অধ্যয়ন প্রবন্ধ ১৮
সভাগুলোতে একে অন্যকে উৎসাহিত করুন
“এসো, আমরা একে অন্যের প্রতি মনোযোগ দিই . . . একে অন্যকে উৎসাহিত করি।”—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.
গান ৮৮ তোমার পথ আমাকে জানাও
সারাংশ a
১. কেন আমরা সভাগুলোতে উত্তর দিই?
আমরা কেন মণ্ডলীর সভাগুলোতে যাই? এর প্রধান কারণ হল, আমরা যিহোবার প্রশংসা করতে পারি। (গীত. ২৬:১২; ১১১:১) আর সভাগুলোতে যাওয়ার আরেকটা কারণ হল, আমরা এই কঠিন সময়ে একে অন্যকে উৎসাহিত করতে পারি। (১ থিষল. ৫:১১) আমরা যখন সভাগুলোতে হাত তুলি এবং উত্তর দিই, তখন আমরা দুটো কাজই একসঙ্গে করি।
২. আমরা সভাগুলোতে কখন কখন উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাই?
২ আমরা প্রতি সপ্তাহে সভাগুলোতে উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাই। উদাহরণ স্বরূপ, সপ্তাহের শেষে আমরা প্রহরীদুর্গ অধ্যয়নে উত্তর দিতে পারি। আর সপ্তাহের মাঝের সভায় অমূল্য রত্ন অংশে, মণ্ডলীর বাইবেল অধ্যয়নে এবং এইরকমই অন্যান্য অংশে আমরা উত্তর দিতে পারি, যেখানে প্রশ্ন করা হয়।
৩. (ক) আমাদের সামনে কোন কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসতে পারে? (খ) ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫ পদে লেখা কথাগুলো থেকে আমরা কীভাবে সাহায্য লাভ করতে পারি?
৩ আমরা সবাই যিহোবার প্রশংসা করতে চাই এবং আমাদের ভাই-বোনদের উৎসাহিত করতে চাই। কিন্তু, যখন উত্তর দেওয়ার বিষয়টা আসে, তখন আমাদের সামনে কিছু প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসতে পারে। আমরা হয়তো উত্তর দিতে ভয় পাই অথবা আমরা হয়তো অনেক উত্তর দিতে চাই, কিন্তু অনেকসময় হতে পারে আমাদের জিজ্ঞেস করা হয় না। কীভাবে আমরা এই এইরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি? এর উত্তর আমরা সেই চিঠিতে পেতে পারি, যেটা পৌল ইব্রীয়দের প্রতি লিখেছিলেন। তিনি যখন তাদের বলছিলেন, সভাগুলোতে যাওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তখন তিনি বলেছিলেন, আমাদের ‘একে অন্যকে উৎসাহিত করার’ উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত। (পড়ুন, ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.) আমাদের সংক্ষিপ্ত উত্তর থেকেও ভাই-বোনেরা অনেক উৎসাহ লাভ করতে পারে। আমরা যদি এটা মনে রাখি, তা হলে আমরা উত্তর দেওয়ার জন্য হাত তুলতে ইতস্তত বোধ করব না। আর আমাদের যদি প্রায়ই জিজ্ঞেস করা না হয়, তা হলেও আমরা খুশি হতে পারি যে, অন্য ভাই-বোনেরা উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।—১ পিতর ৩:৮.
৪. এই প্রবন্ধে আমরা কোন তিনটে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব?
৪ এই প্রবন্ধে সবচেয়ে প্রথমে আমরা আলোচনা করব, আমরা যদি একটা ছোটো মণ্ডলীতে থাকি, যেখানে উত্তর দেওয়ার জন্য বেশি ভাই-বোন নেই, তা হলে আমরা একে অন্যকে কীভাবে উৎসাহিত করতে পারি। এরপর আমরা আলোচনা করব, আমরা যদি একটা বড়ো মণ্ডলীতে থাকি, যেখানে উত্তর দেওয়ার জন্য অনেক ভাই-বোন হাত তোলে, তা হলে আমরা একে অন্যকে কীভাবে উৎসাহিত করতে পারি। আর শেষে দেখব, আমরা কেমন উত্তর দিতে পারি, যাতে আমরা অন্যদের উৎসাহিত করতে পারি।
ছোটো মণ্ডলীতে একে অন্যকে উৎসাহিত করুন
৫. সভাতে যদি বেশি ভাই-বোন না থাকে, তা হলে কীভাবে আমরা একে অন্যকে উৎসাহিত করতে পারি?
৫ একটা ছোটো মণ্ডলীতে অথবা একটা দলে উত্তর দেওয়ার জন্য বেশি ভাই-বোন থাকে না। অনেকসময় যে-ভাই পরিচালনা করেন, তাকে হয়তো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এইরকম ক্ষেত্রে আমাদের মনে হতে পারে, এই সভা দীর্ঘসময় ধরে চলছে, শেষ হওয়ার নামই নিচ্ছে না; এতে হয়তো কেউ উৎসাহিত হবে না। তাই, আপনি কী করতে পারেন? আপনি উত্তর দেওয়ার জন্য অনেক বার হাত তুলতে পারেন। আপনি যখন তা করবেন, তখন অন্যদেরও হয়তো উত্তর দিতে ইচ্ছা করবে।
৬-৭. আমাদের যদি উত্তর দিতে ভয় লাগে, তা হলে আমরা কী করতে পারি?
৬ আপনার কি উত্তর দেওয়ার কথা চিন্তা করেই হার্টবিট বেড়ে যায়? অনেক ভাই-বোনের এমনটা হয়। এইরকম সময়ে আপনি কী করতে পারেন? আপনি এমন কিছু উপায় জানার চেষ্টা করতে পারেন, যেগুলোর মাধ্যমে আপনার ভয় কমে যাবে আর আপনি ভাই-বোনদের উৎসাহিতও করতে পারবেন। কীভাবে আপনি তা করতে পারেন?
৭ আপনি প্রহরীদুর্গ পত্রিকার পুরোনো প্রবন্ধগুলোতে দেওয়া কিছু পরামর্শের উপর মনোযোগ দিতে পারেন। b একটা পরামর্শ হল, ভালোভাবে প্রস্তুতি নিন। (হিতো. ২১:৫) যত আপনি বিষয়বস্তুর সঙ্গে পরিচিত হবেন, তত আপনার জন্য উত্তর দেওয়া সহজ হবে। আরেকটা পরামর্শ হল, সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন। (হিতো. ১০:১৯; ১৫:২৩) আপনার উত্তর যত ছোটো হবে, তত কম আপনাকে চিন্তা করতে হবে। আপনি যদি অনেক বড়ো উত্তর দেন, যেটার মধ্যে বিভিন্ন পয়েন্ট রয়েছে, তা হলে ভাই-বোনদের জন্য সেটা বোঝা অনেক কঠিন হতে পারে। কিন্তু, আপনার উত্তর যদি সংক্ষিপ্ত হয়, হতে পারে এক বা দুই বাক্যে, তা হলে ভাই-বোনেরা সহজেই সেটা বুঝতে পারবে। তাই, নিজের ভাষায় ছোটো করে উত্তর দিন। এটা থেকে বোঝা যাবে, আপনি ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন আর বিষয়বস্তুকে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
৮. আপনি উত্তর দেওয়ার জন্য যে-প্রচেষ্টা করেন, সেটাকে যিহোবা কীভাবে দেখেন?
৮ আপনি হয়তো এগুলোর মধ্যে কিছু পরামর্শ কাজে লাগিয়েছেন, তারপরও আপনি অনেক কষ্টে একটা কিংবা দুটো উত্তর দিতে পারেন। যদি এমনটা হয়, তা হলে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনি উত্তর দেওয়ার জন্য যে-প্রচেষ্টা করেন, যিহোবা সেটাকে খুবই মূল্যবান হিসেবে দেখেন। (লূক ২১:১-৪) কিন্তু, প্রচেষ্টা করার মানে এই নয়, আমরা সেটা করার চেষ্টা করব, যেটা আমরা করতে পারব না। (ফিলি. ৪:৫) প্রথমে চিন্তা করুন, আপনি কী করতে পারেন আর এরপর সেই অনুযায়ী লক্ষ্য রাখুন। যিহোবার কাছে প্রার্থনা করুন, যাতে আপনি ভয় পেয়ে না যান কিংবা ঘাবড়ে না যান। প্রথম প্রথম আপনি হয়তো শুধুমাত্র একটা সংক্ষিপ্ত উত্তর দেওয়ার লক্ষ্য রাখতে পারেন।
বড়ো মণ্ডলীতে একে অন্যকে উৎসাহিত করুন
৯. বড়ো মণ্ডলীতে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসতে পারে?
৯ আপনি যদি এমন এক মণ্ডলীতে থাকেন, যেখানে অনেক প্রকাশক রয়েছে, তা হলে আপনার সামনে এক ভিন্ন ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আসতে পারে। হতে পারে, অনেক ভাই-বোন উত্তর দেওয়ার জন্য হাত তোলে আর এই কারণে অনেকসময় আপনি উত্তর দেওয়ার সুযোগ পান না। উদাহরণ স্বরূপ, ডায়না নামে একজন বোনের সভাগুলোতে উত্তর দিতে খুব ভালো লাগে। c তিনি মনে করেন, এটা হল উপাসনার একটা অংশ, সভাগুলোতে উত্তর দিয়ে তিনি অন্যদের উৎসাহিত করতে পারেন আর তা করার মাধ্যমে বাইবেলের সত্যগুলোর উপর তার বিশ্বাসও বেড়ে যায়। কিন্তু, তিনি যখন একটা বড়ো মণ্ডলীতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি বেশি উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেতেন না। অনেকসময় পুরো সভাতে তিনি এক বারও উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেতেন না। বোন বলেন, “আমি অনেক বিরক্ত হয়ে যেতাম। মনে হত যেন আমি অনেক বড়ো এক সুযোগ মিস করে ফেলেছি। যখন এমনটা বার বার হয়, তখন আপনি চিন্তা করতে শুরু করেন, আমার সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করা হচ্ছে না তো?”
১০. উত্তর দেওয়ার জন্য আমরা আর কী কী করতে পারি?
১০ আপনারও কি বোন ডায়নার মতো মনে হয়? এর উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তা হলে আপনার মনে এইরকম চিন্তা আসতে পারে, ‘হাত তুলে কী লাভ! এর চেয়ে ভালো হয় আমি চুপচাপ বসে শুনি।’ কিন্তু, এমনটা চিন্তা করবেন না। আপনি চাইলে নীচে দেওয়া পরামর্শগুলো কাজে লাগাতে পারেন। প্রত্যেকটা সভার জন্য অনেক উত্তর তৈরি করুন। যদি অধ্যয়নের শুরুতে জিজ্ঞেস করা না হয়, তা হলে? অধ্যয়ন চলাকালীনও আপনার কাছে উত্তর দেওয়ার অনেক সুযোগ থাকবে। আপনি যখন প্রহরীদুর্গ অধ্যয়নের জন্য প্রস্তুতি নেন, তখন চিন্তা করুন, প্রতিটা অনুচ্ছেদ কীভাবে প্রবন্ধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এভাবে আপনি অনেক ভালো ভালো উত্তর তৈরি করতে পারবেন, যেগুলোর মাধ্যমে ভাই-বোনেরা উৎসাহিত হতে পারে। এ ছাড়া, আপনি সেই অনুচ্ছেদগুলোর জন্যও উত্তর প্রস্তুত করতে পারেন, যেগুলোতে বাইবেলের গভীর বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে। (১ করি. ২:১০) কেন? কারণ সেগুলো ব্যাখ্যা করা এতটা সহজ নয় আর হয়তো খুব কম ভাই-বোনই সেগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য হাত তুলবে। কিন্তু, এই সমস্ত পরামর্শ কাজে লাগানোর পরও আপনাকে যদি এক বারও জিজ্ঞেস করা না হয়, তা হলে আপনি কী করতে পারেন? আপনি চাইলে সভার আগেই যে-ভাই পরিচালনা করবেন, তাকে বলতে পারেন, আপনি কোন নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দিতে চান।
১১. ফিলিপীয় ২:৪ পদে আমাদের কী করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে?
১১ ফিলিপীয় ২:৪ পদ পড়ুন। পৌল ফিলিপীতে থাকা খ্রিস্টানদের উৎসাহিত করেছিলেন, তারা যেন অন্যদের বিষয়েও চিন্তা করে। কীভাবে আমরা তার এই পরামর্শ সভাগুলোতে কাজে লাগাতে পারি? আমরা মনে রাখতে পারি, আমাদের মতো অন্য ভাই-বোনেরাও উত্তর দিতে চায়।
১২. সভাগুলোতে একে অন্যকে উৎসাহিত করার একটা উপায় কী? (ছবিও দেখুন।)
১২ একটু কল্পনা করুন, আপনি যখন আপনার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেন, তখন আপনি কি শুধু একাই কথা বলে যান? না, আপনি তা করেন না। আপনি তাদেরও কথা বলার সুযোগ দেন। একইভাবে, আমরা চাইব যেন সভাগুলোতে ভাই-বোনেরা আরও বেশি করে উত্তর দেওয়ার সুযোগ পায়। সত্যি বলতে কী, ভাই-বোনদের উৎসাহিত করার একটা ভালো উপায় হল, তাদের বিশ্বাস প্রকাশ করার সুযোগ দেওয়া। (১ করি. ১০:২৪) আসুন দেখি, কীভাবে আমরা তা করতে পারি।
১৩. আমরা এমন কী করতে পারি, যাতে ভাই-বোনেরা আরও বেশি করে উত্তর দেওয়ার সুযোগ পায়?
১৩ একটা বিষয় আপনি মনে রাখতে পারেন, আপনার উত্তর যেন সংক্ষিপ্ত হয়। এভাবে আরও ভাই-বোন উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাবে। প্রাচীন এবং অভিজ্ঞ প্রকাশকেরা এই বিষয়টা মনে রাখতে পারেন, যাতে ভাই-বোনেরা তাদের কাছ থেকে শিখতে পারে। সংক্ষিপ্ত উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি এটা খেয়াল রাখুন, আপনি যেন সমস্ত পয়েন্ট না বলেন। আপনি যদি অনুচ্ছেদে দেওয়া সমস্ত বিষয় বলে দেন, তা হলে অন্যদের উত্তর দেওয়ার মতো কিছুই থাকবে না। যেমন, এই ১৩ অনুচ্ছেদের মধ্যে দুটো পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—প্রথমত, সংক্ষিপ্ত উত্তর দিন; দ্বিতীয়ত, সমস্ত পয়েন্ট বলবেন না। এই অনুচ্ছেদের জন্য যদি আপনাকে প্রথমে উত্তর দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তা হলে আপনি শুধুমাত্র একটা বিষয় বলুন না কেন?
১৪. কীভাবে আপনি স্থির করতে পারেন, আপনি উত্তর দেওয়ার জন্য কখন হাত তুলবেন? (ছবিও দেখুন।)
১৪ ভেবে-চিন্তে স্থির করুন, আপনি কখন উত্তর দেওয়ার জন্য হাত তুলবেন। আপনি যদি বার বার হাত তুলতেই থাকেন, তা হলে যে-ভাই পরিচালনা করছেন, তার মনে হতে পারে, প্রত্যেক বার আপনাকেই সুযোগ দেওয়া উচিত অথচ অন্যেরা হয়তো এক বারও উত্তর দেওয়ার সুযোগ পায়নি। এর ফলে, যারা সুযোগ পাচ্ছে না, তারা হয়তো হতাশ হয়ে যাবে এবং তাদের আর হাত তুলতে ইচ্ছা করবে না।—উপ. ৩:৭.
১৫. (ক) আমাদের যদি উত্তর জিজ্ঞেস করা না হয়, তা হলে আমরা কী করব? (খ) আলোচনার অংশগুলো যে-ভাইয়েরা পরিচালনা করেন, তাদের কোন কোন বিষয় খেয়াল রাখা উচিত? (“ আপনি যখন কোনো অংশ পরিচালনা করছেন” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)
১৫ কোনো অধ্যয়ন চলাকালীন যখন অনেক ভাই-বোন হাত তোলে, তখন আমরা হয়তো ততটা উত্তর দেওয়ার সুযোগ না-ও পেতে পারি, যতটা আমরা নিজেরা চাই। আর অনেকসময় আমাদের হয়তো এক বারও জিজ্ঞেস করা হয় না। এইরকম সময়ে একটু দুঃখ হয় ঠিকই, কিন্তু আমাদের খারাপ মনে করা উচিত নয়।—উপ. ৭:৯.
১৬. অন্যেরা যখন উত্তর দেয়, তখন কীভাবে আমরা তাদের উৎসাহিত করতে পারি?
১৬ আপনি যদি তত বার উত্তর দেওয়ার সুযোগ না পান, যত বার আপনি চান, তা হলে আপনি কী করতে পারেন? আপনি মনোযোগ দিয়ে অন্যদের উত্তরগুলো শুনতে পারেন এবং সভার পরে তাদের উত্তরের জন্য তাদের প্রশংসা করতে পারেন। আপনার প্রশংসা শুনে ভাই-বোনেরা হয়তো ততটাই উৎসাহিত হবে, যতটা আপনার উত্তর শুনে উৎসাহিত হত। (হিতো. ১০:২১) সত্যি বলতে কী, প্রশংসা করা হল একে অন্যকে উৎসাহিত করার আরেকটা উপায়।
একে অন্যকে উৎসাহিত করার আরও কিছু উপায়
১৭. (ক) কীভাবে বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের বয়স অনুযায়ী তাদের উত্তর প্রস্তুত করার জন্য সাহায্য করতে পারে? (খ) ভিডিওতে যেমনটা দেখানো হয়েছে, কোন চারটে পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আমরা উত্তর প্রস্তুত করতে পারি? (পাদটীকা দেখুন।)
১৭ আমরা সভাগুলোতে আর কীভাবে একে অন্যকে উৎসাহিত করতে পারি? আপনার যদি ছোটো সন্তান থাকে, তা হলে তাদের বয়স অনুযায়ী আপনি তাদের উত্তর প্রস্তুত করার জন্য সাহায্য করতে পারেন। (মথি ২১:১৬) কখনো কখনো কঠিন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেমন, বিবাহিত জীবনে আসা বিভিন্ন সমস্যা অথবা নৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে। তবে, এইরকম ক্ষেত্রেও একটা কিংবা দুটো অনুচ্ছেদ এমন হতে পারে, যেগুলোতে সন্তানেরা উত্তর দিতে পারে। এ ছাড়া, সন্তানদের এটা বুঝতে সাহায্য করুন, যখনই তারা হাত তুলবে, তখনই যে তাদের ধরা হবে, এমন নয়। আপনি যদি আগে থেকে এই বিষয় নিয়ে সন্তানদের সঙ্গে কথা বলেন, তা হলে সভাতে যখন অন্যেরা সুযোগ পাবে, তখন এটা দেখে তারা দুঃখ পাবে না কিংবা নিরুৎসাহিত হবে না।—১ তীম. ৬:১৮. d
১৮. উত্তর দেওয়ার সময়ে আমরা কী করতে পারি, যাতে অন্যদের মনোযোগ আমাদের উপর না আসে? (হিতোপদেশ ২৭:২)
১৮ আমরা সবাই এমন উত্তর প্রস্তুত করতে পারি, যেটার মাধ্যমে যিহোবার প্রশংসা হবে আর ভাই-বোনেরা উৎসাহিত হবে। (হিতো. ২৫:১১) কখনো কখনো উত্তর দেওয়ার সময়ে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতাও বলতে পারি। তবে, আমাদের বার বার নিজেদেরই বিষয়ে মন্তব্য করা উচিত নয়। (পড়ুন, হিতোপদেশ ২৭:২; ২ করি. ১০:১৮.) এর পরিবর্তে, আমাদের এমনভাবে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত, যেটার মাধ্যমে ভাই-বোনদের মনোযোগ যিহোবা, তাঁর বাক্য এবং তাঁর লোকদের উপর যাবে। (প্রকা. ৪:১১) আর যদি কোনো অনুচ্ছেদের প্রশ্নেই আপনার নিজের অভিজ্ঞতা বলতে বলা হয়, তা হলে সেটা বলা থেকে পিছিয়ে যাবেন না। যেমন, পরের অনুচ্ছেদেই এইরকম একটা প্রশ্ন রয়েছে।
১৯. (ক) আমরা যখন সভাতে আসা সমস্ত লোকের বিষয়ে চিন্তা করব, তখন এর ফলাফল কী হবে? (রোমীয় ১:১১, ১২) (খ) সভাগুলোতে উত্তর দেওয়ার ব্যাপারে কোন বিষয়টা আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে?
১৯ আমাদের কীভাবে উত্তর দেওয়া উচিত, যদিও এই বিষয়ে কোনো আইনকানুন দেওয়া হয়নি, কিন্তু আমাদের সবার এমনভাবে উত্তর দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করা উচিত, যাতে অন্যেরা উৎসাহিত হয়। কীভাবে আমরা তা করতে পারি? কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের হয়তো বার বার হাত তুলতে পারি। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমরা উত্তর দেওয়ার যে-সুযোগ পেয়েছি, তাতেই আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে পারি। আমরা এই বিষয়ে খুশি হতে পারি যে, অন্যেরা উত্তর দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। এভাবে, মণ্ডলীর সভাগুলোতে আমরা যখন অন্যদের উপর মনোযোগ দেব অর্থাৎ তাদের বিষয়ে চিন্তা করব, তখন আমরা সবাই “পরস্পরকে উৎসাহিত” করতে পারব।—পড়ুন, রোমীয় ১:১১, ১২.
গান ৯৩ আমাদের সভাগুলোকে আশীর্বাদ করো
a সভাগুলোতে উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে আমরা একে অন্যকে উৎসাহিত করি। তবে, কিছু ভাই-বোন উত্তর দিতে ভয় পায়। আবার কিছু ভাই-বোনের উত্তর দিতে ভালো লাগে, কিন্তু তারা মনে করে, ‘যদি আরও উত্তর দেওয়ার সুযোগ পেতাম, তা হলে কতই-না ভালো হত!’ এই দুটো ক্ষেত্রেই কীভাবে আমরা “একে অন্যের প্রতি মনোযোগ” দিতে পারি অর্থাৎ তাদের বিষয়ে চিন্তা করতে পারি, যাতে সবাই উৎসাহিত হয়? আর আমরা কীভাবে এমন উত্তর দিতে পারি, যাতে সবাই প্রেম দেখাতে এবং ভালো কাজ করতে উৎসাহিত হয়? এই প্রবন্ধে এই বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে।
b আরও তথ্য জানার জন্য ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৮-১৩ পৃষ্ঠা আর ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১৯-২২ পৃষ্ঠা দেখুন।
c কিছু নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
d jw.org ওয়েবসাইটে যিহোবার বন্ধু হও—তোমার উত্তর প্রস্তুত করো শিরোনামের ভিডিওটা দেখুন।
e ২০১৩ সালের ১৫ জুলাই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার পৃষ্ঠা ৩২ এবং ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার পৃষ্ঠা ২১-২২ দেখুন।
f ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: একটা বড়ো মণ্ডলীতে একজন ভাই ইতিমধ্যে উত্তর দিয়েছেন। তাই, তিনি অন্যদের উত্তর দেওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন।