সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

বিদেশে সেবা করার সময় যিহোবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক বজায় রাখুন

বিদেশে সেবা করার সময় যিহোবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক বজায় রাখুন

“তোমার বচন আমি হৃদয়মধ্যে সঞ্চয় করিয়াছি।”—গীত. ১১৯:১১.

গান সংখ্যা: ১৮, ৪৭

১-৩. (ক) কোন বিষয়টাকে সবসময় আমাদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত? (খ) নতুন ভাষা শিখছে এমন ব্যক্তিদের কোন সুনির্দিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো রয়েছে আর এর ফলে কোন প্রশ্নগুলো উত্থাপিত হয়? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

বর্তমানে, হাজার হাজার যিহোবার সাক্ষি ‘প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও প্রজাবৃন্দের’ কাছে প্রচার করার ভবিষ্যদ্‌বাণী পরিপূর্ণ করায় ব্যস্ত আছে। (প্রকা. ১৪:৬) আপনি কি সেই ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, যারা অন্য একটা ভাষা শিখছে? কেউ কেউ মিশনারি হিসেবে সেবা করে অথবা প্রকাশকদের বেশি প্রয়োজন এমন কোনো দেশে গিয়ে প্রচার করে। আবার অন্যেরা নিজেদের দেশেই বিদেশিভাষী কোনো মণ্ডলীর সভাতে যোগ দিতে শুরু করেছে।

ঈশ্বরের সমস্ত দাসকে, ঈশ্বরের সঙ্গে নিজের ও তার পরিবারের সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিতে হবে। (মথি ৫:৬) তবে কখনো কখনো আমরা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়তে পারি যে, অর্থপূর্ণ ব্যক্তিগত অধ্যয়নের সময় বের করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। আর যারা বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করে, তাদের জন্য অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাও রয়েছে।

যারা কোনো বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করে, তাদের যদিও একটা নতুন ভাষা শিখতে হয়, কিন্তু সেইসঙ্গে তাদের এটাও খেয়াল রাখতে হয়, যেন তারা নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের গভীর বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন করে। (১ করি. ২:১০) মণ্ডলীতে যা বলা হয় সেটা যদি তারা বুঝতেই না পারে, তা হলে কীভাবে তারা ঈশ্বরের গভীর বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন করবে? আর যে-খ্রিস্টান বাবা-মায়েরা বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করছেন, তাদের কেন এটা খেয়াল রাখতে হবে, সত্য যেন তাদের সন্তানদের হৃদয়ে পৌঁছায়?

যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক হুমকি

৪. কোন বিষয়টা যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলতে পারে? একটা উদাহরণ দিন।

বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করার কারণে আমরা যদি বাইবেলের শিক্ষাগুলো বুঝতে না পারি, তা হলে যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক গুরুতর হুমকি দেখা দিতে পারে। নহিমিয় যখন যিরূশালেম থেকে ফিরে এসেছিলেন, তখন তিনি লক্ষ করেছিলেন, কোনো কোনো ছেলে-মেয়ে ইব্রীয় ভাষায় কথা বলতে পারে না। (পড়ুন, নহিমিয় ১৩:২৩, ২৪.) এই ছেলে-মেয়েরা যেহেতু ঈশ্বরের বাক্য বুঝতে পারেনি, তাই যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়েছিল।—নহি. ৮:২, ৮.

৫, ৬. যে-খ্রিস্টান বাবা-মায়েরা বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ কী লক্ষ করেছেন আর এর পিছনে সমস্যাটা কী?

যে-খ্রিস্টান বাবা-মায়েরা বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করছেন, তাদের মধ্যে কেউ কেউ লক্ষ করেছেন, যিহোবার সঙ্গে তাদের সন্তানদের সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে। সভাতে যা বলা হয়, সেগুলো যেহেতু তাদের সন্তানরা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারে না, তাই সেই তথ্য তাদেরকে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে না। পেদ্রো, যিনি তার পরিবার নিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে দক্ষিণ আমেরিকায় চলে গিয়েছেন, তিনি বলেন, “আমরা যখন আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলি, তখন এর সঙ্গে আমাদের হৃদয় ও আবেগ জড়িত থাকা উচিত।” [১]লূক ২৪:৩২.

আমাদের মাতৃভাষায় কোনো কিছু পড়ার সময় সেটা আমাদের আবেগকে যতটা নাড়া দেয়, বিদেশি ভাষায় সেই একই বিষয়বস্তু পড়লে ততটা নাড়া না-ও দিতে পারে। এ ছাড়া, বিদেশি ভাষায় ভাববিনিময় করা যেহেতু কঠিন, তাই আমরা এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারি যে, এর ফলে যিহোবার প্রতি আমাদের উপাসনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই, বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করার ব্যাপারে আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে দৃঢ় রাখার পাশাপাশি যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককেও সুরক্ষা করতে হবে।—মথি ৪:৪.

তারা যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে সুরক্ষিত রেখেছিলেন

৭. কীভাবে বাবিলীয়রা দানিয়েলকে তাদের সংস্কৃতি ও ধর্ম গ্রহণ করে নেওয়ার জন্য জোর করার চেষ্টা করেছিল?

দানিয়েল ও তার বন্ধুরা যখন বাবিলে নির্বাসনে ছিলেন, তখন সেখানকার সংস্কৃতি ও ধর্ম গ্রহণ করে নেওয়ার জন্য বাবিলীয়রা তাদের জোর করার চেষ্টা করেছিল। কীভাবে? বাবিলীয়রা তাদেরকে “কল্‌দীয়দের . . . ভাষা” শিক্ষা দিয়েছিল এবং বাবিলীয় নাম দিয়েছিল। (দানি. ১:৩-৭) দানিয়েলের নতুন নাম বাবিলের প্রধান দেবতা বেলকে নির্দেশ করেছিল। তাই, রাজা নবূখদ্‌নিৎসর সম্ভবত দানিয়েলকে এটা বিশ্বাস করাতে চেয়েছিলেন, দানিয়েলের ঈশ্বর যিহোবার চেয়ে বাবিলের দেবতা আরও শক্তিশালী।—দানি. ৪:৮.

৮. কীভাবে দানিয়েল যিহোবার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক দৃঢ় রেখেছিলেন?

বাবিলে থাকার সময় দানিয়েলকে সেই সুস্বাদু খাবার খেতে দেওয়া হয়েছিল, যা রাজার সামনে পরিবেশন করা হতো। কিন্তু, তিনি ‘মনে স্থির করিয়াছিলেন যে,’ তিনি ঈশ্বরের আইনের অবাধ্য হবেন না। (দানি. ১:৮) তিনি যেহেতু ইব্রীয় ভাষায় লেখা “গ্রন্থাবলি” বা পবিত্র শাস্ত্র নিয়ে সবসময় অধ্যয়ন করেছিলেন, তাই বিদেশে থাকার সময়ও তিনি যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ক দৃঢ় রেখেছিলেন। (দানি. ৯:২) আসলে, বাবিলে আসার প্রায় ৭০ বছর পরও তিনি তার ইব্রীয় নাম অর্থাৎ দানিয়েল নামেই পরিচিত ছিলেন।—দানি. ৫:১৩.

৯. ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি গীতসংহিতার ১১৯ গীতের রচয়িতার কেমন মনোভাব ছিল?

গীতসংহিতার ১১৯ গীতের রচয়িতার বিরুদ্ধে যখন রাজসভার সদস্যরা কথা বলেছিলেন, তখন তাকে ধৈর্য ধরতে হয়েছিল। কিন্তু তিনি ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যে শক্তি খুঁজে পেয়েছিলেন আর এটা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা থাকতে সাহায্য করেছিল। (গীত. ১১৯:২৩, ৬১) তিনি নিজের হৃদয়কে ঈশ্বরের বাক্যের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হতে দিয়েছিলেন।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৯:১১, ৪৬.

যিহোবার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক সবসময় দৃঢ় রাখুন

১০, ১১. (ক) ঈশ্বরের বাক্য পড়ার সময় আমাদের লক্ষ্য কী হবে? (খ) কীভাবে আমরা আমাদের সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি? একটা উদাহরণ তুলে ধরুন।

১০ আমরা হয়তো মণ্ডলীতে ও কাজের জায়গায় বিভিন্ন দায়িত্বের কারণে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকতে পারি, কিন্তু আমাদের সকলকে ব্যক্তিগত অধ্যয়ন এবং পারিবারিক উপাসনার জন্য সময় করে নিতে হবে। (ইফি. ৫:১৫, ১৬) আমাদের লক্ষ্য শুধু এটা হবে না, আমরা অনেকগুলো পৃষ্ঠা পড়ে শেষ করব অথবা সভার জন্য একটা মন্তব্য প্রস্তুত করব। বরং আমাদের লক্ষ্য হবে, আমরা নিজেদের ঈশ্বরের বাক্যের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেব এবং আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করব।

১১ আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন। আমরা যখন অধ্যয়ন করি, তখন আমাদের কেবল অন্যদের প্রয়োজন সম্বন্ধে চিন্তা করা উচিত নয় কিন্তু সেইসঙ্গে নিজেদের প্রয়োজন সম্বন্ধেও চিন্তা করা উচিত। (ফিলি. ১:৯, ১০) আমাদের এটা উপলব্ধি হবে, পরিচর্যার জন্য, সভার জন্য অথবা কোনো বক্তৃতার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার অর্থ এই নয় যে, আমরা নিজেরা সেই বিষয়বস্তু কাজে লাগাচ্ছি। উদাহরণ স্বরূপ, খাবার পরিবেশন করার আগে একজন বাবুর্চিকে যদিও তা চেখে দেখতে হয়, কিন্তু তিনি শুধু সেই খাবার চেখেই বেঁচে থাকতে পারেন না। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য তাকে নিয়মিতভাবে নিজের জন্য সুষম খাবার প্রস্তুত করতে হবে। একইভাবে, আমরা যদি যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাই, তা হলে আমাদেরও নিয়মিতভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করতে হবে। এই ধরনের গভীর অধ্যয়ন আমাদের ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণ করে।

১২, ১৩. কেন অনেকে এমনটা মনে করে, নিজেদের ভাষায় বাইবেল অধ্যয়ন করা সাহায্যকারী?

১২ যারা বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করছে, তাদের মধ্যে অনেকে মনে করে, নিয়মিতভাবে “নিজ নিজ জন্মদেশীয় ভাষায়” বাইবেল অধ্যয়ন করা সাহায্যকারী। (প্রেরিত ২:৮) এমনকী মিশনারিরাও এটা বুঝতে পারে, বিদেশে নিজেদের কার্যভারে সক্রিয় থাকার জন্য, তাদের শুধু সভাতে শোনা বিষয়বস্তুর উপর নির্ভর করলে চলবে না।

১৩ আলাঁ, যিনি বিগত প্রায় আট বছর ধরে ফার্সি ভাষা শিখছেন, তিনি স্বীকার করেন: “ফার্সি ভাষায় সভার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় আমি শুধু ভাষার উপরই মনোযোগ দিয়ে থাকি। যেহেতু আমার মন মূলত ভাষাগত বিষয়ের উপর কেন্দ্রীভূত থাকে, তাই আমি যে-আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো পড়ি, সেগুলো যে সবসময় আমার হৃদয়কে স্পর্শ করে, এমন নয়। তাই, আমার মাতৃভাষায় বাইবেল ও অন্যান্য প্রকাশনা অধ্যয়ন করার জন্য আমি নিয়মিতভাবে সময় আলাদা করে রাখি।”

আপনাদের সন্তানদের হৃদয়ে পৌঁছান

১৪. বাবা-মায়েদের কোন বিষয়টা খেয়াল রাখা উচিত এবং কেন?

১৪ খ্রিস্টান বাবা-মায়েদের খেয়াল রাখতে হবে, সত্য যেন তাদের সন্তানদের মনে ও হৃদয়ে পৌঁছায়। সার্জ ও তার স্ত্রী মিউরিয়েলের কথা বিবেচনা করুন, যারা একটা বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে সেবা করেছেন। সেখানে থাকার সময় তারা লক্ষ করেছিলেন, তাদের ১৭ বছর বয়সি ছেলে পরিচর্যা কিংবা সভাগুলো উপভোগ করছে না। মিউরিয়েল বলেন, “আরেকটা ভাষায় প্রচার করা তার জন্য বিরক্তিকর ছিল, যদিও আগে সে নিজের মাতৃভাষায় অর্থাৎ ফ্রেঞ্চ ভাষায় প্রচার করতে ভালোবাসত।” সার্জ বলেন, “আমরা যখন বুঝতে পারি, এই পরিস্থিতির কারণে আমাদের ছেলে আধ্যাত্মিক উন্নতি করছে না, তখন আমরা আমাদের আগের মণ্ডলীতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।”

খেয়াল রাখবেন, সত্য যেন আপনাদের সন্তানদের হৃদয়ে পৌঁছায় (১৪, ১৫ অনুচ্ছেদ)

১৫. (ক) মণ্ডলী পরিবর্তন করা ঠিক হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো বাবা-মায়েদের সাহায্য করতে পারে? (খ) দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৫-৭ পদে বাবা-মায়েদের জন্য কোন নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে?

১৫ সন্তানরা ভালোমতো বুঝতে পারে এমন ভাষার একটা মণ্ডলীতে চলে যাওয়া ঠিক হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো বাবা-মায়েদের সাহায্য করতে পারে? প্রথমত, সন্তানদের যিহোবাকে ভালোবাসতে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আর একই সময়ে একটা বিদেশি ভাষা শেখানোর জন্য যথেষ্ট সময় ও শক্তি তাদের আসলেই রয়েছে কি না, সেটা তাদের নির্ধারণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, তারা হয়তো লক্ষ করতে পারেন, তাদের সন্তানরা প্রচার করতে, সভাতে যেতে আর এমনকী বিদেশিভাষী ক্ষেত্রে সেবা করতে চায় না। এই কারণগুলোর জন্য বাবা-মায়েরা হয়তো আবারও এমন ভাষার মণ্ডলীতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যে-ভাষা তাদের সন্তানরা সবচেয়ে ভালোমতো বুঝতে পারে। এরপর, সন্তানরা যিহোবার সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার পর, বাবা-মায়েরা হয়তো আবার বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে ফিরে আসার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।—পড়ুন, দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৫-৭.

১৬, ১৭. কোনো কোনো বাবা-মা কীভাবে তাদের সন্তানদের যিহোবা সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়েছেন?

১৬ অন্যদিকে, কোনো কোনো বাবা-মা এমন উপায় খুঁজে বের করেছেন, যাতে তারা সন্তানদের নিজেদের ভাষায় যিহোবা সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে পারেন আর একইসময়ে বিদেশিভাষী কোনো মণ্ডলী অথবা দলের সভাতে যোগ দিতে পারেন। চার্লস হলেন তিন মেয়ের বাবা আর তার মেয়েদের বয়স নয় থেকে তেরোর মধ্যে। তারা লিংগালাভাষী একটা দলে যোগ দেন। তিনি বলেন: “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মেয়েদের সঙ্গে অধ্যয়ন করার সময় ও পারিবারিক উপাসনার সময় আমরা নিজেদের ভাষায় তা পরিচালনা করব। তবে আমরা লিংগালা ভাষায় মহড়া পর্ব ও খেলাধুলার ব্যবস্থাও রেখেছিলাম, যাতে তারা মজা করার পাশাপাশি এই ভাষাটাও শিখতে পারে।”

স্থানীয় ভাষা শেখার জন্য ও সভাতে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রচেষ্টা করুন (১৬, ১৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৭ কেভিন হলেন দুই মেয়ের বাবা আর তার মেয়েদের বয়স যথাক্রমে পাঁচ বছর ও আট বছর। তাদের সত্য শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করছেন কারণ তাদের পরিবার যে-ভাষার মণ্ডলীতে যোগ দেয়, সেই ভাষা মেয়েরা পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারে না। তিনি বলেন: “আমার স্ত্রী ও আমি দুই মেয়ের সঙ্গেই তাদের মাতৃভাষায় অর্থাৎ ফ্রেঞ্চ ভাষায় ব্যক্তিগতভাবে অধ্যয়ন করি। এ ছাড়া, আমরা মাসে এক বার ফ্রেঞ্চ ভাষায় পরিচালিত সভাতে যোগ দেওয়ার লক্ষ্যস্থাপন করেছি। আর নিজেদের ভাষায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমরা ছুটির সময়গুলোর সদ্‌ব্যবহার করি।”

১৮. (ক) সন্তানদের সাহায্য করার সময় রোমীয় ১৫:১, ২ পদ কীভাবে আপনাদেরকে বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে? (খ) অন্য বাবা-মায়েরা আর কোন কোন পরামর্শ দিয়েছেন? (টীকা দেখুন।)

১৮ সন্তানদের জন্য এবং যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কোনটা সবচেয়ে ভালো উপায়, সেই বিষয়ে প্রতিটা পরিবারকে নিজ নিজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। [২] (গালা. ৬:৫) মিউরিয়েল বলেন, যদিও তিনি ও তার স্বামী সত্যি সত্যিই বিদেশিভাষী মণ্ডলীতে সেবা করে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের ছেলে যাতে যিহোবার প্রতি নিজের ভালোবাসা বৃদ্ধি করতে পারে, সেইজন্য তারা সেখান থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। (পড়ুন, রোমীয় ১৫:১, ২.) এখন সার্জ বুঝতে পারেন, তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলেন। তিনি বলেন: “যখন থেকে আমরা ফ্রেঞ্চভাষী মণ্ডলীতে চলে এসেছি, তখন থেকে আমাদের ছেলে আধ্যাত্মিকভাবে উন্নতি করেছে আর বাপ্তিস্ম নিয়েছে। সে এখন একজন নিয়মিত অগ্রগামী হিসেবে সেবা করছে। এমনকী সে এখন বিদেশিভাষী একটা দলে ফিরে যাওয়ার বিষয়েও চিন্তা করছে!”

ঈশ্বরের বাক্যকে আপনার হৃদয়ে পৌঁছাতে দিন

১৯, ২০. কীভাবে আমরা ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারি?

১৯ যিহোবা সমস্ত মানুষকে ভালোবাসেন। “সমুদয় মনুষ্য” যাতে সত্যের তত্ত্বজ্ঞান বা সঠিক জ্ঞান লাভ করতে পারে, সেইজন্য তিনি শত শত ভাষায় বাইবেল পাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। (১ তীম. ২:৪) তিনি জানেন, আমরা যে-ভাষা ভালোমতো বুঝতে পারি, আমরা যদি সেই ভাষায় বাইবেল পড়ি, তা হলে তাঁর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দৃঢ় হবে।

২০ যিহোবার সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের সকলকে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। আমরা যে-ভাষা ভালোমতো বুঝতে পারি, সেই ভাষায় নিয়মিতভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আমরা তা করতে পারি। এ ছাড়া, আমরা আমাদের পরিবারকেও সাহায্য করতে পারব, যাতে তারাও যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে আর আমরা দেখাতে পারব, ঈশ্বরের বাক্যকে আমরা সত্যিই ভালোবাসি।—গীত. ১১৯:১১.

^ [১] (৫ অনুচ্ছেদ) নামগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে।

^ [২] (১৮ অনুচ্ছেদ) আপনার পরিবারের জন্য সাহায্যকারী হতে পারে এমন বাইবেলের নীতি খুঁজে বের করার জন্য ২০০২ সালের ১৫ অক্টোবর প্রহরীদুর্গ পত্রিকায় তুলে ধরা “বিদেশের মাটিতে ছেলেমেয়ে মানুষ করা—প্রতিবন্ধকতা এবং পুরস্কারগুলো” শিরোনামের প্রবন্ধ দেখুন।