সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৫

গান ১৮ মুক্তির মূল্যের জন্য কৃতজ্ঞ

কীভাবে আমরা যিহোবার প্রেম থেকে উপকার লাভ করি?

কীভাবে আমরা যিহোবার প্রেম থেকে উপকার লাভ করি?

“খ্রিস্ট যিশু পাপীদের রক্ষা করার জন্য এই জগতে এসেছেন।”১ তীম. ১:১৫.

আমরা কী শিখব?

মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করি এবং কীভাবে দেখাতে পারি যে, আমরা যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞ?

১. যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করার জন্য আমরা কী করতে পারি?

 কল্পনা করুন, আপনি যাকে খুব ভালোবাসেন, তাকে একটা বিশেষ উপহার দিয়েছেন। এই উপহারটা খুবই সুন্দর এবং এটা তার খুব কাজে লাগবে। কিন্তু, সেই ব্যক্তি যদি সেই উপহারটা একটা জায়গায় ফেলে রাখে এবং ভুলে যায়, তা হলে চিন্তা করুন, আপনার কতটা খারাপ লাগবে। কিন্তু, যদি সে উপহারটা ভালোভাবে ব্যবহার করে এবং এই উপহারের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানায়, তা হলে আপনি অনেক খুশি হবেন। তাই না? একইভাবে, যিহোবাও আমাদের এক মূল্যবান উপহার দিয়েছেন। তিনি আমাদের এত ভালোবাসেন যে, তিনি আমাদের জন্য তাঁর পুত্রকে বলি হিসেবে উৎসর্গ করেছেন। আমরা যদি যিহোবার প্রেম এবং মুক্তির মূল্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাই, তা হলে চিন্তা করুন, তিনি কতই-না খুশি হবেন!—যোহন ৩:১৬; রোমীয় ৫:৭, ৮.

২. এই প্রবন্ধে আমরা কী শিখব?

কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তির মূল্যের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা হয়তো কমে যেতে পারে। এটা এমন হবে যেন আমরা যিহোবার দেওয়া উপহারকে কোথাও ফেলে রেখেছি এবং সেটার বিষয়ে ভুলে গিয়েছি। আমরা কখনোই এমনটা করতে চাই না। তাই, যিহোবা এবং যিশু আমাদের জন্য যা-কিছু করেছেন, তা নিয়ে সবসময় চিন্তা করা এবং এর জন্য কৃতজ্ঞতা দেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রবন্ধে আমরা জানব যে, কীভাবে আমরা তা করতে পারি? আমরা শিখব, মুক্তির মূল্যের কারণে ইতিমধ্যেই আমরা কোন আশীর্বাদগুলো লাভ করছি এবং ভবিষ্যতে আমরা কোন আশীর্বাদগুলো লাভ করব। এ ছাড়া আমরা এটাও শিখব, বিশেষ করে স্মরণার্থ সভার আগে এবং পরেও আমরা কীভাবে দেখাতে পারি যে, যিহোবা আমাদের প্রতি যে-প্রেম দেখিয়েছেন, আমরা এটার প্রতি কৃতজ্ঞ।

ইতিমধ্যেই আমরা কোন আশীর্বাদগুলো লাভ করছি?

৩. আমরা ইতিমধ্যেই মুক্তির মূল্যের ব্যবস্থা থেকে কোন আশীর্বাদগুলো লাভ করছি?

খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা ইতিমধ্যেই অনেক আশীর্বাদ লাভ করছি। যেমন, তাঁর বলিদানের মাধ্যমেই যিহোবা আমাদের পাপ ক্ষমা করেন। তাঁকে এটা করতেই হবে এমন নয়, কিন্তু তিনি এটা করেন কারণ তিনি চান যেন আমাদের পাপ ক্ষমা হয়। যিহোবার কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার পর গীতসংহিতার একজন লেখকের হৃদয় কৃতজ্ঞতায় ভরে গিয়েছিল। তাই তিনি বলেছিলেন, “হে যিহোবা, তুমি ভালো আর তুমি ক্ষমা করার জন্য প্রস্তুত।”—গীত. ৮৬:৫; ১০৩:৩, ১০-১৩.

৪. যিহোবা কাদের জন্য মুক্তির মূল্য জুগিয়েছেন? (লূক ৫:৩২; ১ তীমথিয় ১:১৫)

কিছু লোক হয়তো মনে করে যে, তারা যিহোবার কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করার যোগ্য নয়। আমরা যদি দেখি আমরা কেউই এর যোগ্য নই। প্রেরিত পৌলও এই বিষয়টা জানতেন, তাই তিনি বলেছিলেন, “আমি প্রেরিত নামের যোগ্য নই।” এরপর তিনি আরও বলেছিলেন, “ঈশ্বরের মহাদয়ার কারণে আমি একজন প্রেরিত হয়েছি।” (১ করি. ১৫:৯, ১০) আমরা যখন আমাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হই, তখন যিহোবা আমাদের ক্ষমা করে দেন। এই জন্য নয় যে, এটা পাওয়ার যোগ্যতা আমাদের আছে, কিন্তু এইজন্য কারণ তিনি আমাদের ভালোবাসেন। তাই, আপনি যদি এটা চিন্তা করে নিরুৎসাহিত হয়ে যান যে, আপনি যিহোবার ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য নন, তা হলে আপনি কী করতে পারেন? মনে রাখবেন, যিহোবা মুক্তির মূল্য সেই লোকদের জন্য জোগাননি যারা পাপ করেনি বরং তাদের জন্য জুগিয়েছিলেন, যারা তাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়।—পড়ুন, লূক ৫:৩২; ১ তীমথিয় ১:১৫.

৫. আমাদের মধ্যে কেউ কি যিহোবার কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করার যোগ্য? বুঝিয়ে বলুন।

আমরা হয়তো বহু বছর ধরে যিহোবার সেবা করে আসছি। তা সত্ত্বেও, আমাদের এইরকম চিন্তা করা উচিত নয় যে, আমরা যিহোবার ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য। এটা ঠিক যে, আমরা বছরের পর বছর ধরে যিহোবার সেবায় যা-কিছু করেছি, সেটাকে তিনি অনেক মূল্য দেন। (ইব্রীয় ৬:১০) কিন্তু, তিনি তাঁর পুত্রের মাধ্যমে যে-মুক্তির মূল্য দিয়েছেন, তা আমাদের সেবার মূল্য বা বেতন নয়। তিনি খুশিমনে আমাদের এই উপহার দিয়েছেন। তাই এটা চিন্তা করা ভুল হবে যে, আমরা যিহোবার জন্য যা-কিছু করেছি, সেটার বিনিময়ে যিহোবার উচিত আমাদের ক্ষমা করা। এটা এমন হবে যেন আমরা বলছি যে, যিশুর আমাদের জন্য মারা যাওয়ার প্রয়োজনই ছিল না, তাঁর মৃত্যু কোনো উপকারেই আসেনি।—তুলনা করুন, গালাতীয় ২:২১.

৬. কেন পৌল যিহোবার সেবায় এত কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন?

পৌল জানতেন যে, তিনি যা-কিছুই করুন না কেন, তিনি কখনোই যিহোবার ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য হতে পারবেন না। তা হলে, তিনি কেন যিহোবার সেবায় এত কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন? কারণ যিহোবা তার উপর যে-মহাদয়া দেখিয়েছিলেন, সেটার জন্য তিনি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ ছিলেন। (ইফি. ৩:৭) পৌলের মতো আমরাও এইজন্য উদ্যোগের সঙ্গে যিহোবার সেবা করি, কারণ আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। কিন্তু, এটার জন্য আমরা যিহোবার সেবা করি না যে, আমরা তাঁর সেবা করে তাঁর ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য হয়ে উঠব।

৭. মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা ইতিমধ্যেই আর কোন আশীর্বাদ লাভ করছি? (রোমীয় ৫:১; যাকোব ২:২৩)

মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা ইতিমধ্যেই আরেকটা আশীর্বাদ লাভ করছি। সেটা হল আমরা যিহোবার সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি এবং তাঁর নিকটবর্তী হতে পারি।  a আমরা আগের প্রবন্ধে যেমন দেখেছিলাম, আমাদের জন্মের সময় যিহোবার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু, মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা “ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক” গড়ে তুলতে পারি এবং তাঁর নিকটবর্তী হতে পারি।—পড়ুন, রোমীয় ৫:১; যাকোব ২:২৩.

৮. আমরা যিহোবার কাছে প্রার্থনা করতে পারি, এই বিষয়টার জন্য কেন আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ?

যিহোবার সঙ্গে আমাদের এক উত্তম সম্পর্কের কারণে আমরা যেকোনো সময় তাঁর কাছে প্রার্থনা করতে পারি। আর এটাও একটা বড়ো আশীর্বাদ। যখন কিছু লোক একসঙ্গে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করে, তখন যিহোবা তাদের প্রার্থনা শোনেন। কিন্তু, এর পাশাপাশি তিনি সেই প্রার্থনাও শোনেন, যে-প্রার্থনা আমরা ব্যক্তিগতভাবে করি। প্রার্থনা করার মাধ্যমে আমরা মনের শান্তি লাভ করি এবং স্বস্তি পাই। কিন্তু, শুধু মনের শান্তি লাভ করার এবং স্বস্তি পাওয়ার জন্যই নয় বরং যিহোবার সঙ্গে বন্ধুত্ব শক্তিশালী করার জন্যও আমরা প্রার্থনা করি। (গীত. ৬৫:২; যাকোব ৪:৮; ১ যোহন ৫:১৪) যিশু যখন এই পৃথিবীতে ছিলেন, তখন তিনি বার বার যিহোবার কাছে প্রার্থনা করতেন কারণ তাঁর এই আস্থা ছিল যে, যিহোবা তাঁর প্রার্থনা শুনবেন এবং এভাবে তাঁদের সম্পর্ক শক্তিশালী থাকবে। (লূক ৫:১৬) আমরা কতই-না কৃতজ্ঞ যে, মুক্তির মূল্যের কারণে আমরা যিহোবার বন্ধু হতে পারি এবং প্রার্থনার মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারি!

ভবিষ্যতে আমরা কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করব?

৯. যিহোবার বিশ্বস্ত দাসেরা মুক্তির মূল্য থেকে ভবিষ্যতে কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করবে?

মুক্তির মূল্যের কারণে যিহোবার বিশ্বস্ত দাসেরা ভবিষ্যতে কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করবে? তারা এই পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকতে পারবে। অনেকে এটাকে অসম্ভব বলে মনে করে, কারণ এখনও পর্যন্ত এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। কিন্তু, যিহোবা যখন মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তিনি চেয়েছিলেন যে, তারা যেন চিরকাল বেঁচে থাকে। এ ছাড়া, আদম যদি পাপ না করতেন, তা হলে কেউই এটাকে অসম্ভব বলে মনে করত না কারণ মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকতে পারত। আর এটা সত্য যে, কেউ কখনো ভাবেনি, তারা চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু কেউ এটাও চিন্তা করেনি যে, এটা সম্ভব করার জন্য যিহোবা এত বড়ো ত্যাগস্বীকার করবেন। সত্যিই, মুক্তির মূল্য হল, যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া এক মূল্যবান উপহার!—রোমীয় ৮:৩২.

১০. অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা এবং আরও মেষেরা কোন সময়ের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে?

১০ এটা ঠিক যে, আমরা ভবিষ্যতে অনন্তজীবন লাভ করব, কিন্তু যিহোবা চান আমরা এখনই এটা নিয়ে চিন্তা করি। অভিষিক্ত খ্রিস্টানেরা যিশুর সঙ্গে স্বর্গে শাসন করার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। (প্রকা. ২০:৬) এ ছাড়া, আরও মেষেরা সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে, যখন তারা পরমদেশ পৃথিবীতে চিরকাল বাস করবে, যেখানে কোনো দুঃখকষ্ট থাকবে না। (প্রকা. ২১:৩, ৪) আপনারও কি পরমদেশ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে? যদি তা-ই হয়, তা হলে এই পুরস্কারকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখুন। পরমদেশ পৃথিবীতে জীবন অনেক শান্তিপূর্ণ এবং আনন্দের হবে। আসলে, মানুষকে তো এমন জীবন উপভোগ করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছিল!

১১-১২. পরমদেশ পৃথিবীতে কোন আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রয়েছি? (ছবিগুলোও দেখুন।)

১১ কল্পনা করুন, নতুন জগতে জীবন কতটা চমৎকার হবে! আপনি কখনো অসুস্থ হবেন না, কেউ কখনো মারা যাবে না। (যিশা. ২৫:৮; ৩৩:২৪) যিহোবা তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী আপনার সমস্ত আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবেন। আপনি নতুন জগতে কী করতে চান? আপনি কোন কোন দক্ষতা বাড়াতে চান? আপনি কি বিজ্ঞান সম্পর্কে, কোনো প্রাণী বা পাখি সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে চান? গান শিখতে অথবা কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজাতে চাইবেন? অথবা ছবি আঁকা বা রং করা শিখতে চাইবেন? নতুন জগতে এমন লোকদেরও প্রয়োজন হবে, যারা যন্ত্রপাতি বানাতে, বিল্ডিং-এর নকশা তৈরি করতে এবং সেগুলো নির্মাণ করতে জানে। এ ছাড়া, এমন লোকদেরও প্রয়োজন হবে যারা বাগান করা, চাষবাস করা এবং রান্নাবান্না জানে। (যিশা. ৩৫:১; ৬৫:২১) নতুন জগতে আপনার কাছে প্রচুর সময় থাকবে আর সেইসময় আপনি কেবল কয়েকটা নয় বরং যত চান, তত দক্ষতা শিখতে পারবেন!

১২ নতুন জগতে যখন লোকদের পুনরুত্থিত করা হবে এবং আমরা তাদের স্বাগত জানাব, তখন চারিদিকে আনন্দের পরিবেশ থাকবে। (প্রেরিত ২৪:১৫) কল্পনা করুন, আমরা সেই সময়ে যিহোবার সৃষ্টি থেকে তাঁর সম্বন্ধে কত কিছু জানতে পারব এবং সেটা কতই-না আনন্দের হবে! (গীত. ১০৪:২৪; যিশা. ১১:৯) আর আমরা যখন নিখুঁত হয়ে উঠব এবং নিজেদের দোষী মনে করব না, তখন যিহোবার উপাসনা করা আমাদের জন্য কতটা আনন্দের হবে। এর চেয়ে বড়ো আশীর্বাদ আর কীই-বা হতে পারে! আপনি কি “পাপের ক্ষণস্থায়ী সুখ ভোগ করার” জন্য এই সমস্ত আশীর্বাদ হাতছাড়া করতে চাইবেন? (ইব্রীয় ১১:২৫) কখনোই না! বর্তমানে, আমরা যে-ত্যাগস্বীকারই করি না কেন, নতুন জগতে আমরা যে-আশীর্বাদগুলো পাব, সেটার তুলনায় এগুলো কিছুই নয়। মনে রাখবেন, পরমদেশ পৃথিবীতে বাস করা আমাদের জন্য শুধুমাত্র একটা আশা হয়েই থাকবে না। এটা ভবিষ্যতে বাস্তবে পরিণত হবে। এই সমস্ত কিছু সম্ভব হয়েছে কারণ যিহোবা আমাদের জন্য তাঁর প্রিয় পুত্রকে বলি হিসেবে উৎসর্গ করেছেন!

পরমদেশে পেতে চলেছেন এমন কোন আশীর্বাদগুলোর জন্য আপনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন? (১১-১২ অনুচ্ছেদ দেখুন)


যিহোবার প্রেমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন

১৩. কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, যিহোবার প্রেমের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ? (২ করিন্থীয় ৬:১)

১৩ কীভাবে আমরা দেখাতে পারি যে, মুক্তির মূল্যের জন্য আমরা যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞ? যিহোবার সেবাকে নিজের জীবনে প্রথম স্থান দেওয়ার মাধ্যমে। (মথি ৬:৩৩) আর এটা করা একদম সঠিক। যিশুও নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন যেন যারা বেঁচে আছে, “তারা আর নিজেদের উদ্দেশে নয়, বরং তাঁর উদ্দেশেই বেঁচে থাকে, যিনি তাদের জন্য মারা গিয়েছেন এবং যাঁকে পুনরুত্থিত করা হয়েছে।” (২ করি. ৫:১৫) সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে যিহোবার সেবা করার মাধ্যমে আমরা দেখাতে পারি যে, তাঁর মহাদয়ার উদ্দেশ্য আমরা ভুলে যাইনি এবং আমরা তাঁর প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ।—পড়ুন, ২ করিন্থীয় ৬:১.

১৪. কীভাবে আমরা যিহোবার প্রতি বিশ্বাস দেখিয়ে চলতে পারি?

১৪ যিহোবা আমাদের প্রতি যে-প্রেম দেখিয়েছেন, সেটার প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখানোর একটা উপায় হল, তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকা এবং তাঁর নির্দেশনা অনুসরণ করা। কীভাবে আমরা এটা করতে পারি? যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের চিন্তা করতে হবে যে, যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান। যেমন, আমরা যখন এই সিদ্ধান্ত নিই যে, আমরা কতটা পড়াশোনা করব অথবা কোন ধরনের চাকরি করব। (১ করি. ১০:৩১; ২ করি. ৫:৭) আমরা যখন যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত থেকে সিদ্ধান্ত নিই, তখন এর ফলাফল অনেক ভালো হয়: যিহোবার প্রতি আমাদের বিশ্বাস আরও বৃদ্ধি পায়, তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয় এবং আমাদের আশাও আরও দৃঢ় হয়।—রোমীয় ৫:৩-৫; যাকোব ২:২১, ২২.

১৫. আমরা কীভাবে স্মরণার্থ সভার আগে এবং এর পরের সপ্তাহগুলোতে যিহোবার প্রেমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি?

১৫ স্মরণার্থ সভার আগে এবং এর পরের সপ্তাহগুলোতেও আমরা আমাদের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করার মাধ্যমে যিহোবার প্রেমের প্রতি কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারি। আগে থেকে প্রস্তুতি নিন, যাতে আপনি স্মরণার্থ সভায় যোগ দিতে পারেন। শুধু তা-ই নয়, স্মরণার্থ সভার জন্য অন্যদেরকেও আমন্ত্রণ জানান। (১ তীম. ২:৪) আপনি তাদের বলতে পারেন, সেখানে কী কী হবে। আপনি চাইলে jw.org থেকে যিশু কেন মারা গিয়েছিলেন? আর যিশুর মৃত্যু স্মরণ করুন শিরোনামের ভিডিও দেখাতে পারেন। প্রাচীনদের সেই ভাই-বোনদের আমন্ত্রণ জানানো উচিত, যারা সভা এবং প্রচারে আসা বন্ধ করে দিয়েছে। যিহোবার হারানো মেষেরা যদি তাঁর কাছে ফিরে আসে, তা হলে স্বর্গে এবং পৃথিবীতে কতটা আনন্দ হবে, তা একটু কল্পনা করুন। (লূক ১৫:৪-৭) স্মরণার্থ সভায় আমরা অবশ্যই একে অপরের সঙ্গে দেখা করব, কিন্তু আসুন যারা প্রথম বার এসেছে অথবা যারা দীর্ঘসময় পর স্মরণার্থ সভায় এসেছে, তাদের আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানোর চেষ্টা করি এবং তাদের প্রতি প্রেম দেখাই।—রোমীয় ১৫:৭.

১৬. স্মরণার্থ সভার আগে এবং এর পরের সপ্তাহগুলোতে কেন আমাদের আরও বেশি করে প্রচার করার লক্ষ্য রাখতে হবে?

১৬ আপনি কি স্মরণার্থ সভার আগে এবং এর পরের সপ্তাহগুলোতে আরও বেশি করে যিহোবার সেবা করতে পারেন? এভাবে আপনি দেখাতে পারেন যে, ঈশ্বর এবং খ্রিস্ট আপনার জন্য যা-কিছু করেছেন, সেটার প্রতি আপনি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আপনি যখন উদ্যোগের সঙ্গে যিহোবার সেবা করবেন, তখন আপনি স্পষ্টভাবে দেখতে পাবেন যে, কীভাবে যিহোবা আপনাকে সাহায্য করছেন এবং এরপর তাঁর প্রতি আপনার আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে। (১ করি. ৩:৯) এ ছাড়া, প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করুন পুস্তিকায় দেওয়া স্মরণার্থের বাইবেল পাঠ এবং অধ্যয়ন পুস্তিকায় দেওয়া স্মরণার্থের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত শাস্ত্রপদগুলোও প্রতিদিন পড়ুন। এ ছাড়া, আপনি আপনার ব্যক্তিগত অধ্যয়নে এই শাস্ত্রপদগুলো নিয়ে ভালোভাবে গবেষণা করতে পারেন।

১৭. কোন বিষয়টা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করে? (“ আপনি কীভাবে যিহোবার প্রেমের প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন?” শিরোনামের বাক্স দেখুন।)

১৭ আপনি হয়তো আপনার পরিস্থিতির কারণে এই প্রবন্ধে দেওয়া সমস্ত বিষয় করতে পারেন না। কিন্তু মনে রাখবেন, অন্যদের তুলনায় আপনি কতটা করছেন, তা যিহোবা দেখেন না বরং তিনি দেখেন তাঁর প্রতি আপনার কতটা ভালোবাসা রয়েছে। আমরা যখন তাঁর মূল্যবান উপহার অর্থাৎ মুক্তির মূল্যের প্রতি গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, তখন যিহোবা অনেক খুশি হন।—১ শমূ. ১৬:৭; মার্ক ১২:৪১-৪৪.

১৮. কেন আমরা যিহোবা এবং যিশুর খ্রিস্টের প্রতি এত কৃতজ্ঞ?

১৮ মুক্তির মূল্যের কারণেই আমরা আমাদের পাপের ক্ষমা লাভ করি, এ ছাড়া যিহোবার বন্ধু হতে পারি এবং চিরকাল বেঁচে থাকার আশা লাভ করি। আসুন যিহোবা আমাদের প্রতি যে-প্রেম দেখিয়েছেন, তা যেন আমরা কখনো ভুলে না যাই! আর এই কারণে আমরা যে-আশীর্বাদ লাভ করেছি, সেটার প্রতি আমরা যেন সবসময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। (১ যোহন ৪:১৯) আসুন আমরা এটাও দেখাই যে, যিশুর প্রতি আমরা কতটা কৃতজ্ঞ, যিনি আমাদের এতটাই প্রেম করেছেন যে, আমাদের জন্য নিজের জীবন দান করেছেন।—যোহন ১৫:১৩.

গান ১৫৪ অনন্ত প্রেম

a খ্রিস্টের মুক্তির মূল্য জোগানোর আগেও যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত সেবকদের পাপ ক্ষমা করেছিলেন। কারণ তিনি পুরোপুরি নিশ্চিত ছিলেন, তাঁর পুত্র অবশ্যই শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবেন। এটা এমন যেন যিহোবার দৃষ্টিতে আগেই মুক্তির মূল্য জোগানো হয়েছে।—রোমীয় ৩:২৫.