সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন

পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন

কোন অর্থে প্রেরিত পৌল “তৃতীয় স্বর্গ পর্য্যন্ত” ও ‘পরমদেশে নীত হইয়াছিলেন?’​—২ করি. ১২:২-৪.

২ করিন্থীয় ১২:২, ৩ পদে পৌল এমন একজন পুরুষের বিষয়ে উল্লেখ করেন, যিনি ‘তৃতীয় স্বর্গ পর্য্যন্ত নীত হইয়াছিলেন।’ সেই পুরুষ কে ছিলেন? পৌল করিন্থীয় মণ্ডলীর উদ্দেশে চিঠি লেখার সময়ে এই বিষয়টার উপর জোর দিয়েছিলেন যে, ঈশ্বর তাকে একজন প্রেরিত হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। (২ করি. ১১:৫, ২৩) এরপর, তিনি “প্রভুর নানা দর্শন ও প্রত্যাদেশের” বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে পৌল অন্যান্য ভাইদের বিষয়ে উল্লেখ করেননি। তাই, তিনি যুক্তিসংগতভাবে নিজেকেই সেই পুরুষ হিসেবে উল্লেখ করছিলেন, যিনি বিভিন্ন দর্শন ও প্রত্যাদেশ লাভ করেছিলেন।—২ করি. ১২:১, ৫.

তাই, পৌল ছিলেন সেই পুরুষ, যিনি ‘তৃতীয় স্বর্গ পর্য্যন্ত নীত হইয়াছিলেন’ এবং ‘পরমদেশে নীত হইয়াছিলেন।’ (২ করি. ১২:২-৪) তিনি ‘নানা প্রত্যাদেশ’ অভিব্যক্তিটা ব্যবহার করেছিলেন, যেটা ইঙ্গিত দেয় যে, তাকে এমন কিছু সম্বন্ধে বলা হয়েছিল, যেটা ভবিষ্যতে হবে।

পৌল “তৃতীয় স্বর্গ” হিসেবে কী দেখেছিলেন?

বাইবেলে, “স্বর্গ” শব্দটা আক্ষরিক গগন বা আকাশমণ্ডলকে নির্দেশ করতে পারে। (আদি. ১১:৪; ২৭:২৮; মথি ৬:২৬) কিন্তু, এর অন্য অর্থও হতে পারে। কোনো কোনো শাস্ত্রপদে এর অর্থ হল মানবশাসন অথবা ঈশ্বরের রাজ্যের মাধ্যমে করা যিহোবার শাসন।—দানি. ৪:২০-২২; প্রকা. ২১:১.

পৌল “তৃতীয় স্বর্গ” দেখেছিলেন। তিনি কী বুঝিয়েছিলেন? কখনো কখনো বাইবেল কোনো বিষয়ের উপর জোর দেওয়ার জন্য অথবা সেটার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য সেটাকে তিন বার উল্লেখ করে। (যিশা. ৬:৩; যিহি. ২১:২৭; প্রকা. ৪:৮) তাই মনে হয় যে, পৌল “তৃতীয় স্বর্গ” সম্বন্ধে উল্লেখ করার মাধ্যমে সর্বোচ্চ মানের এক শাসনের বিষয়ে অর্থাৎ যিশু খ্রিস্ট ও তাঁর ১,৪৪,০০০ সহ-শাসকের অধীনে মশীহ রাজ্যের বিষয়ে বর্ণনা করছিলেন। (২০০৪ সালের ১৫ অক্টোবর প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৮ পৃষ্ঠার ৫ অনুচ্ছেদ দেখুন।) এই মশীহ রাজ্য হল প্রেরিত পিতরের দ্বারা উল্লেখিত ‘নূতন আকাশমণ্ডল,’ যেটার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।—২ পিতর ৩:১৩.

পৌল যে-‘পরমদেশ’ সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, সেটার বিষয়ে কী বলা যায়?

‘পরমদেশ’ শব্দটাও বিভিন্ন বিষয়কে বোঝাতে পারে: (১) মানুষের প্রথম গৃহের কথা বিবেচনা করলে, ‘পরমদেশ’ শব্দটা যুক্তিসংগতভাবেই ভবিষ্যতের আক্ষরিক পার্থিব পরমদেশকে নির্দেশ করতে পারে। (২) এই শব্দটা, ঈশ্বরের লোকেরা নতুন জগতে যে-আধ্যাত্মিক পরিবেশ উপভোগ করবে, সেটাকে নির্দেশ করতে পারে। (৩) এর পাশাপাশি, এই শব্দটা স্বর্গের এক চমৎকার পরিবেশ অর্থাৎ ‘ঈশ্বরের পরমদেশকে’ নির্দেশ করতে পারে, যেটার বিষয়ে প্রকাশিত বাক্য ২:৭ পদে উল্লেখ করা হয়েছে।—২০১৫ সালের ১৫ জুলাই প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৮ পৃষ্ঠার ৮ অনুচ্ছেদ দেখুন।

এমনটা হতে পারে যে, পৌল যখন ২ করিন্থীয় ১২:৪ পদে তার অভিজ্ঞতার বিষয়ে বর্ণনা করছিলেন, তখন তিনি পরমদেশের এই তিনটে দিকের সব ক-টার বিষয়েই পরোক্ষভাবে উল্লেখ করছিলেন।

সারাংশ:

২ করিন্থীয় ১২:২ পদে উল্লেখিত “তৃতীয় স্বর্গ” সম্ভবত যিশু খ্রিস্ট ও ১,৪৪,০০০ ব্যক্তির অধীনে মশীহ রাজ্যকে অর্থাৎ ‘নূতন আকাশমণ্ডলকে’ বোঝায়।—২ পিতর ৩:১৩.

এটা “তৃতীয় স্বর্গ” কারণ ঈশ্বরের রাজ্য হল সর্বোচ্চ মানের এক শাসন।

যে-“পরমদেশে” পৌল ‘নীত হইয়াছিলেন,’ সেটা সম্ভবত এই বিষয়গুলোকে নির্দেশ করে: (১) আক্ষরিক পরমদেশ, যেটা পৃথিবীর উপর আসবে, (২) আধ্যাত্মিক পরমদেশ, যেটা সেই সময়ে থাকবে এবং বর্তমানের আধ্যাত্মিক পরমদেশের চেয়ে আরও ব্যাপক হবে এবং (৩) ‘ঈশ্বরের পরমদেশ,’ যেটা নতুন জগতে একইসময়ে স্বর্গে থাকবে।

তাই, নতুন জগৎ বলতে নতুন আকাশমণ্ডল ও নতুন পৃথিবী উভয়কে একসঙ্গে বোঝাবে। এটা হবে এক নতুন ব্যবস্থা, যার অন্তর্ভুক্ত হবে স্বর্গীয় রাজ্যের সরকার ও সেইসঙ্গে সেই মানুষেরা, যারা পার্থিব পরমদেশে যিহোবার সেবা করবে।