সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩০

এক পুরোনো ভবিষ্যদ্‌বাণী আপনার জন্য কোন অর্থ রাখে?

এক পুরোনো ভবিষ্যদ্‌বাণী আপনার জন্য কোন অর্থ রাখে?

“আমি তোমাতে ও নারীতে, . . . শত্রুতা জন্মাইব।”—আদি. ৩:১৫.

গান ৫ খ্রিস্ট, আমাদের আদর্শ

সারাংশ *

১. আদম ও হবা পাপ করার কিছুসময় পর যিহোবা কী করেছিলেন? (আদিপুস্তক ৩:১৫)

 আদম ও হবা যখন পাপ করেছিলেন, তার কিছুসময় পর যিহোবা একটা বিশেষ ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে তাদের সন্তানেরা আশা লাভ করে। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী আমরা আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে পাই।—পড়ুন।

২. কেন আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণীকে বিশেষ ভবিষ্যদ্‌বাণী বলা হয়?

যদিও বাইবেলের এই ভবিষ্যদ্‌বাণী প্রথম বইয়ে লেখা রয়েছে, কিন্তু এটা বাইবেলের অন্যান্য বইয়ের সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত। ঠিক যেমন একটা মালাতে অনেক মুক্তো থাকে আর একটা সুতো সেগুলোকে জুড়ে রাখে, একইভাবে আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের বার্তা বাইবেলের বিভিন্ন বইকে জুড়ে রাখে। এই বার্তা হল: যিহোবা একজন উদ্ধারকর্তাকে পাঠাবেন আর তিনি শয়তান ও তার সঙ্গীদের ধ্বংস করে দেবেন। * তাদের ধ্বংস করার পর যিহোবার লোকেরা কতই-না আনন্দিত হবে!

৩. এই প্রবন্ধে আমরা কী জানতে পারব?

এই প্রবন্ধে আমরা আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে তিনটে বিষয় জানতে পারব। (১) এই ভবিষ্যদ্‌বাণীতে কে কাকে চিত্রিত করে? (২) এই ভবিষ্যদ্‌বাণী কীভাবে পরিপূর্ণ হয়ে আসছে? (৩) এই ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে আমরা কোন উপকার পাই?

এই ভবিষ্যদ্‌বাণীতে কে কাকে চিত্রিত করে?

৪. “সর্প” কে আর কীভাবে আমরা তা বলতে পারি?

আদিপুস্তক ৩:১৪, ১৫ পদে “সর্প,” সর্পের “বংশ,” “নারী” এবং নারীর ‘বংশের’ বিষয় বলা হয়েছে। বাইবেল থেকে আমরা তাদের সম্বন্ধে জানতে পারি। * আসুন, প্রথমে দেখি এই “সর্প” বা সাপ কে। এদন উদ্যানে যিহোবা যা বলেছিলেন, তা একটা সাপ বুঝতে পারবে না। তার মানে, এই ভবিষ্যদ্‌বাণীতে যে-সাপের বিষয় বলা হয়েছে, সেটা কোনো সত্যিকারের সাপ নয়। তাহলে, এই সাপ কে? প্রকাশিত বাক্য ১২:৯ পদে বলা হয়েছে, এই “পুরোনো সাপ” শয়তান ছাড়া আর কেউ নয়। এবার আসুন দেখি, এর বংশ কারা।

সাপ

শয়তান, যাকে প্রকাশিত বাক্য ১২:৯ পদে “সেই পুরোনো সাপ” বলা হয়েছে (৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৫. সাপের বংশ কারা?

বাইবেলে যখনই কোনো বংশের বিষয় বলা হয়েছে, তখন প্রতি বার এর মানে এই নয় যে, এটা তার সন্তানদের সম্বন্ধেই বলা হয়েছে। অনেকসময়, একজন ব্যক্তিকে কারো বংশ বা সন্তান বলা হয়, যখন সে তারই মতো কাজ করে। তাই, আমরা বলতে পারি, সাপের বংশ হল সেই মন্দ স্বর্গদূত এবং মানুষ, যারা শয়তানের মতো যিহোবার অবাধ্য হয় এবং তাঁর লোকদের বিরোধিতা করে। এই বংশের মধ্যে সেই স্বর্গদূতেরাও আছে, যারা নোহের সময় স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে নেমেছিল আর সেই লোকেরাও আছে, যারা তাদের পিতা শয়তানের মতো খারাপ খারাপ কাজ করে।—আদি. ৬:১, ২; যোহন ৮:৪৪; ১ যোহন ৫:১৯; যিহূদা ৬.

সাপের বংশ

মন্দ স্বর্গদূতেরা ও লোকেরা, যারা যিহোবার অবাধ্য হয় এবং তাঁর লোকদের বিরোধিতা করে (৫ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৬. যে-‘নারীর’ কথা বলা হয়েছে, সে কেন হবা হতে পারে না?

এখন আসুন বোঝার চেষ্টা করি, সেই “নারী” কে। সেই নারী হবা হতে পারে না। কেন? এর একটা কারণ লক্ষ করুন। আমরা জানি, সাপ অর্থাৎ শয়তান একজন স্বর্গদূত। আর ভবিষ্যদ্‌বাণীতে বলা হয়েছিল, নারীর বংশ সাপের মাথা “চূর্ণ করে” দেবে। কিন্তু, হবার বংশ বা তার সন্তানেরা তো স্বর্গদূত নয় বরং পৃথিবীর মানুষ। আর কীভাবে একজন মানুষ স্বর্গদূতকে মেরে ফেলতে পারে? তাহলে, সেই নারী আসলে কে?

৭. প্রকাশিত বাক্য ১২:১, ২, ৫ ও ১০ পদ থেকে কীভাবে বোঝা যায়, আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে বলা নারী কে?

বাইবেলের শেষ বই থেকে আমরা জানতে পারি, সেই নারী আসলে কে। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১২:১, ২, ৫, ১০.) সেখানে বলা হয়েছে, তার মাথায় ১২টা তারা দিয়ে তৈরি একটা মুকুট আছে এবং তার পায়ের নীচে চাঁদ আছে। সে এক সন্তানের জন্ম দেয়, যেটা ঈশ্বরের রাজ্যকে চিত্রিত করে। আর আমরা জানি, ঈশ্বরের রাজ্য স্বর্গে আছে। তার মানে, সেই নারী পৃথিবীতে নয় বরং স্বর্গে থাকার কথা। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, সেই নারী ঈশ্বরের সংগঠনের স্বর্গীয় অংশকে চিত্রিত করে, যেটার মধ্যে কোটি কোটি বিশ্বস্ত স্বর্গদূত আছেন।—গালা. ৪:২৬.

নারী

যিহোবার সংগঠনের স্বর্গীয় অংশ, যেটা কোটি কোটি স্বর্গদূত নিয়ে গঠিত (৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৮. নারীর বংশের মুখ্য অংশ কে আর কখন তিনি তা হয়েছিলেন? (আদিপুস্তক ২২:১৫-১৮)

বাইবেল থেকে আমরা এও জানতে পারি, নারীর বংশের মুখ্য অংশ কে। আগে থেকে বলা ছিল যে, তিনি অব্রাহামের বংশ থেকে আসবেন। (পড়ুন, আদিপুস্তক ২২:১৫-১৮.) আর যেমনটা ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, যিশু অব্রাহামেরই বংশ থেকে এসেছিলেন। (লূক ৩:২৩, ৩৪) যেহেতু এই বংশ শয়তানকে ধ্বংস করবে, তাই এই বংশ কোনো মানুষ হতে পারে না। প্রায় ৩০ বছর বয়সে যিশু যখন বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, তখন যিহোবা পবিত্র শক্তি দিয়ে তাঁর প্রিয় পুত্রকে অভিষিক্ত করেছিলেন। সেই সময় তিনি নারীর বংশের মুখ্য অংশ হয়েছিলেন। (গালা. ৩:১৬) কিছুসময় পর, যিশু মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু, যিহোবা তাঁকে আবারও বাঁচিয়ে তুলেছিলেন, তাঁকে ‘গৌরব ও সমাদরের মুকুট পরিয়েছিলেন’ এবং “স্বর্গে ও পৃথিবীতে সমস্ত কর্তৃত্ব” তাঁকে দিয়েছিলেন। তাঁকে “দিয়াবলের কাজগুলো বিনষ্ট” করার অধিকারও দেওয়া হয়েছে।—ইব্রীয় ২:৭; মথি ২৮:১৮; ১ যোহন ৩:৮.

নারীর বংশ

যিশু খ্রিস্ট এবং ১,৪৪,০০০ জন, যারা তাঁর সঙ্গে শাসন করবে (৮-৯ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৯-১০. (ক) যিশু ছাড়া আর কারা নারীর বংশের অংশ এবং কখন তারা এর অংশ হয়ে ওঠে? (খ) এখন আমরা কী জানতে পারব?

এই বংশের দ্বিতীয় অংশও রয়েছে। এই বিষয়ে প্রেরিত পৌল যিহুদি ও ন-যিহুদি অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের বলেছিলেন, “তোমরা যদি খ্রিস্টের শিষ্য হও, তা হলে তোমরা সত্যিই অব্রাহামের বংশধর।” (গালা. ৩:২৮, ২৯) এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, যিহোবা যখন তাঁর পবিত্র শক্তি দিয়ে কোনো খ্রিস্টানকে অভিষিক্ত করেন, তখন তিনি সেই বংশের অংশ হয়ে যান। এর অর্থ হল, নারীর বংশ যিশু খ্রিস্ট এবং ১,৪৪,০০০ জনকে নিয়ে গঠিত। (প্রকা. ১৪:১) তারা সবাই তাদের পিতা যিহোবার মতো চিন্তা ও কাজ করেন।

১০ এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারলাম, আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে লেখা ভবিষ্যদ্‌বাণীতে কে কাকে চিত্রিত করে। তাই আসুন দেখি, এই ভবিষ্যদ্‌বাণী কীভাবে পরিপূর্ণ হয়ে আসছে আর কীভাবে আমরা এটা থেকে উপকার পাই।

এই ভবিষ্যদ্‌বাণী কীভাবে পরিপূর্ণ হয়ে আসছে?

১১. কীভাবে নারীর বংশের “পাদমূল চূর্ণ” করা হয়েছিল?

১১ আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে বলা হয়েছিল যে, সাপ নারীর বংশের “পাদমূল চূর্ণ করিবে” অর্থাৎ এর গোড়ালিতে ছোবল মারবে। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী সেই সময়ে পরিপূর্ণ হয়েছিল, যখন শয়তান যিহুদি ও রোমীয়দের দিয়ে যিশুকে হত্যা করিয়েছিল। (লূক ২৩:১৩, ২০-২৪) যখন আমাদের গোড়ালিতে চোট লাগে, তখন আমরা কিছু দিনের জন্য ভালো করে হাঁটতে পারি না অথবা বেশি কিছু করতে পারি না। ঠিক একইভাবে, যিশু যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন প্রায় তিন দিন তিনিও কিছু করতে পারেননি।—মথি ১৬:২১.

১২. কখন এবং কীভাবে সাপের ‘মস্তক চূর্ণ করা’ হবে?

১২ ভবিষ্যদ্‌বাণীতে এও বলা হয়েছিল যে, নারীর বংশ সাপের “মস্তক চূর্ণ করিবে” অর্থাৎ এর মাথা থেঁতলে দেবে। কিন্তু, যিশু তো মারা গিয়েছিলেন, তা হলে কীভাবে তা পরিপূর্ণ হত? এরজন্য যিশুকে বেঁচে উঠতে হত আর সেটাই হয়েছিল। মারা যাওয়ার তৃতীয় দিনে যিহোবা যিশুকে এক স্বর্গীয় দেহ দিয়ে পুনরুত্থিত করেছিলেন এবং তাঁকে স্বর্গে অমর জীবন দিয়েছিলেন। যিহোবা যে-সময় স্থির করেছেন, সেই সময়ে যিশু শয়তানকে পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেবেন। (ইব্রীয় ২:১৪) এ ছাড়া, যিশু এবং তাঁর সহ-শাসকেরা পৃথিবীতে থাকা সাপের বংশ অর্থাৎ ঈশ্বরের শত্রুদের ধ্বংস করে দেবেন।—প্রকা. ১৭:১৪; ২০:৪, ১০. *

এই ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে আমরা কোন উপকার পাই?

১৩. বর্তমানে এই ভবিষ্যদ্‌বাণী থেকে আমরা কোন কোন উপকার পাই?

১৩ একটু চিন্তা করুন, এই ভবিষ্যদ্‌বাণী যেভাবে পরিপূর্ণ হয়েছে, সেখান থেকে আপনি কত উপকার পেয়েছেন! যিশু যখন পৃথিবীতে এসেছিলেন, তখন তাঁর কাজ এবং লোকদের প্রতি তাঁর আচরণ একেবারে তাঁর পিতার মতো ছিল। (যোহন ১৪:৯) যিশুকে জানার মাধ্যমে আমরা যিহোবাকে জেনেছি এবং তাঁকে ভালোবেসেছি। যিশু আমাদের যা শিখিয়েছিলেন এবং বর্তমানে এই সংগঠনকে যেভাবে পরিচালনা করছেন, সেখান থেকেও আমরা অনেক উপকার পাই। তিনি আমাদের এমনভাবে জীবন কাটাতে বলেছেন, যেটা দেখে যিহোবা খুশি হবেন। শেষে তাঁর “পাদমূল চূর্ণ” করা হয়েছিল অর্থাৎ তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছিল। তাঁর বলিদান থেকেও আমরা উপকার পাই। যিশু আমাদের জন্য যে-সিদ্ধ জীবন দিয়েছিলেন, সেটার উপর ভিত্তি করে যিহোবা ‘আমাদের সমস্ত পাপ থেকে শুচি করেন।’—১ যোহন ১:৭.

১৪. কেন এদন উদ্যানে করা ভবিষ্যদ্‌বাণী সঙ্গেসঙ্গে পরিপূর্ণ হতে পারত না? ব্যাখ্যা করুন।

১৪ এদন উদ্যানে যিহোবা যে-ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন, সেটা সঙ্গেসঙ্গে পরিপূর্ণ হতে পারত না। কেন আমরা তা বলতে পারি? কারণ নারীর বংশকে আসতে সময় লাগত আর কিছুটা সময় পার হওয়ার পর লোকেরা শয়তানের পক্ষ নিত। শুধু তা-ই নয়, সাপের বংশ এবং নারীর বংশের মধ্যে শত্রুতা জন্মাতেও সময় লাগত। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী ভালো করে বুঝলে আমরা জানতে পারব যে, শয়তানের জগৎ যিহোবার লোকদের ঘৃণা করবে। যিশু তাঁর শিষ্যদের আগে থেকেই বলেছিলেন যে, লোকেরা তাদের ঘৃণা করবে। (মার্ক ১৩:১৩; যোহন ১৭:১৪) বিশেষ করে, ১০০ বছর ধরে আমরা স্পষ্টভাবে এটাই দেখতে পাচ্ছি!

১৫. (ক) কেন শয়তানের জগৎ আমাদের আগের চেয়ে আরও বেশি ঘৃণা করে? (খ) কেন আমাদের শয়তানকে ভয় পাওয়া উচিত নয়?

১৫ উনিশ-শো চোদ্দো সালে যিশু যখন ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হয়েছিলেন, তার কিছুসময় পর তিনি শয়তানকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু, শয়তান চুপচাপ বসে নেই। সে জানে, তার সময় অল্প। তাই, সে খুব রেগে আছে আর ঈশ্বরের লোকদের উপর সেই রাগ দেখাচ্ছে। (প্রকা. ১২:৯, ১২, ১৩, ১৭) এই কারণে শয়তানের জগৎ আমাদের আগের চেয়ে আরও বেশি ঘৃণা করে। কিন্তু, আমাদের শয়তান এবং তার লোকদের ভয় পাওয়া উচিত নয়। আমরা প্রেরিত পৌলের এই কথাগুলো মনে রাখতে পারি: “ঈশ্বর যদি আমাদের পক্ষে থাকেন, তা হলে কেই-বা আমাদের বিপক্ষে দাঁড়াতে পারবে?” (রোমীয় ৮:৩১) যিহোবা এখন পর্যন্ত যেভাবে আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ করেছেন, সেটা প্রমাণ দেয় যে, আমরা তাঁর উপর আস্থা রাখতে পারি।

১৬-১৮. কার্টিস, উর্সুলা ও জেসিকা যখন আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলেন, তখন তারা কোন উপকার পেয়েছিলেন?

১৬ আমরা যদি আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে করা যিহোবার প্রতিজ্ঞার উপর মনোযোগ দিই, তা হলে আমরা সাহসের সঙ্গে সমস্যাগুলো সহ্য করতে পারব। গুয়াম দ্বীপে থাকা কার্টিস নামে একজন মিশনারি ভাই বলেন, “কখনো কখনো আমার জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন আমি মনে করি যে, যিহোবার প্রতি আমি আর বিশ্বস্ত থাকতে পারব না। কিন্তু আমি যখন চিন্তা করি, কীভাবে আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ হয়েছে, তখন যিহোবার উপর আমার আস্থা আরও বেড়ে যায়।” ভাই কার্টিস সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে আছেন, যখন যিহোবা সমস্ত দুঃখকষ্ট ও সমস্যা চিরকালের জন্য দূর করে দেবেন।

১৭ জার্মানিতে থাকা বোন উর্সুলা বলেন, তিনি যখন আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী নিয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন, তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কীভাবে এই ভবিষ্যদ্‌বাণী বাইবেলের অন্যান্য ভবিষ্যদ্‌বাণীকে জুড়ে রেখেছে। এটা জেনে তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন এবং আরও নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, যিহোবাই বাইবেল লিখিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “যিহোবা মানুষকে একা ছেড়ে দেননি বরং তিনি সঙ্গেসঙ্গে একটা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন আর তাদের এক আশা দিয়েছিলেন। এভাবে চিন্তা করার ফলে আমি যিহোবাকে আরও বেশি করে ভালোবাসতে পেরেছি।”

১৮ মাইক্রোনেশিয়ায় থাকা বোন জেসিকা বলেন, “আমার আজও সেই দিনের কথা মনে আছে, যে-দিন আমি নিশ্চিত হয়েছিলাম, এটাই সত্য। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ হচ্ছে। আমি এও বুঝতে পেরেছিলাম, বর্তমানে আমরা যেভাবে জীবন কাটাচ্ছি, যিহোবা চান না যেন আমরা সেভাবে জীবন কাটাই। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী পড়ার মাধ্যমে আমি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত হই, যিহোবার সেবা করার মাধ্যমে আমি বর্তমানে ভালো করে জীবন কাটাতে পারব আর ভবিষ্যতে তো আরও ভালো করে জীবন কাটাতে পারব।”

১৯. কেন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, ভবিষ্যদ্‌বাণীর বাকি অংশটাও পরিপূর্ণ হবে?

১৯ এই প্রবন্ধে আমরা জানতে পারলাম, আদিপুস্তক ৩:১৫ পদের ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ হচ্ছে। আমরা জানি, নারীর বংশ আর সাপের বংশ কারা। নারীর বংশের মুখ্য অংশ অর্থাৎ যিশু তাঁর গোড়ালিতে যে-চোট পেয়েছিলেন, সেটা এখন ঠিক হয়ে গিয়েছে। এখন তিনি স্বর্গে একজন শক্তিশালী রাজা আর তাঁকে অমর জীবন দেওয়া হয়েছে। যারা নারীর বংশের দ্বিতীয় অংশ, তাদের প্রায় সবাইকে বাছাই করা হয়ে গিয়েছে। এই ভবিষ্যদ্‌বাণীর বেশিরভাগটাই পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে, তাই আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, সাপের মাথাকে নিশ্চয়ই থেঁতলে দেওয়া হবে। সেই সময়ে যিহোবার লোকেরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে। সেই সময় না আসা পর্যন্ত আসুন, আমরা হাল ছেড়ে না দিই বরং যিহোবার উপর নির্ভর করি যে, তিনি নারীর বংশের মাধ্যমে ‘পৃথিবীর সকল জাতিকে আশীর্ব্বাদ’ করবেন।—আদি. ২২:১৮.

গান ৩০ যিহোবা তাঁর শাসন শুরু করেন

^ আমরা যদি বাইবেলের বার্তা বুঝতে চাই, তা হলে আমাদের আদিপুস্তক ৩:১৫ পদে দেওয়া ভবিষ্যদ্‌বাণী ভালোভাবে বুঝতে হবে। এই ভবিষ্যদ্‌বাণী গভীরভাবে অধ্যয়ন করলে যিহোবার উপর আমাদের বিশ্বাস বাড়বে এবং আমরা নিশ্চিত হব যে, যিহোবা যা কথা দিয়েছেন, সেটা অবশ্যই পরিপূর্ণ হবে।

^ ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়নের জন্য এক সহায়িকা পুস্তিকার “বাইবেলের বার্তা” শিরোনামের বিভাগ দেখুন।

^আদিপুস্তক ৩:১৪, ১৫ পদে কে কাকে চিত্রিত করে?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।