অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩৪
‘সত্যে চলতে’ থাকুন
“আমার সন্তানেরা যে সত্যে চলছে, এই কথা শোনার চেয়ে বড়ো আনন্দ আমার আর নেই।”—৩ যোহন ৪.
গান ২৮ নতুন গীত
সারাংশ *
১. আমরা যেভাবে “সত্যে” এসেছি, সেই বিষয় নিয়ে কথা বলার মাধ্যমে আমরা কীভাবে উপকৃত হই?
“আপনি কীভাবে সত্যে এসেছেন?” কোনো যিহোবার সাক্ষির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সময় সবচেয়ে প্রথমে হয়তো এই প্রশ্নটাই জিজ্ঞেস করা হয়। আর আপনি নিশ্চয়ই এই প্রশ্নের উত্তর অনেক বার দিয়েছেন। আমাদের ভাই-বোনেরা কীভাবে সত্যে এসেছে আর যিহোবাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে, সেটা শুনতে আমাদের অনেক ভালো লাগে। আর যিহোবার সাক্ষি হতে পেরে আমরা যে-কতটা খুশি, সেটা বলতেও আমাদের অনেক ভালো লাগে। (রোমীয় ১:১১) যখন আমরা এইরকম বিষয় নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা আবারও মনে করতে পারি যে, সত্য আমাদের কাছে কতটা মূল্যবান। এ ছাড়াও, আমরা ‘সত্যে চলার’ জন্য অর্থাৎ যিহোবার অনুমোদন ও আশীর্বাদ নিয়ে আসে এমনভাবে জীবনযাপন করার জন্য আরও বেশি দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই।—৩ যোহন ৪.
২. এই প্রবন্ধে কী নিয়ে আলোচনা করা হবে?
২ সত্যকে আমরা কেন ভালোবাসি, এমন কয়েকটা কারণ নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করা হবে। এরপর আমরা এটা নিয়েও আলোচনা করব যে, আমরা কীভাবে এই মূল্যবান সত্যের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে যেতে পারি। নিঃসন্দেহে এই প্রবন্ধ আলোচনা করার পর যিহোবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা আরও বেড়ে যাবে, কারণ তিনিই আমাদের এই সত্যের প্রতি আকর্ষণ করেছেন। (যোহন ৬:৪৪) এ ছাড়াও, এটা অন্যদের কাছে সত্য জানানোর বিষয়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে আরও দৃঢ় করে তুলবে।
কেন আমরা ‘সত্যকে’ ভালোবাসি?
৩. সত্যকে ভালোবাসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটা কী?
৩ আমরা বিভিন্ন কারণে সত্যকে ভালোবাসি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণটা হল, আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি যেহেতু তিনিই হলেন এই সত্যের উৎস। বাইবেল থেকে আমরা শিখেছি যে, যিহোবা শুধুমাত্র স্বর্গ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তাই নন, তিনি হলেন একজন প্রেমময় বাবার মতোও, যিনি আমাদের জন্য চিন্তা করেন। (১ পিতর ৫:৭) আমরা এটাও শিখেছি যে, তিনি হলেন “স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান্।” (যাত্রা. ৩৪:৬) এ ছাড়াও, যিহোবা ন্যায়বিচার ভালোবাসেন। (যিশা. ৬১:৮) আমাদের কষ্ট পেতে দেখে তিনিও কষ্ট পান আর খুব শীঘ্রই তিনি আমাদের সমস্ত দুঃখকষ্ট দূর করে দেবেন। (যির. ২৯:১১) আমরাও সেই সময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছি আর এটাও হল একটা কারণ, যার জন্য আমরা যিহোবাকে অনেক ভালোবাসি।
৪-৫. কেন প্রেরিত পৌল আশাকে নোঙরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন?
৪ সত্যকে ভালোবাসার আরেকটা কারণ হল, সত্যের মাধ্যমে আমরা অনেক উপকার লাভ করি। যেমন, বাইবেলের একটা সত্য হচ্ছে, আমাদের সকলের জন্য ভবিষ্যতে একটা আশা রয়েছে। এই আশা আমাদের জীবনে কতটা মূল্যবান, তা বোঝানোর জন্য প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “এই প্রত্যাশা আমাদের জীবনের জন্য এক নোঙরের মতো, যা কোনোরকম সন্দেহ না করে আমাদের দৃঢ় থাকতে সাহায্য করে।” (ইব্রীয় ৬:১৯) নোঙর যেমন জাহাজকে স্থির থাকতে সাহায্য করে, ঠিক একইভাবে বাইবেলের আশা আমাদের কঠিন সমস্যার সময়ে স্থির থাকতে ও শান্ত থাকতে সাহায্য করে।
৫ এটা ঠিক যে, পৌল এই শাস্ত্রপদে অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের স্বর্গীয় আশা সম্বন্ধে বলেছিলেন। কিন্তু, তার এই কথাগুলো সেইসমস্ত খ্রিস্টানের জন্যও প্রযোজ্য, যাদের পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার আশা রয়েছে। (যোহন ৩:১৬) হ্যাঁ, চিরকাল বেঁচে থাকার আশা আমাদের জীবনে অনেক উপকার নিয়ে আসে।
৬-৭. ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে সত্য জানতে পেরে বোন ইভন কীভাবে উপকৃত হয়েছিলেন?
৬ বোন ইভনের অভিজ্ঞতাটা লক্ষ করুন। তিনি সত্যে বড়ো হননি আর ছোটোবেলা থেকেই তিনি মৃত্যুকে খুব ভয় পেতেন। একবার তিনি একটা বইয়ে পড়েন, “একদিন সবকিছু শেষ হয়ে যাবে” আর এই কথাটা তার মাথায় ঘুরতেই থাকে। তিনি বলেন: “সেই কথাগুলো পড়ার পর আমি রাতে শুয়ে শুয়ে ভবিষ্যতের বিষয়ে চিন্তা করতে থাকি। আমি চিন্তা করি, ‘নিশ্চয়ই এই জীবনই সমস্ত কিছু নয়। কেন আমি এখানে আছি?’ আমি মারা যেতে চাইনি!”
৭ পরবর্তী সময়ে, তিনি যখন একজন কিশোরী, তখন যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের কাছ থেকে বাইবেলের সত্য শেখার পর তিনি বলেন: “আমি বিশ্বাস করতে শুরু করি যে, পরমদেশ পৃথিবীতে আমি চিরকাল বেঁচে থাকতে পারব।” বাইবেলের সত্য জানার পর কীভাবে তিনি উপকৃত হয়েছিলেন? তিনি বলেন: “এখন আমি আর রাতে শুয়ে শুয়ে ভবিষ্যৎ অথবা মৃত্যু নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না।” কোনো সন্দেহ নেই যে, বোন ইভন সত্যকে অনেক ভালোবাসেন এবং বাইবেলে পাওয়া ভবিষ্যতের এই আশা সম্বন্ধে অন্যদের জানাতে পেরে তিনি অনেক আনন্দ লাভ করেন।—১ তীম. ৪:১৬.
৮-৯. (ক) যিশুর বলা একটা দৃষ্টান্তে একজন ব্যক্তি যে-ধন খুঁজে পেয়েছিল, সেটা তার কাছে কতটা মূল্যবান ছিল? (খ) সত্য আপনার কাছে কতটা মূল্যবান?
৮ বাইবেলের আরেকটা সত্য হচ্ছে, ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে সুসমাচার। এই সত্যকে যিশু গুপ্তধনের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। মথি ১৩:৪৪ পদে যিশু বলেন: “স্বর্গরাজ্য জমির মধ্যে লুকোনো ধনের মতো, যা খুঁজে পেয়ে একজন ব্যক্তি আবার তা লুকিয়ে রাখল; আর সে আনন্দিত হয়ে চলে গেল এবং তার সমস্ত কিছু বিক্রি করে সেই জমি কিনে নিল।” লক্ষ করুন, সেই ব্যক্তি কোনো গুপ্তধন খুঁজছিল না। কিন্তু যখন সে তা পায়, তখন সেটার জন্য সে অনেক ত্যাগস্বীকার করে; এমনকী তার সমস্ত কিছু বিক্রি করে দেয়। কেন? কারণ সে জানত, এই ধন কতটা মূল্যবান। আসলে সে যা-কিছু ত্যাগ করেছিল, এই ধন তার চেয়ে আরও বেশি মূল্যবান ছিল।
৯ সত্য সম্বন্ধে আপনিও কি একইরকম অনুভব করেন? নিশ্চয়ই! আমরা নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতে ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে আমরা চিরকাল বেঁচে থাকতে পারব। আর এই আশা নিয়ে যিহোবার সেবা করায় যে-আনন্দ, এর সঙ্গে জগতের আর কোনো কিছুরই তুলনা হয় না। এ ছাড়া, যিহোবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উপভোগ করতে পারাটা আমাদের কাছে এক বিশেষ সুযোগ, আর সেটা যেকোনো ত্যাগস্বীকারের চেয়ে আরও বেশি মূল্যবান। আর “তাঁকে পুরোপুরি খুশি করতে” পারা আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের বিষয়।—কল. ১:১০.
১০-১১. মাইকেলের জীবনধারা পরিবর্তন করতে কী তাকে পরিচালিত করেছিল?
১০ যিহোবার অনুমোদন লাভ করার জন্য আমরা অনেকেই বড়ো বড়ো ত্যাগস্বীকার করেছি। যেমন, কেউ কেউ চাকরির জায়গায় বড়ো বড়ো পদ ত্যাগ করেছি, কিংবা অনেক ধন সম্পদ অর্জনের প্রচেষ্টা করা বন্ধ করেছি। আবার কেউ কেউ যিহোবা সম্বন্ধে শেখার পর নিজেদের জীবনধারায় পুরোপুরি পরিবর্তন এনেছি, ঠিক যেমনটা ভাই মাইকেলও করেছিলেন। তিনি সত্যে বড়ো হননি এবং যুবক বয়সে তিনি ক্যারাটে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন: “শরীরকে একেবারে ফিট রাখা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মাঝে মাঝে আমার মনে হত, কেউ আমাকে হারাতে পারবে না।” কিন্তু বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করার পর তিনি জানতে পারেন যে, দৌরাত্ম্য সম্বন্ধে যিহোবা কেমন অনুভব করেন। (গীত. ১১:৫) যে-সাক্ষিদের সঙ্গে মাইকেল অধ্যয়ন করতেন, তাদের সম্বন্ধে তিনি বলেন: “তারা কখনোই আমাকে ক্যারাটে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেননি; তারা শুধু আমাকে বাইবেলের সত্য শিখিয়ে যাচ্ছিলেন।”
১১ যিহোবা সম্বন্ধে মাইকেল যতই শিখছিলেন, তাঁর প্রতি তার ভালোবাসা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। বিশেষ করে যিহোবা যে তাঁর লোকদের প্রতি সমবেদনা দেখান, সেটা তার হৃদয়কে ছুঁয়ে গিয়েছিল। একসময় মাইকেল বুঝতে পারেন যে, তার জীবনে কিছু বড়ো বড়ো পরিবর্তন করতেই হবে। তিনি বলেন: “আমি জানতাম, জীবনে আমি যা-কিছু করেছি তার মধ্যে ক্যারাটে ছেড়ে দেওয়া আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন হবে। তবে, আমি এটাও জানতাম যে, যিহোবাকে সেবা করা অন্য যেকোনো কিছু ত্যাগ করার চেয়ে আরও বেশি মূল্যবান।” মাইকেল বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি যে-সত্য খুঁজে পেয়েছিলেন তা অনেক মূল্যবান আর এই কারণেই তিনি তার জীবনে অনেক বড়ো পরিবর্তন করতে পেরেছিলেন।—যাকোব ১:২৫.
১২-১৩. বাইবেলের সত্য বোন মাইলিকে কীভাবে সাহায্য করেছে?
১২ সত্যের মূল্য বোঝার জন্য বাইবেলে সত্যকে অন্ধকারে জ্বলতে থাকা প্রদীপের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। (গীত. ১১৯:১০৫; ইফি. ৫:৮) বাইবেল থেকে সত্য জানার পর, আজারবাইযানের বোন মাইলি কতটা কৃতজ্ঞ ছিলেন, তা লক্ষ করুন। তার বাবা ও মা আলাদা আলাদা ধর্মে বিশ্বাস করতেন। তার বাবা ছিলেন মুসলিম আর মা ছিলেন যিহুদি। তিনি বলেন: “যদিও আমি কখনো ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন করিনি, কিন্তু কিছু বিষয় আমাকে ভাবিয়ে তুলত। আমি চিন্তা করতাম, ‘কেন ঈশ্বর মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন? কেন তিনি একজন ব্যক্তিকে সারা জীবন কষ্টভোগ করতে এবং পরে চিরকাল নরকে যন্ত্রণাভোগ করতে দেন?’ যেহেতু লোকেরা বলত, সবই ঈশ্বরের ইচ্ছায় ঘটে, তাই আমি ভাবতাম, ‘ঈশ্বর কি লোকদের উপর সমস্যা নিয়ে আসেন এবং এরপর তাদের কষ্ট পেতে দেখে আনন্দ পান?’”
১৩ বোন মাইলি তার প্রশ্নের উত্তরগুলো খোঁজা বন্ধ করে দেননি। একসময় তিনি বাইবেল অধ্যয়ন করতে শুরু করেন এবং একজন যিহোবার সাক্ষি হন। তিনি বলেন: “বাইবেলের যুক্তিগুলোর কারণে জীবনের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গি এখন আরও ভালো হয়েছে। ঈশ্বরের বাক্যে পাওয়া বিশ্বাসযোগ্য যুক্তিগুলো মনের শান্তি এনে দিয়েছে।” বোন মাইলির মতো আমরাও যিহোবাকে ধন্যবাদ দিই, “যিনি [আমাদের] অন্ধকার থেকে বের করে তাঁর অপূর্ব আলোতে আহ্বান করেছেন।”—১ পিতর ২:৯.
১৪. কীভাবে আমরা সত্যের প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরও বাড়াতে পারি? (এ ছাড়া, “ আরও কিছু তুলনা” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)
১৪ সত্যের মূল্য বোঝার জন্য বাইবেলে যে-তুলনাগুলো পাওয়া যায়, এর মধ্যে আমরা তিনটে উদাহরণ দেখলাম। আপনি হয়তো আরও অন্যান্য তুলনার কথাও মনে করতে পারেন। ভালো হয়, যদি আপনি সত্যকে ভালোবাসার অন্যান্য কারণগুলো খোঁজার জন্য একটা ব্যক্তিগত অধ্যয়ন প্রজেক্ট শুরু করেন। এভাবে সত্যের প্রতি আমাদের ভালোবাসা আরও বাড়বে, আর তখন এর প্রতি ভালোবাসা দেখানোর আরও বেশি উপায় আমরা খুঁজে পাব।
কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা সত্যকে ভালোবাসি?
১৫. আমরা যে সত্যকে ভালোবাসি, তা দেখানোর একটা উপায় কী?
১৫ বাইবেল এবং বাইবেলভিত্তিক প্রকাশনাদি নিয়মিত অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা সত্যকে ভালোবাসি। আর আমরা সত্যে যত বছর ধরেই থাকি না কেন, আসলে আমাদের শেখার কোনো শেষ নেই। প্রহরীদুর্গ পত্রিকার একেবারে প্রথম প্রকাশিত সংখ্যায়, সত্যকে একটা ফুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল, যেটা অনেক আগাছা বা মিথ্যার মাঝে প্রায় ঢাকা পরে গিয়েছে। এইরকম একটা ফুল খুঁজে পাওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই খুব ভালোভাবে অনুসন্ধান করতে হবে। আর তিনি যখন সেটা খুঁজে পান, তখন সত্যের একটা ফুল পেয়েই তার সন্তুষ্ট থাকা উচিত নয়। সত্যের আরও বেশি বেশি ফুল পাওয়ার জন্য তাকে তার অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়া উচিত। আমাদের সবাইকেই সত্য অনুসন্ধান বা অধ্যয়ন করার জন্য অনেক প্রচেষ্টা করতে হয়, তবে তা করলে আমরা উপকৃত হব।
১৬. কোন উপায়ে অধ্যয়ন করে আপনি উপকৃত হন? (হিতোপদেশ ২:৪-৬)
১৬ আমাদের মধ্যে অনেকেরই হয়তো অধ্যয়ন করা কঠিন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু, যিহোবা আমাদের ‘অন্বেষণ করা’ এবং ‘অনুসন্ধান করা’ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছেন, যাতে আমরা বাইবেলের সত্য আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি। (পড়ুন, হিতোপদেশ ২:৪-৬.) এমন প্রচেষ্টা করে চললে আমরা সত্যিই উপকৃত হব। ভাই কোরি বাইবেল পড়ার সময়ে এক এক করে প্রত্যেকটা শাস্ত্রপদ ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন: “আমি সেই শাস্ত্রপদের প্রতিটা ফুটনোট পড়ি, ক্রস রেফারেন্সগুলো দেখি, আর অতিরিক্ত কিছু গবেষণাও করি। . . . এভাবে বাইবেল পড়ার মাধ্যমে আমি সত্যিই অনেক কিছু শিখতে পেরেছি!” এই ভাইয়ের মতো হোক বা অন্য কোনো উপায়ে হোক, আমরা যখন বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য সময় দিই ও প্রচেষ্টা করি, তখন আমরা দেখাই যে, আমরা সত্যকে অনেক ভালোবাসি।—গীত. ১:১-৩.
১৭. সত্যে চলার অর্থ কী? (যাকোব ১:২৫)
১৭ বাইবেলের সত্য নিয়ে শুধু অধ্যয়ন করাই যথেষ্ট নয়। অধ্যয়ন থেকে পুরোপুরি উপকার পাওয়ার জন্য আমাদের সত্যে চলতে হবে অর্থাৎ আমরা যা শিখছি, সেটা কাজে লাগাতে হবে। একমাত্র এভাবেই সত্য আমাদের সত্যিকার অর্থে সুখী করে তুলতে পারে। (পড়ুন, যাকোব ১:২৫.) আমরা সত্যে চলছি কি না, তা আমরা কীভাবে বুঝতে পারব? এই বিষয়ে একজন ভাই বলেছেন, আমরা নিজেদের পরীক্ষা করে দেখতে পারি। আমরা দেখতে পারি যে, আমরা যা শিখছি তা কতটা কাজে লাগাচ্ছি এবং কোথায় কোথায় আরও উন্নতি করতে হবে। প্রেরিত পৌলও একই বিষয়ে বলেছেন: “আমরা যতটা উন্নতি করেছি, এসো আমরা ক্রমাগত সেই একই ধারায় চলি।”—ফিলি. ৩:১৬.
১৮. কেন আমরা ‘সত্যে চলার’ জন্য আমাদের সবটুকু দিয়ে প্রচেষ্টা করে চলি?
১৮ ‘সত্যে চলার’ জন্য আমরা যখন আমাদের সবটুকু দিয়ে প্রচেষ্টা করে চলি, তখন আমরা কত উপকার লাভ করতে পারি, তা একটু ভেবে দেখুন! সত্য আমাদের আরও ভালোভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, সত্যে চলার মাধ্যমে আমরা যিহোবাকে এবং একই সঙ্গে আমাদের ভাই-বোনদেরকেও খুশি করতে পারি। (হিতো. ২৭:১১; ৩ যোহন ৪) সত্যিই, সত্যকে ভালোবাসার এবং সত্যে চলার জন্য এর চেয়ে ভালো কারণ আর কীই-বা হতে পারে?
গান ২৪ পুরস্কারে তোমার চোখ রাখো!
^ ’সত্য’ বলতে আমরা প্রায়ই আমাদের বিশ্বাস ও জীবনধারাকে বুঝিয়ে থাকি। আমরা সত্যে নতুন হই বা বহু বছর ধরে থাকি, যেটাই হোক, আমরা কেন সত্যে চলতে ভালোবাসি, তা নিয়ে চিন্তা করলে আমরা অনেক উপকৃত হব। আর এভাবে আমাদের প্রতি যে যিহোবার অনুমোদন রয়েছে, সেই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হবে।