অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩৬
গান ৮৯ কথা শোনো, বাধ্য হও আর সুখী হও
“বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করো”
“তোমরা সেই বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করো, কেবল শ্রোতা হোয়ো না।” —যাকোব ১:২২.
আমরা কী শিখব?
এই প্রবন্ধে উৎসাহিত করা হবে, আমাদের প্রতিদিন শুধু বাইবেল পড়লেই হবে না, এর পাশাপাশি যে-বিষয়টা পড়ছি, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে এবং সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে হবে।
১-২. যিহোবার লোকেরা কেন সুখী? (যাকোব ১:২২-২৫)
যিহোবা এবং যিশু চান আমরা যেন সুখী হই। কিন্তু, কীভাবে আমরা সুখী হতে পারি? ১১৯ গীতের লেখক লিখেছিলেন: “সুখী সেই ব্যক্তিরা, যারা তিনি যে-নির্দেশনাগুলো স্মরণ করিয়ে দেন, সেগুলো পালন করে, যারা সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাঁর অনুসন্ধান করে।” (গীত. ১১৯:২) যিশুও বলেছিলেন: “সুখী তারাই, যারা ঈশ্বরের বাক্য শোনে এবং তা পালন করে চলে!”—লূক ১১:২৮.
২ যিহোবার লোক হিসেবে আমরা সুখী। কেন? এর অনেক কারণ রয়েছে। কিন্তু, সবথেকে বড়ো কারণ হল, আমরা প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল পড়ি এবং এখান থেকে যা শিখি, তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করি।—পড়ুন, যাকোব ১:২২-২৫.
৩. আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্য বাইবেল পড়ি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি, তখন কোন আশীর্বাদগুলো লাভ করা যায়?
৩ আমরা যখন সেই “বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ” করি, তখন অনেক আশীর্বাদ পাই। প্রথমত, আমরা সুখী কারণ বাইবেলে যা-লেখা রয়েছে, সেই অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে আমরা যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করি। (উপ. ১২:১৩) শুধু তা-ই নয়, বাইবেলে দেওয়া পরামর্শ মেনে চললে আমাদের পরিবারে শান্তি থাকে এবং ভাই-বোনদের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকে। আর আপনিও নিশ্চয়ই এই বিষয়টা লক্ষ করেছেন। এ ছাড়া, আমরা সেই সমস্যাগুলো থেকে দূরে থাকতে পারি, যেগুলো সেই লোকেরা ভোগ করে, যারা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়। দায়ূদ একদম ঠিক কথা বলেছিলেন যে, যিহোবার আইন, তাঁর আদেশ এবং তাঁর রায় “মেনে চলার মাধ্যমে বড়ো পুরস্কার লাভ করা যায়।”—গীত. ১৯:৭-১১.
৪. ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করা কেন সবসময় সহজ নয়?
৪ ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল, আমরা যেন বাইবেল পড়ি এবং সেটি নিয়ে অধ্যয়ন করি। এমনটা করলে আমরা বুঝতে পারব, যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান। কিন্তু, সারা দিনে আমাদের অনেক কাজ করতে হয়। তাই, প্রতিদিন বাইবেল পড়া আমাদের জন্য সবসময় সহজ হয় না। এর জন্য আমাদের সময় বের করতে হবে। আমরা প্রতিদিন বাইবেল পড়ার জন্য কী করতে পারি, সেই বিষয়ে এই প্রবন্ধে কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আমরা এটাও দেখব যে, আমরা যা পড়ি, সেটা নিয়ে কীভাবে গভীরভাবে চিন্তা করতে পারি এবং সেটা কাজে লাগাতে পারি।
আপনি কোন সময় বাইবেল পড়বেন, তা স্থির করুন
৫. কোন কাজগুলো করার পিছনে আমাদের অনেক সময় চলে যায়?
৫ যিহোবার লোক হিসেবে আমরা অনেক ব্যস্ত থাকি এবং সারা দিনে করার মতো আমাদের কাছে অনেক কাজ থাকে। যেমন, পরিবারের ভরণ-পোষণ জোগানোর জন্য আমাদের মধ্যে অনেককেই চাকরি করতে হয়। (১ তীম. ৫:৮) কিছু খ্রিস্টানকে হয়তো বয়স্ক অথবা অসুস্থ বাবা-মায়ের এবং আত্মীয়স্বজনের যত্ন নিতে হয়। আমাদের নিজেদের শরীরেরও যত্ন নিতে হয়। এ ছাড়া, মণ্ডলীতে আমাদের অনেক কাজ থাকে। আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেটা আমরা করে চলেছি, সেটা হল সুসমাচার প্রচার করা। এই সমস্ত কাজ এবং দায়িত্বগুলো পালন করতে অনেক সময় লাগে। তা হলে, কীভাবে আমরা প্রতিদিন বাইবেল পড়ার জন্য সময় বের করতে পারি, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে পারি এবং যা-কিছু শিখি, সেগুলো কাজে লাগাতে পারি?
৬. প্রতিদিন বাইবেল পড়ার জন্য আপনি কী করতে পারেন? (ছবিও দেখুন।)
৬ প্রতিদিন বাইবেল পড়া খ্রিস্টানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা ‘বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর’ মধ্যে একটা। (ফিলি. ১:১০) গীতসংহিতার একজন লেখক বলেছিলেন যে, একজন সুখী ব্যক্তি “যিহোবার আইনকে খুব ভালোবাসে এবং দিন-রাত নীচুস্বরে তাঁর আইন পড়ে।” (গীত. ১:১, ২) এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি, আমাদের প্রতিদিন বাইবেল পড়ার জন্য সময় বের করতে হবে। কিন্তু, বাইবেল পড়ার জন্য দিনের মধ্যে কোন সময়টা সবচেয়ে ভালো হবে? প্রত্যেকে হয়তো আলাদা আলাদা সময়ে পড়তে পছন্দ করে। আপনি এমন একটা সময় স্থির করতে পারেন, যে-সময়ে আপনি প্রতিদিন বাইবেল পড়বেন। ভাই ভিক্টর বলেন: আমি সকাল বেলায় বাইবেল পড়তে পছন্দ করি। যদিও সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠতে আমার খুব-একটা ভালো লাগে না, কিন্তু তারপরও আমি সকালে পড়ি, যাতে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারি। কারণ, সকাল বেলা পরিবেশটা অনেক শান্ত থাকে এবং মনোযোগ বিক্ষিপ্ত করার মতো কোনো বিষয় থাকে না।” আপনার জন্যও কি সকাল বেলা বাইবেল পড়া ভালো হবে? যদি সম্ভব না হয়, তা হলে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘আমার জন্য কোন সময়টা ভালো হবে?’
আপনি যা পড়েন, সেটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন
৭-৮. আমরা যদি বাইবেল থেকে পুরোপুরি উপকার লাভ করতে চাই, তা হলে আমাদের কী করা উচিত নয়? উদাহরণের সাহায্যে বুঝিয়ে বলুন।
৭ হতে পারে, আপনি বাইবেল পড়ার জন্য দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় স্থির করেছেন। কিন্তু আপনি যা পড়েন, সেটা বোঝা এবং মনে রাখাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কখনো কখনো হতে পারে, আমরা অনেক কিছু পড়ি, কিন্তু কিছু সময় পর আমাদের সেগুলো আর মনে থাকে না। আপনার সঙ্গেও কি কখনো এমনটা হয়েছে? সত্যি বলতে কী, আমাদের সবার সঙ্গে এমনটা হয়। কখনো কখনো বাইবেল পড়ার পরও এমনটা হতে পারে। হয়তো আমরা আগে থেকে চিন্তা করে রেখেছি যে, প্রতিদিন বাইবেলের কতগুলো অধ্যায় পড়ব। এটা খুব ভালো বিষয়। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। (১ করি. ৯:২৬) বাইবেল পড়া হল, প্রথম পদক্ষেপ বা একটা শুরু। ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমরা যদি পুরোপুরি উপকার লাভ করতে চাই, তা হলে আমাদের আরও কিছু করতে হবে।
৮ এই বিষয়টা একটা উদাহরণের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করুন। বৃষ্টি আমাদের এবং গাছপালার জন্য খুবই প্রয়োজন। কিন্তু, অল্প সময়ের মধ্যে যদি অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়, তা হলে কী হবে? মাটি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি নরম হয়ে যাবে এবং সব জায়গায় কাদা হয়ে যাবে আর এই বৃষ্টি আমাদের কোনো উপকার আনবে না। কিন্তু, যখন অল্প বৃষ্টি হয়, তখন মাটি জল শোষণ করার জন্য সময় পায় আর এর ফলে গাছপালা বেড়ে উঠতে পারে। একইভাবে, আমরা যদি তাড়াহুড়ো করে বাইবেল পড়ি, তা হলে বাইবেলের কথাগুলো আমরা শোষণ করতে পারব না অর্থাৎ এর থেকে আমরা পুরোপুরি উপকার লাভ করতে পারব না। এর মানে আমরা যা পড়ছি, সেটা বুঝতেও পারব না এবং মনেও রাখতে পারব না।—যাকোব ১:২৪.
৯. আপনি যদি তাড়াহুড়ো করে বাইবেল পড়েন, তা হলে আপনি কী করতে পারেন?
৯ আপনিও কি তাড়াহুড়ো করে বাইবেল পড়েন? যদি তা-ই হয়, তা হলে আপনি কী করতে পারেন? আপনি ধীরে ধীরে বাইবেল পড়তে পারেন, যাতে আপনি যা পড়ছেন, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে পারেন। অথবা, বাইবেল পড়ার পর আপনি তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু, আপনার পক্ষে যদি এটা করা কঠিন হয়, তা হলে ভয় পাবেন না। এটা কোনো কঠিন কাজ নয়। অধ্যয়ন করার জন্য এবং তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য আরও বেশি সময় বের করুন। আপনি চাইলে মাত্র কয়েকটা পদ পড়তে পারেন এবং বাকি সময়টা তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে পারেন। ভাই ভিক্টর বলেন, “আমি প্রায়ই বাইবেলের একটাই অধ্যায় পড়ি এবং সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সেটি পড়ি। এর ফলে, আমি সারা দিন সেই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করতে পারি, যেগুলো আমি পড়েছি।” আপনি যতগুলো অধ্যায়ই পড়ুন না কেন, তা ধীরে ধীরে পড়ুন, যাতে যেগুলো পড়ছেন, সেগুলো থেকে পুরোপুরি উপকার লাভ করতে পারেন।—গীত. ১১৯:৯৭; “ চিন্তা করার মতো কিছু প্রশ্ন” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।
১০. আপনি যা পড়েন, তা কাজে লাগানোর জন্য আপনি কী করতে পারেন? একটা উদাহরণ দিন। (১ থিষলনীকীয় ৫:১৭, ১৮)
১০ আপনি বাইবেল কখন পড়ছেন অথবা কতটা পড়ছেন, এটার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, আপনি যা-পড়ছেন, সেটা কাজে লাগাচ্ছেন কি না। তাই, বাইবেলের কোনো অংশ পড়ার পর আপনি হয়তো নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন, “কীভাবে আমি এটা এখন ও আগামী দিনগুলোতে কাজে লাগাতে পারি?” আসুন, আমরা এটা কীভাবে করতে পারি সেই বিষয়ে একটা উদাহরণ দেখি। ধরুন, আপনি ১ থিষলনীকীয় ৫:১৭, ১৮ পড়েছেন। (পড়ুন।) এই পদগুলো পড়ার পর একটু থেমে চিন্তা করুন, “আমি কত বার প্রার্থনা করি এবং কতটা আন্তরিকভাবে করি?” আপনি সেই বিষয়গুলো নিয়েও চিন্তা করতে পারেন, যে-বিষয়গুলোর জন্য আপনি যিহোবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনি চাইলে এমন তিনটে বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে পারেন, যে-বিষয়গুলোর জন্য আপনি যিহোবাকে ধন্যবাদ দিতে চান। তাই, আপনি যখন এভাবে মনোযোগ দিয়ে বাইবেল পড়বেন এবং যা-পড়ছেন তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করবেন, তখন আপনি শুধুমাত্র বাক্যের একজন শ্রোতা হবেন না বরং বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে পারবেন। চিন্তা করুন, আপনি যদি প্রতিদিন এটা করেন, তা হলে আপনি কতই-না উপকার লাভ করবেন! আপনি বাইবেলে লেখা কথাগুলো আরও ভালোভাবে মেনে চলতে পারবেন। কিন্তু, আপনার যদি মনে হয়, অনেক বিষয়ে আপনাকে উন্নতি করতে হবে, তা হলে আপনি কী করবেন?
উন্নতি করে চলুন
১১. বাইবেল পড়ার পর কোন বিষয়গুলো ভেবে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়তে পারি? একটা উদাহরণ দিন।
১১ আপনি যখন বাইবেল পড়েন এবং যা-পড়ছেন, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন, তখন আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে, আপনাকে অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে। আর এটা ভেবে আপনি হয়তো একটু চিন্তিত হয়ে পড়েন। এই বিষয়টা বোঝার জন্য আসুন একটা উদাহরণের উপর মনোযোগ দিই। ধরুন, আপনি যাকোব বইটি পড়ছেন। প্রথম দিন আপনি পড়েন, খ্রিস্টানদের পক্ষপাতিত্ব করা উচিত নয়। (যাকোব ২:১-৮) আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন, ‘আমাকে এই বিষয়ে উন্নতি করতে হবে কারণ আমি কখনো কখনো অন্যদের সঙ্গে ভালোভাবে আচরণ করি না।’ এভাবে চিন্তা করা খুবই ভালো। তারপর দ্বিতীয় দিন আপনি পড়েন, আপনার কথাবার্তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। (যাকোব ৩:১-১২) আপনি চিন্তা করতে পারেন, ‘কখনো কখনো আমি অন্যদের এমন কিছু বলি, যা তাদের খারাপ লাগে। এখন থেকে আমি তাদের শুধুমাত্র সেই কথাগুলো বলব, যেগুলো তাদের উৎসাহিত করবে।’ আর তৃতীয় দিন আপনি পড়েন, ঈশ্বরের লোকদের জগতের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা উচিত নয়। (যাকোব ৪:৪-১২) এই বার আপনি চিন্তা করেন, ‘কোন ধরনের আমোদপ্রমোদ বাছাই করব, সেই বিষয়ে আমাকে আরও মনোযোগ দিতে হবে।’ আর চতুর্থ দিন আসতে না আসতেই আপনি হয়তো চিন্তা করতে শুরু করেন, “আমাকে অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে। আমি এটা কীভাবে করব?”
১২. আপনি যদি বুঝতে পারেন, আপনাকে অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে, তা হলে আপনার কেন নিরুৎসাহিত হওয়া উচিত নয়? (পাদটীকাও দেখুন।)
১২ আপনি যদি বুঝতে পারেন, আপনাকে অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে, তা হলে নিরুৎসাহিত হবেন না। এটা দেখায় আপনি নম্র এবং আপনার ভালো মনোভাব রয়েছে। একজন নম্র ব্যক্তি বাইবেল পড়ার সময় চিন্তা করেন যে, তাকে কোথায় উন্নতি করতে হবে। a আপনি এটাও মনে রাখতে পারেন, “নতুন ব্যক্তিত্ব” পরিধান করার জন্য আমাদের ক্রমাগত উন্নতি করতে হবে। (কল. ৩:১০) ঈশ্বরের বাক্য অনুযায়ী কাজ করার জন্য আর কোন বিষয়টা আপনাকে সাহায্য করতে পারে?
১৩. আপনি যখন বুঝে যান, আপনাকে অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে, তখন আপনি কী করতে পারেন? (ছবিও দেখুন।)
১৩ একবার যদি আপনি বুঝে যান, কোন কোন বিষয়ে আপনাকে উন্নতি করতে হবে, তখন আপনি কী করতে পারেন? সমস্ত কিছু একবারেই করার চেষ্টা করবেন না। (হিতো. ১১:২) এর পরিবর্তে, কোন কোন বিষয়ে আপনাকে উন্নতি করতে হবে, তা লিখে রাখুন। তারপর একটা অথবা দুটো বিষয়ের উপর কাজ করুন এবং বাকিগুলো পরবর্তী সময়ের জন্য ছেড়ে দিন। কিন্তু প্রশ্ন হল, সবচেয়ে প্রথমে আপনি কোন বিষয়ে উন্নতি করবেন?
১৪. সবচেয়ে প্রথমে আপনি কোন বিষয়ে উন্নতি করতে চাইবেন?
১৪ সবচেয়ে প্রথমে আপনি এমন একটা বিষয়ে উন্নতি করার চেষ্টা করতে পারেন, যে-বিষয়টা আপনার জন্য করা সহজ। অথবা আপনি হয়তো এমন একটা বিষয় বেছে নিতে পারেন, যে-ক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো আরও উন্নতি করতে হবে। আপনি যে-বিষয়ে উন্নতি করতে চান, সেটা নিশ্চিত করার পর আমাদের প্রকাশনা থেকে গবেষণা করতে পারেন। আপনি চাইলে যিহোবার সাক্ষিদের গবেষণা নির্দেশিকা থেকে অথবা ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি থেকে গবেষণা করতে পারেন। আপনি এই বিষয়টা নিয়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনাও করতে পারেন, যেন তিনি আপনাকে “কাজ করার আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষমতা, উভয়ই দেন।” (ফিলি. ২:১৩) এরপর উন্নতি করার জন্য আপনাকে যে-প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নিতে হবে, সেগুলো নিন। আসলে, আমরা যখন একটা বিষয়ে উন্নতি করে ফেলি অথবা কোনো গুণ নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলি, তখন অন্যান্য বিষয়েও উন্নতি করা সহজ হয়ে যায়।
ঈশ্বরের বাক্যকে নিজের উপর “কাজ” করতে দিন
১৫. বাইবেল পড়ার ক্ষেত্রে যিহোবার লোকেরা কীভাবে জগতের লোকদের চেয়ে আলাদা? (১ থিষলনীকীয় ২:১৩)
১৫ কিছু লোক বলে, তারা অনেক বার বাইবেল পড়েছে। কিন্তু, তারা কি সত্যিই বাইবেলে লেখা কথাগুলো বিশ্বাস করে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে? দুঃখের বিষয় যে, বেশিরভাগ লোক এটা করে না। কিন্তু, যিহোবার লোকেরা জগতের লোকদের চেয়ে একেবারে আলাদা। প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের মতো তারা বাইবেলকে ‘ঈশ্বরের বাক্য হিসেবেই গ্রহণ করে। আর সত্যিই তা ঈশ্বরের বাক্য।’ এ ছাড়া, তারা এটার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করার জন্য পুরোপুরি প্রচেষ্টা করে।—পড়ুন ১ থিষলনীকীয় ২:১৩.
১৬. কীভাবে আমরা ঈশ্বরের বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে পারি?
১৬ ঈশ্বরের বাক্য পড়া এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা সবসময় সহজ নয়। প্রতিদিন বাইবেল পড়ার জন্য সময় বের করা কঠিন হতে পারে। আর তাই হতে পারে আমরা তাড়াহুড়ো করে বাইবেল পড়ি আর যা পড়ছি, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য সময় দিই না। আর এটা ভেবেও আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি যে, আমাদের অনেক বিষয়ে উন্নতি করতে হবে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো আপনার কাছে পাহাড়ের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু, যিহোবার সাহায্যে আপনি সেগুলো অতিক্রম করতে পারবেন। তাই, আসুন আমরা যিহোবার পরামর্শ মেনে চলি এবং বাক্যের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করি আর ভুলে যাওয়ার শ্রোতা না হই। মনে রাখুন, আমরা যতবেশি ঈশ্বরের বাক্য পড়ব এবং সেই অনুযায়ী কাজ করব, ততবেশি আনন্দিত থাকতে পারব।—যাকোব ১:২৫.
গান ৯৪ ঈশ্বরের বাক্যের জন্য কৃতজ্ঞ
a jw.org ওয়েবসাইটে তোমার সঙ্গীসাথিরা যা বলে—বাইবেল পড়া ভিডিওটা দেখুন।