সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

আপনি কি জানতেন?

আপনি কি জানতেন?

কেন আমরা বলতে পারি, ইজরায়েলীয়দের কাছে সংগীত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল?

সংগীত প্রাচীন ইজরায়েলের সংস্কৃতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। বাইবেলের অনেক অধ্যায়ে বলা হয়েছে, লোকেরা বাদ্যযন্ত্র বাজাত এবং গান গাইত। আসলে, বাইবেলের কিছু বই হল গান, যেমন গীতসংহিতা, পরমগীত এবং বিলাপ। প্রাচীন ইজরায়েল সম্বন্ধে একটা বইতে লেখা আছে: “বাইবেল থেকে স্পষ্টভাবে জানা যায় যে, ইজরায়েলীয়েরা তাদের জীবনে সংগীতকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখত। তারা বিভিন্ন সময়ে গান গাইত এবং বাদ্যযন্ত্র বাজাত।”—মিউজিক ইন বিবলিক্যাল লাইফ।

দৈনন্দিন জীবনে। ইজরায়েলীয়েরা প্রায়ই তাদের অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য বাদ্যযন্ত্র বাজাত এবং গান গাইত। (যিশা. ৩০:২৯) যখন কোনো ব্যক্তিকে রাজা হিসেবে নিযুক্ত করা হত, উৎসব পালন করা হত কিংবা যুদ্ধে জয়লাভের জন্য আনন্দ করা হত, তখন মহিলারা খঞ্জনি বাজিয়ে আনন্দের সঙ্গে গান গাইত এবং নাচ করত। (বিচার. ১১:৩৪; ১ শমূ. ১৮:৬, ৭; ১ রাজা ১:৩৯, ৪০) প্রিয়জনের মৃত্যুতেও ইজরায়েলীয়েরা দুঃখ প্রকাশ করার জন্য শোকের গান গাইত। (২ বংশা. ৩৫:২৫) ম্যাকক্লিনটক ও স্ট্রংয়ের সাইক্লোপিডিয়া-তে বলা হয়েছে, “ইজরায়েলীয়েরা সংগীত খুবই ভালোবাসত।”

রাজপ্রাসাদে। ইজরায়েলের রাজারা সংগীত খুব পছন্দ করত। যেমন, রাজা শৌল দায়ূদকে তার প্রাসাদে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। (১ শমূ. ১৬:১৮, ২৩) পরবর্তী সময়ে দায়ূদ যখন রাজা হয়েছিলেন, তখন তিনি অনেক বাদ্যযন্ত্র তৈরি করেছিলেন, সুন্দর সুন্দর গান রচনা করেছিলেন এবং যিহোবার মন্দিরে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য একটা দল গঠন করেছিলেন। (২ বংশা. ৭:৬; আমোষ ৬:৫) রাজা শলোমনের প্রাসাদেও অনেক গায়ক ও গায়িকা ছিল।—উপ. ২:৮.

উপাসনায়। ইজরায়েলীয়েরা বিশেষ করে যিহোবার উপাসনা করার সময় বাদ্যযন্ত্র বাজাত এবং তাঁর প্রশংসায় গান গাইত। জেরুসালেম মন্দিরে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য ৪,০০০ পুরুষকে নিযুক্ত করা হয়েছিল। (১ বংশা. ২৩:৫) তারা করতাল, তারওয়ালা বাদ্যযন্ত্র, বীণা ও তূরী বাজাত। (২ বংশা. ৫:১২) শুধুমাত্র এই দক্ষ বাদকেরাই নয়, অন্যান্য ইজরায়েলীয়েরাও যিহোবার উপাসনার জন্য গান গাইত। যেমন, তারা যখন বছরে তিন বার উৎসব পালন করার জন্য জেরুসালেমে যেত, তখন এটা মনে করা হয় যে, এই যাত্রার সময় তারা “আরোহণের গান” গাইত। (গীত. ১২০–১৩৪) এ ছাড়া, প্রাচীন যিহুদি লেখাগুলোতে বলা হয়েছে, ইজরায়েলীয়েরা নিস্তারপর্বের ভোজের সময় ‘হালেল গীত’ a গাইত।

বর্তমানেও যিহোবার লোকদের জন্য সংগীত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। (যাকোব ৫:১৩) আমরা যিহোবার উপাসনা করার সময় গান গাই। (ইফি. ৫:১৯) আমরা যখন ভাই-বোনদের সঙ্গে মিলে গান গাই, তখন আমাদের মধ্যে একতা আরও বেড়ে যায়। (কল. ৩:১৬) শুধু তা-ই নয়, সমস্যাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করার সময়ও আমরা সংগীত থেকে অনেক শক্তি লাভ করি। (প্রেরিত ১৬:২৫) সংগীত যিহোবার প্রতি আমাদের বিশ্বাস ও প্রেম প্রকাশ করার কতই-না চমৎকার এক উপায়!

a যিহুদিরা ১১৩ থেকে ১১৮ গীতকে ‘হালেল গীত’ বলত। যিহোবার প্রশংসা করার জন্য এই গীত গাওয়া হত।