সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ২৩

গান ২৮ যিহোবার বন্ধুত্ব লাভ করা

যিহোবার তাঁবুতে আপনাকে স্বাগত!

যিহোবার তাঁবুতে আপনাকে স্বাগত!

“আমার আবাস তাহাদের উপরে অবস্থিতি করিবে, এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব।”যিহি. ৩৭:২৭.

আমরা কী শিখব?

এই প্রবন্ধে আমরা জানতে পারব, যিহোবার তাঁবুর অতিথি হওয়ার মানে কী এবং যারা তাঁর তাঁবুতে থাকে, তাদের তিনি কীভাবে যত্ন নেন আর কীভাবে এগুলো জানার ফলে আমরা যিহোবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা বাড়াতে পারি।

১-২. যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকদের কোথায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন?

 যিহোবাকে আপনি কীভাবে দেখেন? আপনি হয়তো তাঁকে আপনার পিতা অথবা ঈশ্বর কিংবা বন্ধু হিসেবে দেখেন। কিন্তু, আপনি কি কখনো তাঁকে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে দেখেছেন, যিনি আপনাকে তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন?

রাজা দায়ূদ যিহোবার বিষয়ে এইরকমই কিছু বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “হে যিহোবা, কে তোমার তাঁবুতে অতিথি হয়ে থাকতে পারে? কে তোমার পবিত্র পর্বতে বাস করতে পারে?” (গীত. ১৫:১, NW) এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকদের তাঁর তাঁবুতে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন অর্থাৎ আমরা প্রত্যেকে তাঁর অতিথি বা বন্ধু হতে পারি। একটু কল্পনা করুন, সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা আপনাকে তাঁর তাঁবুতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। এটা কতই-না বড়ো এক বিষয়!

যিহোবা চান যেন আমরা তাঁর তাঁবুতে আসি

৩. (ক) যিহোবার তাঁবুর প্রথম অতিথি কে ছিলেন? (খ) যিহোবা এবং তাঁর অতিথি একে অপরের বিষয়ে কেমন অনুভব করতেন?

সমস্ত কিছু সৃষ্টি করার আগে যিহোবা একাই ছিলেন। কিন্তু, তারপর তিনি তাঁর একজাত পুত্রকে সৃষ্টি করেন এবং তাঁকে তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানান। তাঁর পুত্রই ছিলেন প্রথম অতিথি এবং তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে যিহোবা অনেক খুশি হয়েছিলেন। বাইবেল বলে যে, যিহোবা তাঁর পুত্রের জন্য সবসময় “খুশীতে পূর্ণ” ছিলেন এবং তাঁর পুত্র ‘তাঁর সামনে সব সময় আনন্দ করতেন।’—হিতো. ৮:৩০, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।

৪. যিহোবা আর কাদের তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন?

এরপর, যিহোবা স্বর্গদূতদের সৃষ্টি করেছিলেন এবং তিনি তাদেরও তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বাইবেলে স্বর্গদূতদের ‘ঈশ্বরের পুত্র’ বলা হয়েছে এবং তারা যিহোবার সঙ্গে খুবই আনন্দে রয়েছে। (ইয়োব ৩৮:৭, NW; দানি. ৭:১০) অনেক বছর ধরে শুধুমাত্র যিশু ও স্বর্গদূতেরা যিহোবার তাঁবুর অতিথি ছিল। কিন্তু, পরে যিহোবা মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং তাদেরও তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে হনোক, নোহ, অব্রাহাম ও ইয়োবের মতো বিশ্বস্ত লোকেরাও তাঁর অতিথি হয়েছিল। বাইবেলে বলা হয়েছে, এই সমস্ত লোক “ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন” করত অর্থাৎ তারা তাঁর প্রতিটা কথা মেনে চলত। তাই, তারা যিহোবার অতিথি ছিল।—আদি. ৫:২৪; ৬:৯; ইয়োব ২৯:৪; যিশা. ৪১:৮.

৫. যিহিষ্কেল ৩৭:২৬, ২৭ পদে লেখা ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে কী জানা যায়?

অনেক বছর ধরে যিহোবা তাঁর বন্ধুদের তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসছেন। (পড়ুন, যিহিষ্কেল ৩৭:২৬, ২৭.) যিহিষ্কেলের ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা চান যেন তাঁর উপাসকদের সঙ্গে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। তিনি তাদের সঙ্গে “শান্তির এক নিয়ম” স্থির করার প্রতিজ্ঞা করেছেন। বর্তমানে এই প্রতিজ্ঞা পূরণ হচ্ছে। যাদের স্বর্গে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে এবং যাদের পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আশা রয়েছে, তারা সবাই একসঙ্গে যিহোবার সেবা করছে এবং “একটা পাল” হিসেবে তাঁর তাঁবুতে রয়েছে।—যোহন ১০:১৬.

আমরা যেখানেই থাকি না কেন, যিহোবা সবসময় আমাদের যত্ন নেন

৬. (ক) কখন একজন ব্যক্তি যিহোবার তাঁবুতে অতিথি হিসেবে প্রবেশ করেন? (খ) যিহোবার তাঁবু কোথায় রয়েছে?

অতীতে একজন ব্যক্তি তার নিজের তাঁবুতে বিশ্রাম নিতে পারতেন আর কড়া রোদ ও বৃষ্টির হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারতেন। আর যখন তার তাঁবুতে কোনো অতিথি আসত, তখন তিনি তারও যত্ন নিতে পারতেন। তাই, বর্তমানে আমরা যখন নিজেদের জীবন যিহোবার কাছে উৎসর্গ করি, তখন আমরা তাঁর তাঁবুতে অতিথি হিসেবে প্রবেশ করি। (গীত. ৬১:৪) যিহোবার তাঁবুতে খাবারের কোনো অভাব নেই। আমাদের কাছে সেইসমস্ত কিছু আছে, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে পারি। শুধু তা-ই নয়, এই তাঁবুতে আমাদের মতো আরও অনেক অতিথি রয়েছে, যাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। আপনি যদি কোনো বিশেষ সম্মেলনের জন্য অন্য একটা দেশে গিয়ে থাকেন, তা হলে সেখানে হয়তো আপনি অনেক ভাই-বোনের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা সবাই যিহোবার তাঁবুর অতিথি। এখান থেকে বোঝা যায়, যিহোবার তাঁবু কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় নেই বরং সেই সমস্ত জায়গায় রয়েছে, যেখানে তাঁর বিশ্বস্ত উপাসকেরা রয়েছে।—প্রকা. ২১:৩.

৭. যিহোবার যে-বিশ্বস্ত উপাসকেরা মারা গিয়েছে, তারাও কি তাঁর তাঁবুতে রয়েছে? (ছবিও দেখুন।)

কিন্তু, যিহোবার সেই বিশ্বস্ত উপাসকদের বিষয়ে কী বলা যায়, যারা মারা গিয়েছে? তারাও কি তাঁর তাঁবুতে রয়েছে? হ্যাঁ রয়েছে। কেন আমরা তা বলতে পারি? কারণ যিহোবার স্মৃতিতে তারা সুরক্ষিত রয়েছে অর্থাৎ তাঁর দৃষ্টিতে তারা এখনও জীবিত। এই বিষয়ে যিশু বলেছিলেন, “কিন্তু, মৃতেরা যে বেঁচে উঠবে, তা এমনকী মোশিও জ্বলন্ত ঝোপের বিবরণে জানিয়েছেন, যখন তিনি যিহোবাকে ‘অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি মৃতদের ঈশ্বর নন, বরং জীবিতদের ঈশ্বর, কারণ তারা সকলে তাঁর দৃষ্টিতে জীবিত।”—লূক ২০:৩৭, ৩৮.

যিহোবার যে-বিশ্বস্ত উপাসকেরা মারা গিয়েছে, তারাও তাঁর তাঁবুতে রয়েছে (৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)


আশীর্বাদ ও দায়িত্ব

৮. আমরা যদি যিহোবার তাঁবুতে থাকি, তা হলে আমরা বর্তমানে ও ভবিষ্যতে কোন কোন আশীর্বাদ লাভ করব?

একজন ব্যক্তি একটা তাঁবুতে বিশ্রাম নিতে পারেন আর নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন। ঠিক একইভাবে, আমরা যিহোবার তাঁবুতে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারি। আমরা সেই সমস্ত বিপদ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি, যেগুলোর কারণে যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া, আমরা ভবিষ্যতের জন্য এক অপূর্ব আশা লাভ করি। যখন আমরা যিহোবার নিকটে থাকব, তখন শয়তান এমন কিছু করতে পারবে না, যেটার কারণে আমাদের চিরস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। (গীত. ৩১:২৩; ১ যোহন ৩:৮) এমনকী নতুন জগতেও যিহোবা আমাদের সেই সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করবেন, যেগুলোর কারণে তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, তিনি আমাদের মৃত্যুর হাত থেকেও রক্ষা করবেন।—প্রকা. ২১:৪.

৯. যারা যিহোবার তাঁবুতে থাকতে চায়, তাদের কাছ থেকে তিনি কী আশা করেন?

যিহোবার তাঁবুর অতিথি বা তাঁর বন্ধু হওয়া কতই-না বড়ো এক আশীর্বাদ! আমরা সবসময় যিহোবার অতিথি হয়ে থাকতে চাই। এরজন্য আমাদের কী করতে হবে? ধরুন, আপনার কোনো বন্ধু আপনাকে তার বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তাই, আপনি সেই কাজগুলো করবেন, যেগুলো আপনার বন্ধুকে খুশি করবে। যেমন সে যদি চায়, আপনি জুতো খুলে ঘরে ঢোকেন, তা হলে আপনি নিশ্চয়ই সেটাই করবেন। একইভাবে, যিহোবা আমাদের তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং আমরা সবসময় তাঁর তাঁবুতে থাকতে চাই। তাই আমাদের জানতে হবে, যিহোবা কী চান। আর যেহেতু আমরা তাঁকে ভালোবাসি এবং “তাঁকে পুরোপুরি খুশি” করতে চাই, তাই আমরা সেটাই করব, যেটা তিনি চান। (কল. ১:১০) তবে, যিহোবা শুধু আমাদের বন্ধুই নন, কিন্তু সেইসঙ্গে তিনি আমাদের পিতা ও ঈশ্বর আর এই বিষয়টা আমরা কখনো ভুলে যাই না। তাই, আমরা তাঁকে সবসময় সম্মান করি। (গীত. ২৫:১৪) আমরা সবসময় যিহোবার প্রতি কৃতজ্ঞ, সেইজন্য আমরা এমন কাজ করতে চাই না, যেটা যিহোবার হৃদয়কে দুঃখ দেবে। আমরা “নম্রভাবে . . . ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন” করতে চাই।—মীখা ৬:৮.

যিহোবা কোনো ইজরায়েলীয়ের সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেননি

১০-১১. যিহোবা ইজরায়েলীয়দের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছিলেন, সেখান থেকে কীভাবে বোঝা যায় যে, যিহোবা পক্ষপাতিত্ব করেন না?

১০ যিহোবা তাঁর প্রত্যেক অতিথিকে সমান চোখে দেখেন, কখনো তাদের সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না। (রোমীয় ২:১১) এই বিষয়ে আরও জানার জন্য আসুন দেখি, যিহোবা সীনয় প্রান্তরে ইজরায়েলীয়দের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করেছিলেন।

১১ ইজরায়েলীয়দের মিশর থেকে বের করে নিয়ে আসার পর যিহোবা তাঁর পবিত্র তাঁবুতে সেবা করার জন্য যাজকদের নিযুক্ত করেছিলেন। এ ছাড়া, তাঁবুর অন্যান্য দায়িত্ব পালন করার জন্য যিহোবা লেবীয়দের নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু, যারা পবিত্র তাঁবুতে সেবা করছিল অথবা যারা তাঁবুর কাছাকাছি ছিল, যিহোবা কি তাদের অন্যদের চেয়ে বেশি যত্ন নিয়েছিলেন? না। যিহোবা কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেননি বরং তিনি প্রত্যেকের যত্ন নিয়েছিলেন।

১২. কীভাবে যিহোবা দেখিয়েছেন যে, তিনি কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না? (যাত্রাপুস্তক ৪০:৩৮) (ছবিও দেখুন।)

১২ যিহোবা প্রত্যেক ইজরায়েলীয়কে তাঁর বন্ধু হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন, তা সে পবিত্র তাঁবুতে সেবা করুক বা না করুক অথবা সে তাঁবুর কাছাকাছি থাকুক বা না থাকুক। যেমন, যিহোবা এই বিষয়টা খেয়াল রেখেছিলেন যেন প্রত্যেক ইজরায়েলীয় পবিত্র তাঁবুর উপরে থাকা মেঘস্তম্ভ ও অগ্নিস্তম্ভ দেখতে পায়, তা তারা যেখানেই থাকুক না কেন। (পড়ুন, যাত্রাপুস্তক ৪০:৩৮.) যখন পবিত্র তাঁবুর উপর থেকে মেঘ সরে যেত, তখন যে-ইজরায়েলীয়েরা তাঁবু থেকে সবচেয়ে দূরে থাকত, তারাও এটা দেখতে পেত। তখন তারা তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে এবং তাদের তাঁবু উঠিয়ে বাকি ইজরায়েলীয়দের সঙ্গে মেঘের পিছন পিছন যেত। (গণনা. ৯:১৫-২৩) এ ছাড়া, যখন রুপোর তৈরি দুটো তূরী বাজানো হত, তখন সমস্ত ইজরায়েলীয় সেটার আওয়াজ স্পষ্টভাবে শুনতে পেত। এর ফলে তারা বুঝতে পারত, এখন রওনা দিতে হবে। (গণনা. ১০:২) এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেননি। যারা পবিত্র তাঁবুর কাছাকাছি থাকত, তারা যে যিহোবার চোখে বিশেষ কেউ ছিল, এমন নয়। এর পরিবর্তে, প্রত্যেক ইজরায়েলীয় যিহোবার অতিথি বা বন্ধু হতে পারত এবং তারা আস্থা রাখতে পারত যে, যিহোবা তাদের সুরক্ষা জোগাবেন এবং সঠিক পথ দেখাবেন। একইভাবে, বর্তমানে আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমরা পুরোপুরি আস্থা রাখতে পারি যে, যিহোবা আমাদের ভালোবাসেন, আমাদের যত্ন নেন এবং সবসময় আমাদের সুরক্ষা জোগাবেন।

পবিত্র তাঁবুর ব্যবস্থা থেকে বোঝা যায় যে, যিহোবা কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না (১২ অনুচ্ছেদ দেখুন)


বর্তমানেও যিহোবা কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না

১৩. কেন আমরা বলতে পারি, যিহোবা বর্তমানেও কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না?

১৩ বর্তমানে, কিছু ভাই-বোন যিহোবার সাক্ষিদের বিশ্বপ্রধান কার্যালয় অথবা কোনো শাখা অফিসের কাছাকাছি থাকে। আবার কিছু ভাই-বোন হয়তো সেখানে সেবা করে। তাই, তারা বেথেলের বিভিন্ন কাজে অংশ নিতে পারে এবং যে-ভাইয়েরা নেতৃত্ব নেয়, তাদের ভালোভাবে জানতে পারে। কিছু ভাই সীমা অধ্যক্ষ হিসেবে সেবা করে, আবার কিছু ভাই-বোন অন্য উপায়ে বিশেষ পূর্ণসময়ের সেবা করে। কিন্তু, বেশিরভাগ ভাই-বোনই শাখা অফিসের কাছাকাছি থাকে না অথবা বিশেষ পূর্ণসময়ের সেবা করে না। আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন, তা হলে এই আস্থা রাখুন, যিহোবা আপনাকে তাঁর অতিথি হিসেবে দেখেন এবং তিনি আপনাকে অনেক ভালোবাসেন। যিহোবা আমাদের প্রত্যেককে ভালোভাবে জানেন এবং আমাদের যত্ন নেন। (১ পিতর ৫:৭) যিহোবা তাঁর প্রত্যেক উপাসককে সঠিক সময়ে খাবার দেন, সঠিক পথ দেখান এবং সুরক্ষা জোগান।

১৪. আরেকটা উদাহরণ দিন, যেটা থেকে বোঝা যায়, যিহোবা পক্ষপাতিত্ব করেন না।

১৪ আরেকটা উদাহরণের উপর মনোযোগ দিন, যেটা থেকে আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা পক্ষপাতিত্ব করেন না। বর্তমানে, লোকেরা যেখানেই থাকুক না কেন, তারা বাইবেল পড়তে পারে। বাইবেল ইব্রীয়, অরামীয় ও গ্রিক ভাষায় লেখা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে খুব কম লোকই এই ভাষাগুলো জানে। তার মানে যে-লোকেরা এই ভাষাগুলো জানে, শুধু তাদের সঙ্গেই কি যিহোবার এক দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে? না, তা নয়।—মথি ১১:২৫.

১৫. কোন বিষয়টা থেকে আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না? (ছবিও দেখুন।)

১৫ কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করার আগে যিহোবা দেখেন না যে, একজন ব্যক্তি কতটা শিক্ষিত এবং তিনি ইব্রীয়, অরামীয় ও গ্রিক ভাষা জানেন কি না। যিহোবা চান যেন সমস্ত লোক তাঁর বাক্য বাইবেলে দেওয়া পরামর্শ থেকে পূর্ণ উপকার লাভ করে, তা তারা বেশি শিক্ষিত হোক বা কম। তাই, তিনি ১০০০-রেরও বেশি ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করিয়েছেন। আজ পৃথিবীতে সমস্ত লোক বাইবেল পড়তে পারে, এটিতে লেখা বিষয়গুলো থেকে উপকার লাভ করতে পারে আর জানতে পারে যে, কীভাবে যিহোবার বন্ধু হওয়া যায়।—২ তীম. ৩:১৬, ১৭.

বর্তমানে প্রত্যেকে বাইবেল পড়তে পারে। এর থেকে কীভাবে বোঝা যায় যে, যিহোবা পক্ষপাতিত্ব করেন না? (১৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)


কখনো যিহোবার তাঁবু ছেড়ে যাবেন না

১৬. প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫ পদ অনুযায়ী আমরা যদি যিহোবার তাঁবুতে থাকতে চাই, তা হলে আমাদের কী করতে হবে?

১৬ এটা কতই-না এক বড়ো বিষয় যে, যিহোবা আমাদের তাঁর তাঁবুতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন! কেউই যিহোবার মতো আমাদের ভালোবাসতে পারে না আর যত্ন নিতে পারে না। যিহোবা কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না। একজন ব্যক্তি যেখানেই থাকুক না কেন, যেকোনো জাতির ও বয়সের হোক না কেন, বেশি বা কম শিক্ষিত হোক না কেন অথবা পুরুষ কিংবা নারী যে-ই হোক না কেন, যিহোবার কাছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তিনি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান। তবে, যারা যিহোবার মান অনুযায়ী চলে, তিনি শুধু তাদেরই “গ্রহণ করেন” এবং তাঁর তাঁবুতে থাকার সুযোগ দেন।—পড়ুন, প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫.

১৭. পরের প্রবন্ধে আমরা কী নিয়ে আলোচনা করব?

১৭ গীতসংহিতা ১৫:১ পদে দায়ূদ বলেছেন, “হে যিহোবা, কে তোমার তাঁবুতে অতিথি হয়ে থাকতে পারে? কে তোমার পবিত্র পর্বতে বাস করতে পারে?” যিহোবা দায়ূদের মাধ্যমে সেই একই গীতে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখিয়েছেন, যেগুলো আমরা পরের প্রবন্ধে আলোচনা করব। আমরা এও দেখব, এগুলো মেনে চলার মাধ্যমে কীভাবে আমরা যিহোবার সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি এবং তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করতে পারি।

গান ৩২ নাও পক্ষ যিহোবার!