সহমর্মিতা দেখান
সমস্যা
আমরা যদি কেবলমাত্র এই বিষয়ের উপর মনোযোগ দিই যে, অন্যেরা আমাদের চেয়ে কতটা আলাদা, তা হলে তাদের ত্রুটিগুলোই আমাদের চোখে পড়বে। এর ফলে, যে-লোকেরা আমাদের চেয়ে আলাদা, তাদের প্রতি আমাদের বৈষম্যের মনোভাব গড়ে উঠতে পারে। একবার যখন আমরা অন্যদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলি, তখন তাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো কঠিন হয়ে পড়ে। আমরা যদি সহমর্মিতা দেখাতে ব্যর্থ হই, তা হলে এটা একটা গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, যা হল বৈষম্য।
বাইবেলের নীতি
“যাহারা আনন্দ করে, তাহাদের সহিত আনন্দ কর; যাহারা রোদন করে, তাহাদের সহিত রোদন কর।”—রোমীয় ১২:১৫.
এর অর্থ কী? এই শাস্ত্রপদ শেখায় যে, আমাদের সহমর্মিতা দেখানো প্রয়োজন। সহমর্মিতা হল অন্যের জায়গায় নিজেকে রাখা এবং তিনি যা অনুভব করেন, তা অনুভব করা।
সহমর্মিতা যেভাবে সাহায্য করে
আমরা যখন কারো প্রতি সহমর্মিতা দেখাই, তখন আমরা বুঝতে পারি, সেই ব্যক্তির সঙ্গে আমাদেরও অনেক মিল রয়েছে। আর সম্ভবত, আমরা বুঝতে পারব, সেই ব্যক্তি যেমন অনুভব করে ও প্রতিক্রিয়া দেখায়, আমরাও একইরকম করি। সহমর্মিতা আমাদের সবাইকে একই মানব পরিবারের অংশ হিসেবে দেখতে সাহায্য করে, তা আমরা যে-কোনো পটভূমিরই হই না কেন। আমরা যদি অন্যদের আমাদের মতো করে দেখি, তা হলে তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাবে।
এ ছাড়া, সহমর্মিতা আমাদের অন্যদের সম্মান করতে সাহায্য করে। অ্যান মেরি, যিনি সেনেগালে বাস করেন, একসময় তিনি নিম্নশ্রেণি থেকে আসা লোকেদের নীচু চোখে দেখতেন। সহমর্মিতা যেভাবে তাকে সাহায্য করেছিল, সেই বিষয়ে তিনি বলেন: “আমি যখন দেখেছিলাম, সেই লোকেরা কতটা কষ্টভোগ করছে, তখন আমি নিজেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমি যদি তাদের মতো কষ্টভোগ করতাম, তা হলে আমার কেমন লাগত। আর তাই আমি বুঝতে পেরেছিলাম, আমি তাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নই। আমি এমন কোনো কিছুই করিনি যা আমাকে তাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ করে তুলবে।” আমরা যদি অন্যদের সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করি, তা হলে আমরা তাদের সমালোচনা করার পরিবর্তে, তাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাব।
আপনি যা করতে পারেন
আপনার যদি একটা সম্প্রদায় সম্বন্ধে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকে, তা হলে কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে আপনার মিল রয়েছে, সেটা দেখার চেষ্টা করুন। উদাহরণ স্বরূপ, কল্পনা করুন, তারা কেমন অনুভব করে যখন:
সহমর্মিতা আমাদের সবাইকে একই মানব পরিবারের অংশ হিসেবে দেখতে সাহায্য করে
নিজের পরিবারের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে
সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে
বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটায়
নিজের পছন্দের গান শোনে
এরপর, তাদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করার চেষ্টা করুন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন:
‘কেউ যদি আমাকে মূল্যহীন বলে মনে করে, তা হলে আমি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাব?’
‘অন্যেরা যদি আমাকে ভালোভাবে না জেনেই আমার বিচার করে, তা হলে আমার কেমন লাগবে?’
‘আমি যদি তাদের সম্প্রদায়ের হই, তা হলে আমি অন্যদের কাছ থেকে কেমন আচরণ আশা করব?’