো ভিডিও ওয়ালকে পরীক্ষা করা হচ্ছে

“আমার ত্যাগস্বীকার খুবই সামান্য ছিল”

 যিশুর জীবনকাহিনি নাটকের প্রতিটা পর্বে আলাদা আলাদা চরিত্রে অভিনয় করার জন্য শত শত ভাই-বোনদের প্রয়োজন এবং শুটিংয়ে সাহায্য করার জন্য এর চেয়েও বেশি সংখ্যক ভাই-বোনদের প্রয়োজন। এই ভাই-বোনেরা তাদের পরিশ্রমের জন্য কেমন অনুভব করে?

 বোন এম্বারের কথা চিন্তা করুন, যাকে এই প্রোজেক্টের জন্য তার শহর মেলবোর্ন থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার (৪৩৫ মাইল) দূরে আসতে হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমি যখন এয়ারপোর্ট থেকে বাইরে আসি, সেই মুহূর্ত থেকেই বেথেলের ভাই-বোনেরা আমার যত্ন নিয়েছে। কেউ আমাকে চা খাওয়ার জন্য আবার কেউ দুপুরের বা রাতের খাবার খাওয়ার জন্যও ডেকেছিল। সেটের প্রত্যেক ভাই-বোন আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেছিল, যে-কারণে আমার সমস্ত সংকোচ কেটে গিয়েছিল। এই পুরো সময়ে আমি অনেক আশীর্বাদ পেয়েছি আর তাই আমার মনে হয়েছিল যে, আমার ত্যাগস্বীকার খুবই সামান্য ছিল।”

 ডেরেক নামে একজন ভাই, যিনি প্রোডাকশন টিমের সঙ্গে কাজ করেন, তিনি বলেন, “এই প্রোজেক্টের শুরু থেকেই বিভিন্ন বিভাগ আমাদের সাহায্য করে আসছে। আমি অনেক আনন্দিত যে, আমি এমন ভাই-বোনদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, যারা তাদের সময়, শক্তি এবং জিনিসপত্র এই প্রোজেক্টে ব্যবহার করেছে। তারা খুব দয়ালু এবং সমস্ত কাজ হাসিমুখে করার জন্য প্রস্তুত থাকে। এটা স্পষ্ট যে, যিহোবা তাদের এবং আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। আমি নিশ্চিত, যিহোবা শুধুমাত্র কাজের ফলাফলের উপর নয়, কিন্তু সেইসঙ্গে আমরা সেই কাজ কীভাবে করছি, সেটার উপরও মনোযোগ দেন।”

 এই ভিডিও সিরিজ তৈরি করার পিছনে আপনারও সমর্থন রয়েছে। আপনি যে-দান দিয়েছেন এবং আপনারা যারা donate.pr418.com-এর মাধ্যমে দান দিয়েছেন, আপনাদের এই দানের জন্য আমরা সত্যিই হৃদয় থেকে আপনাদের ধন্যবাদ দিই।

a অস্ট্রেলেশিয়ার শাখা অফিস বিভিন্ন দেশের যেমন, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন দেশের কাজ দেখাশোনা করে। এই শাখা অফিস অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের ঠিক বাইরে রয়েছে।