সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

যে-প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ হবে

যে-প্রতিজ্ঞাগুলো পরিপূর্ণ হবে

যিশুর ভবিষ্যদ্‌বাণী অনুযায়ী, ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার সমগ্র পৃথিবীতে প্রচার করা হচ্ছে। (মথি ২৪:১৪) বাইবেলের দানিয়েল বই আমাদের জানায়, এই রাজ্য হল ঈশ্বরের দ্বারা শাসিত এক সরকার। এই বইয়ের ২ অধ্যায়ে যে-ভবিষ্যদ্‌বাণী রয়েছে, সেটা বাবিল থেকে আমাদের দিন পর্যন্ত পর পর কয়েকটা প্রভাবশালী মানবসরকার বা রাজ্য সম্বন্ধে জানায়। ভবিষ্যতে যা ঘটতে চলেছে, সেই সম্বন্ধে ৪৪ পদ জানায়:

“স্বর্গের ঈশ্বর এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না, এবং সেই রাজত্ব অন্য জাতির হস্তে সমর্পিত হইবে না; তাহা ঐ সকল রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট করিয়া আপনি চিরস্থায়ী হইবে।”

এই ভবিষ্যদ্‌বাণী ও বাইবেলের অন্যান্য ভবিষ্যদ্‌বাণী জানায়, ঈশ্বরের রাজ্য সমস্ত মানবশাসনকে সরিয়ে দেবে এবং পৃথিবীর লোকেদের জন্য শান্তি ও শৃঙ্খলা নিয়ে আসবে। যখন ঈশ্বরের রাজ্য আসবে, তখন জীবন কেমন হবে? কিছু অপূর্ব প্রতিজ্ঞা সম্বন্ধে বিবেচনা করুন, যেগুলো শীঘ্রই পরিপূর্ণ হবে।

  • যুদ্ধ আর হবে না

    গীতসংহিতা ৪৬:৯: “[ঈশ্বর] পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত যুদ্ধ নিবৃত্ত করেন; তিনি ধনু ভগ্ন করেন, বড়শা খণ্ড খণ্ড করেন, তিনি রথ সকল আগুনে পোড়াইয়া দেন।”

    যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করার জন্য যত টাকাপয়সা ও দক্ষতা ব্যয় করা হয়, সেগুলো যদি মানুষকে হত্যা করার পরিবর্তে তাদের উপকারে ব্যয় করা হতো, তা হলে পৃথিবী কেমন হতো, তা একটু কল্পনা করুন! যখন ঈশ্বরের রাজ্য আসবে, তখন এই প্রতিজ্ঞা পরিপূর্ণ হবে।

  • অসুস্থতা আর থাকবে না

    যিশাইয় ৩৩:২৪: “নগরবাসী কেহ বলিবে না, আমি পীড়িত।”

    এমন এক জগৎ সম্বন্ধে কল্পনা করুন, যেখানে কেউ হৃদ্‌রোগ, ক্যান্সার, ম্যালেরিয়া বা অন্য কোনো রোগে কষ্ট পাবে না। হাসপাতাল ও ওষুধপত্রের আর প্রয়োজন হবে না। ভবিষ্যতে লোকেরা এই পৃথিবীতে উত্তম স্বাস্থ্য নিয়ে বসবাস করবে।

  • দুর্ভিক্ষ আর হবে না

    গীতসংহিতা ৭২:১৬: “দেশমধ্যে পর্ব্বত-শিখরে প্রচুর শস্য হইবে।”

    এই পৃথিবীতে প্রত্যেকের জন্য প্রচুর খাদ্য উৎপন্ন হবে আর সবাই তা পাবে। কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না আর অপুষ্টিতে ভুগবে না।

  • ব্যথা, দুঃখ ও মৃত্যু আর থাকবে না

    প্রকাশিত বাক্য ২১:৪: “[ঈশ্বর] তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।”

    এর অর্থ হবে, এক পরমদেশ পৃথিবীতে সিদ্ধ অবস্থায় অনন্তজীবন! এটাই আমাদের প্রেমময় সৃষ্টিকর্তা, যিহোবা ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন।

“তাহা . . . সিদ্ধার্থ হইবে”

এই সমস্ত কিছু কি আপনার কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়? যদিও বাইবেলে যে-ধরনের জীবন সম্বন্ধে প্রতিজ্ঞা ও বর্ণনা করা হয়েছে, সেগুলো বেশিরভাগ লোক পেতে চায় কিন্তু বিভিন্ন কারণে তারা চিরকাল বেঁচে থাকার ধারণাকে উপলব্ধি করতে পারে না। এটা আমাদের অবাক করে না কারণ কারোরই এই ধরনের জীবন সম্বন্ধে কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

মানবজাতি এখনও পর্যন্ত পাপ ও মৃত্যুর দাসত্বে রয়েছে। এত দিন ধরে যন্ত্রণা, দুঃখকষ্ট ও দুর্দশা ভোগ করার ফলে অনেক লোকই এই ধরনের জীবনকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিয়েছে। কিন্তু, মানবজাতির জন্য আমাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর যিহোবার এই ধরনের উদ্দেশ্য ছিল না।

ঈশ্বর যে-প্রতিজ্ঞাগুলো করেছেন, সেগুলো যে অবশ্যই পরিপূর্ণ হবে, তা বুঝতে সাহায্য করার জন্য তিনি সহানুভূতির সঙ্গে তাঁর বাক্যে বলেছেন: “তাহা নিষ্ফল হইয়া আমার কাছে ফিরিয়া আসিবে না, কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি, তাহা সম্পন্ন করিবে, এবং যে জন্য তাহা প্রেরণ করি, সে বিষয়ে সিদ্ধার্থ হইবে।”—যিশাইয় ৫৫:১১.

বাইবেল যিহোবা ঈশ্বর সম্বন্ধে এই কথা জানায় যে, তিনি “মিথ্যাকথনে অসমর্থ।” (তীত ১:২) যেহেতু তিনি ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে এই চমৎকার প্রতিজ্ঞা করেছেন, তাই এই প্রশ্নগুলো নিয়ে বিবেচনা করা আমাদের পক্ষে বিচক্ষণতার কাজ হবে: প্রতিজ্ঞাত পার্থিব পরমদেশে মানুষ কি সত্যিই চিরকাল বসবাস করতে পারবে? ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা থেকে উপকার লাভ করার জন্য আমাদের অবশ্যই কী করতে হবে? এই প্রকাশনার পরবর্তী পৃষ্ঠাগুলোতে আপনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবেন।