সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৪

কেন আমরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দিই?

কেন আমরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দিই?

“আমার স্মরণে এটা কোরো।”—লূক ২২:১৯.

গান ২ ধন্যবাদ, যিহোবা

সারাংশ *

১-২. (ক) আমরা মৃত্যুতে যে-প্রিয়জনদের হারিয়েছি, তাদের আমরা বিশেষভাবে কখন স্মরণ করি? (খ) মারা যাওয়ার আগের রাতে যিশু কী করেছিলেন?

 আমাদের প্রিয়জনেরা যত বছর আগেই মারা যাক না কেন, আমরা তাদের কখনো ভুলে যাই না। আমরা বিশেষভাবে তাদের সেই দিনে স্মরণ করি, যে-দিনে তারা মারা গিয়েছিল।

আমরা যিশুকে অনেক ভালোবাসি। তাই, প্রতি বছর আমরা আর সেইসঙ্গে পৃথিবীব্যাপী লক্ষ লক্ষ লোক তাঁর মৃত্যুদিন স্মরণ করার জন্য একত্রিত হই। (১ পিতর ১:৮) আমরা যিশুর মৃত্যুর স্মরণার্থ দিবস পালন করি কারণ তিনি আমাদের পাপ ও মৃত্যু থেকে উদ্ধার করার জন্য নিজের জীবন মুক্তির মূল্য হিসেবে দান করেছিলেন। (মথি ২০:২৮) এ ছাড়া, যিশু চেয়েছিলেন যেন তাঁর শিষ্যেরা এই দিনটা স্মরণ করে। মারা যাওয়ার আগের রাতে যিশু একটা বিশেষ ভোজ প্রবর্তন করেছিলেন এবং তাঁর শিষ্যদের এই আজ্ঞা দিয়েছিলেন: “আমার স্মরণে এটা কোরো।” *লূক ২২:১৯.

৩. এই প্রবন্ধে আমরা কী জানব?

যারা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়, তাদের মধ্যে কিছু অভিষিক্ত খ্রিস্টানও থাকে, যাদের স্বর্গে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে। কিন্তু, বেশিরভাগ ব্যক্তির এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে। এই প্রবন্ধে আমরা জানব, কেন এই দুই দলের ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়। আমরা এও জানব, স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার ফলে আমরা কোন কোন উপকার লাভ করি। আসুন প্রথমে জানি যে, কেন অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়।

যে-কারণে অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা যোগ দিয়ে থাকে

৪. কেন অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা স্মরণার্থ সভায় রুটি ও দ্রাক্ষারস গ্রহণ করে থাকে?

প্রতি বছর অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা রুটি ও দ্রাক্ষারস গ্রহণ করার জন্য স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়। কেন? এর উত্তর জানার আগে আসুন আমরা লক্ষ করি, মারা যাওয়ার আগের রাতে যিশু কী করেছিলেন। নিস্তারপর্বের ভোজ পালন করার পর যিশু আরেকটা ভোজ প্রবর্তন করেন, যেটাকে প্রভুর সান্ধ্যভোজ বলা হয়। তিনি তাঁর ১১ জন বিশ্বস্ত প্রেরিতকে রুটি ও দ্রাক্ষারস দেন আর বলেন, তারা যেন তা খান ও পান করেন। যিশু তাদের কাছে দুটো চুক্তির বিষয়ে উল্লেখ করেন: একটা হল নতুন চুক্তি এবং আরেকটা হল রাজ্য চুক্তি। * (লূক ২২:১৯, ২০, ২৮-৩০) এই চুক্তিগুলোর কারণে ১,৪৪,০০০ জন ব্যক্তি স্বর্গে রাজা ও যাজক হওয়ার সুযোগ লাভ করেছে। (প্রকা. ৫:১০; ১৪:১) তাই, স্মরণার্থ সভায় রুটি ও দ্রাক্ষারস কেবল তারাই গ্রহণ করে, যাদের স্বর্গে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে।

৫. অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা নিজেদের আশার বিষয়ে কী জানে?

অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা আরেকটা কারণে স্মরণার্থ সভায় যোগ দিয়ে থাকে। এই সভায় যোগ দিয়ে তারা নিজেদের আশার বিষয়ে চিন্তা করতে পারে। তারা এক অপূর্ব আশা লাভ করেছে। যিহোবা তাদের স্বর্গে অমর জীবন আর সেইসঙ্গে এক অবিনশ্বর দেহ দেবেন। তারা যিশু এবং যে-অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা ইতিমধ্যে স্বর্গে চলে গিয়েছে, তাদের সঙ্গে মিলে সেবা করবে এবং নিজেদের চোখে যিহোবাকে দেখবে। (১ করি. ১৫:৫১-৫৩; ১ যোহন ৩:২) অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা এটা জানে যে, তারা যদি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বস্ত থাকে, তা হলেই তারা এই জীবন লাভ করতে পারবে। (২ তীম. ৪:৭, ৮) স্মরণার্থ সভায় তারা এই আশার বিষয়ে চিন্তা করে আনন্দিত হয়। (তীত ২:১৩) কিন্তু, কেন ‘আরও মেষের’ ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়? (যোহন ১০:১৬) আসুন, আমরা এর কিছু কারণ লক্ষ করি।

যে-কারণে আরও মেষ যোগ দিয়ে থাকে

৬. কেন প্রতি বছর আরও মেষের ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দিয়ে থাকে?

আরও মেষের ব্যক্তিরা রুটি ও দ্রাক্ষারস গ্রহণ করে না, তারা শুধুমাত্র স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়। তারা এতেই আনন্দিত হয়। ১৯৩৮ সালে তাদের প্রথম বার স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ১৯৩৮ সালের ১ মার্চ প্রহরীদুর্গ পত্রিকা বলে: “আরও মেষের ব্যক্তিদেরও স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়া উচিত এবং লক্ষ করা উচিত যে, এই সভায় কী হয়। . . . এটা তাদের জন্যও এক আনন্দের সময়।” ঠিক যেমন কোনো বিয়েতে আমন্ত্রিত ব্যক্তিরা যোগ দিয়ে আনন্দিত হয়, তেমনই স্মরণার্থ সভায় যোগ দিয়ে আরও মেষের ব্যক্তিরা আনন্দিত হয়।

৭. কেন আরও মেষের ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভার বক্তৃতা শোনার জন্য অপেক্ষা করে থাকে?

আরও মেষের ব্যক্তিরাও স্মরণার্থ সভায় যোগ দিয়ে নিজেদের আশার বিষয়ে চিন্তা করতে পারে। স্মরণার্থ সভার বক্তৃতায় বলা হয় যে, যিশু এবং তাঁর সহ-শাসকেরা হাজার বছর রাজত্বের সময় মানবজাতির জন্য কী কী করবেন। যেমন, তারা এই পৃথিবীকে সুন্দর এক পরমদেশে পরিণত করবেন এবং মানবজাতিকে ধীরে ধীরে সিদ্ধতার দিকে নিয়ে যাবেন। যখন স্মরণার্থ সভায় আরও মেষের ব্যক্তিরা যিশাইয় ৩৫:৫, ৬; ৬৫:২১-২৩ এবং প্রকাশিত বাক্য ২১:৩, ৪ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণীগুলো নিয়ে কল্পনা করে, তখন তাদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। তাদের আশা আরও দৃঢ় হয় এবং যিহোবাকে ক্রমাগত সেবা করার সংকল্প মজবুত হয়।—মথি ২৪:১৩; গালা. ৬:৯.

৮. আর কোন কারণে আরও মেষের ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়?

আরও মেষের ব্যক্তিরা আরেকটা কারণে স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়। তারা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের ভালোবাসে এবং তাদের সমর্থন করতে চায়। বাইবেলে এই বিষয়ে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল যে, তাদের মধ্যে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকবে। এখন আসুন, কিছু ভবিষ্যদ্‌বাণীর উপর মনোযোগ দিই।

৯. সখরিয় ৮:২৩ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী অনুযায়ী আরও মেষ ও অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক রয়েছে?

সখরিয় ৮:২৩ পদ পড়ুন। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে জানা যায় যে, আরও মেষের ব্যক্তিরা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের কতটা ভালোবাসে। এখানে উল্লেখিত “এক এক যিহূদী” এবং “তোমাদের” এই শব্দগুলো অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের বোঝায়। (রোমীয় ২:২৮, ২৯) আর “জাতিগণের সর্ব্ব ভাষাবাদী দশ দশ পুরুষ” আরও মেষের ব্যক্তিদের বোঝায়। তারা ‘যিহূদী পুরুষের বস্ত্রের অঞ্চল ধরে’ থাকে অর্থাৎ আরও মেষের ব্যক্তিরা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের সঙ্গে মিলে বিশুদ্ধ উপাসনা করে। তাই, তারা অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের সঙ্গে স্মরণার্থ সভাতে যোগ দেয়।

১০. কীভাবে যিহোবা যিহিষ্কেল ৩৭:১৫-১৯, ২৪, ২৫ পদে দেওয়া ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ করেছেন?

১০ যিহিষ্কেল ৩৭:১৫-১৯, ২৪, ২৫ পদ পড়ুন। এই পদগুলো থেকে জানা যায় যে, অভিষিক্ত খ্রিস্টান এবং আরও মেষের ব্যক্তিদের মধ্যে এক অটুট বন্ধন রয়েছে। ভবিষ্যদ্‌বাণীতে দুটো কাষ্ঠের বিষয় বলা হয়েছে। একটা কাষ্ঠ “যিহূদার” জন্য ছিল (যে-বংশ থেকে ইজরায়েলীয়দের জন্য রাজাদের বাছাই করা হয়েছিল) এবং আরেকটা কাষ্ঠ “ইফ্রয়িমের” জন্য ছিল। * “যিহূদার” কাষ্ঠ সেই ব্যক্তিদের বোঝায়, যাদের স্বর্গে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে। “ইফ্রয়িমের” কাষ্ঠ সেই ব্যক্তিদের বোঝায়, যাদের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে। ভবিষ্যদ্‌বাণী অনুযায়ী যিহোবা এই দুটো কাষ্ঠকে একত্র করে ‘একটি কাষ্ঠে’ পরিণত করবেন অর্থাৎ এই দুই দলকে একতাবদ্ধ করবেন। তারা একসঙ্গে মিলে এক জন রাজা অর্থাৎ যিশুর অধীনে সেবা করবে। প্রতি বছর যখন অভিষিক্ত খ্রিস্টান এবং আরও মেষের ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়, তখন তারা আলাদা আলাদা দল হিসেবে নয় বরং “একটা পাল” হিসেবে যোগ দেয়, যাদের “এক জন মেষপালক” রয়েছে।—যোহন ১০:১৬.

১১. মথি ২৫:৩১-৩৬, ৪০ পদে বলা “মেষ” কীভাবে খ্রিস্টের ভাইদের সমর্থন করে?

১১ মথি ২৫:৩১-৩৬, ৪০ পদ পড়ুন। যিশুর দৃষ্টান্তে বলা “মেষ” সেই ধার্মিক ব্যক্তিদের বোঝায়, যাদের পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকার আশা রয়েছে অর্থাৎ আরও মেষের সেই ব্যক্তিরা, যারা এখনও জীবিত রয়েছে। তারা পৃথিবীব্যাপী প্রচার এবং শিষ্য তৈরি করার কাজে খ্রিস্টের ভাইদের সমর্থন করে।—মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০.

১২-১৩. আরও মেষের ব্যক্তিরা আর কোন কোন উপায়ে খ্রিস্টের ভাইদের সমর্থন করে?

১২ প্রতি বছর স্মরণার্থ সভার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে পুরো পৃথিবীতে একটা অভিযান চালানো হয়। আরও মেষের ব্যক্তিরা এই অভিযানে অংশ নেয় এবং আগ্রহী ব্যক্তিদের স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। এভাবে তারা খ্রিস্টের ভাইদের সমর্থন করে। (“ আপনি কি প্রস্তুত?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।) যদিও অনেক মণ্ডলীতে অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা নেই, তারপরও আরও মেষের ব্যক্তিরা সভায় যোগ দেয় এবং রুটি ও দ্রাক্ষারসের ব্যবস্থা করে। এভাবে খ্রিস্টের ভাইদের সমর্থন করে তারা অনেক আনন্দিত হয়। তারা জানে যে, তারা যখন অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের সমর্থন করে, তখন তারা আসলে যিশু খ্রিস্টকে সমর্থন করে।—মথি ২৫:৩৭-৪০.

১৩ স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার অন্যান্য কারণও রয়েছে। আসুন, তা লক্ষ করি।

স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার অন্যান্য কারণ

১৪. আমাদের প্রতি যিহোবা ও যিশুর ভালোবাসার সবচেয়ে বড়ো প্রমাণ কী?

১৪ আমরা যিহোবা ও যিশুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। যিহোবা আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন, যেগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, তিনি আমাদের ভালোবাসেন। তাঁর ভালোবাসার সবচেয়ে বড়ো প্রমাণ হল, তিনি তাঁর একজাত পুত্রকে আমাদের জন্য মৃত্যুবরণ করতে দিয়েছেন। (যোহন ৩:১৬) যিশুও আমাদের খুব ভালোবাসেন। তাই, তিনি স্বেচ্ছায় আমাদের জন্য নিজের জীবন দিয়েছিলেন। (যোহন ১৫:১৩) আমরা যিহোবা ও যিশুর এই ঋণ কখনো পরিশোধ করতে পারব না। তবে, আমরা যেভাবে জীবনযাপন করি, সেটার মাধ্যমে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা তাঁদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। (কল. ৩:১৫) এ ছাড়া, স্মরণার্থ সভায় যোগ দিয়ে আমরা তাঁদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি আর এটা দেখাতে পারি, আমরা তাঁদের ভালোবাসি।

১৫. কেন অভিষিক্ত খ্রিস্টান ও আরও মেষের ব্যক্তিরা মুক্তির মূল্যকে মূল্যবান হিসেবে দেখে থাকে?

১৫ আমরা মুক্তির মূল্যকে মূল্যবান হিসেবে দেখি। (মথি ২০:২৮) অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা মুক্তির মূল্যকে অনেক মূল্যবান হিসেবে দেখে কারণ এটার জন্যই তারা এক অপূর্ব আশা লাভ করতে পেরেছে। তারা মুক্তির মূল্যের উপর বিশ্বাস দেখায়, তাই যিহোবা তাদের ধার্মিক হিসেবে গণ্য করেছেন এবং নিজের সন্তান হিসেবে দত্তক নিয়েছেন। (রোমীয় ৫:১; ৮:১৫-১৭, ২৩) আরও মেষের ব্যক্তিরাও মুক্তির মূল্যকে মূল্যবান হিসেবে দেখে। মুক্তির মূল্যের উপর বিশ্বাস দেখানোর কারণে তারা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে শুচি থাকতে পারে এবং তাঁকে পবিত্র সেবা প্রদান করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, তারা “মহাক্লেশ পার” হওয়ার আশা লাভ করেছে। (প্রকা. ৭:১৩-১৫) প্রতি বছর যখন অভিষিক্ত খ্রিস্টান ও আরও মেষের ব্যক্তিরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দেয়, তখন তারা এটাকে যিশুর বলিদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটা উপায় হিসেবে দেখে থাকে।

১৬. আমরা আর কোন কারণে স্মরণার্থ সভায় যোগ দিই?

১৬ আমরা যিশুর আজ্ঞা পালন করতে চাই। যে-রাতে যিশু সান্ধ্যভোজ প্রবর্তন করেছিলেন, সেইসময় তিনি আজ্ঞা দিয়েছিলেন: “আমার স্মরণে এটা কোরো।” (১ করি. ১১:২৩, ২৪) আমাদের বেঁচে থাকার আশা স্বর্গে হোক কিংবা পৃথিবীতে, আমরা সবাই যিশুর এই আজ্ঞা পালন করতে চাই।

স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার বিভিন্ন উপকার

১৭. স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার ফলে কীভাবে আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হই?

১৭ আমরা যিহোবার আরও নিকটবর্তী হই। (যাকোব ৪:৮) আমরা যখন স্মরণার্থ সভায় যোগ দিই, তখন আমরা চিন্তা করতে পারি যে, যিহোবা আমাদের কত অপূর্ব আশা দিয়েছেন আর তিনি আমাদের কতটা ভালোবাসেন। (যির. ২৯:১১; ১ যোহন ৪:৮-১০) আমরা যখন এই বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করি, তখন যিহোবার প্রতি আমাদের ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।—রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯.

১৮. যিশুর বিষয়ে চিন্তা করলে আমরা কী করার জন্য উৎসাহিত হই?

১৮ আমরা যিশুর উদাহরণ অনুকরণ করার জন্য উৎসাহিত হই। (১ পিতর ২:২১) স্মরণার্থ সভার কয়েক দিন আগে থেকে আমরা যিশুর পার্থিব জীবনের শেষ সপ্তাহ, তাঁর মৃত্যু এবং তাঁর পুনরুত্থানের বিষয়ে পড়ি এবং তা নিয়ে চিন্তা করি। এরপর, স্মরণার্থ দিবসের সন্ধ্যায় যে-বক্তৃতা দেওয়া হয়, সেখানে আমাদের প্রতি দেখানো যিশুর ভালোবাসার বিষয়ে মনে করিয়ে দেওয়া হয়। (ইফি. ৫:২; ১ যোহন ৩:১৬) এইসমস্ত কিছু আমাদের উৎসাহিত করে যেন আমরা ‘সেভাবে জীবনযাপন করি, যেভাবে যিশু করেছিলেন।’—১ যোহন ২:৬.

১৯. কীভাবে আমরা ঈশ্বরের প্রেম থেকে উপকার লাভ করতে পারব?

১৯ ঈশ্বরের প্রেম থেকে উপকার লাভ করার ব্যাপারে আমাদের সংকল্প আরও দৃঢ় হয়। (যিহূদা ২০, ২১) আমরা যদি ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো পালন করি, তাঁর নাম পবিত্র করি এবং তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করি, তা হলে আমরা তাঁর প্রেম থেকে উপকার লাভ করতে পারব। (হিতো. ২৭:১১; মথি ৬:৯; ১ যোহন ৫:৩) স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার ফলে আমাদের এই সংকল্প আরও দৃঢ় হয় যে, আমরা প্রত্যেক দিন এমনভাবে জীবনযাপন করব যেন যিহোবাকে এই কথা বলতে পারি, ‘আমি সবসময় তোমার প্রেম থেকে উপকার লাভ করতে চাই!’

২০. কেন আমাদের স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়া উচিত?

২০ আমাদের বেঁচে থাকার আশা স্বর্গে হোক কিংবা পৃথিবীতে, আমাদের সবারই প্রতি বছর স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়া উচিত। এই সভায় আমরা স্মরণ করি, কেন যিশু আমাদের জন্য মারা গিয়েছিলেন। আমরা এও স্মরণ করি, কীভাবে যিহোবা তাঁর পুত্রকে মুক্তির মূল্য হিসেবে দান করার মাধ্যমে আমাদের প্রতি তাঁর মহৎ প্রেম দেখিয়েছিলেন। এই বছর স্মরণার্থ দিবসের তারিখ হল শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২২. আমরা যিহোবা ও যিশু খ্রিস্টকে অনেক ভালোবাসি। তাই আসুন, আমরা প্রতি বছর স্মরণার্থ সভায় যোগ দিই।

গান ১৪ সবই নতুন করা হয়েছে

^ আমাদের বেঁচে থাকার আশা স্বর্গে হোক কিংবা পৃথিবীতে, প্রতি বছর আমরা সবাই স্মরণার্থ সভায় যোগ দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকি। এই প্রবন্ধে আমরা বাইবেল থেকে জানব যে, কেন আমরা স্মরণার্থ সভায় যোগ দিই আর এটা থেকে আমরা কোন কোন উপকার লাভ করি।

^ বাইবেলের অন্যান্য অনুবাদে এই কথাগুলো এভাবে লেখা রয়েছে, “ইহা আমার স্মরণার্থে করিও” (বিএসআই - বেঙ্গলি - ও.ভি.) এবং “আমাকে মনে করবার জন্য এই রকম কোরো” (বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন)।

^ নতুন চুক্তি ও রাজ্য চুক্তি সম্বন্ধে আরও তথ্য জানার জন্য ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ১৫-১৭ পৃষ্ঠায় দেওয়া “তোমরা ‘যাজকদের এক রাজ্য’ হবে” শিরোনামের প্রবন্ধটা দেখুন।

^ এই ভবিষ্যদ্‌বাণী সম্বন্ধে আরও তথ্য জানার জন্য ২০১৬ সালের জুলাই মাসের প্রহরীদুর্গ পত্রিকার “পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন” দেখুন।