সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৪২

সত্যকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখুন

সত্যকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখুন

“সমস্ত কিছু পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নাও; যা উত্তম, তা ধরে রাখো।”—১ থিষল. ৫:২১.

গান ৫৪ আমাদের বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন

সারাংশ *

১. কেন বর্তমানে অনেক লোক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে?

বর্তমানে অনেক ধর্ম রয়েছে, যেগুলো দাবি করে যে, তাদের ধর্মই ঠিক। তাই, অনেক লোক দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে। তারা চিন্তা করে, ‘সত্যিই কি কোনো সত্য ধর্ম রয়েছে?’ কিংবা ‘সমস্ত ধর্ম কি ঈশ্বরকে খুশি করে?’ কিন্তু, আমরা নিজেদের সম্বন্ধে কী বলতে পারি? আমরা কি পুরোপুরি নিশ্চিত, আমরা যা বিশ্বাস করি, সেটাই সত্য? আর আমরা যে-উপায়ে যিহোবার উপাসনা করি, সেটাই হল সঠিক উপায়? এর কি কোনো প্রমাণ রয়েছে? আসুন তা লক্ষ করি।

২. কেন প্রেরিত পৌল পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন যে, তিনি যা বিশ্বাস করেন, সেটাই সত্য? (১ থিষলনীকীয় ১:৫)

প্রেরিত পৌল পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন যে, তিনি যা বিশ্বাস করেন, সেটাই সত্য। (পড়ুন, ১ থিষলনীকীয় ১:৫.) তার এই বিষয়গুলো ভালো লাগত বলে যে তিনি নিশ্চিত ছিলেন, এমন নয়। তিনি বিশ্বাস করতেন, “শাস্ত্রে লেখা সমস্ত কথা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত।” (২ তীম. ৩:১৬) তাই, তিনি ঈশ্বরের বাক্য গভীরভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন। অধ্যয়ন করে তিনি প্রমাণ পেয়েছিলেন, যিশুই হলেন প্রতিজ্ঞাত মশীহ। এটা এমন একটা প্রমাণ ছিল, যেটা কেউই প্রত্যাখ্যান করতে পারত না। তারপরও, ধর্মীয় গুরুরা সেটা বিশ্বাস করতে অস্বীকার করেছিল। তারা দাবি করত যে, তারা ঈশ্বর সম্বন্ধে শেখাচ্ছে, কিন্তু তারা আসলে এমন কাজগুলো করত, যেগুলো ঈশ্বর ঘৃণা করেন। (তীত ১:১৬) পৌল তাদের মতো ছিলেন না। তিনি শুধুমাত্র শাস্ত্রের সেই কথাগুলো বিশ্বাস করেননি, যেগুলো তার ভালো লাগত। এর পরিবর্তে, তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে “সমস্ত” বিষয় শেখাতেন এবং নিজেও সেগুলো কাজে লাগাতেন।—প্রেরিত ২০:২৭.

৩. সত্য ধর্মের লোকদের কাছে কি সমস্ত প্রশ্নের উত্তর থাকা উচিত? ব্যাখ্যা করুন। (এ ছাড়া, “ যিহোবার কাজ ও সংকল্প সকল—’গণনা করা যায় না’” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)

কিছু লোক মনে করে, সত্য ধর্মের লোকদের কাছে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর থাকা উচিত, এমনকী সেই প্রশ্নের উত্তরও, যেগুলো বাইবেলে নেই। এমনটা মনে করা কি যুক্তিযুক্ত? পৌলের উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন। তিনি অন্য খ্রিস্টানদের বলেছিলেন: “সমস্ত কিছু পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নাও।” (১ থিষল. ৫:২১) তবে, তিনি এও বলেছিলেন: “আমাদের আংশিক জ্ঞান রয়েছে, . . . এখন আমরা যেন ধাতব আয়নায় অস্পষ্ট দেখছি।” (১ করি. ১৩:৯, ১২) পৌল সমস্ত কিছু জানতেন না আর আমরাও সমস্ত কিছু জানতে পারব না। কিন্তু, পৌল ঈশ্বরের বিষয়ে মৌলিক সত্যগুলো জানতেন। তিনি যা-কিছু জানতেন, সেগুলো থেকে তিনি পুরোপুরি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, তিনি যা বিশ্বাস করেন, সেটাই সত্য।

৪. (ক) আমাদের কাছে যে সত্য রয়েছে, এই বিষয়ে নিজেদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য আমরা কী করতে পারি? (খ) এই প্রবন্ধে সত্য খ্রিস্টানদের সম্বন্ধে আমরা কী জানব?

আমাদের কাছে সত্য রয়েছে। এই বিষয়ে নিজেদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য লক্ষ করুন যে, যিশু কোন উপায়ে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন আর বর্তমানে যিহোবার সাক্ষিরা কোন উপায়ে উপাসনা করে। এই প্রবন্ধে আমরা জানব, সত্য খ্রিস্টানেরা (১) প্রতিমাপূজা করে না, (২) যিহোবার নাম মহিমান্বিত করে, (৩) সত্যকে ভালোবাসে এবং (৪) একে অন্যকে গভীরভাবে ভালোবাসে।

আমরা প্রতিমাপূজা করি না

৫. যিশু কোন উপায়ে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন আর তাঁর কাছ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

যিশু যিহোবাকে খুব ভালোবাসতেন। তাই, স্বর্গে ও সেইসঙ্গে পৃথিবীতে থাকার সময় তিনি একমাত্র যিহোবারই উপাসনা করেছিলেন। (লূক ৪:৮) তিনি তাঁর শিষ্যদেরও তা করতে শিখিয়েছিলেন। যিশু ও তাঁর শিষ্যেরা কখনো প্রতিমাপূজা করেননি। যেহেতু ঈশ্বর অদৃশ্য, তাই কোনো মানুষই তাঁকে দেখতে, তাঁর ছবি আঁকতে কিংবা তাঁর মূর্তি নির্মাণ করতে পারে না। (যিশা. ৪৬:৫) কিন্তু, সাধুদের মূর্তি নির্মাণ করা এবং তাদের উপাসনা করা কি ঠিক? যিহোবার দেওয়া দশ আজ্ঞার মধ্যে দ্বিতীয় আজ্ঞা ছিল, “তুমি আপনার নিমিত্তে খোদিত প্রতিমা নির্ম্মাণ করিও না; উপরিস্থ স্বর্গে, নীচস্থ পৃথিবীতে . . . যাহা যাহা আছে, তাহাদের কোন মূর্ত্তি নির্ম্মাণ করিও না; তুমি তাহাদের কাছে প্রণিপাত করিও না।” (যাত্রা. ২০:৪, ৫) যারা ঈশ্বরকে খুশি করতে চায়, তারা প্রতিমাপূজা করে না।

৬. বর্তমানে যিহোবার সাক্ষিরা কোন উপায়ে উপাসনা করে থাকে?

ইতিহাসবেত্তারা মনে করে, প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা একমাত্র ঈশ্বরের উপাসনা করত। উদাহরণ স্বরূপ, ইতিহাসের একটা বইয়ে লেখা রয়েছে, প্রতিমাপূজা করা তো দূরের কথা, তারা কখনো এই বিষয়ে চিন্তাও করত না। বর্তমানে, আমরাও তাদের মতো উপাসনা করি। আমরা সাধু ও স্বর্গদূতদের আর এমনকী যিশুরও উপাসনা করি না। আমরা পতাকা অভিবাদন করি না এবং অন্য কোনো উপায়েও দেশভক্তি দেখাই না। কেউ আমাদের উপর চাপ দিলেও, আমরা যেকোনো পরিস্থিতিতে যিশুর এই কথার বাধ্য থাকি: “তোমার ঈশ্বর যিহোবাকেই উপাসনা করবে।”—মথি ৪:১০.

৭. অন্যান্য ধর্মের লোক আর যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে কোন পার্থক্য রয়েছে?

বর্তমানে, অনেক লোক সুপরিচিত ধর্মীয় গুরুদের খুব সম্মান করে। তারা সেই ধর্মীয় গুরুদের প্রতি এতটাই ভক্তি দেখায় যে, তারা তাদের উপাসনা করতে শুরু করে। এ ছাড়া, তারা তাদের সভাগুলোতে যায়, তাদের বইগুলো কেনে এবং তাদের সংস্থাগুলোতে অনেক টাকাপয়সা দান করে। কিছু লোক তো তাদের প্রতিটা কথা বিশ্বাস করে। গির্জার অনেক লোক পাদরিদের কথা এতটাই বিশ্বাস করে যে, তাদের সামনে যদি যিশুও চলে আসেন, তা হলেও তারা তাঁর প্রতি মনোযোগ দেবে না। কিন্তু, আমরা সাক্ষিরা মানুষের কথা নয় বরং যিহোবারই কথা শুনি। যদিও যে-ভাইয়েরা নেতৃত্ব নেন, তাদের আমরা সম্মান করি, কিন্তু আমরা যিশুর বলা এই কথাও মেনে চলি: “তোমরা সকলে একে অন্যের ভাই।” (মথি ২৩:৮-১০) আমরা মানুষের উপাসনা করি না, তা সে কোনো ধর্মীয় গুরু কিংবা রাজনৈতিক নেতা হোক না কেন। আমরা তাদের করা কোনো পরিকল্পনাকে সমর্থন করি না। আমরা নিরপেক্ষতা বজায় রাখি এবং এই জগৎ থেকে পৃথক থাকি। এই সমস্ত বিষয়ে আমরা অন্যান্য ধর্মের লোকদের থেকে আলাদা।—যোহন ১৮:৩৬.

আমরা যিহোবার নাম মহিমান্বিত করি

সত্য খ্রিস্টানেরা গর্বের সঙ্গে অন্যদের যিহোবা সম্বন্ধে জানায় (৮-১০ অনুচ্ছেদ দেখুন) *

৮. কীভাবে আমরা জানি যে, যিহোবা চান যেন তাঁর নাম সারা বিশ্বে মহিমান্বিত হোক?

একবার, যিশু প্রার্থনা করেছিলেন: “পিতা, তোমার নাম মহিমান্বিত করো।” তখন যিহোবা বলেছিলেন, তাঁর নাম মহিমান্বিত হবে। (যোহন ১২:২৮) যিশু লোকদের যিহোবার নাম জানিয়েছিলেন এবং তাঁর নাম মহিমান্বিত করেছিলেন। (যোহন ১৭:২৬) তাই, বর্তমানে সত্য খ্রিস্টানেরা গর্বের সঙ্গে ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করে এবং তাঁর সম্বন্ধে অন্যদের জানায়।

৯. প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা কোন উপায়ে ঈশ্বরের নাম মহিমান্বিত করেছিল?

খ্রিস্টীয় মণ্ডলী শুরু হওয়ার কিছুসময় পর, যিহোবা “তাঁর নাম বহন করার জন্য ন-যিহুদিদের মধ্য থেকে একদল লোককে একত্রিত” করেছিলেন। (প্রেরিত ১৫:১৪) সেই খ্রিস্টানেরা গর্বের সঙ্গে ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করেছিল আর অন্যদেরও তাঁর নাম জানিয়েছিল। বাইবেলের বইগুলো লেখার সময়েও তারা ঈশ্বরের নাম লিখেছিল। * এভাবে তারা প্রমাণ করেছিল যে, একমাত্র তারাই ঈশ্বরের নাম বহন করছে।—প্রেরিত ২:১৪, ২১.

১০. কেন এটা বলা যেতে পারে যে, শুধু যিহোবার সাক্ষিরাই ঈশ্বরের নাম মহিমান্বিত করে?

১০ বর্তমানে, কারা যিহোবার নাম মহিমান্বিত করছে? অনেক পাদরি ঈশ্বরের নাম গোপন করার অনেক চেষ্টা করেছে। তারা বাইবেলের অনুবাদগুলো থেকে ঈশ্বরের নাম বাদ দিয়ে দিয়েছে। আর তারা তাদের গির্জায় ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করতে লোকদের বারণ করেছে। * কিন্তু, যিহোবার সাক্ষিরা তাদের চেয়ে একেবারে আলাদা। আমরা যিহোবার নাম মহিমান্বিত করি। (যিশা. ৪৩:১০-১২) আমরা নতুন জগৎ অনুবাদ (ইংরেজি) বাইবেলের ২৪ কোটি কপি ছাপিয়েছি। এই বাইবেলের সেই সমস্ত পদে যিহোবার নাম রয়েছে, যেখানে অন্য বাইবেলের অনুবাদে যিহোবার নাম পাওয়া যায় না। আমরা ১,০০০-রেরও বেশি ভাষায় বাইবেলভিত্তিক সাহিত্যাদি প্রকাশ করেছি, যেগুলোতে যিহোবার নাম রয়েছে। এটা থেকে বোঝা যায় যে, শুধু যিহোবার সাক্ষিরাই ঈশ্বরের নাম মহিমান্বিত করে।

আমরা সত্যকে ভালোবাসি

১১. কীভাবে প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা দেখিয়েছিল যে, তারা সত্যকে ভালোবাসে?

১১ যিশু তাঁর পিতা যিহোবা ও তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সত্য জানতেন। আর তিনি সেই সত্যকে খুব ভালোবাসতেন। তাই, যিশু অন্যদের সেই সত্য সম্বন্ধে জানিয়েছিলেন এবং নিজেও সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করেছিলেন। (যোহন ১৮:৩৭) যিশুর শিষ্যেরাও সত্যকে খুব ভালোবাসতেন। (যোহন ৪:২৩, ২৪) প্রেরিত পৌল বলেছিলেন যে, খ্রিস্টান হওয়ার অর্থ হল ‘সত্যের পথে’ চলা। (২ পিতর ২:২) প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরাও সত্যকে খুব ভালোবাসত। তাই, তারা এমন শিক্ষা, মিথ্যা ধারণা ও পরম্পরাগত রীতিনীতি প্রত্যাখ্যান করেছিল, যেগুলো বাইবেলের শিক্ষা অনুযায়ী সঠিক ছিল না। (কল. ২:৮) একইভাবে, বর্তমানেও সত্য খ্রিস্টানেরা ‘সত্যে চলার’ জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করে থাকে। তাদের শিক্ষা ও জীবনযাপন করার ধরন বাইবেলের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে।—৩ যোহন ৩, ৪.

১২. পরিচালকগোষ্ঠী যখন বুঝতে পারে, কোনো রদবদল করার প্রয়োজন রয়েছে, তখন তারা কী করে আর কেন?

১২ যিহোবার সাক্ষিরা দাবি করে না যে, বাইবেল সম্বন্ধে তাদের সম্পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। অনেক বার, তারা যেভাবে বাইবেলের বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছে এবং যেভাবে সংগঠনকে পরিচালনা করেছে, তাতে তাদের ভুল হয়েছে। কিন্তু, এই বিষয়গুলো জেনে আমাদের অবাক হওয়া উচিত নয়। বাইবেলে লেখা আছে, যিহোবা ধীরে ধীরে সত্যের বোধগম্যতা প্রকাশ করেন। (হিতো. ৪:১৮; কল. ১:৯, ১০) তাই, আমাদের তাঁর সময়ের জন্য অপেক্ষা করা উচিত এবং ধৈর্য ধরা উচিত। যখন পরিচালকগোষ্ঠী বুঝতে পারে, কোনো বোধগম্যতা রদবদল করা উচিত কিংবা সংগঠনকে পরিচালনা করার পদ্ধতি পরিবর্তন করা উচিত, তখন তারা দ্রুত তা করে; ইতস্তত করে না। খ্রিস্টীয় জগতের লোকেরা যখন নিজেদের শিক্ষায় রদবদল করে, তখন তারা লোকদের এবং জগৎকে খুশি করার জন্য এমনটা করে। কিন্তু, যিহোবার সাক্ষিরা যখন কোনো রদবদল করে, তখন তারা এই কারণে সেটা করে, যাতে তারা যিহোবাকে খুশি করতে পারে এবং যিশুর মতো উপাসনা করতে পারে। (যাকোব ৪:৪) আমরা জগৎ পরিবর্তিত হওয়ার কারণে রদবদল করি না, কিন্তু আমরা বাইবেলের স্পষ্ট বোধগম্যতা লাভ করার ফলে রদবদল করি।—১ থিষল. ২:৩, ৪.

আমরা একে অন্যকে গভীরভাবে ভালোবাসি

১৩. (ক) প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের মধ্যে সবচেয়ে বিশেষ গুণ কী ছিল? (খ) কীভাবে বোঝা যায় যে, বর্তমানে যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে সেই গুণ রয়েছে?

১৩ প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের মধ্যে ভালো গুণাবলি ছিল। তবে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিশেষ গুণ ছিল প্রেম। যিশু বলেছিলেন: “তোমাদের মধ্যে যদি প্রেম থাকে, তা হলেই সকলে জানবে, তোমরা আমার শিষ্য।” (যোহন ১৩:৩৪, ৩৫) বর্তমানে, সারা বিশ্বে যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে প্রেম ও একতা রয়েছে। যদিও আমরা আলাদা আলাদা দেশ ও সংস্কৃতি থেকে এসেছি, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা একটা পরিবারের মতো। আমরা সভা ও সম্মেলনে এই প্রেম অনুভব করি। এর ফলে আমরা নিশ্চিত হই যে, আমরা সঠিক উপায়ে যিহোবার উপাসনা করছি।

১৪. কলসীয় ৩:১২-১৪ পদ অনুযায়ী কীভাবে আমরা একে অন্যের প্রতি গভীর ভালোবাসা দেখাতে পারি?

১৪ বাইবেল উৎসাহিত করে, “একে অন্যকে গভীরভাবে ভালোবাসো।” (১ পিতর ৪:৮) এই ভালোবাসা দেখানোর একটা উপায় হল, একে অন্যকে ক্ষমা করা এবং একে অন্যের ভুলগুলো সহ্য করা। আরেকটা উপায় হল, মণ্ডলীর সবার প্রতি উদারতা ও আতিথেয়তা দেখানো, এমনকী সেই ব্যক্তিদের প্রতিও, যারা আমাদের আঘাত দিয়েছে। (পড়ুন, কলসীয় ৩:১২-১৪.) আমরা যখন এইরকম ভালোবাসা দেখাই, তখন আমরা প্রমাণ করি যে, আমরা হলাম সত্য খ্রিস্টান।

“একটাই বিশ্বাস”

১৫. আমরা আর কোন উপায়ে প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের মতো উপাসনা করি?

১৫ আমরা অন্যান্য বিষয়েও প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের মতো উপাসনা করি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা ঠিক সেভাবে সুসংগঠিত, যেভাবে তারা সুসংগঠিত ছিল। প্রথম শতাব্দীর মতো বর্তমানেও সীমা অধ্যক্ষ, প্রাচীন ও পরিচারক দাস রয়েছে। (ফিলি. ১:১; তীত ১:৫) সেই খ্রিস্টানদের মতো আমরা যৌনসম্পর্ক, বিয়ে ও রক্তের ব্যাপারে ঈশ্বরের আইনের বাধ্য থাকি। আমরা এমন লোকদের মণ্ডলী থেকে দূরে রাখি, যারা ঈশ্বরের আইনের বাধ্য থাকতে চায় না।—প্রেরিত ১৫:২৮, ২৯; ১ করি. ৫:১১-১৩; ৬:৯, ১০; ইব্রীয় ১৩:৪.

১৬. ইফিষীয় ৪:৪-৬ পদ থেকে আমরা কোন বিষয়টা বুঝতে পারি?

১৬ যিশু বলেছিলেন, অনেক লোক তাঁর শিষ্য হওয়ার দাবি করবে। (মথি ৭:২১-২৩) শেষকালের বিষয়ে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছে, অনেক লোক ঈশ্বরের প্রতি “ভক্তি দেখানোর ভান করবে।” (২ তীম. ৩:১, ৫) কিন্তু, বাইবেলে এও লেখা আছে, শুধুমাত্র “একটাই বিশ্বাস” রয়েছে, যেটা ঈশ্বর অনুমোদন করেন।—পড়ুন, ইফিষীয় ৪:৪-৬.

১৭. বর্তমানে, কারা একটাই বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করে?

১৭ বর্তমানে, কারা একটাই বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করে? যিহোবার সাক্ষিরা। এই প্রবন্ধে আমরা জেনেছি, যিশু ও প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা যে-উপায়ে উপাসনা করতেন, যিহোবার সাক্ষিরাও আজ সেই একই উপায়ে উপাসনা করে। এই বিষয়ে আমরা খুব খুশি যে, আমরা যিহোবার সাক্ষি এবং আমরা যিহোবা ও তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সত্য জানি। তাই আসুন, আমরা সত্যকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখি।

গান ২৩ যিহোবা, মোদের বল

^ অনু. 5 এই প্রবন্ধে আমরা জানব যে, যিশু কোন উপায়ে উপাসনা করেছিলেন। আমরা এও জানব, কীভাবে প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা সেই উপায় অনুসরণ করেছিল আর কীভাবে বর্তমানে যিহোবার সাক্ষিরাও সেই একই উপায় অনুসরণ করে।

^ অনু. 9 ২০১১ সালের জানুয়ারি-মার্চ মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১৮ পৃষ্ঠায় দেওয়া “প্রাথমিক খ্রিস্টানরা কি ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করত?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।

^ অনু. 10 উদাহরণ স্বরূপ, ২০০৮ সালে পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট আদেশ দিয়েছিলেন যে, ক্যাথলিকদের ধর্মীয় উপাসনার সময়ে স্তোত্র ও প্রার্থনায় “ঈশ্বরের নাম ব্যবহার কিংবা উচ্চারণ করা হবে না।”

^ অনু. 63 ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: যিহোবার সাক্ষিরা ২০০-টারও বেশি ভাষায় নতুন জগৎ অনুবাদ বাইবেল প্রকাশ করেছে, যাতে লোকেরা নিজ নিজ ভাষায় বাইবেল পড়তে পারে। এই বাইবেলে ঈশ্বরের নাম রয়েছে।