সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন

পাঠকদের কাছ থেকে প্রশ্ন

কেন যিহোবার সাক্ষিরা প্রেরিত পৌলকে একজন টাক পড়া অথবা অল্প চুলওয়ালা ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরে?

সত্যি বলতে কী, বর্তমানে কেউই নিশ্চিতভাবে বলতে পারে না, পৌল দেখতে কেমন ছিলেন। আমাদের প্রকাশনাগুলোতে পৌলের যে-ছবি ও চিত্রগুলো তুলে ধরা হয়, সেগুলো শিল্পীদের কল্পনা অনুযায়ী দেখানো হয়, কোনো প্রমাণিত প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে নয়।

তবে, পৌলের চেহারার বিষয়ে কিছু ইঙ্গিত রয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, ১৯০২ সালের ১ মার্চ জায়ন্স ওয়াচ টাওয়ার-এ একটা ইঙ্গিত তুলে ধরে বলা হয়েছিল: “পৌলের ব্যক্তিগত চেহারার বিষয়ে: . . . ‘পৌল ও থেকলার কার্যবিবরণ’ . . . যেটা প্রায় ১৫০ খ্রিস্টাব্দে লেখা হয়েছিল, সেটাতে পৌলের একটা বর্ণনা রয়েছে, যা সম্ভবত সর্বোত্তম ও প্রকৃত ধারণা প্রদান করে। সেখানে বলা হয়েছে, তিনি ‘ছোটোখাটো আকারের ছিলেন, তার মাথায় টাক ছিল, তার পাগুলো সামান্য বাঁকা ছিল, তিনি স্বাস্থবান ছিলেন, তার জোড়া ভুরু ছিল; তার বেশ লম্বা নাক ছিল।’”

দি অক্সফোর্ড ডিকশনারি অভ্‌ ক্রিস্টিয়ান চার্চ (১৯৯৭ সংস্করণ) সেই প্রাচীন লেখা সম্বন্ধে বলে: “সেই কার্যবিবরণে যে ঐতিহাসিক সত্যের কিছু অংশ থাকতে পারে, সেটা অসম্ভব কিছু নয়।” পৌল ও থেকলার কার্যবিবরণ লেখার পর কয়েক শতাব্দী ধরে এই বইটাকে অনেক সম্মান করা হতো আর এর প্রমাণ হল যে, বর্তমানে গ্রিক ভাষায় এই বইয়ের ৮০টা পাণ্ডুলিপি রয়েছে এবং অন্যান্য ভাষায়ও এর কিছু সংস্করণ পাওয়া যায়। তাই, আমাদের শিল্পীদের চিত্রগুলো সেই প্রেরিতের চেহারার কিছু প্রাচীন বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়।

তবে মনে রাখবেন, আরও এমন বিষয় রয়েছে, যেগুলো পৌলের চেহারার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এমনকী পৌল যখন তার পরিচর্যায় রত ছিলেন, তখন কিছু সমালোচক অভিযোগ করেছিল যে, “সাক্ষাতে তাঁহার শরীর দুর্ব্বল এবং তাঁহার বাক্য হেয় [“শোনবার মত এমন কিছু নয়,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]।” (২ করি. ১০:১০) কিন্তু, আমাদের এটা ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, পৌল যিশুর কাছ থেকে এক অলৌকিক দর্শন পেয়ে খ্রিস্টান হয়েছিলেন। এ ছাড়া, আমরা এটা নিয়েও চিন্তা করতে পারি যে, “জাতিগণের . . . নিকটে [যিশুর] নাম বহনার্থে . . . [খ্রিস্টের] মনোনীত পাত্র” হিসেবে পৌল কী কী সম্পাদন করেছিলেন। (প্রেরিত ৯:৩-৫, ১৫; ২২:৬-৮) আর এটাও বিবেচনা করুন যে, যিহোবা পৌলকে বাইবেলের যে-সমস্ত বই লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন, সেগুলো থেকে আমরা কতটা উপকার লাভ করতে পারি।

পৌল খ্রিস্টান হওয়ার আগে যে-বিষয়গুলো সম্পাদন করেছিলেন, সেগুলোর বিষয়ে বড়াই করেননি আর তিনি নিজের চেহারার বিষয়েও বর্ণনা দেননি। (প্রেরিত ২৬:৪, ৫; ফিলি. ৩:৪-৬) তিনি স্বীকার করেছিলেন: “প্রেরিতগণের মধ্যে আমি সর্ব্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র বরং প্রেরিত নামে আখ্যাত হইবার অযোগ্য।” (১ করি. ১৫:৯) তিনি পরে লিখেছিলেন: “আমি সমস্ত পবিত্রগণের মধ্যে সর্ব্বাপেক্ষা ক্ষুদ্রতম হইলেও আমাকে এই অনুগ্রহ দত্ত হইয়াছে, যাহাতে পরজাতিদের কাছে আমি খ্রীষ্টের সেই ধনের বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করি, যে ধনের সন্ধান করিয়া উঠা যায় না।” (ইফি. ৩:৮) পৌল দেখতে কেমন ছিলেন, সেই বিষয়ে যেকোনো চিন্তার চেয়ে তিনি যে-বার্তা প্রচার করেছিলেন, সেটা নিশ্চিতভাবেই আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।